নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিপদজনক ব্লগ

কৌশিক

নিদারুণ প্রহসনের দিনগুলি

কৌশিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

তিন নম্বর হাত

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:২০

পরে আমি এটা মেনে নিয়েছিলাম। প্রশ্ন শুনে কোনো বিকার হতো না। শারীরিক রক্ষণশীলতা তো ছিলোই। প্রতিক্রিয়াহীন থাকতে পারতাম। তবে আমার তিন নম্বর হাত দেখে মানুষের বিস্মিত হওয়া উপভোগও করতাম। তাদের মন্তব্যগুলো মজার হতো। খুব কম সেখানে ভীতি থাকতো, তবে তিয়শা ছাড়া। মাঝবয়সেও তার কিশোরীর মত আঁতকে ওঠা মানিয়ে গেছিলো, বয়সও কমিয়েছিলো।

ওটা কী! ও ও ও ও টা হাত!

আমার তিন নম্বর হাতে মোবাইল ছিলো। ছোট বলে ওটাকে দাসের মতই শ্রমঘন কাজে নিযুক্ত করেছি। কেউ অবশ্য জানে না যে ঐ হাত রাত দিন কাজ করে যেতে পারে এবং সেজন্য আমার শরীর থেকে কোনো ক্যালরি তার নিতে হয় না। গৃহপালিত দাস...বিনেপয়সায় আদেশ পালন করে যায়, পরিশ্রান্ত হয় না মোটেও।

তিয়শার উত্তরে আমার মোবাইল ধরা হাতটা নাড়ালাম। একটু হাই ভঙ্গিতে। তিয়শা আরো চমকালো। ২৭ নম্বর বাসের একেবারে পেছনে চলে গেলো আমাকে সাইড কেটে। ডানের জানালার পাশে যে বসেছে সে একমনে আমার টাইপিং দেখছে, ওইপাশের দুজনও চেষ্টা করছে। মেসেঞ্জারে একটু পরে নোটিফিকেশনের টুট দেখে আমি মোবাইলটাকে কোলের উপরে নিয়ে আসলাম সে হাত নাচিয়ে।

যখন দুটো হাত ছিলো তখন আমার আসলেই কষ্ট হতো। বিশেষত প্রেম যোগাযোগে। সারাক্ষণ কিছু না কিছু লিখতে হবে। তার একটা ব্যয় হতো। শক্তি ও সময়ের। তারপরে চোখের নিচে কালি জমতে থাকলে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে অহেতুক পরিচর্যা করতে হতো। ফলাফল শূন্য জেনেও আমরা যেমন অনেক কাজ করি - চোখের নিচের কালি দূর করার দেশজ যত্নআত্তিও একটা। কুঁচকানো চামড়ার বাঁক টানটান করার চেষ্টা করি।

তিন নম্বর হাতের জন্য চেষ্টা করছিলাম বিভিন্ন মাধ্যমে। তারপরে একটা জন্মে গেলো। এখন এই যে মোবাইল ধরার কাজটা সে পালন করে অলওয়েজ।

তিয়শার সাথে আমার আসলে সেদিন রাতেই পরিচয় হয় ফেসবুকে। সোজাসুজি একটা প্রশ্ন উড়ে এলো তার নাম থেকে, কেনো অপারেশন করছেন না?

নিরুত্তর থাকা অবধারিত ছিলো, কিন্তু তার পরের প্রশ্নে নিয়ম ভাঙতে হবে। ‘অবশ্য বাসেই প্রশ্নটা আপনাকে করতে পারতাম!।‘
ভয়জনিত চোখটা তার তখনকার আমার মনে পড়লো। এত আগ্রহ বয়ে নেট খুঁজে তিন হাত বিশিষ্ট মানুষের আইডি বের করে মেসেজ পাঠিয়েছে সেখানে ভয় নেই। ভয় দেখানোর জন্য বললাম, রেখে দিয়েছি..ও হাতে একটা খুন করবো।

কিইইইই! আপনি কি অসুস্থ?

আমার সাধারণত বড় ধরণের সমস্যায় পড়তে হয় না। টিশার্টগুলো একটু কাস্টমাইজড করে নেই। তাছাড়া শরীরের সাথে বেশ মানিয়ে গেছে। আরো স্মার্ট বানিয়েছে। এ শহরে তিন হাতের মানুষ একজনই – গর্বও করতে পারি। শহর কেনো বলছি..পৃথিবীতেও।
যেভাবে তিন নম্বর হাতটি জন্মিয়েছি তার রহস্য অবশ্য কাউকে বলিনি। তবে এটাকে অস্বাভাবিকতা হিসাবে দেখার বিরুদ্ধে আমার একটা আন্দোলন এখন সফল হয়েছে। দ্বি-হস্ত বিশিষ্ট প্রাণী হিসাবে মানুষের জীববিদ্যিও মিথও ঘুচেছে। এখন অসুস্থ হবার কোনো কারণ নেই।

সুস্থ মানুষেরা খুন করে না?

