নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজের পরিচয় লেখার মত বিখ্যাত বা বিশেষ কেউ নই। অতি সাধারণের একজন আমি। লিখতে ভাল লাগে। কিন্তু লেখক হয়ে উঠতে পারি নি। তবে এই ব্লগে আসা সে চেষ্টাটা অব্যাহত রাখার উদ্দেশ্য নয়। মনে হল ভাবনাগুলো একটু সশব্দে ভাবি।
ছেলেবেলায় আমাদের শেখানো হয়েছে, বিজয় দিবস হলো আনন্দ দিবস। আমরা মুক্তিযুদ্ধ দেখি নি। আমাদের জানানো হয়েছে, নয় নয়টা মাস যুদ্ধ করবার পরে ডিসেম্বর মাসের ১৬ তারিখে পাকিস্তান পরাজয় মেনে নিয়ে আত্মসমর্পণ করেছিল। কিন্তু ততদিনে তিরিশ লক্ষ মানুষকে তারা মেরে ফেলেছে। তিন লক্ষ নারীকে ধর্ষণ করেছে। আমরা পাকিস্তানিদের ঘৃণা করতে করতে বেড়ে উঠেছি।
পাকিস্তানিদের সঙ্গে সঙ্গে এক শ্রেণীর বাঙালিকেও আমরা ঘৃণা করতে শিখেছি। ওই তিরিশ লক্ষ আর তিন লক্ষ সংখ্যাটি এরাই নির্মাণ করেছে। পাকিস্তানিরা জানত না, কারা পূর্ব পাকিস্তান নয়, স্বাধীন বাংলাদেশ চায়। প্রায় মরুভূমির পাকসেনারা ভাটির দেশের কিছুই চিনত না। জানত না, কোন্ নারীর পিতা, স্বামী বা সন্তান লাঠিসোটা নিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ আনতে যুদ্ধ করতে গেছে। যারা এই খবরগুলো পাকসেনাদের সরবরাহ করত, চিনিয়ে দেখিয়ে দিত, তাদের পরিচয় ‘রাজাকার’। আরও ছিল আল শামস্। আল বদর।
অনেক আগে এক বইয়ে পড়েছিলাম, রাজাকার বাহিনীর প্রতিষ্ঠাতা গোলাম আযম একবার পাকবাহিনীর কমান্ডারকে পরামর্শ দিয়েছিল, বাঙালিকে মারতে গুলি খরচ করার কি দরকার! গুলিরও তো দাম আছে। বেয়নেট দিয়ে মারলেই পয়সা বেঁচে যায়।
বাঙালির প্রাণ একটা গুলির দামের চেয়েও কম!
প্রথম দিকে একজন রাজাকারের মাসিক বেতন ছিল ৯০ টাকা। ১ ডিসেম্বর থেকে সেটা বাড়িয়ে একজন রাজাকার সদস্যর বেতন মাসে ১২০ টাকা, রাজাকার প্লাটুন কমান্ডারের ১৮০ টাকা এবং রাজাকার কোম্পানি কমান্ডারের ৩০০ টাকা বেতন নির্ধারণ করা হয়। ('রাজাকার ছিল অর্ধলক্ষাধিক', আজিজুল পারভেজ, দৈনিক কালের কণ্ঠ, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯)
১৯৭১ সালের ৯০ টাকার মান হিসেব করলে এখন কত টাকা হবে? ১০ হাজার? ২০ হাজার? কিংবা ৩০? ৫০? কত? এই টাকা বেতন পেতে নিজের পরিচিত-অপরিচিত-আত্মীয়-স্বজন-প্রতিবেশী যে কাউকেই পাকিস্তানিদের হাতে তুলে দিতে ওই লোকগুলোর এতটুকু বুক কাঁপে নি, হাত কাঁপে নি, মুখ কাঁপে নি! রোজ যদি একজনকেও ধরিয়ে দিত তাহলে একেকটি প্রাণের মূল্য তাদের কাছে ৩ টাকা! ভাবা যায়! অদ্ভুত না!
