নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নগণ্য একজন মানুষ। পছন্দ করি গল্পের বই পড়তে, রান্না করতে। খুব ইচ্ছে করে ঘুরে বেড়াতে। ইচ্ছে আছে সারা বাংলাদেশ চষে বেড়ানোর।
আমাদের চারপাশে কতশত বিচিত্র ঘটনা ঘটে কয়টার খবরই রাখতে পারি আমরা! তবে দেখার মত করে দেখতে পারলে অনেক অভিজ্ঞতা লাভ হয়, উপভোগ করা যায় অনেক। চাকুরি জীবনের প্রথম পোস্টিং ছিল বাংলাদেশ-ভারতের সীমান্তবর্তী এক উপজেলায়। আমার ডিপার্টমেন্টের কাজ মূলত মহিলাদের নিয়ে, মহিলাদের জন্যে। অনেক গুলো দ্বায়িত্বের মাঝে অন্যতম একটি ছিল নারী নির্যাতন ও যৌতুকের কোন মামলা হলে আদালত থেকে আমাদের প্রতি নির্দেশনা আসে বাদীপক্ষের (এসকল মামলায় কনে পক্ষই থাকে বাদী পক্ষ) দাবি অনুযায়ী প্রদেয় যৌতুকের মালামাল বিবাদী পক্ষের বাড়ীতে আছে কিনা তা তদন্ত করে আদালতকে জানানো। এখানে পুলিশী সহায়তার দরকার হয় না, তবে বিবাদী পক্ষের স্বভাব প্রকৃতি বুঝে বাদীপক্ষ জানালে পুলিশী সহায়তার কথা উল্লেখ করা হয় এবং সে অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহন করা হ্য়। তদন্ত রিপোর্টের পরে আরেকবার আদালতের নির্দেশ আসে বাদীপক্ষের সেই মালামাল বিবাদীপক্ষের হেফাজত থেকে উদ্ধার করে বাদীপক্ষকে বুঝিয়ে দিতে। এসময় আবশ্যিকভাবে পুলিশী সহায়তার প্রয়োজন হয়।
মূল কথায় যাওয়ার পূর্বে এত ব্যাখ্যায় যেতে হল কারন আমি যেই স্মৃতিগুলো এখানে বলবো তার প্রতিটিই একই ধরনের মামলার।
যে হাহাকার এখনো কানে বাজে:
এই মামলার বাদিনীর বাবার বাড়ী থেকে প্রদেয় মালামাল উদ্ধার করতে বিবাদীর বাড়ীতে উপস্থিত হই পুলিশফোর্স নিয়ে। বিবাদী প্রবাসী তাই বিবাদীর ভাই কয়েকবার অফিসে যোগাযোগ করেছে আমরা মালামাল উদ্ধার করতে যাওয়ার আগে যাতে তাদের জানাই, তারা প্রস্তুত থাকবে। এটি আসলে ভুয়া কথা কেননা বিবাদীপক্ষ আগে থেকে জানলে বাড়ী তালা মেরে সরে যায় ফলে আদের হ্যরানীতে পড়তে হয়। সেকারনে আগে থেকে জানিয়ে যাওয়া হয় না। তবে যদি মনে হয় বিবাদীপক্ষ ঝামেলা করবে সেক্ষেত্রে আমরা খুবই অল্প সময়ের নোটিশে জনপ্রতিনিধিকে জানিয়ে রাখি যাতে ঝামেলা হলে তিনি উপস্থিত হন। যাক, স্মৃতিচারণ করটে গিয়ে অনেক বেশি বিস্তারিত বলছি মনে হয়।
