নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজের পরিচয় লেখার মত বিখ্যাত বা বিশেষ কেউ নই। অতি সাধারণের একজন আমি। লিখতে ভাল লাগে। কিন্তু লেখক হয়ে উঠতে পারি নি। তবে এই ব্লগে আসা সে চেষ্টাটা অব্যাহত রাখার উদ্দেশ্য নয়। মনে হল ভাবনাগুলো একটু সশব্দে ভাবি।
আজকে সাহিত্য নিয়ে কয়টা কথা বলি। আমাদের এক রসসিক্ত বন্ধু একটা উচ্চমার্গীয় কাব্য লিখে ফেলল। সে কবিতা আমার মাথার ওপর দিয়ে গেল। কবিতার কিছুই বুঝলাম না, কিন্তু ভালো লেগে গেল। বন্ধু লিখল-
'বৃত্তের কেন্দ্রকে যদি মৃত্যু বলি
বৃত্তের ব্যাসার্ধ যদি হয়-কষ্টের পরিমাণ!
যীশুর বৃত্তের খুব কাছাকাছি,
বিশাল এই বৃত্তের অবস্থান!
যে ব্যাসার্ধের প্রথম ভাগে থাকে বেরুবার আকুতি
শেষ ভাগে থাকে ত্বরিত কেন্দ্রে পৌঁছনোর আহবান!!'
আচ্ছা, সাহিত্য কি?
সাহিত্য বিষয়ক বইপত্র জানাচ্ছে, সহিত শব্দ থেকে সাহিত্য শব্দটির উৎপত্তি। কিসের সহিত? জীবনের সহিত। তো ভাষার সাহায্যে রচিত যে কোনও রচনা, বিশেষত যদি তার শৈল্পিক গুণাগুণ উচ্চমানের হয়, বা সুদূরপ্রসারী হয় সেটাই সাহিত্য।
ছেলেমেয়েদের পাঠ্য বইয়ে প্রশ্ন আছে: 'সাহিত্য কাকে বলে?'
এর উত্তরে বলা আছে: 'লেখ্য-শিল্পকে এককথায় সাহিত্য বলা যায়। মোটকথা ইন্দ্রিয় দ্বারা জাগতিক বা মহাজাগতিক চিন্তা চেতনা, অনুভূতি, সৌন্দর্য্য ও শিল্পের লিখিত প্রকাশ হচ্ছে সাহিত্য।'
গদ্য, পদ্য ও নাটক - এই তিন ধারায় প্রাথমিকভাবে সাহিত্যকে ভাগ করা যায়। গদ্যের মধ্যে প্রবন্ধ, নিবন্ধ, গল্প ইত্যাদি এবং পদ্যের মধ্যে ছড়া, কবিতা ইত্যাদিকে শাখা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা যায়। সাহিত্যে বর্ণনামূলক গদ্যকে প্রবন্ধ বলা হয়। প্রবন্ধ সাহিত্যের অন্যতম একটি শাখা।
এবার আমাদের বন্ধুটির 'বৃত্তের আবর্তে' কবিতায় ফিরি। কখনও কখনও উচ্চমার্গীয় চিন্তাভাবনা ভাবতে ভালো লাগে। আমারও লাগে। আমিও ভাবতে বসলাম। ধরি, জীবন একটা বৃত্ত। বৃত্তের কেন্দ্রবিন্দুটি হলো মৃত্যু। তাহলে বৃত্তের চারপাশ ঘুরে ব্যাসার্ধ সীমানার যে দাগটি রয়েছে, সেটি জন্ম। আর সীমানা দাগ থেকে বিন্দু পর্যন্ত ব্যাসার্ধর জায়গাটি পুরোটা জীবন। ও জায়গাটাই কষ্ট। কিন্তু একটা জীবনের পুরোটা জুড়ে কি কষ্ট থাকে কখনও?
থাকে না।
মানুষ তো জন্মায় ছয়টি রিপু নিয়ে। এরা হলো, কাম , ক্রোধ , লোভ , মোহ , মদ ও মাৎসর্য। তার পুরো জীবন জুড়েই এদের আধিপত্য। কাম হলো ভোগবাদ। সকল প্রকার কামনা বাসনা। যখন এই ভোগবাদ কোনও কারণে বাধাগ্রস্ত হয়, তখনই জন্ম নেয় ক্রোধ। আসলে স্বরূপে আবির্ভূত হয়। আবার ভোগের যে ইচ্ছে, সেটিই লোভ। আর সে লোভে নিজেকে হারিয়ে ফেলাটাই মোহ। তখন সকল ভাবনা হয়ে ওঠে ব্যক্তিকেন্দ্রিক। হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলা যাকে বলে। এটাই মদ। তখন নিজের ভোগ বাধাগ্রস্ত হলো বলে অন্যর সফলতা বেদনা জাগায়। তৈরি হয় ঈর্ষা। ঈর্ষা থেকে হিংসা। এটা পরশ্রীকাতরতা। এটাই মাৎসর্য। স্বার্থপরতা। এই ষড়রিপুর ফলেই মানুষের ভাবনায় কষ্টটা প্রবল হয়ে ফুটে ওঠে। বিশাল ওই জীবন-বৃত্তে আর সকলকিছুকে ছাপিয়ে ওঠে। বঞ্চনা ছাড়া জীবনে আর কিছু দৃশ্যমান হয় না তখন।
প্রায়ই অনেককে বলতে শুনবেন, 'দেখ, আমি অমন নই, আমি এমন, আলাদা আমি, সবার চেয়ে আলাদা।'
বস্তুত পৃথিবীর প্রতিটি মানুষই আলাদা। প্রতিটি মানুষই স্বতন্ত্র। দেখতে শুনতে তো বটেই, কারও সঙ্গে কারও চিন্তায়, চেতনায়, রুচিতে, এতটুকু সমিল নেই। তবুও নিজেকে আলাদা প্রমাণ করতে সেকি প্রাণপণ প্রচেষ্টা! বৃত্তের ব্যাসার্ধ কষ্ট দিয়েই ছাপিয়ে ওঠে যখন, তখন ওই বঞ্চনা প্রধান হয়ে ওঠে। মানুষের এই কষ্ট তার একলার কষ্ট, তবে একলা নয়। সমষ্টিরও বটে। সেকারণেই মানুষের কষ্ট মোটা দাগে দুটা ভাগ হয়ে গেছে। একটা তার নিজস্ব। আরটা অন্যর। সমষ্টির। এইই মানবতা। এই মানবতাই মানুষকে দিয়ে মানুষের রিপুদের থেকে জয় করিয়ে দেয়। মানবতার অনুপস্থিতিই মানুষকে পরাজিত করে রিপুদের বিজয়ী করে।
ধরুন, মৃত্যুর কষ্ট!