নাহ! সুস্থ মানুষ খুন করতে পারে না।

বিচারকরা?

সেটা তো সাজা! আমাদের কল্যাণের জন্য।

কিন্তু খুন তো!

খুন না। ওটা হচ্ছে দণ্ড...মৃত্যুদণ্ড।

মৃত্যুদণ্ডে কি মানুষের মৃত্যু হয় না?

মৃত্যু হয়..কিন্তু খুন হয় না।

মৃত্যু তাহলে দোষের না!

সব মৃত্যু দোষের না!

ওকে। তাহলে আমি নির্দোষ একটা মৃত্যু ঘটাবো এই হাত দিয়ে।

আশ্চর্য! নির্দোষ মৃত্যু ঘটাবেন কিভাবে? কেউ কি আপনার কাছে এসে মৃত্যু চাইবে?

চাইতে পারে। পৃথিবীর অনেক মানুষ নিজের মৃত্যু চায়। তাদের একটা গ্রুপ আছে। আমি দেখেছি ফেসবুকে। সেটার সদস্য করে দেবো আপনাকে?

ওহহ নো! পুরাই অসুস্থ আপনি! প্লিজ ডাক্তার দেখান।

আমার ডাক্তার দেখানো দরকারও। সেটা মানসিক কারণে না। হাতের কারণেই। ইদানীং এই হাতের অনেক কিছুই আমার নিয়ন্ত্রণাধীন থাকে না। নিজস্ব চরিত্র তৈরি হয়েছে। সম্ভবত একটা মাথাও। সে নিজের মত চিন্তা করতে পারে। আমি মাঝেমাঝে খেয়াল করে দেখেছি তিন নম্বর হাতের পাঁচটি আঙুল অনবরত কি জেনো সার্চ করতে থাকে। যা আমার প্রয়োজন নেই তাও সে খুঁজতে থাকে। অথবা কিছু প্রয়োজনে সে আমাকে অহেতুক আসক্ত করে। অনেক পরে আমার খেয়াল হয় কেনো আমি এই হাতের দেখানো লোকের সাথে এতক্ষণ আলাপ করেছি।

আমাকে কিন্তু এই হাত এতক্ষণ আপনার সাথে আটকে রেখেছে। নইলে আপনি কিভাবে কথা বলতেন? উপকারী না?

হাত না থাকলে কথা বলা যেতো না?

নাহ! দুই হাতে আমার এত কিছু ধরা সম্ভব না। তিন নম্বরটা হয়েছে বলেই এখন এত কথা বলি অপরিচিতের সাথে। আলাপ করি মৃত্যু দিতে। ব্যবসাও করি।

কি ব্যবসা!

মৃত্যুর।

এহহহহ! মজার মানুষ তো আপনি!

মৃত্যুরও!

কেনো এত এত মৃত্যু মৃত্যু করছেন?

আপনার মৃত্যু ঘনিয়েছে যে!

হাহাহাহা। এত সহজ না। আপনি তো আমাকে চেনেন না!

আপনার নাম জানি। একটু আগে ছিলেন গুলশান দুই নম্বরে। চেহারাও চিনি। হাজার হাজার ছবি আপনার দেখে ফেললাম কথা বলতে বলতে।

বাসা তো চেনেন না?

অফিস তো চিনি! ২২/৭ ইস্কাটন, তিন তলায় অফিস। আপনার ডেস্কের পেছনে জয়নুলের একটা পেইন্টিং এর কপি। খুঁজে বের করতে অসুবিধা হবে?