যাহোক, বিবাদীর ভাই একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। কিন্তুর তার চাতুরি এবং ছোটলোকী দেখে মনটা বিষিয়ে ছিল। জেহেজনামা ধরে মালামাল শনাক্ত একেএকে সব বের করলাম। এখানে প্রাথমিক তদন্তের সময় বিবাদীর ভাই একটি চাতুরী করেছিল যা অনেকেই করে। তিনি তখন বলেছেন আলমারীর চাবি নাই তবে আলমারীতে যা মালামাল আছে তা বাদীর এবং তা নেওয়ার সময় দিয়ে দিবেন। মালামাল নেওয়ার দিন দেখা গেল আলমারীতে বাদিনীর শাড়ী কাপড়, কিন্তু তদন্তের সময় তা লিপিবদ্ধ করা যায়নি বলে আমরা জোর করতে পারছি না। কাপড় ছাড়াও বাদিনীর ভাইয়ের বিদেশ থেকে দেওয়া একটি কম্বল ছিল যা জেহেজনামায় উল্লেখ ছিল না ফলে সেটিও নিতে দেন নি তিনি যদিও বিবাদীর বৃদ্ধ মা দিতে চেয়েছিলেন। ভদ্র মহিলার কথায় বোঝা গেছিল দোষ তার ছেলের এবং এখনো বউকে ভালোবাসেন। শাড়ী এবং কম্বল যখন রেখে আসতে হচ্ছিল তখন বাদিনী চোখের পানি ফেলে হাহাকার করে বলছিল "ম্যাডাম ইগুমাল আমার, ইগু আমার"। পেশাগত দ্বায়িত্বের কাছে, কাগজের নির্দেশের কাছে আমার হাত পা বাঁধা ছিল ফলে আমি দিতে পারিনি অসহায় গরীব মেয়েটির ন্যায্য পাওনা। ফেরার পথে মনটা অসম্ভব রকম খারাপ ছিল, চোখে ভেসে উঠছিল অসহায় মেয়েটির কান্না। এখনো মাঝে মাঝে কানে বাজে সেই হাহাকার "ম্যাডাম ইগু আমার..." ।
যে মামলা আমার বিচার বিশ্লেষণ ক্ষমতা বাড়িয়েছে:
সাধারনত কোন মামলায় বাদী-বিবাদী থাকে স্বামী-স্ত্রী কিন্তু এই মামলায় ছিল ভিন্ন। এখানে স্বামী-স্ত্রী এক বিবাদী হল স্বামীর বাবা, বোন। রুনার (ছদ্মনাম) স্বামী প্রবাসী। বাবার বাড়ী বেড়াতে গেলে রুনার শ্বশুর ও ননদ মিলে পার্শ্ববর্তী উপজেলায় তাদের আত্নীয়র বাড়ীতে রুনার বাবার বাড়ী থেকে দেওয়া অনেক মালামাল পাঠিয়ে দেয়। তবে পরে বিচার শালিশ বসলে বলে এসব মালামাল নাকি ডাকাত এসে নিয়ে যায় (বাড়ীর ফার্নিচার ডাকাতি হয় আর আসেপাশের কেউ জানেনা এটি অবিশ্বাস্য কথা)। মিনা বেগম (ছদ্মনাম) এর বাড়ীতে মালামাল আছে বলে রুনা যে দাবী করে তার সত্যতা যাচাইয়ে মিনা বেগমের বাড়ীতে যাই। মিনা বেগমের বাড়ীতে রুনার বলে যে মালামাল তা স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে কাগজে সই দিয়ে মিনা বেগম নিজ বাড়ীতে রাখেন, সেখানে উল্লেখ থাকে চূড়ান্ত বিচারে যদি এই মালামাল রুনার বলে প্রমান হয় তবে মিনা বেগম তা ফেরত দিবেন। পুরো মামলাটি ছিল অনেক জটিল, আমি সংক্ষেপে এখানে তা উল্লেখ করার চেষ্টা করেছি।
একবার তদন্ত রিপোর্ট পাঠালে আদালত থেকে আবার নির্দেশনা আসে আবারো তদন্ত করে আমার যথাযথ মতামত প্রদানের জন্যে।