সৃষ্টির শুরু থেকে এখন পর্যন্ত কত কত মানুষ মরে গেল! কিন্তু যিশুর মতো জীবন্ত ক্রুশবিদ্ধ মৃত্যুর সঙ্গে আর কারও মৃত্যুর তুলনা চলে কি? কি হিংস্র মৃত্যু! কিন্তু যিশু ক্রুশবিদ্ধ হতে হতেও নিজের মৃত্যু যন্ত্রণা ছাপিয়ে মানবজাতির কথাই ভাবছিলেন। আবার সে ভাবনার ভেতরেও ভাবনা ছিল। যেমন, শুরুতে ক্রুশবিদ্ধ হওয়া থেকে রক্ষা পেতে চাওয়া। শেষে যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করতে চাওয়া।
বুয়েটের আবরার ফাহাদেরও কি অমন হয়েছিল? শুরুতে প্রহার থেকে মুক্তি পেতে চাওয়া, পরে প্রহারের যন্ত্রণা থেকে রক্ষা পেতে আপন মৃত্যু কামনা করছিল? আবরার ফাহাদের মৃত্যুটি রাজনৈতিক মৃত্যু। অথচ আবরার রাজনীতি করত না।
আজকাল টেলিভিশনে খুব আলোচনা অনুষ্ঠান হয়। তার প্রায় সবই রাজনৈতিক আলোচনা। একটা চ্যানেলে তাদের অনুষ্ঠান শুরু করে এই বলে-
'ভাবছেন রাজনীতিই কি সব! ভাবছেন আপনি সাধারণ ছাপোষা মানুষ রাজনীতির খবরে আপনার কি লাভ! আমি কিন্তু দেখি পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র, অর্থনীতি, ধর্ম, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, এমনকি দেশপ্রেম- সবকিছুর সুতো বাঁধা সেই রাজনীতির নাটাইয়ে।'
'বাঙালি বরাবরই রাজনীতি সচেতন। সেই থেকে মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতা অর্জন। চায়ের দোকানে তুমুল বাকবিতন্ডা কিংবা জ্ঞানীগুণীদের সংযমী আড্ডা। ঘরে বাইরে মতের মিল অমিল কিংবা রাজপথ কাঁপানো মিছিল। রাজনীতি সবকিছুর কেন্দ্রে।'
ওপরের ওই ভাষ্য আমাদেরকে জানাচ্ছে, সকালে ঘুম থেকে জাগবার পর থেকে রাতে ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত আমাদের জীবনে রাজনীতি ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে। আচ্ছা, আপনি রোজ কতজনের সঙ্গে রাজনৈতিক আলোচনা-বিতর্কে লিপ্ত হন? আমাদের পরিবার থেকে রাষ্ট্রর শীর্ষ পর্যায় পর্যন্ত আমরা জ্ঞাতে-অজ্ঞাতে রাজনীতিতেই কিন্তু বুঁদ হয়ে থাকি। রাজনীতিই আমাদের জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করে। সে আজকে থেকে নয়, সেই সৃষ্টির শুরু থেকেই। যিশুর মৃত্যু কি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র নয়? কিংবা সক্রেটিসের মৃত্যু? অথবা জিওর্দানো ব্রুনোর মৃত্যু? যিনি বলেছিলেন, পৃথিবী সূর্যের চারপাশে ঘুরছে। পৃথিবী সৌরজগতের তুচ্ছ গ্রহ ছাড়া এর আলাদা কোনও গুরুত্ব নেই। পৃথিবী ও বিশ্বজগৎ চিরস্থায়ী নয়, একদিন এসব ধ্বংস হয়ে যাবে। এই বলার জন্যে ব্রুনোকে ধর্মদ্রোহী আখ্যা দিয়ে জ্যান্ত আগুনে পুড়িয়ে মেরেছিল।
আমরা সাহিত্য করা লোকেরা তো বিজ্ঞানের লোক নই, সাহিত্যর লোক। তাঁরা সাহিত্য উদাহরণ দাবী করবেন। আমরা তাহলে সাহিত্যর উদাহরণ দেব। আমাদের জাতীয় সঙ্গীত 'আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি' ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে এই গানটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচনা করেছিলেন। ১৯১১ সাল পর্যন্ত চলতে থাকা বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনকে উৎসাহিত করতে টানা লিখে গেছেন নানান গান ও কবিতা। বঙ্গভঙ্গর সক্রিয় বিরোধিতা করেছেন। কাজী নজরুল তো নিজের পরিচয়টিই বিদ্রোহী বানিয়ে ফেলেছেন। লিখতে লিখতে জেলও খেটেছেন। সুকান্ত রাজনীতি করতে করতে তো অকালে মরেই গেলেন। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা বলতে গিয়ে বলা হয়, 'শিল্পগুণের প্রশ্নে বামপন্থী সাহিত্য ব্যর্থ'— এই ধারণা যাঁরা প্রকাশ করে আসছিলেন তাঁদের ভুল প্রমাণ করেছেন তিনি। '৭১-এ কবি ও লেখকরা মুক্তিযোদ্ধাদের উৎসাহিত করতে অবিরাম লিখে গেছেন কবিতা, গান আর গদ্য। এম আর আখতার মুকুলের 'চরমপত্র' কি কালজয়ী নয়?
