নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এপিটাফ \n\nএক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

জুল ভার্ন

এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।

জুল ভার্ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

যদি অন্য কোনো নাম হতো....

০৮ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ৮:২৩

যদি অন্য কোনো নাম হতো.....

যত যত বিখ্যাত বই পড়েছি সেইসব বইয়ের নাম, অনেক বইয়ের প্রধান প্রধান চরিত্রগুলো মনের ভিতর চিরস্থায়ী হয়ে গিয়েছে। বইয়ের নাম, চরিত্রের নাম কতইনা সংগত! প্রায়শই ভাবি যে, 'বনলতা' সেনের কি অন্য কোনো নাম দিতে পারতেন জীবনানন্দ দাশ? যদি মৃণালিনী গুপ্ত, অঞ্জনা মালাকর কিম্বা ইন্দ্রাণী পোদ্দার নাম হত বনলতা সেন-এর পরিবর্তে তাহলে কি ওই কবিতা এতো বিখ্যাত হতো? রবীন্দ্রনাথের সোনারতরী, সঞ্চয়িতা, শেষের কবিতার লাবন্য, সুনীলে বরুণা, মানিকের কুসুম, শীর্ষেন্দুর ললিত, টলস্টয়ের আন্না কারেনিনা, হুমায়ুন আহমেদ এর মিসির আলি, হিমু- ছাড়া অন্য কোনো নাম ভাবা যায়!
একই ভাবে অনেক গানের কলিও তেমন। যেমন, "নদীর নাম সই অঞ্জনা, নাচে তীরে খঞ্জনা...", "তোমার চন্দনা মরে গেছে....", "মনে পড়ে রুবী রায় কবিতায় তোমাকে...," কিম্বা "হ্যালো বেলা বোস..... ",- ইত্যাদি ইত্যাদি।

এক্ষেত্রে মার্কেজকে উল্লেখ করতেই হবে(আমি মার্কেজের প্রায় দশটি বই পড়েছি)। তাঁর গল্পে নায়ক বা নায়িকার নাম আসে একেবারে প্রথম বাক্যে, না হলে দ্বিতীয়টিতে।
যেমন 'অ্য ভেরি ওল্ডম্যান'... গল্পে প্রথম বাক্যেই দেখা দেয় নায়ক 'পেলায়ো'। 'ক্রনিকল অব অ্য ডেথ ফোরাটোল্ড' শুরুই হয়েছে নায়কের নাম দিয়ে 'নাদার'। 'ডেথ কনস্ট্যান্ট বেয়ন্ড লাভ'-এর নায়ক 'স্যাঞ্চেজ' আসে প্রথম বাক্যে। যেমন 'লাভ ইন দ্য টাইম অব কলেরা'য় দ্বিতীয় বাক্যে মার্কেজ নিয়ে এসেছেন 'ডা. হুভেনাল আরবিনো'কে। 'নিউজ অব অ্য কিডন্যাপিং'-এ প্রথমেই 'মারুজা পাচোঁ' আর 'বিয়াত্রিচ ভিলামিজার' এর নাম রয়েছে। এরকম আরও উদাহরণ দেওয়া যায়। যেমন ‘ওয়ান স্প্রিং আফটারনুন', 'হোয়াইল মারিয়া দে লা লুজ'...’ কিংবা ‘দ্য ফার্স্ট থিং সেনোরা প্রুডেনশিয়া লিনেরো নোটিশড’- ইত্যাদি।

মার্কেজের প্রথম বাক্যটাই অমোঘ। অন্তত তিনি তাই বলেছেন, ‘দ্য ফার্স্ট লাইন অলমোস্ট নকড মি অব দ্য বেড’। কিন্তু কথা শুধু প্রথম লাইন নিয়ে নয়, তারপর শব্দবুনন এত নিখুঁত হয় কী করে একজন লেখকের! হান্ড্রেড ইয়ার্সে ৪৪৮ পৃষ্ঠা কিংবা ক্রনিকলে ৩৪৮ পৃষ্ঠায় একটিও শিথিল বাক্য নেই। যেমন ‘ক্রনিকল-এর কথাই ধরা যাকঃ ‘হ্যাপি ফ্যামিলিজ আর অল অ্যালাইক, এভরি আনহ্যাপি ফ্যামিলি ইজ আনহ্যাপি ইন ইটস ওন ওয়ে’, জাস্টিফাই করতে করতে টলস্টয়কে লিখতে হল ৮৬৪ পৃষ্ঠা।

এতকথা লিখেছি যে কারণে তা হল এই, বাংলাভাষায় ওই একজন লেখককেই দেখতে পাই ‘যাঁর যেকোনো দেড়-দুলাইনের লেখাও আমার কাছে শিক্ষণীয় একটি বাচ্য নির্মাণ। একজন গদ্যলেখক কী করে পারেন তাঁর প্রতিটি বাক্যকেই অভূতপূর্ব ও মৌলিক করে তুলতে। তিনি জীবনানন্দ দাশ!!!