এবার অন্যভাবে এগিয়েছিলাম। মিনা বেগম মালামালগুলো তার বলে দাবী করেন কিন্তু প্রথমবার সেগুলো কেনার রিসিট দেখাতে পারেন নি এবং বক্সখাটের চাবিও দেখাতে পারেন নি বরং বলেছেন এগুলো তার ছেলে বিদেশে নিয়ে গেছেন (অবিশ্বাস্য কথা)। পরেরবার তিনি সেই রিসিট জোগাড় করেছেন বলে আমার অফিসে এসে দিয়ে যান। আমি তার সত্যতা যাচাইয়ে আমার স্টাফ দিয়ে ফার্নিচারের দোকানে পাঠাই।
ফার্নিচারের দোকানের রিসিট বিষয়টি ছিল পুরো সাজানো কারন, আমার স্টাফ অফিসে এসে পৌছানোর পূর্বেই মিনা বেগমের কাছে খবর যায় যে আমার অফিস থেকে ফার্নিচারের ব্যাপারে কেউ খোঁজ নিতে গিয়েছিল! ক্রেতাকে ফোন দিয়ে বিক্রেতার এই বিষয় জানানোর মানে বোঝাই যাচ্ছে এখানে ঘাপলা আছে।
এই ঘটনার পরে একদিন ভোরবেলা দেখি মিনা বেগম আমার বাসায় হাজির হয়েছে আমাকে বুঝাতে যে মালামালগুলো তার ছেলের কেনা। আমি যাতে তার মত গরীব অসহায় মহিলার দিক বিবেচনা করি। প্রথমে উনাকে বাসায় ঢুকতে না দিয়ে অফিসে এসে কথা বলার জন্যে বলেছিলাম কিন্তু একপ্রকার জোর করেই বাসায় ঢুকে। কথা শেষের এক পর্যায়ে যখন উনি ব্যাগ থেকে নেসক্যাফের এক কৌটা কফি বের করেন তখন বুঝতে পারি কেন অফিসে না গিয়ে বাসায় এসেছেন! কঠিন গলায় কফি ব্যাগে ঢুকাতে বললে মিনাবেগম একটু থতমত খেয়ে গিয়ে বলেন "আফনে আমরার কুটুমের লাখান, আমরা কুটুম বাড়ীত খালি আতো যাই না..."। মেজাজটা টাং করে গরম হয়ে যায় এবং আরো নিশ্চিত হলাম অপরাধী পক্ষ উনিই। তখন আরো কঠিন হয়ে কফি উনাকে ব্যাগ থেকে বের করতে না দিয়ে বাসা থেকে এক প্রকার জোর করে বের করলাম।
মনে মনে ঠিক করলাম এই মামলার চূড়ান্ত এবং সঠিক প্রতিবেদন দিতেই হবে। মালামাল যে রুনার এরপক্ষে আরো জোরালো প্রমান এর মাঝে আমার হাতে এলো কিন্তু জনপ্রতিনিধিকে ডাকলে তিনি সবার সামনে কোন কথা বলতে অস্বীকৃতি দেন এবং একা এসে আমার কাছে স্বীকার করেন যে এই মালামাল আসলেই রুনার।
সকল তথ্যপ্রমানের ভিত্তিতে পরে আমার সুষ্পষ্ট মতামত আদালতে জানিয়ে রিপোর্ট দিয়েছিলাম।
এই মামলার কাজটি একজন নবীন অফিসার হিসেবে আমার অভিজ্ঞতাকে সমৃদ্ধ করেছিল যা আমার অনেক দিন মনে থাকবে।
যে কাজ করতে গিয়ে হুমকির মুখোমুখি হয়েছিলাম:
এই মামলের প্রাথমিক তদন্তের কাজ আমি জয়েন করার পূর্বে হয়েছিল যা করেছিল আমার অফিস স্টাফরা। ওরাই বলেছিল প্রতিপক্ষ খুব ঝামেলাবাজ এবং প্রভাবশালী তাই যাতে শক্ত পুলিশফোর্স নেই। ওসি সাহেবকে এটা জানিয়েছিলাম। সাধারনত আমাদের সাথে দুইজন নিয়ে যাই সেদিন ওসি সাহেব রাফ এন্ড টাফ টাইপ দুইজন সহ মোট ৫ জনের ফোর্স দিয়েছিলেন। এতবড় ফোর্স