কি ভয়ংকর! সত্যি খুন করতে আসবেন নাকি? চলে আসেন তাহলে একদিন। দেখি কি পরিমাণ সাহস আপনার!
সাধারণত কেউ ঠিকানা না দিলে আমি যেতাম না দুই হাত থাকাকালে। কিন্তু এখন আর দরকার হয়না। সেদিন নতুন ডাক্তারের কাছে গেলাম ঠিকই ম্যাপের দেখানো পথ হেঁটে। তিয়শা অফিসের রিসিপশনিস্ট আমাকে দেখে কথা ভুলে গেলো। তার অবাক চোখকে পাত্তা না দিয়ে ভেতরে ঢুকে গেলাম। নিরীহ ও পরিপাটি ভদ্রলোক – তার উপরে এমন ট্রেডমার্কযুক্ত মানুষ অপরাধী হবে না হয়তো সে ধরে নিয়েছে।

তিয়শা আমাকে দেখে মাথা তুলে তাকালো। পকেট থেকে আমি কিছু বের করার ভঙ্গি করলাম। তিয়শা সেটা দেখে লাফিয়ে দাঁড়ালো। পকেটে থেকে খালি হাত বের করে আমি দুই আঙুল তার দিকে তাক করে মুখ দিয়ে ঠুস করে শব্দ করলাম।

তিয়শা সামলে নিলো অবিশ্বাস্য রকমের বিস্ফোরিত হাসিতে। সামনে তিনটা কিউবিকলের হেড-ফোন পরিহিত মানুষেরা ফিরে তাকিয়েছিলো চমকে, এবং পরে উঠে দাঁড়ালো আমাকে দেখো। হৈচৈ।

পারলেন না তো!

চলেন তাহলে বাইরে। কফি খেতে খেতে কাজটা করে ফেলা যাবে।

হাহাহা। চলেন।

যে কফি নিয়ে এলো সে গেলো না। কফি শপের অন্য টেবিলগুলোতে গুঞ্জন। কেউ হয়তো আমার ছবি দেখেছে। তিয়শা অফিস থেকে বের হবার সময়ও একটা শোরগোল উঠেছিলো।

এখন খুন করেন!

কফি ছেলেটা চমকালো না। আমার চমকের কাছে খুনের খবর বড় নয়।

ধরেন আমি এই ছেলেটাকে খুন করে ফেললাম এবং আপনি ভিডিও করলেন! অ্যাভিডেন্স..হাতে নাতে প্রমাণ দিয়ে দিতে পারবেন। পুলিশের কিন্তু তখন পালাবার পথ থাকবে না। আমার ফ্যামিলির কেউ যদি মন্ত্রীও হয় বাঁচাতে পারবে না আমাকে!

মন্ত্রীর আত্মীয় আপনি?

নিজেই তো মন্ত্রী! হাহাহা। মন্ত্রীরা যদি ভয় পায় তাহলেই তো হলো!

এত ক্ষমতা আপনার?

ক্ষমতা কই দেখলেন? বরঞ্চ আপনি যদি ভিডিওটা করে ফেলেন তাহলে সারা বিশ্বের লোক জানবে। ইস্ট থেকে ওয়েস্ট। এমনকি স্পেস-মিশনে যে আছে সেও। আর প্রধানমন্ত্রীও। নিজে ফোন করে পুলিশকে ধরতে বলবে, বিচারককে সঠিক বিচার করতে বলবে চটজলদি! মন্ত্রীর ছেলে হলেও রক্ষা নাই!

আচ্ছা ঠিকাছে খুন করে ফেলেন।

তার আগে আমরা একটা কমিউনিটি তৈরি করে ফেলি। ধরেন সেটার নাম হবে ‘আমরা একটা খুন করবো’। তারপরে সেখানে আলাপ করে দেখি কেমন রেসপন্স পাওয়া যায়।

ওয়াও! অসাধারণ!

তিয়শা সত্যি সত্যি একটা গ্রুপ করে ফেললো এই নামে। এবং আমাদের কফি শেষ হবার আগে সেখানে তিনশজন সদস্যও পাওয়া গেলো। ইতোমধ্যে বিশাল বিতর্কেও লিপ্ত হয়ে গিয়েছেন তাহারা। বেশ কিছু লিংক, ভিডিও এবং কঠিন কঠিন কথায় গ্রুপের ফিড পূর্ণ। কিছু গ্রিক দার্শনিকের উদ্ধৃতি এবং কু্রআন শরীফ থেকে কিছু আয়াতও কেউ তুলে দিয়েছে।

তিয়শা সাথে আমার সম্ভাব্য প্রেমটা কফি-শপের বাইরে সূর্যের আলো দেখলো না। তিন নম্বর হাতের প্রেমে থাকা আমার জীবন বরঞ্চ দীর্ঘায়ু লাভ করলো। নতুন তিয়শাকেও পাওয়া গেলো নিমিষে। এবং যখন তার চিকিৎসা সংক্রান্ত উপদেশ পর্ব এলো তখন আমি বললাম...একটা কাজ বাকি..এ হাতে আমি একটা উপন্যাস লিখতে চাই!