'৯৬ সালের এক খটখটে রোদ্দুর দুপুরে মতিঝিলের রাজপথ ধরে হাঁটতে হাঁটতে এক সাংবাদিক বন্ধু বলেছিল, সাত মার্চের ভাষণটার পুরোটাই একটা কবিতা। আমার সে বন্ধুটি তখন থেকে এখনও জামায়াতে ইসলামীর সক্রিয় সমর্থক। নির্মলেন্দু গুণ সাত মার্চের ভাষণকে কবিতা আখ্যায়িত করে লিখলেন, 'স্বাধীনতা, এই শব্দটি কিভাবে আমাদের হলো'- মনে আছে? '৯০-এর গণআন্দোলনই কিন্তু আজকের 'জাতীয় কবিতা পরিষদ' প্রতিষ্ঠা করিয়েছিল। জেনারেল এরশাদ কবিদেরকে কিনতে শুরু করলে দেশের শীর্ষ কবিরা এর প্রতিবাদে গঠন করেছিলেন জাতীয় কবিতা পরিষদ।
'দাঁড়াও, নিজেকে প্রশ্ন কর- কোন পক্ষে যাবে' উচ্চারণ করে রুদ্র কেমন ঝাঁকুনি দিয়েছিল মনে পড়ে? ছাত্রর দল সে উচ্চারণ করতে করতে বারুদ হয়ে উঠেছিল। সকলের জানা থাকলেও রুদ্রই কবিতায় প্রথম বলেছিল, জাতির পতাকা যারা খামচে ধরেছে তারা নতুন কেউ নয়, সেই '৭১এর পুরনো শকুন। আজকের আনিসুল হকের যে লেখক পরিচিতি, সে পরিচয় প্রতিষ্ঠা করেছিল তার 'গদ্যকার্টুন', যার সবটাই রাজনৈতিক রচনা। তার প্রথম উপন্যাস 'অন্ধকারের একশ' বছর'-এ পুরো পটভূমিতে জাতির পতাকা কালো শকুনেরা গ্রাস করেছিল।
আর না বলি। এভাবে বলতে গেলে বলতেই থাকা লাগবে। আমাদের বাস্তবতায় রাজনীতি আমাদের অবিচ্ছেদ্য অংশ হলেও সাহিত্যর ধ্বজাধারী হওয়া কিছু লোক এখন সেটা মেনে নিতে রাজি নয়। তাঁরা বলছে, সাহিত্য করতে গেলে তাতে রাজনীতি দেওয়া যাবে না। রাজনীতি যে আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য সেটা সাহিত্য করায় স্বীকার করা যাবে না। এঁরা রাজনীতিতে সাহিত্যে টেনে আনতে দিতে রাজি না। এঁরা সাহিত্য সভা করে, সাহিত্য আড্ডা করে, সাহিত্য চর্চায় বিভিন্ন গ্রুপ করে, সেখানে তারা সাহিত্যে সমাজের নির্মল চিত্র তুলে ধরতে উৎকৃষ্ট উৎসাহর জোগান দেয়। কিন্তু সমাজের নির্মল চিত্রঅলা সে সাহিত্যে রাজনৈতিক মতাদর্শ নিয়ে বলাবলি করা যাবে না, রাজনীতির চলমান ঘটনাবলীরা সে সাহিত্যে থাকতে পারবে না।
তাদের জন্যে আমাদের নর-নারীর ফ্রয়েডিয়ো ফ্যান্টাসি নিয়ে কাব্য লেখা লাগবে। মানবতার কথাও লিখব আমরা। নারীর অধিকারের কথা বলতে বলতে কলমের গলার রগ ফুলিয়ে ফেলবো। কিন্তু নারীকে যে নারীবাদের রাজনীতিই অবদমিত করে রেখেছে, সেটা লিখব না। মানবতাকে যে রাজনীতির কলুষিত দিকটা আর্ত করে রেখেছে সেটাও লিখব না। কেননা রাজনীতি কেবল হোটেল-রেস্টুরেন্টের টেবিল থাপড়ানোর দ্রব্য। এখনকার সাহিত্য রাজনৈতিক চর্চা নির্ভর সাহিত্য নয়। আর তাই সাহিত্যে রাজনীতি নিয়ে লেখা নিষিদ্ধ।
সুপ্রিয় সুহৃদগণ, ভদ্রমহোদয়রা-মহোদয়ারা, আপনারা সে নিষেধাজ্ঞা মেনে চলুন।
১৩ ই নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:০৯
মুবিন খান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাই।
২| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:৪০
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: নারীকে যে নারীবাদের রাজনীতিই অবদমিত করে রেখেছে, সেটা লিখব না। মানবতাকে যে রাজনীতির কলুষিত দিকটা আর্ত করে রেখেছে সেটাও লিখব না।
পোস্টে +++
১৩ ই নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:০৯
মুবিন খান বলেছেন: ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানবেন।
৩| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:০৫
জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: রাজনীতি জীবনের অংশ, দুনিয়ার চাকা। মানুষই রাজনীতি করেন। জীবন, মানুষ, দুনিয়া নিয়েই সাহিত্য। সুতরাং সাহিত্য থেকে রাজনীতি বাদ দেওয়ার বা সাহিত্যে রাজনীতিকে উপেক্ষা করার সুযোগ নেই।
কিছু মানুষ মূল ছেড়ে ডাল নিয়ে হইরই করেন।
আপনার আলোচনা ভালো লেগেছে। কবিতাটাও দারুণ ছিলো।
১৩ ই নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:১১
মুবিন খান বলেছেন: হ্যাঁ, সাহিত্য থেকে রাজনীতি বাদ দেওয়ার বা সাহিত্যে রাজনীতিকে উপেক্ষা করার সুযোগ নেই।
ধন্যবাদ আপনাকে। সঙ্গে কৃতজ্ঞতা।
৪| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:৫১
কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: দারুন একটা পোস্ট! অনেক দিন পর এই জাতীয় একটা লেখা পেলাম। আলোচনায় অংশ নেয়ার ইচ্ছে রাখি। সময় করে আবার ফিরে আসব।
১৩ ই নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:১২
মুবিন খান বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানবেন। আপনার ফিরে আসবার অপেক্ষায় রইলাম।
৫| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:০৪
আমি তিতুমীর বলছি বলেছেন:
এই অতি উচ্চমার্গীয় কবিতাটি সত্যিই কি আপনার রসসিক্ত বন্ধু লিখেছেন?
সাহিত্যের একটি অংশ রাজনীতির উপর হতে পারে কিন্তু সব নয়, একজন কবি, লেখক সমসাময়িক সমাজকে তুলে আনেন কলমের ডগায়। তাহারা যেহেতু মানুষ তাই অনিয়ম দেখলে তাদের বিবেক তাড়া করে প্রতিবাদ করতে, যখন তারা দেখেন দেশে কলুষিত রাজনীতি হচ্ছে সাহিত্যের ছন্দে তাঁর প্রতিবাদ করেন নিজের মতামত ব্যাক্ত করেন এটাই সাহিত্যের বুকে রাজনীতির ছায়া।
এখন ধরুন, ধর্মীয় কুসংস্কার নিয়ে একজন লেখক নিজের বক্তব্য দিল সেটা কি রাজনীতির অংশ হবে? এটা রাজনৈতিক দৃষ্টিকোনে ফেললে অবিচার হবে, রবীন্দ্রনাথের "গোরা " উপন্যাসে উনি যেমন রাজনীতি ম্যারপ্যাচ দেখিয়েছেন তেমনি ধর্মীয় কুসংস্কার দেখিয়েছেন দুটোই ভিন্ন দৃষ্টিতে।
