নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রকৃত সত্যকে উপলদ্ধি করতে হবে খোলা মন নিয়ে।
করোনার ভিতর কতিপয় ফেসবুক একাউন্ট থেকে একটি লিখা বেশ নজরে এসেছিলো। নাস্তিকদের অহংবশত কিন্তু এই লিখাটি নিয়ে খুব বেশি মাতামাতি করি নাই কিন্তু কেনো যেনো এই রোজার ভিতর এই পবিত্র দিনে সেই নাস্তিকদের প্রশ্নের জবাব দিতে বড় বেশি ইচ্ছে করছে। ব্যবসা বানিজ্যের ব্যস্ততার কারনে লিখতে পারি নাই দীর্ঘদিন ধরে রোজা আমাকে সময়টা এনে দিলো। তো যাই হোক। ফেসবুকে একেশ্রেণির মানুষদের স্টাটাস দেখতাম স্ট্যাটাসে লেখা ছিলো।
"যদি বেঁচে যাও এবারের মত যদি কেটে যায় মৃত্যুর ভয়
জেনো বিজ্ঞান লড়েছিলো একা মন্দির মসজিদ নয়।
বিশ্ব যখন উতাল পাতাল। সকল শ্রেণির মানুষ যখন স্থবির হয়ে পড়েছে। তখন ওদের স্টাটাস সত্যিই অবাক করার মতো বিষয়। বিজ্ঞান একাই লড়েছে। কথাটা আমাকে সত্যিই চমকে দিয়েছিলো। আসলে আমরা বিজ্ঞান বলতে আমরা কি বুঝি? আর এখানে যারা বিজ্ঞানকে মসজিদ মন্দিরের প্রতিদন্দী হিসেবে তুলে ধরেছিলো তাদের মনন সত্যিই প্রতিহিংসামূলক ধর্মের বিরোধীতা করা ছাড়া যেনো কিছুই বোঝেনা। এ ক্ষেত্রে বিজ্ঞান বলতে মানুষের প্রয়োজনে নিয়োজিত কিছু মানুষের কর্মকান্ডকে বোঝায় যেমন করোনার ভ্যাকসিন তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছেন চিকিৎসা বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞরা অথবা ডাক্তার ও নার্স বৃন্দ। কিন্তু সেক্ষেত্রে আমার প্রশ্ন ডাক্তার নার্স বা ভ্যাকসিন তৈরীতে নিয়োজিত ব্যক্তিরা কি কেউ মসজিদ মন্দিরে প্রার্থনা করতে যাই নাই কস্মিনকালে? নাকি সকলেই নাস্তিক ছিলো? যদি তা না হয়ে থাকে তাহলে বিজ্ঞানকে মসজিদ মন্দিরের প্রতিদন্দী হিসেবে ব্যবহার করার মানে কি? যারা এটা করেছে তারা মসজিদ মন্দিরের সাথে দন্দ বাধাতে চাই কি উদ্দেশ্যে। আর এই কারনেই একজন লেখক তার পোষ্টে লিখেছিলেন-“বৈশ্বিক এই দুর্যোগেও নিজেদের মার্কেটিং আর বিদ্বেষ ছড়ানোর কাজ থেকে বিরত থাকতে পারলো না বিজ্ঞান আর প্রগতির এসব ফেরিওয়ালারা।
করোনার প্রতিষেধক করোনায় মৃত্যুর হার অনেক কমায় কিন্তু তাই বলে এই প্রতিষেধকও একা কিছু করতে পারবেনা যদি আপনার ইম্যুনিটি সিস্টেম কাজ না করে, এই সিস্টেম বিজ্ঞানের তৈরী না। আর প্রতিষেধক হিসেবে যে এন্টিবডি বা জেনেটিক মেটেরিয়াল ব্যবহার করা হবে তাও বিজ্ঞানের সৃষ্টি না, বিজ্ঞান শুধুমাত্র এটি প্রতিষেধকে রূপান্তরিত করবে। ধর্মপ্রাণ মানুষ বিশ্বাস করে এসব মেটেরিয়ালস্ ও বৈজ্ঞানিকের বুদ্ধি সবটাই আল্লাহ্/স্রষ্টার দান।
প্রশ্ন হল, পৃথিবীর কোন ধর্ম কি মানবীয় চেষ্টাপ্রচেষ্টার প্রয়োজনকে নাকচ করে? এমন কোন ধর্ম কি আছে যেটা মানুষকে চিকিৎসকের কাছে যেতে বা চিকিৎসা নিতে নিষেধ করেছে। আমার মনে হয় কোন ধর্মই বলে না নৌকার গলুই ফুটো হয়ে গেলে, ফুটো বন্ধ করার চেষ্টা না করে শুধু দুআ প্রার্থনা করতে হবে। কোন ধর্ম বলে না পানিতে পড়ে গেলে ভেসে থাকার চেষ্টা করা যাবে না। শুধু দুআ করতে হবে। বাড়িতে আগুন লাগলে বের করার চেষ্টা করা যাবে না। এক জায়গাতে বসে থেকে দুআ করতে হবে। তাহলে করোনা ক্ষেত্রে এমনটি হবে কেনো? পৃথিবীর ৯৯% মানুষ এখানে ধর্ম এবং বিজ্ঞানের মধ্যে কোন সাংঘর্ষিকতা দেখে না। কিন্তু এই ধরনের বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মানুষেরা ধর্মের বিরুদ্ধে তাদের প্রপাগ্যান্ডার জন্য ধর্মের অবস্থানের একটা ক্যারিক্যাচার তৈরি করে সেটার বিরুদ্ধে বিজ্ঞানকে দাড় করাতে চায়! কিন্তু কেনো?
ধর্ম নিয়ে অপপ্রচারকারীদের উদ্দেশে ঢাবির একজন অধ্যাপক বলেন, বিজ্ঞানমনস্ক হয়েছেন বলে ধরর্মকে এত অবমাননা কেনো? ধর্ম আর বিজ্ঞান এত ভিন্ন যে, করোনা নিয়ে এদের তুলনা হাস্যকর ও চরম অজ্ঞতাপ্রসূত। আমরা কি বলি করোনা থেকে যদি বেঁচে যাও, জেনো ডাক্তার বাঁচাবে, তোমার বাবা-মা না। এটা বলে কি আমরা আশা করি ডাক্তারকে শুধু ভালোবাসা উচিত আমার, পিতামাতা বা অন্য কাউকেও না। ধর্ম ও বিজ্ঞানের তুলনা এসবের চেয়ে বহুগুণে হাস্যকর ও অবান্তর। তিনি বলেন, ধর্মান্ধতা আর ধর্মবিদ্বেষ দুটোই পরিত্যাজ্য। ‘বেঁচে গেলে বিজ্ঞানের কারণে বাঁচব, মসজিদ-মন্দিরের কারণে নয়’- এমন অদ্ভুত কথা সম্ভবত ধর্মবিদ্বেষ থেকে প্রচারিত।
©somewhere in net ltd.