দেশ স্বাধীন হবার পর আরও একটা অদ্ভুত ব্যাপার ঘটল। যারা দেশকে স্বাধীন করতে যুদ্ধ করল, তারা রাষ্ট্রর কাছে উপেক্ষিত হতে লাগল। সত্য-মিথ্যা জানি না, আমরা শুনেছি, সেসময় অনেক মুক্তিযোদ্ধারা নাকি ছিনতাই পর্যন্ত করত। সুস্থধারার চলচ্চিত্রকে সমাজের প্রতিবিম্ব বলা হয়। সে হিসেব করলেও সে সময়ে খান আতাউর রহমানের ‘আবার তোরা মানুষ হ’ চলচ্চিত্রে অবশ্য এর সত্যতা মেলে। অপরদিকে দালাল আইনে সাজা পাওয়া রাজাকাররা সাধারণ ক্ষমার সুযোগ নিয়ে বিভিন্নভাবে রাষ্ট্রর পৃষ্ঠপোষকতা জোগাড় করে ফেলতে লাগল। এই সাধারণ ক্ষমা তাই ভীষণভাবে সমালোচিত। অথচ যারা সমালোচনা করেন তারা খবরও রাখেন না যে, ১৯৭৩ সালের ৩০ নভেম্বর দালাল আইনে আটক যেসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধীদের সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই তাদের জন্য ক্ষমা ঘোষণা করা হয়। এ ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক ৩৭ হাজারের অধিক ব্যক্তির ভেতর থেকে প্রায় ২৬ হাজার ছাড়া পায়। যেসব রাজাকার মানুষ হত্যা ও নারী ধর্ষণের মতো অপরাধ করেছে, তারা কোনোভাবেই ক্ষমার সাধারণ ক্ষমার যোগ্য নয়।
এই সাধারণ ক্ষমার বিষয়টি পরিষ্কার হওয়ার আগেই ক্ষমাদাতা সপরিবারে নিহত হলেন। তারপরের বাস্তবতাটি হলো, ১৯৭৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনের আওতায় ২,৮৮৪টি মামলা হয়েছিল। এসব মামলায় সাজা দেওয়া হয় ৭৫২ জনকে। এদের মধ্যে মৃত্যুদ-, যাবজ্জীবনসহ বিভিন্ন মেয়াদে কারাদ-প্রাপ্ত আসামি ছিল। জামায়াতে ইসলামীর সদস্যরা আধাসামরিক বাহিনী শান্তি কমিটি, রাজাকার ও আলবদর গঠনে নেতৃত্ব দিয়েছিল। ১৯৭৫ সালের ৩১ অক্টোবর দালাল আইন বাতিল করার পর থেকে সাজাপ্রাপ্ত আসামিদেরও কারাগার থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এবং তখনই বাংলাদেশ না চাওয়া রাজাকাররা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ রাষ্ট্রর পৃষ্ঠপোষকতা পেতে শুরু করল। ১৯৭৭ সালে জেনারেল জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এলে জামায়াতের ওপর থেকে সরিয়ে তাদের বৈধ করা হলো। রাজাকার বাহিনীর প্রতিষ্ঠাতা গোলাম আযমকে বাংলাদেশে প্রবেশাধিকার দেওয়া হলো। আর বাংলাদেশের মানচিত্র নির্মাণ করা মুক্তিযোদ্ধাদের বাস্তবতা তখন পূর্ব পাকিস্তানের সময় থেকেও মানবেতর হয়ে উঠল। অবস্থা এতটাই খারাপ হতে লাগল যে হতাশ হয়ে অনেক মুক্তিযোদ্ধাই ভাবতে শুরু করেছিলেন, 'দেশকে স্বাধীন করা তাদের ভুল সিদ্ধান্ত ছিল।'
ওদিকে রাষ্ট্র তখন অস্থিতিশীল। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে রাজাকাররা শক্তিশালী হতে লাগল। অবশেষে ক্ষমতা কুক্ষিগত করলেন স্বৈরশাসক এরশাদ। আর এরশাদ এসে রাজাকারদের বাড়ি দিল, গাড়ি দিল, সে গাড়িতে বাংলাদেশের পতাকাও লাগিয়ে দিল। রাজাকাররা সে গাড়িতে চেপে পতপত করে পতাকা ওড়াতে ওড়াতে মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর পথের ধুলো উড়িয়ে প্রবল বেগে ধাবিত হয় জাতীয় সংসদের দিকে। জাতীয় সংসদে বসে এই বাংলাদেশ না চাওয়া রাজাকাররা বাংলাদেশ নির্মাতা আর বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্য নির্ধারণ করতে লাগল!
