নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এটা ভালো করে বুঝতে পারছি আমার পেইন কেউ বুঝবে না। আমারই বুঝতে হবে। চশমা পরিহিত প্রথম সকালে আমার যে কষ্ট তার পরিমাণ কোনো হিসাবে রাখা সম্ভব না। চশমা পরিহিত বলাও ঠিক হচ্ছে না, এটাকে বলা উচিত আবার চশমা শৃঙ্খলিত জীবন অতিবাহিত করতে বাধ্য হওয়া। পরিহিত হলে যেকোনো সময় খুলে রাখা যেতো, কিন্তু এটা পরতে হবে সারাক্ষণ। দূরভিশনে, নিকটভিশনে। কি পেইন! কি অসহ্য পেইন! পেইনের চেইনে আমার দৃষ্টি ঘোলা, দৃষ্টি ছেদিয়া অশ্রু প্লাবিত।
এইচএসসিতে উঠে প্রথম চশমা পরেছিলাম - মাইনাসে পয়েন্ট পঞ্চাশের। উত্তেজনা ছিলো, ভালোলাগা ছিলো। চশমা কেউ পরতো না বলে ডিফারেন্ট লুকের আকাঙ্ক্ষা ছিলো। ফলে চশমার সাথে মিলেমিশে ছিলো রোমাঞ্চ - পরার সাথে ছিলো ভালোলাগা। চশমা ছাড়াও দেখতে অসুবিধা ছিলো না তখন, কিন্তু সারাক্ষণ পরে থাকার জন্য বাহানা তৈরি করতাম। চশমা ছাড়া একটুও আমি দেখতে পারি না কৌশলে বলে বেড়াতাম বান্ধবীদের সাথে। পাওয়ারফুল চশমা পরিহিত শুভ্রের মত হওয়ার চেষ্টা করতাম - যার চারপাশে হুমায়ুন আহমেদ সিডাকটিভ রোমাঞ্চের গল্প লিখে রাখতো। হয়তো তেমন গল্প আমার পাশেও ঘুরছে- চশমায় আটকা পড়বে সহসাই।
তারপরে এক দশকের মধ্যে পয়েন্ট পঞ্চাশ থেকে দুই পর্যন্ত যখন পাওয়ার পৌছুলো রোমাঞ্চের বদলে সেটা পেইন হয়ে উঠলো। চশমা ছাড়া তখন সত্যি সত্যি দূরের কিছু দেখি না। শুভ্র হওয়া বেশী এক্সপেন্সিভ হয়ে গেলো। রীতিমত পেইন। কবে চশমা ছুড়ে এই বন্দীদশা থেকে মুক্তি পাবো তার জন্য অস্থির হয়ে থাকতাম। রোমাঞ্চিত চশমার কারণে আমার খেলাধুলা হারিয়ে গেছিলো। আউটডোর ছেড়ে টেবিল-ফিক্সড দাবা-কার্ড-কম্পিউটার গেমসে আটকে গেলাম। অ্যাথলেট হবার বদলে কম্পিউটার গেমার হওয়াই জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য হয়ে গেলো।
ঐ পেইন থেকে মাত্র এক বছর আগে মুক্তি পেয়েছিলাম কাকতালীয়ভাবে। গত পাঁচবছর যাবতই চশমার পাওয়ার কমাতে হচ্ছিলো। দুই থেকে দেড় তারপর এক হয়ে পয়েন্ট পঁচাত্তরে উঠে এসেছিলো। তারপরে একদিন চশমা ছাড়া ভালো দেখা শুরু করতে শুরু করলাম। আনন্দে আমি সানগ্লাস কিনে ফেললাম গোটা দুই। জীবনে সানগ্লাস পরতে পারি নাই। অসংখ্য এমন পেইন থেকে মুক্তির আনন্দ যদিও কারো সাথে শেয়ার করা হয়নি তবে আই ফেল্ট দ্যাট প্রতিটা মুহূর্তে। জগতে কে চশমা পরলো আর না পরলো তাতে কিছু কারো যায় আসে না। চশমা বিষয়ক কোনো সাহিত্য-অসাহিত্য নাই। অথচ আমার জন্য চশমা একটা বিশাল ইস্যু। মহামারীর মত ইস্যু। কৈশোরের চশমা রোমাঞ্চ তৈরির পেছনে হুমায়ুন আহমেদ একা দায়ী নয়, তার একজন পাঠিকাও দায়ী ছিলো। অমন চশমা পরা চোখ আমার জীবনে দেখা হয়নি আর, ভোলাও যায়নি। আনন্দের - কষ্টের - বাস্তবতার এক দীর্ঘ অবসেশন জেনো চশমা অপসারণে মুক্তি পেলো।
