নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রকৃত সত্যের দিকে আমাদের ছুটতে হবে..

রাশিদুল ইসলাম লাবলু

প্রকৃত সত্যকে উপলদ্ধি করতে হবে খোলা মন নিয়ে।

রাশিদুল ইসলাম লাবলু › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমরা কোথা থেকে এসেছি কোথায় ফিরে যাবো ?

২৭ শে জুলাই, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫৩


Standard model of Big Bang তত্ত্ব অনুযায়ি প্রচন্ড ক্ষমতার এক অজ্ঞাত উৎস হতে সুক্ষ সময়কালে বিশাল শক্তির সমাগম ঘটে। সেই শক্তি এক মহাসুক্ষ বিন্দুতে অবস্থান করে। যার দৈঘ্য ১০(৩৩) অথা ১ এর পিঠে ৩৩টি শুন্য বসিয়ে যে সংখ্যাটি পাওয়া যায় তা দিয়ে এক সেঃমিঃ কে ভাগ করলে যে সংখ্যাটি পাওয়া যায় তার সমান। আর সময় লেগেছিলো ১০(৪৩) সেকেন্ড। ১ এর পিঠে ৪৩টি শুন্য বসিয়ে যে সংখ্যাটি দিয়ে ১ সেকেন্ডকে ভাগ করলে যে সময়কাল পাওয়া যায় তার সমান। সেই মহাক্ষুদ্র আদি ঘনায়িত শক্তি পিন্ড মহাগর্জন করে এক মহাবিস্ফোরনের মাধ্যমে ১০(৪৩) সেকেন্ড সময়কালে সৃষ্টি করে এই মহাবিশ্ব। সৃষ্টির সময় মহাবিশ্ব ১০(৩২) কেলভিন উত্তপ্ত অবস্থায় ছিলো। অকল্পনীয় শক্তির ঘনায়নে থাকা অবস্থায় এক মহাবিস্ফোরনের সাথে সাথে আশ্চার্য রকম গতিতে মহাসম্প্রসারন হতে শুরু করে।

বিজ্ঞানীদের মনে প্রশ্ন দেখা দেয় প্রচন্ড ক্ষমতার অজ্ঞাত উৎস টি কি? আর এত বিপুল পরিমান শক্তি কোথা হতে এলো ? এ সকল বিভিন্ন প্রশ্ন বিজ্ঞানীদের নতুন নতুন চিন্তার আনয়ন করে। বিগ ব্যাং এর প্রমিত মডেল এসকল প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে নাই। একটা সময় ভাবা হতো মহাবিশ্ব সৃষ্টিতে যদি শক্তি থেকে পর্দাথ (আইনষ্টাইন এর E=mc2 সমীকরণ অনুসারে শক্তি থেকে ভর উৎপন্ন হওয়া সম্ভব) উৎপন্নের প্রশ্ন এসে থাকে তবে এত পরিমান পদার্থ নির্মানের জন্য অনুরুপ ভরের শক্তি এলো কোথা থেকে? তবে কি বাইরে থেকে শক্তি যোগান দেওয়া হচ্ছে? কিন্তু বোঝা গেলো না! সমস্যা টি নিয়ে প্রথম বুঝতে পারলেন বিগ ব্যাং এর জনক গ্যামোও। তার মাই ওয়াল্ড লাইন বইতে বললেন ‘শুন্য থেকে একটি নক্ষত্র সৃষ্টি হতে পারে। কারন আলবার্ট আইনষ্টাইন এর সুত্র মতে ঋনাত্বক মাধ্যকর্ষন শক্তি ধনাত্বক ভর শক্তিকে নিষ্ক্রীয় করে দেয়।” এই বিষয়টি পরে বিজ্ঞানী ষ্টিফেন ডব্লিউ হকিং তার ‘কালের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস বইতে তুলে ধরেছেন ‘যদি এমন একটি মহাবিশ্ব ধরে নেওয়া যায় যেটা মহাশুণ্যে মোটামুটি সমস্বত্ত্ব, তাহলে দেখানো সম্ভব ঋনাত্বক মহাকর্ষিয় শক্তি এবং ধনাত্বক মহাকর্ষিয় শক্তি ঠিকঠাক কাটাকাটি করা যায়। তাই মহাবিশ্বের মোট শক্তি থাকে শুণ্য। মহাবিশ্ব যে এক কোয়ান্টাম ফ্লাকচুয়েশনের মধ্য দিয়ে শুন্য থেকে সৃষ্টি হতে পারে এই ধারনাটি প্রথম করেন বিজ্ঞানী এডওয়ার্ড ট্রিয়ন।