বাংলাদেশকে স্বাধীন করতে মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম করতে হয়েছিল নয়টি মাস। আর স্বাধীন বাংলাদেশকে কুক্ষিগত করে রাখা স্বৈরাচার এরশাদ-মুক্ত করতে আন্দোলন আর প্রাণ বিসর্জন করতে হলো নয় নয়টা বছর! এই নয় বছরে কত কত প্রাণের ক্ষয় যে হলো! আমরা যারা নব্বইয়ে এরশাদের পতনে আনন্দ করেছিলাম, মুক্তিযুদ্ধ দেখা, মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া মানুষেরা সে আনন্দকে ’৭১-এর বিজয়ের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। আর কি অদ্ভুতভাবেই না সেটাও ডিসেম্বর মাসই ছিল! ১৬ ডিসেম্বর যেমন বিজয় দিবস, তেমনি ৫ ডিসেম্বর স্বৈরাচার পতন দিবস।
একটা উৎসব উৎসব আমেজে নতুন করে বাংলাদেশ নির্মাণ করতে প্রস্তুতি নেওয়া হতে লাগল। ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের পর ওই প্রথম টিএসসির রাজপথে আনুষ্ঠানিকভাবে সিনেমা হলের মতো বিশাল পর্দায় বঙ্গবন্ধুর সাত মার্চের ভাষণের চলচ্চিত্রটি প্রদর্শিত হয়েছিল। দেখানো হয়েছিল তারেক মাসুদের ‘মুক্তির গান’ আর এমনি আরও চলচ্চিত্র। সে এক অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতা। আমরা অসম্ভব রকম আপ্লুত হয়েছিলাম। পরের বছর নির্বাচন হলো সংসদীয় গণতন্ত্রে। কিন্তু কাগজে কলমে সংসদীয় গণতন্ত্র এলেও এল না বাস্তবতায়। কখনো আলোর মুখ দেখল না তিন জোটের রূপরেখা। মনে আছে, ’৯৩ সালের এক বিকেলে আপার বাসার ছাদে হাঁটাহাঁটি করার সময় দেখেছিলাম, কয়েক বাড়ি পরের এক বাড়িতে অনেকগুলো রাগী ছেলে খুব রাগ নিয়ে ঢুকে পড়ল। ও বাড়ির একটা ছেলের ওপর তাদের খুব রাগ। রাগ প্রকাশ করতে ছেলেটাকে মারধোর করতে করতে বাড়ির বাইরে নিয়ে গিয়েছিল বিচার করবে বলে। অথচ সরকারদলীয় যুব সংগঠনের সদস্য হয়েও ছেলেগুলোর দেশের প্রচলিত বিচার ব্যবস্থায় আস্থা নেই কেন সেটি আজও আমার বোধগম্য নয়। পরের বছর ঠিক ওই ছাদে দাঁড়িয়েই দেখি তিন চারটে ছেলে কুরবানি করবার প্রস্তুতি নিয়ে আপার বাড়ির নিচতলায় চলে এসেছে! কুরবানির জন্যে আপার ভাড়াটের এক ছেলেকে তাদের পছন্দ। কুরবানির সকল প্রস্তুতি মোটামুটি স¤পন্ন হলেও তারা সফল হতে পারে নি। ছেলেগুলো সেদিন মন খারাপ করে ফিরে গিয়েছিল।
খুব অচিরেই দেশের পত্র-পত্রিকা আমাদের জানিয়ে দিল দেশ ও রাষ্ট্র যারা পরিচালনা করছেন, তারা ব্যর্থ ও স্বেচ্ছাচারী। সংসদীয় গণতন্ত্রর সংসদ গেল অচল হয়ে। এরপর বাংলাদেশের নদীগুলোয় গড়িয়ে গেল বিলিয়ন বিলিয়ন গ্যালন জল। বাংলাদেশও অনেক পরীক্ষা দিতে দিতে আজকের অবস্থানে। কিন্তু কেমন আজকের এই অবস্থানটি?