কিন্তু সুখ আমার সইলো না। জগতের সকল অস্থায়ী সুখের মত একবছর টিকলো মাত্র। এবার শুধু মাইনাস না, সাথে প্লাস-পাওয়ারও। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া গত একবছর চশমা না পরায় মাইনাস কমার বদলে বেড়ে গেছে। এখন প্লাস আর মাইনাসের সংমিশ্রণে বিদঘুটে একটা চশমা পরে জীবনের সকল আনন্দ শেষ হয়ে গেছে মনে হচ্ছে। চোখে সেটা থাকা বিরক্তিকর চশমীয় আচরণে আমি ক্লান্ত, অসহায় এবং হতাশ। ক্রমশ বুঝতে পারছি আবার আমি চিরতরে শৃঙ্খলে আবদ্ধ হয়েছি। কোনো মুক্তি নাই। হাঁটতে, দেখতে - সর্বত্র আমাকে কম্প্রোমাইজ করে চলতে হচ্ছে। জীবনের একটা চিরস্থায়ী বিকলাঙ্গতাকে মেনে নিতে হবে।
শুধু সান্ত্বনা একবছর চশমা ছাড়া পৃথিবী দেখতে পেরেছিলাম!
১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:৩৯
কৌশিক বলেছেন: না। চশমাই। এই বয়সে ল্যাসিক করা যায় কিনা নিশ্চিত না। কিন্তু ল্যাসিক করা গেলে ভালো হতো।
২| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:৫৯
তোমোদাচি বলেছেন: সৃষ্টিকর্তা অশেষ ধন্যবাদ এখনো চশমা পরতে হয়নি। কিন্তু মাত্র সাত বছর বয়েসে বাচ্চাটা কে ডাক্তার চশমা ধরিয়ে দিয়েছে... ওর চশমার প্রেস্ক্রিপ্সহন হাতে নিয়ে চোখে পানি চলে এসেছিল।
১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:২৫
কৌশিক বলেছেন: সো স্যাড টু নো। তারপরেও আপনার মন ভালো করার জন্য বলছি - দেখতে কিন্তু দারুন লাগে বাচ্চাদের চশমা পরলে...মনে হয় আইনস্টাইন সাহেব!
৩| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:৩২
কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: আমারে পড়তে বলছিল। কিন্তু প্রেসক্রিপসন হারায়ে ফেলছি দেখে আর পড়ি নাই।
১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:৫৩
কৌশিক বলেছেন: মিয়া, তাড়াতাড়ি চক্ষু দেখেন। শুধু মাইনাস হলে পরে ফেলেন। চোখ সুস্থ্ থাকবে। আর চোখ সুস্থ থাকলে প্রিয়তমাকে দেখে মুগ্ধ হবেন। হাহাহাহা।
৪| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১১
কলমের কালি শেষ বলেছেন: চশমা বিড়ম্বনা । উহ্ পেইন ।
৫| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২৯
নীল-দর্পণ বলেছেন: শুরু হয়েছিল -৩.০০ দিয়ে যা এখন ঠেকেছে -৫.৫০ তে । চশমা নেওয়ার সময়ও খুব উৎসাহী ছিলাম, আর এখনো আনন্দ করেই পরি। চশমা ছাড়া যে আমার দুনিয়া ঝাপসা নইলে !
সানগ্লাসে তো পাওয়ার সেট করা যায়
©somewhere in net ltd.
১| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:০৬
হাসান কালবৈশাখী বলেছেন: ল্যাসিক?