আমি আশা করিনি আর এটা দেখেই বিবাদী পক্ষের আঁতে লাগে। বিবাদী আমেরিকা প্রবাসী বড় পয়সাওয়ালা এবং এলাকার বেশ প্রভাবশালী। বাড়ীতে কেবল তার মা ছিল। পরে আত্নীয়রা আসে। প্রথমে এত পুলিশ দেখে তারা প্রতিবাদ করেন। আদালতের নির্দেশে এসেছি বললে তারা মেয়রের দোহাই দেন এবং বলেন মেয়র তাদের গার্জেন, তিনি আসলে যাতে কথা বলে তারপর মালামাল নেই। এরমাঝে মেয়র মহোদয় না আসলে তারাই আবার বলেন মালামাল নিয়ে যেতে এবং সহায়তা করেন। কাজ প্রায় শেষ দিকে, এর মাঝে আমেরিকা থেকে বিবাদী মেয়র মহোদয়ের সাথে কথা বলে আমাকে ফোন দেওয়ায় আমি যাতে পুলিশ নিয়ে ফিরে যাই, উনাদের সম্মানহানি হচ্ছে এতে। আমি মেয়র মহোদয়কে জানালাম আমার মালামাল সব নেওয়া শেষ। অত্যন্ত গরম হয়ে আমাকে বলেছিলেন, যার বাড়ী গিয়েছি তার সামাজিক মর্যাদা সম্পর্কে ধারনা নিয়ে যাইনি কেন। আমি অত্যন্ত নিরুপায় ভঙ্গীতে বলেছিলাম, আমি আদালতের নির্দেশ পালনের এসেছি মাত্র, আমার প্রতি করা আদেশনামায় কারো সামাজিক মর্যাদার কথা উল্লেখ ছিল না তাই সেটা বোঝা আমার পক্ষে সম্ভব না।
উনি আমাকে হুমকীর স্বরে বলেছিলেন ঝামেলায় পড়লে তখন পুলিশ প্রশাসন পাশে পাবেন না এবং আরো কিছু!
পুলিশ সদস্য সহ উপস্থিত সবাই হঠাৎ এই ঘটনায় স্তম্ভিত হয়ে গেছিল। বাদিপক্ষের মালামাল তাদের বুঝিয়ে দিয়ে বিদায় করে অফিসে চলে আসি।
মনটা অত্যন্ত বিষিয়েছিল। ভাবলাম বিষয়টি ইউএনও স্যারকে জানিয়ে রাখা জরুরী। জানাতে গিয়ে শুনলাম আমি আর কী জানাবো তার আগেই মেয়র মহোদয় উনাকে জানিয়ে সরি বলেছেন। অফিসে সবার সামনে পাওয়ার দেখাতে গিয়ে নাকি আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করেছেন। কথাটি শুনে হাসি পেয়েছিল রাগও লেগেছিল এই ভেবে যে দোষ করল কার কাছে আর সরি বলল কাকে!
এর বেশ কয়েক মাস করে অব্শ্য উনার অফিসের হলরুমে আমার বেশ বর একটি প্রোগ্রাম হয় এবং উনি আন্তরিকতার সাথেই তাতে সাহায্য করেছিলেন (তবে মন থেকে উনার সেই হুমকী ধামকি ভুলিনি)।
************************************
সিলেট এবং চট্টগ্রামে যৌতুকের এমন বাজে প্রথা যার ফলে এখানে মেয়ে জন্ম নেওয়া মানে মা-বাবার জন্যে অভিশাপ। মেয়ে বিয়ে দিলে এসব এলাকার মেয়ের বাবা-ভাই আরো বেশি চাপে থাকেন এবং যে চাপ সারাজীবনব্যপী চলতে থাকে! যৌতুক প্রথার বিরুদ্ধে এত এত সচেতনতা এত কঠোর আইন তারপরেও কেন কমছে না, আমরা আসলেই কি চাইনা এই অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে!