ক'দিন আগে এক বন্ধুর বাসায় গিয়েছি। কথায় কথায় মুক্তিযুদ্ধ ও যুদ্ধপরাধ প্রসঙ্গ এলে বন্ধুর ছোট ভাই বলল, ‘ভাই, পঞ্চাশ বছর আগে কি হয়েছে না হয়েছে এসব এখন বলে লাভ আছে? ওসব পুরান কাহিনী বাদ দেন। এখন দেশকে এগিয়ে নিতে গেলে কে মুক্তিযোদ্ধা আর কে রাজাকার -এসব ভাবলে চলে না।’ আমাকে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে বন্ধু আর তার ছোটভাইটির দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়েছিল।
বছর কয় আগে এক টেলিভিশন সাংবাদিক ২১ ফেব্রুয়ারিতে মানুষের ঢলে গিয়ে ক'জনের কাছে দিবসটি স¤পর্কে জানতে চেয়েছিলেন। কেউ বলছিল স্বাধীনতা দিবসে আনন্দ করতে বের হয়েছে। কেউ বলছিল বিজয় দিবস। কেউ ভাষা দিবস আখ্যায়িত করে তার সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জুড়ে দিয়েছে। ’৫২ কিংবা ’৭১ যে আসলে কি সেটা কেউই বলতে পারে নি। ভাষা দিবস, বিজয় দিবস আর স্বাধীনতা দিবসের পার্থক্য এদের কাছে দুর্বোধ্য। এরা নিরুপণ করতে পারে না সে পার্থক্য। কেননা, পাঠ্য পুস্তকে এরা বিশেষ এই দিনগুলোর কথা পাঠ করে কেবল পরীক্ষায় উৎরে যেতেই। তারপর আর মনে রাখে না। তাদের পাঠে লেখাপড়া ব্যাপারটা থাকলেও নেই শিক্ষিত হবার আকাঙ্ক্ষা।
আমাদের নির্মিত ব্যবস্থারা তাদের ভেতর সে আকাঙ্ক্ষা নির্মাণ করতে পারে নি। পারে না এখনো। না অভিভাবক, না শিক্ষক, কেউই তাদের দায়বদ্ধতা থেকে ছেলেমেয়েগুলোর চেতনা শাণিত করতে মুক্তিযুদ্ধের কথা বলেন না। বলতেন, যদি নিজেদের চেতনাতেও ধারণ করতেন। যদি নিজেদের চেতনায় ধারণ করতেন, তবে আজকের বিজয় দিবসটা শুধু আনন্দময় দিন হয়ে উঠতে পারত না। অনেকটা বেদনারও হতো। কেননা তারা তখন জানতেন, নয় মাসের যুদ্ধ শেষে সগীর আলী যখন বাড়ি ফিরল, দেখে তার কোলাহল মূখর বাড়িটা হয়ে গেছে পোড়োবাড়ি। কেউ নেই। সবাইকে মেরে ফেলেছে।
কিংবা আয়েশাকে যখন রোকেয়া হল থেকে ধরে পাকসেনাদের ক্যাম্পে নিয়ে গেল, অসংখ্যবার আত্মহত্যা করতে চেষ্টা করেছিল বলে পাকিস্তানিরা খুব বিরক্ত হয়ে আয়েশার সকল পোশাক খুলে নিয়েছিল। আয়েশা বিবস্ত্র থেকেছে মাসের পর মাস। আজকের বিজয় দিবসে পাকসেনাদের ক্যাম্প থেকে হঠাৎ মুক্তি পাওয়া আয়েশা কিংকর্তব্যবিমূঢ়। কোথায় যাবে সে জানে না।
অথবা তেরো বছরের মনোয়ারা স্কুল থেকে বাসায় ফিরে স্কুলের পোশাক পাল্টানোর সুযোগটাও পায় নি, তার আগেই ৯০ টাকা বেতন পাওয়া রাজাকার পাকসেনা পরিবেষ্টিত হয়ে এসে তুলে নিয়ে গেল মনেয়ারাকে। অনেক আগেই মরে যাওয়ার কথা থাকলেও কিভাবে যেন বেঁচে রইল মনোয়ারা। বিজয় দিবসে যখন মুক্ত হলো, মনোয়ারার চোখ আলো সইতে পারে না। বেঢপভাবে ফোলা পেটটা যে কেউ দেখলেই বুঝবে মনোয়ারা অন্তঃসত্ত্বা। কেবল মনোয়ারা নিজেই বোঝে না। পঞ্চাশ বছর আগে ঘটে যাওয়া এসব ঘটনা আমাদের গা কাঁপিয়ে দেয় এখনও। আমরা শিউড়ে উঠি।
বাংলাদেশের একটা প্রজন্ম আছে যাদের পরিচয় যুদ্ধশিশু, আমাদের এখনকার এই প্রজন্ম কি জানে এই খবর? যারা স্বাধীনতা দিবস আর বিজয় দিবস গুলিয়ে ফেলে, তাদের সেকথা জানবার কথা নয়। না জানার এ দায় ওদের নয়। আমাদেরই। আমরা যারা এই ছেলেমেয়েগুলোকে পাঠ্যবই না পড়িয়ে অডিও-ভিডিওর মতো রেকর্ড করাই, তাদের। তবু কথা থেকে যায়। ব্যক্তির স্বতন্ত্রতা বলেও তো কিছু থাকে, নাকি?