অারো কিছু বলার ছিল মোবাইলে টাইপ কষ্ট হচ্ছে, রাতে আলোচনায় অংশ নিব, দেখি কাভা ভাই কি বলছে।
১৩ ই নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:০৮
মুবিন খান বলেছেন: হ্যাঁ, ওই অতি উচ্চমার্গীয় কবিতাটি সত্যিই আমার রসসিক্ত বন্ধু লিখেছেন।
রাজনীতি সাহিত্যর কোনও অংশ নয়। রাজনীতি একটা ব্যবস্থা। যে ব্যবস্থার স্বীকৃতি কেবল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র দেয়। কর্তৃত্ব ও ক্ষমতার ভিত্তিতে তৈরি হওয়া সামাজিক সম্পর্কই রাজনীতি।
আর সাহিত্য পুরো সমাজটাকেই তো বটেই, একই সঙ্গে সমাজে থাকা সকল সংস্কার-কুসংস্কার, মূল্যবোধ, ব্যবস্থা ইত্যাদি সকলই ধারণ করে।
শুধু ধর্মীয় কুসংস্কার নয়, যে কোনও সংস্কার-কুসংস্কার নিয়েই লেখক সাহিত্য রচনা করতে পারেন। লিখে ফেলার পর সে লেখাটির যে গ্রহণযোগ্যতার প্রশ্নটি তৈরি হবে, সেটি লেখকের অবস্থান নির্ণয় করবে। সেটি লেখকের সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থান। আর সে নির্ণয়টি করবে পাঠক। এই পাঠক হলো জনমত।
যদিও তুলনাটি অসম হয়, তবুও রবীন্দ্রনাথের 'গোরা' উপন্যাসটির গ্রহনযোগ্যতার সঙ্গে সালমান রুশদির 'স্যাটার্নিক ভার্সেস' উপন্যাসটির গ্রহণযোগ্যতার তুলনা করলে মোটামুটি ধারণা করতে পারার একটা চিত্র আমরা পেতে পারি।
আপনার 'আরও কিছু বলার' ইচ্ছেটা যেটা মোবাইলে টাইপ করবার সমস্যার কারণে বলতে পারেন নি, তা জানবার প্রতিক্ষায় রইলাম।
৬| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:১৯
নেক্সাস বলেছেন: বহুদিন পর দারুন একটা লিখা পড়লাম। আজকাল লেখালেখির মাধ্যমগত প্রতুলতার কারণে দিকে দিকে ভুরি ভুরি কবি সাহিত্যিকের সৃষ্টি হচ্ছে, কিন্তু চিন্তার খোরাক যোগাবে সে সাহিত্য আদৌ কি আছে? রাজনীতি! এদেশের প্রতিটি মানুষ জানতে অজান্তে রাজনীতি সচেতন হলেও শিক্ষিত একটা শ্রেণীর কাছে রাজনীতি এখনো ট্যাবু কিংবা ভীতিকর নিষিদ্ধ ভাবনা। এদেশের সমকালীন সাহিত্যে রাজনীতির যে বাহারী রঙ, গতি প্রকৃতি , কলাকৌশল দর্শন এগুলি নেই বললেই চলে। উঠতি সাহিত্য গড্ডালিকার মতো প্রবাহিত হচ্ছে ফ্রয়েডের বাড়ির দিকে। অথচ রাজনীতি তোইরি করতে পারে চিন্তাশীল সাহিত্যের প্লট। সাহিত্য হচ্ছে সমকালীন সমাজ ব্যাবস্থার দর্পন। আবার এও বলা হয় সাহিত্য অতীত ও বর্তমানের মধ্যে গড়ে ওঠা সেতু।অপরদিকে মানুষের প্রতি মুহুর্তের চিন্তা, চেতনা, জীবনবোধ, দর্শন, আদর্শ, আচার, যাপিত জীবন এগুলোর সমষ্টিই হচ্ছে রাজনীতি। তাহলে যে সাহিত্যে রাজনীতি নাই তা কি করে সমকালীন সময়কে ভবিষ্যতের কাছে প্রতিফলিত করবে? তা কি করে দুটো কালের মধ্যে সেতু রচনা করবে? আমরা এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে দেখেছি কবি সাহিত্যিক এবং তাদের সৃষ্টি কর্মের কি প্রভাব ছিল? একটা ছোট কবিতার লাইন কাপিয়ে দিতে পারে যে কোন শাসকের ভিত্তি। মানুষের নাগরিক জীবনাকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটে রাজনৈতিক চেতনার মাধ্যমে। আর সে চেতনা্র প্রগলভ ও বলিষ্ট উচ্চারন হচ্ছে সাহিত্যের শৈল্পিক মুন্সিয়ানা।
প্র্যাত আহমদ ছফা,আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, জহির রায়হান, শহীদুল্লাহ কায়সার, শামসুর রহমান, মানিক বন্ধোপাধ্যায়, সুকান্ত এদের সাহিত্য আজো মানুষ ও তার সমাজকে প্রতিনিধিত্ব করে। কেন করে? কারণ সেগুলি ছিল রাজনীতি সচেতন এবং রাজনীতির রন্ধ্রে রন্ধ্রে বিচরণ করে সেসব সাহিত্যে ঊঠে এসেছে মানুষেরি জীবন চাওয়া পাওয়া ও ব্যর্থতার এবং শাসন - শোষনের নানামূখি ব্যাঞ্জনা। যে কোন সমাজে যখন ভোগবাদী কতৃত্ববাদ চলে আসে এবং সিংভাগ সাধারণ মানুষ শোষিত হয় তখন তাদের কন্ঠ হয়ে উঠে সাহিত্য। সাহিত্যেই উঠে আসে রাজনীতির ঘাত প্রতিঘাত ও প্রতিবাদ। এক কথায় সাহিত্যের নান্দনিক প্রকাশ মানুষের মন ও মননকে প্রভাবিত করে দারুনভাবে। আর মানুষের সমাজকে কারযকর করার জন্য দরকার রাজনীতির প্রজ্ঞা ও জ্ঞান। সাহিত্যের বিষয়বস্তু রাজনীতি হয়ে উঠলে মানুষের চিন্তা ও মননের বিকাশ ত্বরান্বিত হয়।
অত্যন্ত সুন্দর পোস্ট। ধন্যবাদ সুন্দরভাবে আলোচনার জন্য। পোস্টে প্লাস।
১৩ ই নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:১৬
মুবিন খান বলেছেন: 'এদেশের প্রতিটি মানুষ জানতে অজান্তে রাজনীতি সচেতন হলেও শিক্ষিত একটা শ্রেণীর কাছে রাজনীতি এখনো ট্যাবু কিংবা ভীতিকর নিষিদ্ধ ভাবনা।' বর্তমান ও চলমান বাস্তবতার সেটাই প্রধান কারণ।
ধন্যবাদ জানবেন।
৭| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৫৭
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: প্রথমেই কাভা ভাইকে ধন্যবাদ সামুর ফেসবুক গ্রুপে শেযার দেয়ায়!
সত্যি অনেক ভাল ভাল লেখা এভাবে কতযে এড়িয়ে গেছে চোখে র আড়ালে কে রাখে তার খবর!
ঋদ্ধ লেখায় পাঠে তৃপ্তি পেলাম।
রাজনীতিকে সাহিত্য থেকে যেমন পৃথক করা হয়েছে, হচ্ছে তেমনি ধর্ম থেকেও।
ফলে দুটোই হয়ে গেছে কিন্নর গোত্রীয়! না ঘরকা না ঘাটকা!
হারিয়েছে তার জৌলুশ, তার স্বকীয়তা, শক্তি।
সব যুগেই স্বৈরাচার দমন পীড়নেই নিজেকে টিকিয়ে রাখে।
চাটুকার, অনুগত দাসানুদাসরাও সব যুগেই থাকে- বিদ্রোহী হয় গুটিকয়!
গুম, খুন, মৃত্যু ভয় নিয়েও তারা কলম ধরে।
তবে স্বভাবতই সংখ্যাটা কম। জীবন বোধের অপূর্নতা, অসম্পূর্ণতাই মানুষকে বেঁধে রাখে ভীতির বাঁধনে!