২৪ শে আগস্ট, ২০২১ রাত ১০:৫৭
নীল-দর্পণ বলেছেন: মামলা সংক্রান্ত এই ব্যাপারগুলো সব জেলায় একরকম হয় না কারন সব জেলায় তো যৌতুক বলেন আর উপঢৌকন বলে সেটা দেওয়ার সময় কোন কাগজে ডকুমেন্ট রাখে না।
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্যে। ভালো থাকবেন।
২| ২৪ শে আগস্ট, ২০২১ রাত ১১:০৮
শায়মা বলেছেন: নীলুমনি.....
বাদী বিবাদী বুঝতে বুঝতে মাথা ঘুরে গেলো।
শুধু বুঝলাম শাড়ি । মেয়েদের কতই প্রিয়। যেমন তোমার।
আসলেই নিজেকে ঐ অসহায় মেয়েদের সাথে তুলনা করলে বুঝা যায়.....
আসলেই কি বাংলাদেশের একটা মেয়েও অসহায় না???
২৪ শে আগস্ট, ২০২১ রাত ১১:২৯
নীল-দর্পণ বলেছেন: বাদী হল মামলাকারী, বিবাদী হল আসামী। আমারো মাথা ঘুরে যেতো প্রথম প্রথম। সত্যিই শাড়ী অনেক প্রিয় অনেক রকম স্মৃতি জড়িয়ে থাকে একেকটা শাড়ীর সাথে।
আমার মনে হয় বাংলাদেশের সব মেয়েই অসহায় কোন না কোন পরিস্থিতিতে।
৩| ২৪ শে আগস্ট, ২০২১ রাত ১১:৩৫
খায়রুল আহসান বলেছেন: কর্মক্ষেত্রের অভিজ্ঞতা নিয়ে খুব সুন্দর পোস্ট লিখেছেন। সাহস করে সত্যের পথে ছিলেন, অসহায় নারীর সাহায্যে এসেছিলেন, এজন্য আপনাকে অভিনন্দন!
তবে "ম্যাডাম ইগু আমার" আর্তনাদটা যেন নিজ কানে শুনতে পেলাম, এবং আপনার অসহায়ত্বে ব্যথিত বোধ করলাম।
পোস্টে ভাললাগা + +।
২৪ শে আগস্ট, ২০২১ রাত ১১:৪৭
নীল-দর্পণ বলেছেন: সেই দিনটা স্পষ্ট মনে আছে আমার এখনো। হেমন্তের পড়ন্ত বিকেল ছিল। মাঠ ভর্তি সোনালী ধান যেন মনে হচ্ছিল তরল সোনা ঢেলে দেওয়া হয়েছে মাঠে। এত সুন্দর সোনালী মাঠ আমার জীবনে এর আগে দেখিনি কিন্তু ঐ সুন্দর দৃশ্যটা অসহায় মেয়েটির হাহাকারে মলিন হয়েছিল।
লেখার সময় ভাবছিলাম বোরিং লাগবে হয়ত পাঠকের কাছে। আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন।
৪| ২৪ শে আগস্ট, ২০২১ রাত ১১:৩৮
শায়মা বলেছেন: এই কারণেই আমি সুযোগ পেলেই শিখিয়ে দিতাম সবচেয়ে অসহায় মেয়েটাও
নো পাত্তা টু সহায় অসহায়..... লাত্থি মারো ভয় না পেয়ে.....
যদিও সহজ নহে ......