আমাদের ছেলেবেলায় শেখানো হয়েছে, বিজয় দিবস হলো আনন্দ দিবস। হয়ত আনন্দ দিবসই। কিন্তু এই আনন্দ দিনটি অর্জন করতে যে বেদনা প্রসব করতে হয়েছিল পুরো জাতিকে, সেটি আমাদের ওভাবে দেখানো হয় নি। হয় নি বলেই আমরা এ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধর কথা জানাতে শেখাতে কুন্ঠিত রয়ে গেছি। কিন্তু কেউ কেউ, যাদের জীবনের অনেককিছু নিয়ে নিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ, তারা বিজয় দিবসটাকে আনন্দ দিবস বলে নিতে পারেন কি? এই তিনি তো আমিও হতে পারতাম। অথবা হতে পারতেন আপনি নিজেও। কিংবা আপনারই কোনো স্বজন।
১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে মেরে ফেলা তিরিশ লক্ষে আপনার কোনো স্বজন নেই- সেটি কি আপনি নিশ্চিত? অথবা তিন লক্ষ ধর্ষিতা নারী? তাদের কেউ?
নিউ ইয়র্ক থেকে প্রকাশিত অনুস্বর ম্যাগাজিনের বিজয় দিবস সংখ্যায় প্রকাশিত
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ৯:৫৬
মুবিন খান বলেছেন: রাজাকারেরা ক্ষমতায় যেতে শুরু করে ১৯৭৭ সালের ৭ নভেম্বরের পর থেকে। সে প্রক্রিয়া চলমান ছিল সুদীর্ঘ সময়। এখন হয়ত ক্ষমতায় নেই, কিন্তু বহাল তবিয়তে কি নেই?
শুধু মুক্তিযোদ্ধা কোটা নয়, নানান কোটা আছে এদেশে। কোটার পক্ষে নানান যুক্তি প্রতিষ্ঠা করা আছে। কিন্তু কোটা ব্যাপারটা আসলে অযোগ্যকে যোগ্যদের পাশে বসবার সুযোগ করে দেয়।
২| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:০৩
রাজীব নুর বলেছেন: মুক্তিযুদ্ধ আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি।
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:১৬
মুবিন খান বলেছেন: খুব আবেগের জায়গা থেকে বলেছেন কথাটা। বাস্তবতাটা হলো আমরা আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তিটাকে কোণঠাসা করে ফেলেছি। যে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে যে কোনো ক্লাসের ছেলেমেয়েদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কয়েকটা প্রশ্ন করুন। আরেকটা কাজ করতে পারেন। আপনার চারপাশে যারা বিরাজমান তাঁদেরকে মুক্তিযুদ্ধের চারটি আদর্শ কি জিজ্ঞেস করুন। পারা ও পারা লোকেদের পরিসংখ্যানটা জানতে আমি আগ্রহী।
৩| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৫৩
চাঁদগাজী বলেছেন:
আপনি বলেছেন, "শুধু মুক্তিযোদ্ধা কোটা নয়, নানান কোটা আছে এদেশে। কোটার পক্ষে নানান যুক্তি প্রতিষ্ঠা করা আছে। কিন্তু কোটা ব্যাপারটা আসলে অযোগ্যকে যোগ্যদের পাশে বসবার সুযোগ করে দেয়। "
-যোগ্যরা যুদ্ধে গিয়েছিলেন? যোগ্যদেরকে কাজের থেকে কিংবা ঘর থেকে নিয়ে হত্যা করেছে।
৪| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫৭
নীল আকাশ বলেছেন: চাঁদগাজী বলেছেন: রাজাকারেরা ক্ষমতায় গিয়েছিলো বেগম জিয়ার সময়
আপনি একজন আপদমস্তক মিথ্যুক ব্যক্তি। আপনার নেত্রীর বেয়াই কি? কার কাছে উনি মেয়ে বিয়ে দিয়েছিলেন? নুরুল ইসলাম ধর্ম মন্ত্রী ছিল কার আমলে?
শাক দিয়ে কখনো মাছ ঢাকা যায় না!
৫| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ৮:০২
নীল আকাশ বলেছেন: আপ্নাকে আমি এই দুইটা লেখা পড়ে আসার অনুরোধ করছি-
গল্পঃ স্বাধীনতা আমার অহংকার!
কবিতাঃ তোমার দাম কত হে বাহে?
ধন্যবাদ।
৬| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ৮:০৮
নীল আকাশ বলেছেন: স্যরি কবিতাটা আপনি আগেই পড়েছেন। ধন্যবাদ।
৭| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১:২৩
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে আপনি আমার মন্তব্যের খুব সুন্দর উত্তর দিয়েছেন। ভালো থাকুন।
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ২:২০
চাঁদগাজী বলেছেন:
রাজাকারেরা ক্ষমতায় গিয়েছিলো বেগম জিয়ার সময়।
আজকে মুক্তিযোদ্ধা কোটার বিপক্ষে পাবেন শতকরা ৮০ ভাগ তরুণকে।