হুমমমম। লেখক আমার পছন্দ। আমি ভাবতাম একসময় লেখক হবো। কিন্তু সেই মাথা আমার নেই। ছোটবেলা জানেন পত্রিকায় চিঠিপত্র কলামে লিখেছি। তারপরে পত্রিকায় ছোট ছোট গল্প। একসময় বই বের করলাম। গতবছরও আমার একটা কবিতার বই বের হয়েছে।

মোট ক’টা বই আছে আপনার?

সতেরোটা। তিনটা উপন্যাস। দুইটা ভ্রমণ কাহিনী। বারোটা কাব্যগ্রন্থ। তিনবছর আগে আমার ‘নির্মলাবরণের পুঁথি’ কলম-শ্রেষ্ঠ পুরষ্কার পেলো। আপনাকে পাঠাবো! আসলে হয়েছে কি আমার কখনই মনে হয়নি আমি একজন লেখক। আর হতে পারলাম কই?

আপনার বই কিনবো। ইন্টারনেটে পাওয়া যাবে? লেখার স্যাম্পল!

প্রচুর! আমার প্রোফাইল ঘুরলে দেখবেন। দাঁড়ান লিংক পাঠাবো। আপনি কিন্তু কিনবেন না। আমি আপনাকে আমার বইগুলো কুরিয়ার করে পাঠিয়ে দেবো। একটু থাকবেন? চুলায় ভাত দিয়েছিলাম..পুড়ে গেছে মনে হয়!

তিয়শার নাম মিঙাম। কিভাবে উচ্চারণ করে জানি না। ফিরে এলেই আমি তার কাছে বায়না করি লেখা পড়ে শোনানোর জন্য। সম্ভবত এমন আনন্দ তার জীবনে হয়নি। এরপরে ঘণ্টা দুই ধরে তিন নম্বর হাত ছিলো বলেই আমি মোবাইলটা কানে চেপে তার কথা শুনতে পারি। অবশ্য সেখানে লেখা পড়েনি, ইনস্ট্যান্ট ওরাল সাহিত্য তৈরি হয়েছিলো। শেষের দিকে আমরা সাহিত্যের চরিত্রও হয়ে পড়ি।

খুন করবো আপনাকে! একসময় বলে মিঙাম।

করে ফেলেন‍!

ঠিকানা দেন...চলে আসি।

২২/৭ ইস্কাটন। তিনতলা।

এক ঘণ্টার মধ্যে চলে আসছি।

তিনতলায় ভেতরে ঢুকে হাতের ডানের শেষ ডেস্কটা। পেছনে জয়নুলের ছবি আছে।

ওকে। আসছি। আপনার তিন হাত খুঁজে পেতে আমার কষ্ট হবে না।

মিঙাম ও তিয়শা ঘণ্টা দুই পরে একসাথে আমাকে বকাঝকা করলো। কিন্তু নির্বিকার থাকার অধিকার আমার তিন হাতের অর্জিত সাফল্য ছিলো।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:২৭

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: ভাল লাগছিল পড়তে। কিন্তু বড়ই অগোছালো লাগল।
আরেকটু গুছিয়ে লিখতে পারতেন অবশ্য গুছিয়ে লিখলে পিনিকটা থাকতো কিনা সন্দেহ।
আমার ভাল লেগেছে প্লটের ভিন্নতা!

২| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:১০

হাসান মাহবুব বলেছেন: প্রথমদিকে একটা জমাট থিম ছিলো, বেশ ডার্ক, সুররিয়েল এবং সার্কাস্টিক। কিন্তু পরে থিমটা কেমন স্ক্যাটারড হয়ে গেলো। অহেতুক দীর্ঘ করেছেন লেখাটাকে। তবে পড়তে খুবই ভালো লাগসে। এরম লেখা নিয়মিত চাই।

৩| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৪৪

বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন: একটানে পড়লাম।

ভাল লাগল খুব।

৪| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৫০

কথাকথিকেথিকথন বলেছেন: লেখাটা বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে । তবে যে থিম দিয়ে শুরু করেছিলেন তা অনবদ্য ছিলো । কিন্তু শেষের দিকে বোঝা যাচ্ছিল না ।

৫| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:১২

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: পড়তে খুবই ভাল লেগেছে। যদিও বুঝতে পারিনি লেখক কী বুঝাতে চেয়েছেন। তিন নম্বর হাতটি আসলে কিসের প্রতীক?

নিয়মিত লেখা চাই। শুভেচ্ছা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.