নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নুহাশ পল্লী ঘুরে অাসলাম !
গাজীপুরের এক গহীন বনের ভেতর এই পল্লীর অবস্থান ! বাইকে করে যাওয়ার সময় ভাবছিলাম, এই জঙ্গলের ভিতর হুমায়ুন অাহমেদকে জমির সন্ধান দিয়েছিলো কে ! এবড়োথেবড়ো ভাঙ্গা রাস্তাটা প্রচুর স্পিড ব্রেকারে পূর্ণ ! বাইকে গতি তোলা যাচ্ছিল না ! একসময় পৌছালাম নুহাশ পল্লীর দরজায় ! চলুন ভিতরে ঢুকি !
সামনের মাঠটা চমৎকার ! গলফ খেলার ফিল্ড যেমন হয় অনেকটা তেমন ! মাঝখানে একটা লিচু গাছ ! সেই গাছের সাথে একটা উচু ঘর ! এখানে কেউ বাস করে ভেবে ভুল করবেন না, ওটা শুধু ছবি তোলার জন্য ! সিড়ি দিয়ে উপরে উঠে ছবি তুলুন তারপর সিড়ি দিয়ে না নেমে একটা লাফ দিন ! লাফ দেওয়া শেষ হলে জুতোর ফিতাটা অাবার বেধে নিন !
এবার মাঠটা পার হলে, অনেক রকমের গাছ চোখে পড়বে ! বেশীরভাগ গাছেরই নাম জানবেন না বা জানলেও চিনবেন না এমন ব্যাপার ! পাশ দিয়ে রাস্তা ! সেই রাস্তায় এই মুহুর্তে একটা ছেলে হলুদ কালারের পোলো টিশার্ট পরে সুমধুর সুরে বাশি বাজাতে বাজাতে হেটে যাচ্ছে ! পায়ে কোনো সেন্ডেল না থাকায় পায়ে বেশ কাদা লেগে অাছে(ইনার গল্প অারেকদিন হবে) !
অারেকটু ভিতরে ঢুকলে একটা ভূত টাইপের বড় ভাষ্কর্য দেখতে পাবেন ! মেয়েরা এটার সামনে দাড়িয়ে ছবি তুলুন অার ছেলেরা এই ভাষ্কর্যের মাথায় উঠে নিজেকে কিছুক্ষনের জন্য দরবেশ বা সন্ন্যাসী বাবা ভাবুন ! উপর থেকে দেখবেন সামনে একটা নারী ভাষ্কর্য ! দেখতে বেশ লাগছে ! কিছুক্ষন তাকায় থাকুন, চোখের অারাম লাগবে ! তবে সাথে যদি মেয়ে থাকে তাহলে এই ভাষ্কর্যটা ইগনোর করার ভান করুন ! এটা দেখা শেষ হলে অাপনার সামনে বেশ বড় পুকুর দেখা যাবে ! পুকুরের মাঝখান দিয়ে একটা কাঠের ব্রীজ অর্ধেক পর্যন্ত গিয়ে শেষ হয়ে গেছে ! মাঝখানে তিনটা বেঞ্চি রাখা ! এতোটা পথ হেটে এসে অাপনার ক্লান্তি লাগতে পারে, এবার এখানে বসতে পারেন !
এবার চারপাশে তাকান ! অাপনার সামনে একটা বাড়ি ! ডান বাম এবং পিছন তিনদিকেই পানি ! তবে পুকুরের চারপাশ দিয়ে হাটা যায় ! এবার সেখান থেকে উঠে পড়া যাক ! পুকুরের পিছনটায় একটা গাছ অাছে ! সেই গাছে খোদাই করে ছেলেরা তার নামের প্রথম অক্ষরের সাথে তার প্রিয়তমার নামের প্রথম অক্ষর লিখে রেখেছে ! জগতে এতো প্রেম দেখলেই মন ভরে যায় ! গাছটার পাশে অারেকটা ফুলের গাছ ! মে বি কাঠালি ফুলের গাছ এটা ! পাশে একটা উচু জায়গাও অাছে ! সেখানে দুটো দোলনা অাছে ! তার একটা দোলনায় চড়বেন না কারন সেটি ভাঙা ! পাশের দোলনাটায় অারাম করে বসে পুকুরের দিকে তাকান অার প্রিয় মানুষটিকে নিয়ে দোল খান !
দোল খেয়ে তৃপ্তি চলে অাসলে অাবার পুকুরের পাড় ধরে হাটতে থাকুন ! এটাই জমির শেষ সীমানা ! তবে হাটার সময় এই কর্নারে এক জোড়া ভালোবাসার মানুষ দেখতে পাবেন যারা একে অপরের সাথে নিরিবিলিতে বসে অনাগত ভবিষ্যতের গল্প করছে ! অাপনার এটা ইগনোর করা উচিত হবে কারন অাপনার এরকম গল্প করার কেউ নেই ! দুপাশে গাছের সারি মাঝখান দিয়ে হেটে যাওয়ার রাস্তা ! সময়টা যদি বিকেল হয়ে থাকে তাহলে দেখবেন পুকুর পাড়ের এই দিকটা অসম্ভব সুন্দর লাগছে !
