নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শূন্য থেকে শুরু আর শূন্যতেই শেষ !

মেহেদী তারেক

আজীবন উপদেষ্টা,গণ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি

মেহেদী তারেক › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রে আমার বন্ধু এমদাদকে মরতে হলো কেন?

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৪৪

ইমদাদকে যখন হত্যা করা হয়, তখন তার বয়স মাত্র ১৯ বছর। এমদাদের প্রথম "অপরাধ" ছিল, মসজিদে নামাজ শেষে একজনের সাথে ধাক্কা লাগার পর বাকবিতণ্ডা হওয়া। সে ব্যক্তিটি ছিল স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক নেতা। আর দ্বিতীয় অপরাধ ছিল, এমদাদ বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবিরের কর্মী ছিল। সেই সময় মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাহউদ্দীন এই হত্যাকাণ্ডের নেতৃত্ব দেন। তৎকালীন প্রচলিত "বন্দুকযুদ্ধের নাটক" রচনা করে আমার বন্ধু ইমদাদকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

তখন আমি প্রতিবাদ করতে পারিনি, সাহসও ছিল না। ফেসবুকে শুধু একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম: "আমার বন্ধুকে কেন মেরে ফেলা হলো?" স্ট্যাটাসটি দেখে আমার পরিবার থেকে কল আসে, তারা আমাকে পোস্টটি ডিলিট করতে বলে।

ইমদাদ ছিল আমার কলেজ জীবনের বন্ধু। আমি সরকারি বিজ্ঞান কলেজের ছাত্রাবাসের ৩য় তলায় থাকতাম, আর এমদাদ থাকত নিচতলায়। ইমদাদ ছিল আমার ঢাকা শহর চেনানোর সঙ্গী। নভো থিয়েটার, জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর থেকে শুরু করে বদ্ধভূমি, শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে যাওয়া—সবই হয়েছে এমদাদের সাথে। ওর হাত ধরেই আমার ঢাকা শহরকে দেখা। এমদাদ ছিল প্রচণ্ড মিশুক আর প্রাণশক্তির অধিকারী। কখনো ক্লান্ত হতো না। মিরপুরে খেলা দেখে আমরা কতবার হেঁটে হেঁটে ফার্মগেট পর্যন্ত চলে এসেছি। ঘুরে বেড়ানোর খুব শখ ছিল তার। লক্ষ্য ছিল দেশের ৬৪টি জেলা ঘুরে দেখা। কলেজে পড়ার সময়ই সে আরো কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে অনেকগুলো জেলা ঘুরে দেখেছিল।

এমদাদ সবসময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করত। হলে একটি টিভি ছিল, যেখানে শুধু খেলা দেখার কথা ছিল। একদিন আমরা সেই টিভিতে সিনেমা দেখছিলাম। এমদাদ এসে প্রতিবাদ করল। আমি তার বন্ধু হয়েও তার তিরস্কার থেকে রেহাই পাইনি। অন্যায়ের বিরুদ্ধে তার অবস্থান ছিল অটল।

এই রকম একটি তাজা প্রাণ ঝরে গেল তার রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে। বিনা বিচারে ক্রসফায়ারে তার জীবন শেষ হলো। বিগত ১৬ বছরে বাংলাদেশে এমন হাজারো এমদাদের গল্প আছে, যা হয়তো কেউ জানে না।

এমদাদের কথা মনে পড়লে আমি শুধু বলতাম, "আল্লাহ, তুমি এর বিচার করো।" আল্লাহর কাছে আমার সবসময় প্রার্থনা ছিল, যারা এই হত্যাকাণ্ডের নেতৃত্ব দিয়েছে, তাদের যেন আল্লাহ কখনোই ক্ষমা না করেন। আজ সেই নেতৃত্বদানকারীরা পালিয়ে গিয়েছে, আদালত চত্বরে জনগণের বিচার তাদের জন্য অপেক্ষা করছে। আর মৃত্যুর পর আল্লাহর বিচার তো আছেই। যে আল্লাহ সেরা জীব হিসেবে মানুষকে সৃষ্টি করেছেন, তার প্রিয় সেই জীবকে এভাবে মেরে ফেলার স্পর্ধা আল্লাহ কখনো ক্ষমা করবেন না।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৩

নতুন বলেছেন: এমদাদ বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবিরের কর্মী ছিল।

এমদাদের জন্য খারাপ লাগছে যে সে জামায়েতের শিবিরের দ্বারা ব্রেনওয়াস্ড হয়ে ছিলো।

আর শিবিরের কর্মী আপনার বন্ধু হলেও যদি সে সন্ত্রাসীর সাথে যুক্ত থেকেও থাকে তবে আপনি জানতে পারবেন না। এরা এতোই ধূর্ত।

অন্য ভাবে কোন হত্যাই সমর্থন কারাযায় না। আশা করি নতুন বাংলাদেশে সকল অন্যয়য়ের বিরুদ্দে মানুষ রুখে দাড়াতে পারবে, অপরাধ করলে সাজা পাবে।

এবং কাউকে শিবির এবং ছাত্রলীগের মতন সন্ত্রাসীদলের সদস্য হতে হবেনা।

২| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:১৫

রিফাত হোসেন বলেছেন: লীগ, শিবির, দল... আপনার বন্ধু যদি পড়াশোনায় মনোনিবেশকারী হত সেটা জানলে আরো ভাল লাগত। ১৯৭১ সালে জামাত এইভাবে অনেক হত্যা করেছে, ১৫-১৬ বছর ধরে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আওয়ামী করেছে। পার্থক্য কোথায়??? মুদ্রার ওপিঠ আর কি।

বিচার বহির্ভূত কোন কিছুই কাম্য নয়। এটা যেই করে থাকুক। আত্নপক্ষ সমর্থন করার সুযোগ থাকতে হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.