শুন্যতা মানে রহস্যময় জিরো পয়েন্ট এনার্জি। আর এর মধ্যে সুক্ষস্তরে সবসময় নানান প্রক্রিয়া ঘটে চলছে। এর মধ্যে নিহিত শক্তি হতে পদার্থকনা তৈরী হচ্ছে আবার তারা সেই শক্তিতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। রহস্যময় জিরো পয়েন্ট এনার্জি থেকে পর্দাথ এবং প্রতিপর্দাথ যুগলের অসদ কনিকা Virtual Particles তৈরী হচ্ছে এবং মাত্র ১০(২১) সময় টিকে থেকে আবার তা জিরো পয়েন্ট এনার্জিতে হারিয়ে যাচ্ছে। এই ভ্যাকুয়াম ফ্লাকচুয়েশন ধারনাটি গড়ে ওঠে মূলত: হাইজেনবার্গের অনিশ্চয়তা তত্ত্বের কাধে ভর করে। জার্মান বিজ্ঞানী ওয়ার্নার হাইজেনবার্গ ১৯২৭ অনিশচয়তা তত্ত্ব Uncertainty Principle অনুসারে গানিতিক ভাবে প্রমান করে দেখান E=mc2 ‘অনুসারে শক্তি ভরের সমতুল্যতা প্রকাশ করে) যে সামান্য সময়ের জন্য শক্তি কোন কারন ছাড়াই পর্দাথ কনিকাতে উৎপন্ন এবং বিনাশ ঘটাতে পারে। জিরো পয়েন্ট এনার্জি থেকে কেনো পদার্থের উৎপত্তি হয় তা এখনও রহস্যময় হয়ে রয়েছে। অথচ শূন্যতার মধ্যেই এক ধরণের শক্তি লুকিয়ে আছে; আর সেটাই তৈরি করে ভ্যাকুয়াম ফ্লাকচুয়েশনের মাধ্যমে পদার্থ তৈরির প্রাথমিক ক্ষেত্র।

ফ্লাকচুয়েশন ঘটার কারনে অসংখ্য ভারচুয়াল কনিকা উৎপন্ন হলেও এই একটি মাত্র কনিকা হতে মহবিশ্ব সৃষ্টি হবার পিছনে কি যুক্তি থাকতে পারে? হাজার হাজার লক্ষ কোটি অযুত নিযুত ভারচুয়ার কনিকা ১০(২১) সময় টিকে থেকে আবার তা জিরো পয়েন্ট এনার্জিতে হারিয়ে যাই অস্তিত্ববান হতে সক্ষম হয় না অথচ আমাদের মহাবিশ্ব অস্তিত্বশীল হযে 1300 বৎসর টিকে গেলো কি করে? কেনো এই অস্বাভাবিক কর্মকান্ড হলো ভারচুয়াল কনিকার ক্ষেত্রে? কেনো এই মহাবিশ্ব স্যেভাগ্যবান একটি ভারচুয়াল কনিকা হতে প্রতিষ্ঠিত হলো অথচ অন্যান্য ভারচুয়াল কনিকাগুলি আত্মপ্রকাশ করে আবার শুন্যতায় হারিয়ে গেলো্? স্বাভাবিক ভাবেই তুলনা করা চলে পূরুষের স্পাম নিয়ে। লক্ষ কোটি স্পাম থেকে 1 টি মাত্র স্পাম বা শুক্রানু থেকে 1 টি শিশু জন্ম নেয় অনুরূপ লক্ষ কোটি অযুত নিযুত ভারচুয়াল কনার আবির্ভার এর মধ্য দিয়ে কি 1 টি মহাবিশ্বের সৃষ্টির সুত্রপাত? যদি তাই হয় তাহলে একথা আমাদের মেনে নিতে হয় মহাবিশ্ব সৃষ্টি একটি বীজ থেকে। যে বীজ সৃষ্টি সমৃদ্ধ সকল গুনাবলী নিয়েই প্রতিষ্ঠিত ছিলো। সেই বীজের মধ্যে নিহিত ছিলো মহাবিশ্বের অন্তৃনিহিত সকল শক্তি ও বস্তু।