টিপু সুলতানের সিংহের মতো একদিন বাঁচার চেতনার চেয়ে, শেয়ালের মতো শতবছর বাঁচার আংখা বাড়ছে মানুষের।
ভোগবাদী, কর্পোরেট দাসত্ববাদী মানসিকতার বিকাশেরই বিষফল- মানুষ আত্মপরিচয়ের জাগ্রত স্বত্ত্বানুভবকে ভুলে গেছে।
কেবলই ভোগে আর হিসেবের খাতায় কাটাকুটি! জীবনের জৌলুশ হারিয়ে এক অভ্যস্ত যান্ত্রিকতায় বদলে ফেলা সম্প্রদায়!
স্বকীয়তা আনে স্বাতন্ত্র।
আত্মমর্যাদা আনে মাথা উঁচু করে চলার বলার শক্তি!
আর সকল কিছুর ভেতরে গোপনে মিশে থাকে রাজনীথির সেই সত্য
চেতনায় জ্ঞানে যার বিকাশ হয় -বিশ্বাসে, কর্মে এবং প্রকাশে।
++++++++++++
১৩ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:০২
মুবিন খান বলেছেন: 'স্বকীয়তা আনে স্বাতন্ত্র।
আত্মমর্যাদা আনে মাথা উঁচু করে চলার বলার শক্তি!
আর সকল কিছুর ভেতরে গোপনে মিশে থাকে রাজনীথির সেই সত্য
চেতনায় জ্ঞানে যার বিকাশ হয় -বিশ্বাসে, কর্মে এবং প্রকাশে।
চমৎকার বললেন কিন্তু।
৮| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:০৭
বাংলার হাসান বলেছেন:
কাভা ভাইধন্যবাদ, অনেকদিন পর এসে ভাল একটা লেখা পড়লাম।
সাহিত্য সমাজকে প্রতিনিধিত্ব করে,সুখ,দুখ,আনন্দ,বেদনা সমাজের অসঙ্গতি, রাষ্ট্রীয় দস্যুপনা সহ মানুষরে কথা না থাকলে তা আর সাহিত্যের অংশ না হয়ে হয়ে যায় শাষকের দালালী।
১৩ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:০৪
মুবিন খান বলেছেন: হ্যাঁ, সাহিত্য সমাজকে প্রতিনিধিত্ব করে। তাতে রাষ্ট্রীয় দস্যুপনা আর মানুষরে কথা যদি না থাকে, তাহলে সেটা আর সাহিত্য থাকে না। শাসকের দালালী হয়ে ওঠে।
একদম ঠিক বলেছেন।
৯| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:২৯
ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:
সকল প্রকার রাজনৈতিক কর্মকান্ড থেকে দেশকে ছুটি দেওয়া হোক। দেশের ছুটি প্রয়োজন।
১৩ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:০৪
মুবিন খান বলেছেন: 'দেশের ছুটি প্রয়োজন।'
১০| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৩৬
আহমেদ জী এস বলেছেন: মুবিন খান,
সাহিত্য মানে শুধু গল্প, গদ্য আর কবিতা নয়, একটা দর্শন ও বটে ।
জীবনকে আপনি যেভাবে দেখে থাকেন, সাহিত্য সেই জীবনের প্রতি আপনাকে আগ্রাহান্বিত করে তোলে ।
এই আগ্রহ থেকেই যখোন ভাবনারা ভীড় করে আসে তখোন আপনার কথনে বা লেখায় শব্দগুলো জীবন্ত হয়ে ওঠে । আর তখোনই একটি সাহিত্যের জন্ম হয় । আর এই জন্ম, ভাষার অথবা মানুষের সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যকেই প্রতিনিধিত্ব করে।
রাজনীতি; এই ঐতিহ্যের প্রতিনিধিত্বমূলক একটি উপাদান ,সর্বাংশ নয়। রাজনীতি যেখানে জনজীবনের বিষয়বস্তু ও গতিপথ সংক্রান্ত যৌথ সিদ্ধান্ত গ্রহণে সর্বসাধারণের অংশগ্রহণের সংস্কৃতি তখন সেটিও মানুষের সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলের অঙ্গীভূত। নেক্সাস ও তাই বলেছেন, “মানুষের নাগরিক জীবনাকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটে রাজনৈতিক চেতনার মাধ্যমে। আর সে চেতনা্র প্রগলভ ও বলিষ্ট উচ্চারন হচ্ছে সাহিত্যের শৈল্পিক মুন্সিয়ানা।“ তিনি এও বলেছেন, "মানুষের সমাজকে কার্যকর করার জন্য দরকার রাজনীতির প্রজ্ঞা ও জ্ঞান।" সমাজকে কার্যকর করতে হয়তো তার প্রয়োজন আছে কিন্তু সাহিত্য করতে মনে হয় রাজনীতির প্রজ্ঞা ও জ্ঞান এর দরকার খুব একটা নেই।
সাহিত্য রাজনীতির চেতনা নির্ভর নয়, জীবনের ধুলোময় পথে পথে যে অফুরান কাদামাখা শব্দ আর কথারা ছড়িয়ে জীবনময় হয়ে আছে তাকে সাফসুঁতেরো করে দু'হাতের অঞ্জলীতে তুলে নৈবেদ্য সাজানোই সাহিত্য ।
আমি তিতুমীর বলছি ও অনেকটা তেমনই বলেছেন।
আসলে চিন্তাধারাকে গতানুগতিক পথে ধাবিত না করে , ব্যতিক্রমী কিছুর পেছনে ছুটিয়ে দেয়ার নামটিকেই তো বলে "চলিষ্ণু জীবন" । নয়তো তা এঁদো গলিপথের জমে থাকা জলাবর্তেই ঘুরপাক খেয়ে খেয়ে মরে ! আর সাহিত্য তো এই জীবনের লেখ্য রূপটিই, আলাদা কিছু নয় ।
তবুও বলবো, আক্ষেপিত লেখা হলেও ভালো লিখেছেন।
১৩ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:১৯
মুবিন খান বলেছেন: খুব নিশ্চিতভাবেই সাহিত্য মানে শুধু গল্প, গদ্য আর কবিতা নয়, একটা দর্শন বটে । জীবন দর্শন। জীবনে ঘটে যাওয়া, ঘটতে থাকা নানান রকমের যে ঘাত-প্রতিঘাতগুলোই তো সাহিত্যর উপজীব্য। সে উপজীব্য উপাদান যখন শৈল্পিকতায় একটা নির্দিষ্ট মান ধারণ করতে পারে, তখনই সেটা সত্যিকার সাহিত্য হয়ে ওঠে। রাজনীতি সাহিত্যর উপাদান নয় কোনভাবেই। কিন্তু যে উপাদানকে উপজীব্য করে সাহিত্যর নির্মাণ হয়, সে জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করে রাজনীতি। ফলে সাহিত্যে জীবনের যে চিত্রটি আঁকা হয়, সে চিত্রে অবচেতনভাবেই রাজনীতি বিদ্যমান বটে। তাই লেখককে আলাদাভাবে রাজনীতি নিয়ে না লিখলেও চলে।
