নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাস্তবভিত্তিক অর্থনীতির পুরোদা মোল্লা নাসির উদ্দিন
আধুনিক অর্থনীতির জনক এডাম স্মিথ
সভ্যতার ইতিহাসের সুদীর্ঘ পটভূমিতে অর্থনীতি একটি অর্বাচীন শাস্ত্র। ত্রয়োদশ শতাব্দী তখন পযর্ন্ত আধুনিক অর্থনীতির জম্ম হয়নি।সে সময় তুরস্কের খোর্তো গ্রামে নাসির উদ্দিনের জন্ম।ইতিহাসে যিনি মোল্লা নাসির উদ্দিন বা নাসির উদ্দিন হোজ্জা নামে অধিক পরিচিত। অর্থনীতিতে তার অগাধ জ্ঞান স্বর্বস্ব কেীতুক বাস্তবভিওিক অর্থনীতির জন্য এক সুদূর প্রসারিত অবদান।
তার থেকে আটশ বছর আগে এরিস্টটল বাজারের মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতিকে প্রহেলিকা বলে উল্লেখ করেছেন।তিনি বলতেন,জল যার অপর নাম জীবন তা বিনামূল্যে পাওয়া যায়, অথচ হীরক-যার কোন প্রত্যক্ষ উপকারিতা নেই,বাজারে অতি চড়া দামে বিক্রি হয়।তাই বাজারের মূল্যে নির্ধারণ পদ্ধতি হল অন্যায্য।অথচ মোল্লার কাছে,তা খুবই সহজ বোধ্য ছিল।তার এক শিষ্য বললেন যে , সত্য জানার জন্য কেন এত দাম দিতে হয় তা সে বুঝতে অক্ষম।মোল্লা তাকে বললেন,”সত্য হল দুষ্প্রাপ্য এবং সকল দুষ্প্রাপ্য দ্রব্যই চড়া দামে কিনতে হয়।”
হাসতে হাসতে মোল্লা যা বলে গেছেন আজকের অর্থনীতির বিশেষজ্ঞরা অনেক পরিশ্রম করেও তার চেয়ে খুব বেশি দূর এগিয়ে যেতে পারেননি কারণ অর্থনীতি সম্পর্কে মোল্লা নাসিরউদ্দীনের জ্ঞান ছিল বাস্তব অভিজ্ঞতা প্রসূত।
একবার এক ব্যাক্তিকে মোল্লার বয়স সম্বন্ধে জানতে চাইলেন, তিনি বললেন চল্লিশ।তখন লোকটি মোল্লাকে ম্মরন করিয়ে দিলেন দশ বছর আগেও তিনি তার বয়স চল্লিশ বললেন।মোল্লা বললেন, তিনি আসলে এক কথার মানুষ, কয়দিন পর তিনি তার মত পরিবর্তন করেননা ।আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ট্রম্যান এ ধরনের একহাতওয়ালা অর্থনীতিবিদের খুজতেন।তার এই বায়নার অবশ্যই যথেষ্ট কারণ আছে।কারণ তিনি একহাতওয়ালা অর্থনীতিবীদ খুব কমই পেয়েছেন।যখন তারা কোন বিষয়ে বলে তখন বলে,এদিকে এটা ঘটতে পারে আবার অন্যদিকে এরকম ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।
ঝুঁকি হৃাসে অর্থনীতির বৈচিত্র্যায়নের প্রতীক তাকে বলা যায় ।একবার এক অসুস্থ ব্যক্তি ধার্মিক এবং সৎ ব্যক্তি হিসাবে মোল্লাকে বললেন তার জন্য দোয়া করতে।মোল্লা বললেন অবশ্য করব। তিনি দোয়া করলেন ”বিধাতা তাকে সাহায্য কর,অসুর তাকে মদদ দাও।স্তম্ভিত লোকটি বললেন ”মোল্লা নিশ্চয়ই আপনার মাথা খারাপ হয়ে গেছে,”মোল্লা বললেন ’প্রিয় বন্ধু,আপনার কথা মোটেও সত্য নয়।আপনার যা অবস্থা,আপনি ঝুঁকি নিতে পারেন না।যখন দুইটি বিকল্প রয়েছে,তখন দুইটি বিকল্পের জন্যই বন্দোবস্থ রাখা বুদ্ধিমানের কাজ।”স্পষ্টতই মোল্লা ঝুকিপূর্ণ অর্থনীতির সম্ভাব্য বৈচিত্র্যায়নের কথা বলেছেন।
জমি চাষের ক্ষেত্রে একই জাতের বীজ না বুনে বিভিন্ন জাতের বীজ বুনন জমির জন্য অনেক কম ক্ষতিকর সে দিকটা তিনি অনুধাবন করেছেন।একবার তিনি তার আত্মীয়স্বজনকে তার মৃত্যুর পর কোন নতুন কবরে শায়িত না করে পুরানো কবরে শায়িত করতে বললেন।তাহলে ফেরেস্তারা আসলে বলব শায়িত ব্যক্তির ইতিমধ্যে সাজা হয়ে গেছে।তাহলে ফেরেশতারা তাকে সাজা না দিয়ে চলে যাবেন।কৌতুক প্রিয় নাসিরউদ্দীনের এধরণের কৌতুক হয়তো পরকালীন জীবনের বাস্তব না হলে ইহকালে খুবই বাস্তব।একই ফসলি জমিতে ফসল পরিবর্তন করে চাষ জমির জন্য খুবই উপকারী।