২৪ শে আগস্ট, ২০২১ রাত ১১:৪৮
নীল-দর্পণ বলেছেন: ……অনেক অনেক কঠিন…
৫| ২৫ শে আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১:০৮
ফুয়াদের বাপ বলেছেন: অনেক বিচিত্র-তিক্ত অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে আপনার কর্মজীবন অতিবাহিত হচ্ছে। তবে যে কাজটি করে যাচ্ছে তা অনেক দামী। অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর মতো পবিত্র কাজ আর হয়না। দোয়া করি অসহায়ের সহায় হয়ে আপনি সফল হোন প্রতিটি পদক্ষেপে।
এমন মানবিক গল্পগুলো আরো শেয়ার করার অনুরোধ রইলো।
২৫ শে আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৩:৫১
নীল-দর্পণ বলেছেন: আপনাদের দোয়াই আমার অনুপ্রেরনা।
ইনশাআল্লাহ চেষ্টা করবো শেয়ার করার জন্যে।
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন। আল্লাহ সুস্থ রাখুন আপনাকে ও আপনার পরিবারকে।
৬| ২৫ শে আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১:১০
অপু তানভীর বলেছেন: চমৎকার স্মৃতিচারণ ।
এই রকম ভয়ংকর পরিস্থিতি আমাদের দেশে, জানা ছিল না ।
২৫ শে আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৩:৫৩
নীল-দর্পণ বলেছেন: আমাদের দেশের আনাচে কানাচে যে কত ভয়ংকর রকম পরিস্থিতি আছে তার কিছুটা বুঝতে পেরেছি মাঠপর্যায়ে কাজ করে এসে।আর মাঠ পর্যায়ে কাজে যে কত রিস্ক, কত রকম চাপ থাকে সেটাও জানা হতো না নিজে না আসলে!
৭| ২৫ শে আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৫:১৮
আহমেদ জী এস বলেছেন: নীল-দর্পণ,
আপনার অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা গেলো গ্রামগঞ্জের মানুষজন কতো জটিল ও কুটিল। আর যৌতুকের মালামাল যে ফিরে পাওয়া যায় সে কথাও এই প্রথম জানলুম আপনার লেখা থেকে।
আপনার চাকুরী জীবনের স্মৃতিগুলো আসলেই তিক্ত অভিজ্ঞতার এবং দুঃসাহসিক।
২৫ শে আগস্ট, ২০২১ রাত ৮:০৯
নীল-দর্পণ বলেছেন: বাংলাদেশের অন্য কোন জেলায় পাওয়া যায় কিনা জানি না এখনো তবে সিলেট জেলায় যৌতুকের মালামাল পাওয়া যায়। কারন কনের বাবার বাড়ী থেকে দা, বটি, বদনা, বালতি, পাতিল ধরার লুসনি থেকে বড় ফার্নিচার সব কিছু দিয়ে দেয় এবং এসকল জিনিসের লিস্ট একটা কাগজে লেখা থাকে যেটাকে 'জেহেজনামা' বলা হয়। এই জেহেজনামায় ছেলে পক্ষ থেকে বুঝিয়া পাইলাম বলে স্বাক্ষর করে নেওয়া হয় অর্থাৎ কাগজকলমে প্রমান রয়ে গেল। যখন বনিবনা না হয় তখন এই জেহেজনামা দিয়ে মামলা করে কনেপক্ষ।
আমি এমনো মালামাল উদ্ধার করে দিয়েছি যে ঘর থেকে বের করে গাড়ীতে তুলতে তুলতে ঝরঝর করে ভেংগে পরছে! হয়ত এসব নিয়ে ফেলেই দিতে হবে, তাও তারা ফেরত নিবে। প্রতিটা অভিযানের সময় আমার কলিজা থেকে রক্ত ক্ষরণ হতো এই ভেবে যে, সংসারটাই যেখানে টিকল না সেখানে মালামাল দিয়ে কী হবে। একটা সংসার সাজাতে আমাদের বছরের পর বছর লেগে যায় আর সেখানে একটা বাবা সমস্ত কিছু দিয়ে মেয়েকে স্বামীর বাড়ী পাঠান তো এসব ফেরত নেবার জন্যে না!