রাজনীতি যেমন স্বতন্ত্র, সাহিত্যও তাই। কিন্তু যিনি সাহিত্য রচনা করছেন, তাঁর যে সামাজিক কিংবা অর্থনৈতিক ও শ্রেণীগত অবস্থান, সেটি কিন্তু রাজনীতিই নির্ধারণ করে দিয়েছে। আর ব্যক্তি লেখক যে মূল্যবোধ ও মানবিকতা ধারণ করছেন, সেটি নির্ধারণ করে দিয়েছে তাঁর সামাজিক, অর্থনৈতিক ও শ্রেণীগত অবস্থান। সে কারণেই লেখককে আলাদাভাবে রাজনীতি নিয়ে সাহিত্য নির্মাণের দরকার নেই। সচেতন ও মানবিক মূল্যবোধ নিয়ে লিখলেই চলে।
এই যে আপনি বললেন, 'সাহিত্য করতে রাজনীতির প্রজ্ঞা ও জ্ঞানের দরকারই নেই।' আপনার এ বলাকে আমি সমর্থন করছি। সাহিত্য যিনি রচনা করবেন, তিনি অবশ্যই তাঁর লিখতে চাওয়া পটভূমিটি মাথায় রেখেই লিখবেন। কিন্তু লেখাটি সম্পূর্ণতা পাওয়ার পর পাঠক যখন সে লেখাটি পাঠ করবেন, তখন লেখাটি আপনিই সমালোচিত কিংবা মূল্যায়িত হবে রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকেই। কেননা লেখক যে পটভূমিটি তাঁর লেখাতে ফুটিয়ে তুলেছেন, সেখানকার প্রত্যেকটি চরিত্রই নিজের নিজের শ্রেণীর প্রতিনিধিত্ব করছে। যেমনভাবে লেখকের বসবাস করা সমাজ ও সামাজিক পরিচিতিটিও যে ব্যবস্থার অধীনে নির্মিত, সেটিও রাজনীতিরই তৈরি করে দেওয়া সমাজব্যবস্থাই। যার ফলে লেখকের অবচেতনেই প্রত্যেকটি চরিত্রই নিজের নিজের শ্রেণীর প্রতিনিধিত্ব করবার পাশাপাশি সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থানটি তুলে ধরছে। শ্রেণীগত অবস্থান থেকে জানাচ্ছে আপন রুচি। জানাচ্ছে সামাজিক ব্যবস্থাটি কেমন।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
১১| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:৫৬
মা.হাসান বলেছেন: ৭১ এর পর আমাদের চলচিত্র, কবিতা, নাটক, গল্প-- এ সব কিছুর একটা খুব ভালো সময় গিয়েছে এরশাদের শাসন কাল। আমার জানা মতে বাংলাদেশে মঞ্চ নাটকের উত্থান ঐ সময়ে। দ্রোহ থেকেই অনেক ভালো কিছুর উৎপত্তি হয়েছে। রাজনৈতিক ভাবে এর পরের সময়টা অনেক ডাল গিয়েছে, মননশীলতার ছাপ ও আমার চোখে কম লেগেছে।
১৩ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:২৬
মুবিন খান বলেছেন: হ্যাঁ, ওই সময়ের লেখালেখি পাঠ করলে পাঠকের অভ্যন্তরে সচেতনতা তৈরি হতো। তার অভাবের বোধটি আমার কাছেও মনে হয়েছে।
১২| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:৪৮
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: সেদিন ঢাকা লিটফেস্টে ড. কাজী আনিস আহমেদ বলেন, ‘আমি নিজেকে একজন রাজনৈতিক লেখক হিসেবে দাবি করতেই পারি, কারণ রাজনীতি নিয়ে লেখায় এবং জীবনের সাথে জড়িত হওয়ার কোন বাধা নেই।’
'বাঙালি বরাবরই রাজনীতি সচেতন। সেই থেকে মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতা অর্জন। চায়ের দোকানে তুমুল বাকবিতন্ডা কিংবা জ্ঞানীগুণীদের সংযমী আড্ডা। ঘরে বাইরে মতের মিল অমিল কিংবা রাজপথ কাঁপানো মিছিল। রাজনীতি সবকিছুর কেন্দ্রে।' যেখানে রাজনীতি জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ,আবার জীবনের সাথে জড়িত সকল লেখ্যরূপই সাহিত্য, সেখানে সাহিত্যকে রাজনীতি থেকে আলাদা করার কোন সুযোগ দেখিনা।
১৩ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:২৮
মুবিন খান বলেছেন: না, সাহিত্যকে রাজনীতি থেকে আলাদা করার কোনও সুযোগ আসলেই নেই। কেউ সেটি করতে চাইলে সেটি হবে আরোপিত।
১৩| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:২৯
ল বলেছেন: সাহিত্যিকদের কি রাজনৈতিক হওয়া উচিত নাকি সাহিত্যই রাজনৈতিক ?
কারণ সাহিত্যের স্রষ্টারা রাজনৈতিক প্রাণী; যা আমাদের সুনাগরিক হওয়ার উপায় বলে দেয়.......।
প্রত্যেক লেখকের আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি থাকে যা কোননা কোনভাবে তার রাজনৈতিক অবস্থান প্রতিফলিত করে ....
১৩ ই নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:৩১
মুবিন খান বলেছেন: সাহিত্যিকদেরকে রাজনৈতিক মানুষ হতে হওয়ার কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। হতেও নেই। তাঁকে হতে হবে একজন সমাজ সচেতন মানুষ যিনি কেবল মানুষকে জানবার সঙ্গে সঙ্গে তার অধিকারের কথাটিও জানবেন। এবং লিখবেন সে অধিকারের কথা। এরপরের কথাটা তো আপনি বলেই দিলেন- 'কারণ সাহিত্যের স্রষ্টারা রাজনৈতিক প্রাণী; যা আমাদের সুনাগরিক হওয়ার উপায় বলে দেয়.......।
প্রত্যেক লেখকের আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি থাকে যা কোননা কোনভাবে তার রাজনৈতিক অবস্থান প্রতিফলিত করে ....'
