নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Zia Chy is a Journalist, Online Activist & Land Law Consultant. Working to rebuild a welfare State.

জিয়া চৌধুরী

আমি বাংলাকে ভালবাসি

জিয়া চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাষ্ট্র সংস্কারের রুপরেখা প্রণয়নে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যমত জরুরী

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৫৫

গণবিপ্লবে সরকার পতনের পর ফ্যাসিষ্ট বিরোধী সকল রাজনৈতিক দলের প্রধানদের উচিত ছিল রাষ্ট্র সংস্কারের রুপরেখা তৈরী করতে একটা যৌথ সভা করা।

যেহেতু গণমানুষের বৈপ্লবিক সংগ্রামে অগণিত শহীদের তাজা রক্তের বিনিময়ে, লাখো লাখো কারা নির্যাতিত, নিপীড়িত, পঙ্গুত্ব বরণকারী বিপ্লবী বীরদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে গড়ে উঠা এই নতুন বাংলাদেশ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নতুন রাষ্ট্র গঠন নিয়ে একটি বোঝাপড়ার দরকার ছিল।

রাষ্ট্রের কার্যক্রম স্বাভাবিক ও গতিশীল করতে, আইন শৃংখলা ফিরিয়ে আনতে, প্রশাসনকে সক্রিয় করতে, সংবিধান পূর্ণগঠন করতে, রাষ্ট্রকে কল্যানমূখী করতে একটা যৌথ অঙ্গীকারপত্র প্রণয়ণ করে সকলের ঐক্যমত হওয়া জরুরী ছিল।

তা না করে, পুরোনো গৎবাঁধা রাজনৈতিক কালচারে ফিরে গিয়ে বৃহৎ রাজনৈতিক দলগুলো ছাত্র জনতার বিপ্লবী চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক পন্থা অনুসরণ করছে। যার ফলে সাধারণ জনতা রাজনৈতিক দলগুলোর এসকল আচরণকে যার যার অবস্থান থেকে প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছে।

এর ফলে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া, সমঝোতা, ঐক্যমত প্রতিষ্ঠা হওয়ার বদলে অবিশ্বাস, সন্দেহ কাদা ছোড়াছুড়ি শুরু হয়েছে। যার পরিণতিতে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, সংঘর্ষ অনিবার্য।

এখনও পর্যন্ত ফ্যাসিবাদীরা ঘাড়ের উপর বিশ নিশ্বাস ফেলছে। সাধারণ মানুষ এখনও নির্ভার নিশ্চিন্তে চলা শুরু করতে পারেনি। তার মধ্যে রাজনৈতিক এই নতুন অস্থিরতা রাজনৈতিক দলগুলোর ব্যাপারে ছাত্র জনতার নিকট ভুল বার্তা প্রেরণ করছে।

বিএনপি, জামায়াত, এবি পার্টি, গণ অধিকার পরিষদ, জাতীয় পার্টি ও ইসলামী দলগুলো সহ রাজপথে সক্রিয় থাকা রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দরা রাষ্ট্রগঠনের প্রশ্নে এক টেবিলে বসা খুবই জরুরী।

রাজনৈতিক দলগুলো নতুন বাংলাদেশ গড়ার ব্যাপারে যৌথভাবে রাষ্ট্র সংস্কারের রুপরেখা তৈরী করে তাতে একমত হয়ে অঙ্গীকারপত্রে স্বাক্ষর করতে হবে। পারস্পরিক দ্বন্দ্ব, অবিশ্বাস সন্দেহ, কাদা ছোড়াছুড়ির জায়গা থেকে সরে আসতে হবে।

আগামীতে দল হিসেবে ক্ষমতায় থেকে বা বিরোধী দলে থেকে সকল প্রকার দূর্নীতি, লুটপাট, অন্যায়, জুলুম, প্রতিহিংসা, সংঘাত বন্ধে রাজনৈতিক চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করতে হবে।

নিজ নিজ দলের ভিতর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সবাইকে একমত হতে হবে।

আমরা চাইনা নতুন কারো হাত ধরে, নতুন কোন রুপে ফ্যাসিবাদ ফিরে আসুক। আমরা একটা উন্নত, সমৃদ্ধ, কল্যানমূখী বাংলাদেশ চাই। আমরা স্বাধীনভাবে বাঁচতে চাই, মত প্রকাশের স্বাধীনতা চাই, হয়রানীর অবসান চাই, গুম খুন থেকে মুক্তি চাই।

আমাদের সকলের সদিচ্ছা ও আন্তরিক মনোভাব থাকলে এই বাংলাদেশ একদিন বিশ্বের দরবারে তার গৌরব ও মর্যাদা নিয়ে অবশ্যই মাথা উচু করে দাড়াবে।