৮| ২৬ শে আগস্ট, ২০২১ সকাল ১০:৩৯
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: জীবনের অনেক অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন । ধন্যবাদ।
যৌতুক প্রথা পুরোপুরি যাবেনা আমাদের সমাজ থেকে যদি আমরা মন থেকে ভাল না হই।
এখন নতুন ধান্দা বের হয়েছে। ছেলে পক্ষ বিয়েতে বলে আমাদের কিছু চাওয়া-পাওয়া নাই কিন্তু তারা সবই আশা করে এবং তাদের মন মত টাকা/ফার্নিচার/সোনা গহনা না পেলে অশান্তি সৃষ্টি করে।
২৬ শে আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৪:৫৪
নীল-দর্পণ বলেছেন: এটা একটা চরম বাস্তবতা বলেছেন, আগে চেয়ে নিতো এবং সেটা অল্প কিছু ছিল। এখন মুখে চায় না কিন্তু আশা করে থাকে অনেক, না দিলে তখন চলে মানসিক নির্যাতন। ক্ষেত্র বিশেষে শারিরীক ও চলে।
৯| ২৬ শে আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১:২৬
ফয়সাল রকি বলেছেন: গ্রামাঞ্চলে এখনো এই প্রথাগুলো চালু আছে। খুবই দুঃখজনক।
আপনার অভিজ্ঞতাগুলো ভয়ানক।
পোষ্টে +++
২৬ শে আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৪:৫৬
নীল-দর্পণ বলেছেন: প্রচলিত প্রথার জালে আমরা আটকা।
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন মন্তব্যের জন্যে।
১০| ২৬ শে আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৫:১১
মেহবুবা বলেছেন: অনেকদিন পরে এসে পুষিয়ে দিলে এমন একটা বিষয় ছবির মত দেখিয়ে দিলে।
তোমার কর্মক্ষেত্র যে খুব আরামদায়ক নয় বুঝতে পারছি। তবে তোমার ভূমিকায় অনেকের উপকার হবে।
গ্রামের চিত্র এসব, শহরেও হয় তবে সে মঞ্চ আলাদাভাবে সাজানো শহুরে কায়দায় ।
তোমার অনেক জায়গায় যে অভিজ্ঞতা হবে সেটি লিখে দিও।
মেয়েদের শিক্ষিত স্বাবলম্বী হবার কোন বিকল্প নেই। মানসিকতার পরিবর্তন দরকার অনেক মেয়েদের।
২৬ শে আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৫:৫৬
নীল-দর্পণ বলেছেন: একদম ঠিক বলেছেন শহরেও এসব হয় আলাদাভাবে শহুরে কায়দায় সে মঞ্চ সাজানো থাকে। কতশত শিক্ষিত মেয়েকেও এসব নির্যাতনের স্বীকার হতে হচ্ছে।
১১| ২৭ শে আগস্ট, ২০২১ রাত ৯:০০
জুন বলেছেন: আমাদের সমাজের এই ভয়ংকর প্রথা শুধু চিটাগাং আর সিলেটেই সীমাবদ্ধ নয় নীল-দর্পন এটা ক্যান্সারের মত আমাদের দেশের প্রতিটি অঞ্চলেই বিস্তৃত । আমার ড্রাইভার মেয়ে বিয়ে দিবে, ছেলের বাড়ি থেকে খাট আলমারি, ক্রোকারিজ রাখার কেবিনেট ড্রেসিং টেবিল এই চারটি ফার্নিচার আর স্বর্নের হার চেয়েছে । ড্রাইভারের মাথা খারাপের অবস্থা বর যাত্রী আসবে ১০০ জন । তাঁর নিজের আত্মীয়ও আছে । বল্লো এগুলো দিতেই হবে নইলে আমার মেয়েকে হয়তো অনেক কথা শুনতে হবে । কি করুন অবস্থা । ভাবতেও ভয় লাগে ।
ভালোলাগলো এই বিষয় নীয়ে আপনার লেখাটি ।
+
২৭ শে আগস্ট, ২০২১ রাত ৯:৫৯
নীল-দর্পণ বলেছেন: মেয়ের জন্মের খবর শুনে যে মানুষ মন খারাপ করে আসলে এসব কারনেই খুশি হওয়ার চাইতে দুশ্চিন্তাই হয়। কাগজে কলমে আর সভা সেমিনারেই অবস্থার উন্নতি হয়েছে কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন।
১২| ২৭ শে আগস্ট, ২০২১ রাত ৯:৪৬
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: মানুষ এখন এতো প্যাচের যে কাউকে বিশ্বাস করা যায় না। আপনার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা লব্ধ পোস্টটি পড়লাম। স্বার্থান্বেষী এমন সংকীর্ণ মনের মানুষদেরকে সামনাসামনি দেখে সত্যিই খুব খারাপ লাগে। কিন্তু কি আর করার....