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ৮:৩১

ছোট কাগজ কথিকা বলেছেন: নাম আর শব্দের জাদুতে লেখকের সৃষ্ট চরিত্র এবং গল্প এক অন্যরকম শক্তি পায়। যেমন জীবনানন্দ দাশের 'বনলতা সেন'—এর নাম বদলে গেলে হয়তো কবিতাটির আবেদনই বদলে যেত। নামগুলো শুধু পরিচয়ের চিহ্ন নয়, বরং তারা চরিত্রের আত্মা বহন করে। মার্কেজের গল্পগুলোর প্রথম বাক্য থেকেই চরিত্রের পরিচয় ও গূঢ়তা ফুটে ওঠে, যা পাঠকের মনে স্থায়ী ছাপ ফেলে। জীবনানন্দের গদ্য কিংবা কবিতার প্রতিটি বাক্য এমনই নির্মাণশৈলী প্রদর্শন করে, যা ভাষার মায়াজাল সৃষ্টি করে। নাম আর শব্দের এই নিপুণ ব্যবহারই লেখকদের কালজয়ী করে।

০৮ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ৮:৪৩

জুল ভার্ন বলেছেন: চমৎকার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

২| ০৮ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ৯:২৮

আজব লিংকন বলেছেন: আজহার ভাইয়ের সাথে একমত।
জুল ভার্ন ভাই জসীমউদ্দীন-এর আসমানী কই!
নামগুলো বদলায় কাল্পনিক নাম বসায় দিয়ে একবার ভাবুন।
আপনার লেখা পড়া শেষে আমি ভেবেছিলাম। হাসতে হাসতে আমি শেষ।

০৮ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

জুল ভার্ন বলেছেন: আরও ভেবে দেখুন- শুধু গল্প উপন্যাসে, কবিতার চরিত্রগুলোই নয়, পৃথিবীর সব বিখ্যাত চরিত্রগুলোই অমন। এমনকি দস্যু ফুলন দেবীর যায়গায়, কাজল, রানী মুখার্জি কিম্বা কুবের মাঝি, কপিলার যায়গায় অন্য কোনো নাম আসতে পারে!

৩| ০৮ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১১:৫১

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: বরাবরের মতোই চমৎকার একটা পোস্ট। আমিও আপনার পোস্টে এলাম বহুযুগ পর, ইন ফ্যাক্ট, এখন আগের মতো বিভিন্ন পোস্টে যেতে পারি না।

জীবনানন্দ দাশের 'বনলতা সেন' ছাড়াও 'সুরঞ্জনা'সহ আরো কিছু নায়িকা-চরিত্র আছে। কিন্তু 'বনলতা'র মতো সেগুলো অতো খ্যাতি পায় নি। আসলে সমগ্র বাংলা সাহিত্যে 'বনলতা সেন'-এর মতো আর কোনো নাম এত খ্যাতি ও পরিচিতি পেয়েছে কিনা সন্দেহ। তবে, আপনার সুরেই বলি, 'বনলতা সেন' নামটা কেন এত পরিচিতি পেলো, তা এক বিরাট গবেষণার বিষয়।

ইয়ে, জনৈক মৌলিক কবি 'সুচিত্রা সেন' নামক একটা কবিতা লিখেছেন, যা এই লিংকে ২৪/৭ আওয়ারই পাওয়া যায় - সুচিত্রা সেন - একটি স্বরচিত সিরিয়াস কবিতা - নকল হইতে সাবধান

শুভেচ্ছা রইল জুল ভার্ন ভাই।

০৮ ই অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৭

জুল ভার্ন বলেছেন: সত্যি বলতে, বনলতা সেন কবি জীবনানন্দ দাশের অনবদ্য এবং অমর সৃষ্টি। লিওনার্দো দা ভিঞ্চি যদি থাকতেন, তাহলে 'মোনালিসা'র মতো হয়তো বনলতার ছবিও সৃষ্টি হয়ে যেতো তাঁর হাতে। ... 'বনলতা' বাংলাদেশের ব্যবহৃত কোনো সাধারণ নাম নয়। সকল প্রেমিকের চোখে বনলতা সেন তাদের প্রেমিকা!

৪| ০৮ ই অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৯

ষহততহ বলেছেন: Appreciate the detailed explanation. Very useful and clear. URL

০৮ ই অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ২:১৭

জুল ভার্ন বলেছেন: Thank you.

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.