সামনের দিকে হাটার সময় দেখবেন, দুটো লোক করাত দিয়ে একটা গাছ কাটছে ! অাপনি তাদের ছবি তুলতে চাইবেন, তারা তরমুজের বিচির মতো দাত বের করে অাপনার ছবিতে পোজ দিবে ! ছবি তোলা শেষ হলে দেখবেন, এখানে একসময় বেশ বড় বড় কয়েকটা বরইয়ের গাছ ছিল যেগুলা এখন মাথা ছাড়া দাড়িয়ে অাছে ! অাপনি একটু অাপাইড়া টাইপের তাই এই মাথাবিহীন বরই গাছে উঠে কয়েকটা ছবি তুলেলে সেখান থেকে লাফ দিবেন ! তারপর সেটা এক বন্ধুকে ক্যামেরাবন্দী করতে বলুন ! লাফ দেওয়া শেষ হলে দেখবেন বরইয়ের কাটা লেগে অাপনার হাতটা একটু ছিলে গেছে ! ছেলেদের এসব ছোটোখাটো কাটাছেড়া ইগনোর করতে হয় ! তারপর একটু রেস্ট নিয়ে বাইরে বের হয়ে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিকের কবরটা একবার জিয়ারত করে চলে অাসুন ! কবরের উপরে কাচের দেয়ালটিতে তার 'কাঠপেন্সিল' বইয়ের একটা লাইন লেখা অাছে,
''কল্পনায় দেখছি নুহাশ পল্লীর সবুজের মধ্যে ধবধবে শ্বেতপাথরের কবর তার গায়ে লেখা,
চরন ধরিতে দিও গো অামারে
নিয়ো না, নিয়ো না সরায়ে"
যারা দূর দূরান্ত থেকে নুহাশ পল্লীতে হুমায়ুনের এই অমর সৃষ্টি নুহাশ পল্লী দেখতে যান, তাদের প্রবেশের জন্য ২০০টাকা দিয়ে টিকেট কিনতে হয় !
টাকার অঙ্কটা দেখে মনে হলো, মৃত্যুর পরেও মানুষটাকে নিয়ে ব্যাবসা চালানোর কমতি নেই !
তবুও ভালো থাকুক হুমায়ুন অাহমেদ !
ভালো থাকুক তার পাগল ভক্তরা !
২| ০২ রা মে, ২০১৮ রাত ১১:৪১
শামচুল হক বলেছেন: নুহাশ পল্লীর ছবি দিলে ভালো হতো। ধন্যবাদ
৩| ০২ রা মে, ২০১৮ রাত ১১:৫১
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: স্বার্থক লেখক, স্বার্থক স্বপ্ন, স্বার্থক জীবন...
২৮ শে মে, ২০১৮ রাত ১১:২৫
মাহমুদ পিয়াস বলেছেন: কৃতজ্ঞতাসমেত অনেক ধন্যবাদ !
৪| ০৩ রা মে, ২০১৮ সকাল ৯:৪৫
রাজীব নুর বলেছেন: লেখার সাথে ছবি অবশ্যই দেওয়ার দরকার ছিল।
শুধু ছবি৮ দিয়ে আরেকটা পোষ্ট দেন।
৫| ০৩ রা মে, ২০১৮ দুপুর ২:১৩
আল ইফরান বলেছেন: রাজীব নুর বলেছেন: লেখার সাথে ছবি অবশ্যই দেওয়ার দরকার ছিল।
কঠিনভাবে সহমত, তাহলে পোস্ট আরো আকর্ষণীয় হত
আমার পরিচিত কয়েকজনের রিভিউ আপনার মতই। আমি এখনো যাওয়ার সময় করে উঠতে পারি নাই
২৮ শে মে, ২০১৮ রাত ১১:২৫
মাহমুদ পিয়াস বলেছেন: একদিন সময় করে ঘুরে আসুন, ভালো লাগবে !
৬| ০৫ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৪
রাজীব নুর বলেছেন: নুহাশ পল্লীর ছবি দিয়ে পোষ্ট দিবেন না?
২৮ শে মে, ২০১৮ রাত ১১:২৬
মাহমুদ পিয়াস বলেছেন: শুধু ছবি দিয়ে একটা পোস্ট দিতে কেমন জানি লাগছে !
৭| ০৬ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৩
সুমন কর বলেছেন: ছবি ছাড়া পোস্টটি পূর্ণতা পেল না ~~
©somewhere in net ltd.
১| ০২ রা মে, ২০১৮ রাত ১১:১৪
ইব্রাহীম আই কে বলেছেন: ভালো লাগলো।
কিছু ছবি এড করলে মনে হয় আরো ভালো হত।