২৭ শে আগস্ট, ২০২১ রাত ১০:০৩
নীল-দর্পণ বলেছেন: আসলে করার কিছুই নাই তেমন। আমার প্রতিবেশী ভাইকে আমার স্বামী একদিন বলছিলেন যে ভাই আপনারা যে এসব নেন, এগুলাতো যৌতুক। উনি বললেন, না এসব তো মেয়ের জন্যে মেয়ের বাবা খুশি হয়ে দেন!!
চিন্তা করা যায় ফারনিচার থেকে শুরু করে পাতিল ধরার লুসনী, বদনাটা পর্যন্ত দেয়… এসব নাকি খুশি হয়ে দেয় মেয়ের বাবা!
১৩| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:০৩
হাসান রাজু বলেছেন: সিলেটে একজন সাধারন মা বাবা ও চান যে তার মেয়ের সাথে অন্তত বেড রুমের আসবাব আর হাড়ি পাতিল উপহার হিসেবে দিতে।(ট্র্যাডিশন বলা চলে)। বড় পক্ষ যদি সেটা না নিতে চান তবে অপমানবোধ করেন। বর পক্ষ যতক্ষণ না চেয়ে কিছু নিচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত এটা যৌতুক না বরং সংস্কৃতির অংশ বলা চলে(!)
কিন্তু মানুষের নাচাওয়ার ধরন থেকেও বুঝা যায় সে আসলে কত কিছুইনা চাইছে।
০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ৮:০৭
নীল-দর্পণ বলেছেন: বিষয়টা আসলে এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে চাইতে হবে কেন! বাবা-মা মেয়ের সাথে এসব তো দিবেন ই তাদের মেয়ের সংসারের জন্যে!
১৪| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১:৪৮
মলাসইলমুইনা বলেছেন: বন্ধু,
খুবই চমৎকার একটা লেখা । নিজের চাকুরীর অভিজ্ঞতার একটা অসাধারণ বর্ণনা দিয়েছেন পোস্টে ।আর এই বর্ণনাগুলো নিজেদের দেশের অর্থ সামাজিক অবস্থারই প্রতিফলন দেখে আলোর ভালো লাগলো। আপনার এই লেখাটা ধীরাজ ভট্টাচার্য্যের বিখ্যাত "যখন পুলিশ ছিলাম" বইটার মতই লাগলো পড়তে। আপনি আপনার এই অভিজ্ঞতাগুলো ডিটেইলস লিখে রাখুন এখন যাতে ভুলে না যান। এক সময় এই অভিজ্ঞতাগুলো এক সাথে করে একটা বইও বের করার কথা মাথায় রাখুন। আবারো বলি, অনেক অনেক ভালোলেগেছে আপনার এই লেখাটা ।
০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:১৮
নীল-দর্পণ বলেছেন: বন্ধু, চেষ্টা করবো অভিজ্ঞতাগুলো লিখে রাখতে। জেনে ভালো লেগেছে যে আমার লেখাটা ভালো লেগেছে। আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি সময় করে পড়ার জন্যে। ভালো থাকবেন, শুভকামনা নিরন্তর।
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে আগস্ট, ২০২১ রাত ১০:৫৩
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: এই সব বিষয়ে ধারণা ছিল না। আপনার অভিজ্ঞতা থেকে অনেক কিছু জানলাম। ধন্যবাদ।