খ) রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর যৌথ অঙ্গীকারপত্রের পয়েন্টগুলো নিম্নরূপ হতে পারে:

1. **গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠা ও রক্ষা**:

সকল রাজনৈতিক দল গণতন্ত্রের মূল্যবোধ ও প্রক্রিয়া মেনে চলবে এবং যে কোনো ধরনের স্বৈরাচারী শাসনের পুনরুত্থান প্রতিরোধে একসাথে কাজ করবে।

2. **শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান**:

রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও, সকল দল পারস্পরিক সম্মান বজায় রেখে শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করবে এবং সহিংসতা বা সংঘাতের পথে যাবে না।

3. **দূর্নীতির বিরুদ্ধে অঙ্গীকার**:
দূর্নীতি, লুটপাট, এবং ক্ষমতার অপব্যবহার বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। কোনো দল বা ব্যক্তির বিরুদ্ধে দূর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেলে তাকে আইন অনুযায়ী শাস্তি প্রদান করা হবে।

4. **আইনের শাসন ও বিচারব্যবস্থা স্বাধীনতা**: বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রক্ষা করা হবে এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য সকল দল সম্মত হবে। কেউ আইন ঊর্ধ্বে নয়, এই নীতি সর্বদা অনুসরণ করা হবে।

5. **সংবিধান পুনর্গঠন ও সংস্কার**:
একটি নতুন সংবিধান বা বিদ্যমান সংবিধানের প্রয়োজনীয় সংস্কার করা হবে, যাতে গণমানুষের অধিকার এবং স্বাধীনতা সুরক্ষিত থাকে।

6. **মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ**: সকল নাগরিকের মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে এবং এ বিষয়ে যে কোনো ধরনের বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করা হবে।

7. **গণমাধ্যমের স্বাধীনতা**:
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষা করা হবে, যাতে তারা নিরপেক্ষভাবে তথ্য প্রকাশ করতে পারে এবং গণমানুষের কণ্ঠস্বর হতে পারে।

8. **অধিকার ও ন্যায়বিচারের জন্য প্রতিশ্রুতি**: মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়া হবে এবং যেকোনো অপরাধের শিকার ব্যক্তি ন্যায়বিচার পাবেন।

9. **বৈষম্যহীন সমাজ গঠন**:
সকল ধরনের বৈষম্য—জাতিগত, ধর্মীয়, লিঙ্গভিত্তিক বা সামাজিক—অপসারণের লক্ষ্যে কাজ করা হবে এবং একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠন করা হবে।

10. **জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা**:
দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য একটি যৌথ জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরি করা হবে, যা স্বাস্থ্য, শিক্ষা, অবকাঠামো, এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের মতো বিষয়গুলিতে গুরুত্ব দেবে।

11. **ফ্যাসিবাদ বিরোধী ঐক্য**:
যেকোনো ধরনের ফ্যাসিবাদী চিন্তা ও শক্তির বিরুদ্ধে সকল দল একত্রে দাঁড়াবে এবং তা প্রতিরোধে সক্রিয় থাকবে।

12. **শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য সহযোগিতা**: দেশকে রাজনৈতিক অস্থিরতা থেকে মুক্ত রাখার জন্য সব দল শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহযোগিতা করবে।

এই ধরনের পয়েন্টগুলো অঙ্গীকারপত্রে অন্তর্ভুক্ত করলে, রাজনৈতিক দলগুলো একটি সংহত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের জন্য একসঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে পারে।

জিয়া চৌধুরী।
চট্টগ্রাম থেকে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:২৫

জুল ভার্ন বলেছেন: গুড পোস্ট!

প্রিয় জিয়া চৌধুরী, একান্তই আমার অবজারভেশন- ছাত্র-জনতার রক্তক্ষয়ী আন্দোনলের সব চাইতে বড় বেনিফিশিয়ারী হতে যাচ্ছে জামাত। ওদের প্রতি বিভিন্ন বাহিনী ছাড়াও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং ভারত সরকারের প্রচ্ছন্ন সমর্থন এবং সহানুভূতি রয়েছে।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৮

জিয়া চৌধুরী বলেছেন: আপাতদৃষ্টিতে সেটাই দেখা যাচ্ছে। তো এক্ষেত্রে বড় দল বিএনপিকেই উদ্যোগ নিতে হবে পলিসি ডায়লগ শুরু করার ব্যাপারে। অন্তত আগামী ২০ বছরের জন্য সম্মিলিত উন্নয়নের রুপরেখা প্রনয়ন করতে হবে। আমরা বিএনপি বলেন বা জামাত কারো হাতে এককভাবে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে পারিনা। অন্তত বর্তমান পরিস্থিতিতে। বিএনপি ডাক দিলে সবাই আসবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.