বিশ্বব্যাংক বা আইএমএফ এর কাছে কোন ধার চাইতে গেলে,তারা ধার দেওয়ার আগে একগাধা পরামর্শ দিয়ে দেন।মহাজনদের সম্বন্ধে মোল্লার ধারণা অনুরুপ ছিল।একবার মোল্লা তার পছন্দের একটি হাতি কেনার জন্য কিছু টাকা ধার চেয়ে এক মহাজনের কাছে গেলেন।মহাজন তাকে বলল টাকা না থাকলে হাতি পুষবে কিভাবে? মোল্লা আক্ষেপ করে বলল ,”আমি আপনার কাছে টাকা ধারের জন্য এসেছি ,উপদেশের জন্য না।”শর্তনীর্ভর ধার প্রদানের এক চমকপ্রদ কৌতুকীয় কাজ একবার তিনি করে বসলেন।একটি ছেলেকে কুয়ো থেকে এক বালতি পানি তুলতে বললেন এবং চিৎকার দিয়ে বললেন বালতিটি যেন না ভাঙ্গে।এরপরই মোল্লা তাকে একটি থাপ্পড় মেরে দিলেন।মোল্লার পাশে দন্ডায়মান লোকটি তাজ্জব বনে গেলেন এবং বললেন সে তো এখনও বালতিটি ভাঙ্গেনি।মোল্লার বললেন ভাঙ্গার পর থাপ্পড় দিয়ে কোন লাভ আছে।বিশ্ব ব্যাংক, আইএমএফ সে কাজটি আগে সেরে ফেলেন।কৌতুকপ্রিয় মোল্লা মহাজনদের যেসব বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেছেন তার বাস্তব চিত্র এরা । যদিও বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ তারা নিজেদের মহাজন হিসেবে মানতে নারাজ।
বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী এ বিরল প্রথাহীন অর্থনীতিবিদ মহাজনদের কাছ থেকে অর্থ নেওয়া অর্থহীন,তা তার চমকপ্রদ মাংস চুরির ঘটনায় তুলে ধরলেন।”একবার মোল্লা বাজার থেকে এক কেজি ভাল মানের মাংস নিয়ে এসে স্ত্রীকে রান্না করতে দিলেন।কিন্তু রান্না করা মাংস স্ত্রীর কাছে এত ভাল লাগল যে পুরোটা তিনি খেয়ে ফেললেন।যখন মোল্লা খেতে বসে মাংস চাইলেন, স্ত্রী তখন বলল বিড়াল সব মাংস খেয়ে ফেলেছে।মোল্লা তৎক্ষণাৎ পাশে থাকে বিড়ালটি মাপলেন।দেখলেন বিড়ালটির ওজন এক কেজি, তখন মোল্লা বললেন এটি যদি সে বিড়াল হয় তবে মাংস কোথায়? আর এটিই যদি সে মাংস হয় তাহলে বিড়াল কোথায়?’আজ আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন অনেকটা এই গল্পের মতো।গণিত ও পরিসংখ্যানিক উন্নয়ন শুধুই কাগজে কলমে। বাস্তব অবস্থার তেমন কোন পরিবর্তন নেই। তাহলে প্রতি বছর এত এত প্রবৃদ্ধি? আমারও প্রশ্ন, এটা যদি প্রবৃদ্ধি হয় তবে আগের টা কই, আর এটা যদি আগেরটা হয় তবে প্রবৃদ্ধি কোথায়।।
ছবিসূত্রঃ-নেট
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৩৪
মুসাফির নামা বলেছেন: সত্যই সে রকম জ্ঞানী ছিলেন।
২| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:২৯
মহা সমন্বয় বলেছেন: আমি মোল্লা নাসির উদ্দিন কে ভোট দিলাম, কারণ তার ছিল বাস্তব ভিত্তিক জ্ঞান। আর এটাও জানি শুধু পুঁথিগত বিদ্যায় সবসময় কাজ হয় না সাথে বাস্তবের ছোঁয়া পেলেই হয়ে উঠে প্রকৃত বিদ্যা।
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৫০
মুসাফির নামা বলেছেন: পুঁথিগত বিদ্যা আর পরহস্তে ধন, নহে বিদ্যা নহে ধন ,হলে প্রয়োজন।
৩| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৪০
মুসাফির নামা বলেছেন: পুঁথিগত বিদ্যা আর পরহস্তে ধন, নহে বিদ্যা নহে ধন ,হলে প্রয়োজন।
৪| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:১৭
কবি এবং হিমু বলেছেন: লেখাটা পড়ে ভালই লাগলো।
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৪৬
মুসাফির নামা বলেছেন: ধন্যবাদ।
৫| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৩
কামরুল হাসান বলেছেন: চমৎকার নাসির উদ্দিন।
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৬
মুসাফির নামা বলেছেন: আমিও তাই মনে করি।
©somewhere in net ltd.
১| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:২৫
দরবেশমুসাফির বলেছেন: মোল্লার পাশে দন্ডায়মান লোকটি তাজ্জব বনে গেলেন এবং বললেন সে তো এখনও বালতিটি ভাঙ্গেনি।মোল্লার বললেন ভাঙ্গার পর থাপ্পড় দিয়ে কোন লাভ আছে।বিশ্ব ব্যাংক, আইএমএফ সে কাজটি আগে সেরে ফেলেন।কৌতুকপ্রিয় মোল্লা মহাজনদের যেসব বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেছেন তার বাস্তব চিত্র এরা । যদিও বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ তারা নিজেদের মহাজন হিসেবে মানতে নারাজ।
হা হা হা। ভালো লিখেছেন। রম্য এবং বাস্তবিক।