মন্তব্যর জন্যে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
১৪| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:০৬
নেক্সাস বলেছেন: সুপ্রিয় এবং অগ্রজ আহমেদ জি এস ভাইয়ের মন্তব্য পেয়ে ভালো লাগছে। যদিও মূল লেখকের অনুপস্থিতি বিষয়টাকে কিছুটা নিরুতসাহিত করছে। আমি আহমেদ ভাইয়ের প্রতিউত্তরে দু'কথা লিখছি, যদিও সাহিত্য পর্যালোচনায় ভাইয়ের যে পদ্মা মেঘনার মতো উচ্ছ্বল প্রজ্ঞা, তা আমার নেই। আমিও ভাইয়ের সাথে একমত যে "সাহিত্য করতে মনে হয় রাজনীতির প্রজ্ঞা ও জ্ঞান এর দরকার খুব একটা নেই" আমি এও বলছিনা যে সাহিত্যের একমাত্র উপজীব্য রাজনীতি বৈ এর কিছু নয়। আমি বা লেখক সম্ভবত যেটা বলছিলাম সেটা হচ্ছে সাহিত্যের বিশেষ করে বাংলা সাহিত্যের আকাশ থেকে রাজনীতি সচেতনতা হারিয়ে যাওয়ার কিংবা কৌশলে রাজনীতিকে অচ্ছুত জ্ঞান করে দূর করে দেওয়ার প্রবনতা প্রসঙ্গে। সাহিত্য যে কোন কিছুকেই উপজিব্য করে গড়ে তোলা যায়। এটা সন্দেহাতীত সত্য। কিন্তু আসল কথা কথা হচ্ছে সাহিত্যের সার্বজনীনতা, গনমূখিতা এবং স্থায়ীত্ব। জিএস ভাইয়া বলেছেন-
সাহিত্য রাজনীতির চেতনা নির্ভর নয়, জীবনের ধুলোময় পথে পথে যে অফুরান কাদামাখা শব্দ আর কথারা ছড়িয়ে জীবনময় হয়ে আছে তাকে সাফসুঁতেরো করে দু'হাতের অঞ্জলীতে তুলে নৈবেদ্য সাজানোই সাহিত্য । এই যে জীবন ! , এই জীবনের ধারণাটাই কিন্তু রাজনৈতিক। জীবনের রূপ, জীবনের মর্ম, জীবনের আকাঙ্খা, জীবনের উদ্দেশ্য এর সবকিছু রাজনৈতিক ঘাত প্রতিঘাতে মূর্ত হয়ে ওঠে। এখানে রাজনীতি সমাজঘনিষ্ঠ একটা বৃহত্তর ধারণা, নির্দিষ্ট কোন গোষ্টি বা আদর্শের অনুসরণ নয়। রাজনীতি মানুষের মূল্যবোধ তৈরি করে। সে মূল্যবোধের মধ্যে স্থান পেয়েছে ন্যায়বিচার, মানবিকতা, ধৈর্য, স্বাধীনতা, মুক্তমন, ব্যক্তিমানসের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ, পেশিশক্তির প্রতি ঘৃণা, স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ। আর এগুলিইতো জীবন।
আমাদের সমাজে এখন কি চলছে? আমরা জাতীয়ভাবে একটা ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছি। জাতিগতভাবে আমাদের মানসিক সংকট চলছে। আমাদের সামনে মৃত্যু এখন উতসবে রূপ নিয়েছে। সন্তান পিতা-মাতার হন্তারক কিংবা পিতা-মাতা সন্তানের হন্তারক, ভাই ভাইয়ের হন্তারক হয়ে উঠছে। এগুলি আমাদের রাষ্ট্র ব্যাবস্থার সামগ্রিক অধঃপতন ও অস্থীরতার প্রতিফলন। আমাদের মেয়েরা বিদেশে পাড়ি দিচ্ছে জীবিকার তাগিদে, কিন্তু সেখান থেকে ধর্ষিত হয়ে ফিরছে, গর্ভবতি হয়ে ফিরছে, লাশ হয়ে ফিরছে। জীবনের এমন ট্র্যাজিক গল্প আর কি হতে পারে? কিন্তু এই পুরো বিষয়টা রাজনৈতিক। আদতে রাষ্ট্র ব্যাবস্থার ব্যর্থতায় মেয়েরা বিদেশে পাড়ি দিচ্ছে জীবিকার জন্য একিভাবে রাষ্ট্র ব্যবস্থার অবহেলা, দূর্বলতা ও উপেক্ষার কারণে তারা নির্বিচারে পরবাসে নির্যাতিত হচ্ছে। এভাবে পুরো বিষয়টার সৃজন রাজনৈতিক এবং সমাধানও রাজনৈতিক। এই বিষয়টাকে পুজি করে তৈরি হতে পারে জাতীয় মননে নাড়া দিয়ে যাওয়া জনমত এবং ন্যাংটো রাজার স্বরূপ তুলে ধরা সাহিত্য। আর তখন সেটা হবে কালবিজয়ী সাহিত্য।
রাষ্ট্র আজ অবদমনের পক্ষে।মানুষ কথা বলতে পারছে না। জীবন বলতে যে উপভোগ উদযাপন বুঝায় সেটা আমাদের সমাজে এখন অনুপস্থিত। এই অবস্থায় আমরা বিভক্ত। আমরা প্রত্যেকটা ইস্যুতে বিভক্ত হয়ে পড়ছি। আমাদের ইতিহাস এখন খন্ড বিখন্ড, বিভক্ত , বিকৃত। আমাদের জাতিগত গন্তব্য তমসাচ্ছন্ন। আমাদের সমস্যা কি , সে সমস্যা থেকে উত্তরণের পথ কি তার কোন নির্দিষ্ট অবিসংবাদিত পথ উঠে আসছে না। জনগন চেতনার জ্বরে ভুগছে। আর এই পুরো বিষয়টাই রাজনৈতিক। প্রতিটি নাগরিকের জীবনকে প্রভাবিত করে যাওয়া ঘটনাগুলো যেমন রাজনৈতিক তেমনি এগুলির সমাধানও রাজনৈতিক। আর এগুলিকে উপজিব্য করে সৃষ্টি হতে পারে অমর সাহিত্য- গল্প, কবিতা, গান। এসব বিষয়গুলো সাহিত্যে তুলে এনে সাহিত্যিকগন সমাজের সাথে মিশে যেতে পারেন, হয়ে উঠতে পারেন গন মানুষের প্রতিনিধি। সাহিত্য মানুষের মনন শাসন করতে পারে বলেই সাহিত্য পারে সংকটকালে নির্লিপ্তভাবে ঘটনাচিত্রণের মাধ্যমে মানুষের চৈতন্যে নাড়া দিয়ে মানুষকে ইতিবাচক আদর্শে ঐক্যবদ্ধ করতে, ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রতি মনোনিবেশ করিয়ে উত্তরণের পথ দেখাতে । আমাদের যাপিত সমাজ অলক্ষ্যে এটাই দাবি করছে সর্বাগ্রে। ধরুন বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষনের কথা। কেন সেটা অনেকটা কবিতার মতো করে উচ্চারণ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু? কারণ মানুষকে প্রভাবিত করার এটা অন্যতম উপায়।
