নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আজাদ, একদিন তার মায়ের আচল ধরে বলে, জানো মা, তুমি কিন্তু আমাকে একদিনও মারো নি ! তোমার এতো অবাধ্য হয়েছি তবুও তুমি আমার গায়ে হাত তুলো নি, একটা দিনও না, একটা মুহূর্তের জন্যও না ! সত্যিই তোমার মতো মা পাওয়া দুষ্কর ! আমি যদি কোনোদিন বড় কিছু হই, আমি তোমার জীবনী লিখবো ! সারাবিশ্বকে জানাবো আমার মায়ের কথা.......
পরে সাফিয়া বেগমের জীবনী লেখার জন্য জাহানারা ইমাম, তার এবং আজাদের ছবি চেয়েছিলেন, কিন্তু সাফিয়া বেগম লিখতে 'না' বলে দিয়েছিলেন, যে জীবনী তার ছেলে লিখতে চেয়েছিল, সেটার দায়িত্ব তিনি কিভাবে আরেকজনের হাতে দেবেন !!!
৭১'সালে এই ছেলের জন্য তার মা মেয়ে খুঁজছিলেন ! তার খুব স্বপ্ন ছিল বৌ'কে তিনি সোনা দিয়ে মুড়িয়ে ঘরে আনবেন ! সেই গহনাগুলো তিনি একটা ট্রাঙ্কে ভরে রেখেছিলেন !
আজাদের মা মারা গিয়েছেন ৩০আগস্ট ১৯৮৫, আজাদ যেদিন ওদের হাতে ধরা পড়ে, সেদিন থেকে গুনে গুনে ঠিক ১৪বছর পর !
মা-ছেলের কি মিল, তাই না ?
মৃত্যুর আগের দিন আজাদের মা, জায়েদের হাতে ট্রাঙ্কের চাবিটা তুলে দেন ! যারা আজাদকে চেনেন, তারা অবশ্যই জায়েদকে চেনেন, তার কথা আর না বলি !
জায়েদ ট্রাঙ্ক খুলে দেখে সেখানে রাখা আছে, ১০০ভরি সোনার গহনা ! ১০০ভরি ! জায়েদ ভাবে, কি আশ্চর্য এই মহিলা, জীবনের শেষ দিনটিতে কাটালেন জুরাইনের একটি স্যাঁতসেঁতে বস্তিতে অথচ এই গহনার দিকে একটুও হাত দিলেন না ?
দিবেন কিভাবে, সেটা তো তার ছেলের বৌ এর জন্যই আলাদা করে রেখেছিলেন ! এখানে কি আর তার হক আছে ?
.
আগেরদিন সাফিয়া বেগমের স্বামী ইউনুস চৌধুরীর সাথে তার দৃঢ়তার কথা বলেছিলাম ! মনে আছে নিশ্চয় !
কতোটা আত্মত্যাগী আর দৃঢ়চেতার অধিকারী হলে কেউ তার মুখের কথা রাখার জন্য এতোটা করতে পারে ??
এরকম হওয়ার জন্য কতোটা দৃঢ়চেতার হতে হয়, কতোটা ???????
©somewhere in net ltd.