ভাইয়া হয়তো জানেন সাম্প্রতিক কালে ভারতের ঝাড়খন্ডে আদিবাসি লেখক হাসদা সৌবেন্দ্র শেখর " আদিবাসি উইল নট ডানস" নামে একটি গলপের বই লিখেছেন। বই- এর গল্পগুলোতে আদিবাসি সাওতালদের জীবন, জীবিকা, সংগ্রাম, ক্ষুধা, সংসার, কাম, নারী জীবন, আদিবাসি সংস্কৃতি ও এগুলোর সাথে জড়িত নানা ঘটনা প্রবাহ এবং সেই সাথে সরকার ও রাষ্ট্রের নানা বঞ্চনা ও অনায্য আচার আচরণ , বহিঃসংস্কৃতির অগ্রাসন ইত্যাদি উঠে এসেছে। বইটা সারা রাজ্যে হৈচৈ ফেলে দিয়েছে। প্রতিক্রিয়াশীল এলিট শ্রেণী বইটা সহ্য করতে না পেরে নিষিদ্ধ করেছে। এর অর্থই হল বইটি সার্থক, কালজয়ী সাহিত্য। গল্পকার গল্পের ঢংয়ে সময়কে চিত্রিত করতে গিয়ে তুলে ধরতে পেরেছেন সমাজ বাস্তবতা ও ন্যাংটা রাজার স্বরূপ। সেই সাথে আদিবাসীদের সমাজকে নিজের জ্ঞান ও প্রজ্ঞায় উজ্জীবিত হয়ে অনাদিবাসী আগ্রাসন ও সংস্কৃতিকে বর্জন করার পথও দেখিয়েছেন তিনি।আদিবাসি উইল নট ডানস"- এই শিরোনামটাই যেন একটা প্রতিবাদ। বইটি আজ হয়তো নিষিদ্ধ, কিন্তু কাল এটাই হয়ে উঠবে সাওতালি সমাজের নিজেকে খুজে পাওয়ার হাতিয়ার। এই বইটি সাওতালি সমাজের আত্মমূল্যায়ন করবার, সমস্যা চিহ্ণিত করে সমস্যার সমাধান বের করবার আর সত্যিকে চিনে নেবার আদিবাসী ক্ষমতার পেছনে ইন্ধনতো দিয়ে গেল। আর লেখক পুরো উদ্দেশ্যটা সাধন করেছেন সাহিত্যের মোড়কে।
আর তাই বলতে চেয়েছি সাহিত্যে রাজনৈতিক চেতনা অস্পৃশ্য নয়, অনাকাঙ্খিত নয়, বরং কালজয়ী সাহিত্যের জন্য রাজনৈতিক চেতনা বা সময়জ্ঞান অত্যাবশ্যকীয়।
সবাইকে ধন্যবাদ।
( কী বোর্ডের টাইপজনিত সমস্যায় অনেক বানানে চন্দ্রবিন্দু ও খন্ডত দিতে পারিনি বলে দুঃখিত)
১৩ ই নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:২৪
মুবিন খান বলেছেন: সুপ্রিয় সুহৃদ @নেক্সাস, আপনি কি চমৎকার করেই না সাহিত্যর সঙ্গে রাজনীতির মেলবন্ধনটা বলে দিলেন! আপনার বলে দেওয়াকে খুব করে সমর্থন করছি। তার সঙ্গে একটু নিজের কিছু কথাকে যোগ করতে চাই। তার আগে আমার নিজের অনুপস্থিতির জন্যে ক্ষমা চাইছি। নিজের অনুপস্থিতিটা একটু ব্যাখ্যা করি। প্রথমত, আমি গ্রামীণ ফোন ব্যবহার করি। গ্রামীণ ফোন ইন্টারনেট থেকে সামহোয়্যার ইন ব্লগ সাইটটি খোলে না। ফলে বাইরে থাকলে এখানে ঢুকতে পারা যায় না। দ্বিতীয়ত, খুব আশাতীতভাবেই আমার এ লেখাটিতে যারা এসে নিজেদের মতামত বলেছেন, যেমনভাবে যৌক্তিকতায় নিজের অবস্থান আর ব্যাখ্যার সঙ্গে বক্তব্যটি বলে দিয়েছেন, সেখানে আলাদাভাবে আর কিছু বলবার অবকাশ নেই মনে বলেই মনে হয়েছে।
কথা এসেছে, 'সাহিত্য করতে মনে হয় রাজনীতির প্রজ্ঞা ও জ্ঞান এর দরকার খুব একটা নেই।'
না, সাহিত্য করতে রাজনীতির প্রজ্ঞা ও জ্ঞানের দরকারই নেই। সাহিত্য যিনি রচনা করবেন, তিনি কেবল তাঁর লিখতে চাওয়া পটভূমিটি মাথায় রেখেই লিখবেন। কিন্তু লেখাটি সম্পূর্ণতা পাওয়ার পর পাঠক যখন সে লেখাটি পাঠ করবেন, তখন লেখাটি আপনিই সমালোচিত কিংবা মূল্যায়িত হবে রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে। কেননা লেখক যে পটভূমিটি তাঁর লেখাতে ফুটিয়ে তুলেছেন, সেখানকার প্রত্যেকটি চরিত্রই নিজের নিজের শ্রেণীর প্রতিনিধিত্ব করছে। আর লেখক নিজেও যে সমাজে বাস করছেন, সেখানে লেখকের লেখক পরিচিতিটিও একটা ব্যবস্থার অধীনে নির্মিত, যেটি আসলে রাজনৈতিক সমাজব্যবস্থাই। ফলে প্রত্যেকটি চরিত্রই নিজের নিজের শ্রেণীর প্রতিনিধিত্ব করবার পাশাপাশি তুলে ধরছে তার সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থান। শ্রেণীর সঙ্গে সঙ্গে তার রুচি জানাচ্ছে সামাজিক ব্যবস্থাটি কেমন। জানা যাচ্ছে তার ধর্মীয় মূল্যবোধ। যে সমাজে সে বাস করে তার কতটা পরিবর্তন তার কাছে কাঙ্ক্ষিত, সেটিও জানা যায়। আর ব্যক্তির এই শারীরিক ও মানসিক অবস্থানগত সকল দিকই নিয়ন্ত্রণ করে রাজনীতি। একজন লেখকের রাজনীতির প্রজ্ঞা ও জ্ঞানের দরকার নেই। দরকার একজন সচেতন মানুষ হওয়ার। আর সচেতন মানুষ মাত্রই জানবেন কোন্ ব্যবস্থাটি রাষ্ট্রর নাগরিকের ভাগ্য নিয়ন্তা।
আপনার চমৎকার বক্তব্যটির জন্যে অসংখ্য ধন্যবাদ।
১৫| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:৫৩
রাজীব নুর বলেছেন: সব কিছুর সাথেই রাজনীতি মিশে থাকে। বট গাছের নিচে দাড়ালে বট গাছের ছায়া পড়বেই।
১৮ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৩:৪৯
মুবিন খান বলেছেন: ঠিক তাই। বট গাছের নিচে দাঁড়ালে বট গাছের ছায়া পড়বেই।
ধন্যবাদ আপনাকে।
©somewhere in net ltd.
১| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:৩৬
আখেনাটেন বলেছেন: সাহিত্য করতে গেলে তাতে রাজনীতি দেওয়া যাবে না। --- এটা যারা বলে তারা হালুয়া-রুটির ভাগিদার সাহিত্যিক। যে দিকে হাড্ডি তাদের দৌড়ও সেদিকে। পৃথিবীর বেশির ভাগ বিখ্যাত উপন্যাস-গল্প-কবিতাই রাজনীতি মাখানো।
চমৎকার লিখেছেন।