বীজরুপি ভারচুয়াল কনিকাটি বিশাল রুপ ধারণ করার জন্য বিস্ফোরন শক্তি পেলো কোথায়? বিগ ব্যাং এর পূবে কি ছিলো? এই শুন্যতার মাঝে এই বিশাল পরিমান বস্তু জমা হলো কি করে? এগুলোই বা এলো কোথা থেকে? যে কনিকা 10 টি কনিকা উৎপন্ন করতে পারে না সে এত বিশাল বস্তুর সমাহার ঘটাতে পারে কি করে? বিজ্ঞানীদের মনে উদয় হওয়া এই সকল প্রশ্ন পরবর্তীতে নতুন ধারা সৃষ্টিতে সহায়তা করল্। নতুন চিন্তা। ইনফ্লেশন অথাৎ মহাস্ফিতী। কিন্তু এই মহাস্ফিফতি বা ইনফ্লেশন কেন ঘটে? কি হতে পারে ইনফ্লেশনের পিছনের ঘটনা? গানিতিকভাবে হয়তো অনেকে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কেউ কেউ ধারনা করলেন স্ফীতির প্রাথমিক বীজ আসতে পারে আনুবীক্ষনিক আকারের কোন বিকষণমূলক পদার্থ থেকে। যে বীজ মহাবিশ্ব সৃষ্টির কারন হয়ে দাড়াতে পারে। এ্যালেন গুথ তার গবেষনায় দেখিয়েছিলেন মাত্র এক আউন্স ওজনের একটি ভর থেকে ইনফ্লেশন যাত্রা শুরু করতে পারে। যার ব্যাস হতে পারে একটি প্রোটনের চেয়েও একশত কোটি গুন ছোট কিছু। স্ফীতির সেই ছোট বীজ ট্রিয়ন বর্নিত ভ্যাকুয়াম ফ্লাকচুয়েশনের সমান যা কোয়ান্টাম শুণ্যতা থেকে উদ্ভুত হতে পারে। এ্যালেন গুথের বক্তব্যই সঠিক য্খন জানা যায় ফ্লাকচুয়েশনের স্থায়ি হয় খুবই সামান্য সময় এবং ভারচুয়ার কনিকাটির ভর হয় গরমিলে তাহলে ১৩০০ কোটি বৎসরের এই মহাবিশ্ব টিকে থাকে কিভাবে? সেই সমস্যার সমাধান খুজতে গিয়ে দেখা যায় এ্যালেন গুথের গানিতিক হিসাবই সঠিক। কারন ফ্লাকচুয়েশন টিকে থাকে তার ভরের উপর। ভর যত বড় হবে ফ্লাকচুয়েশনের স্থায়িত্ব তত কম হবে। অথাৎ ফ্লাকচুয়েশনের মাধ্যমে মহাবিশ্ব সৃষ্টি হয়ে ১৩০০ কোটি বৎসর টিকে থাকতে হলে শুরুতে তার ভর হতে হবে ১০(৬৫) গ্রাম যা ইলেকট্রনের ভর এর প্রায় ১০(৩৮) গুন ছোট।

আমদের স্পেস টাইমের বাইরে যেখানে অসীম শুন্যতায় ফ্লাকচুয়েট ঘটে তার অস্তিত্ব কি করে সম্ভব? সেই শুন্যতার মধ্যে শুন্য পরিমান শক্তি কোথা থেকে এলো? ভ্যাকুয়াম ষ্টেটের উৎপত্তির কারন হিসেবে ইদানিং ষ্ট্রিং থিওরি এম তত্ত্ব বলে কোয়ান্টাম দোদ্যুল্যময়তার কারনে ভ্যাকুয়া ষ্টেটের আবির্ভাব ঘটে। যদি তাই হয় তাহলে কোয়ান্টাম দোদ্যল্যময়তা কেন ঘটে? এর উৎস কোথায়? এটা কি কোন কমান্ডিং প্রক্রিয়ার ফসল? আমরা এটাকে কিভাবে ভাবতে পারি? ষ্ট্রিং থিওরি এবং এম তত্ত্বের গনিত যদি সত্য হয় তবে এটা বলতে হয় কোয়ান্টাম দোদুল্যতাময়তাই জগৎ নির্মানের সূচনা ঘটিয়েছে। এ ক্ষেত্রে আমরা দুটি বিষয় পায় একটি অজ্ঞাত উৎস থেকে কমান্ডিং যার কারনে ভ্যাকুয়া ষ্টেট এবং ভারচুয়াল কনার আবির্ভাব এবং যা পরবর্তীতে সৃষ্ট মহাবিশ্বকে স্ফীতির (Inflation) দিকে ঠেলে দিয়েছে এবং নির্ধারিত ভারচুয়াল কনিকাটিকে নিষিক্ত করে। অথাৎ কনাটির উপর নিয়ম সুত্র ণির্ধারন করে। অনস্তিত্ব কনিকাটিকে অস্তিত্বে আনয়ন করে। ফলে কনাটি মহাবিশ্বরুপে সৃষ্টি হতে শুরু করে।

অন্যান্য কনিকাগুলো মহাবিশ্বরুপে প্রতিষ্ঠা না পেলেও এই কনিকাটির মহাবিশ্বরুপে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার কারনই হলো একটি কমান্ডিং প্রক্রিয়া। এখানে আদেশ বা কমান্ডের প্রসঙ্গ আসছে এই কারনেই যে কেউ আদেশ না করলে মহাবিশ্ব এতটা সুক্ষভাবে বেড়ে উঠতে পারে না। এত সুন্দর ভাবে সকল দিক দিয়ে সমভাবে একই সাখে সম্প্রসারন ঘটতে পারে না। আন্দ্রে লিন্ডের ভাষায় “The fourth problem deals with the timing of the expansion. In its standard form, the big bang theory assumes that all parts of the universe began expanding simultaneously. But how could all the different parts of the universe synchronize the beginning of their expansion? Who gave the command?” আন্দ্রে লিন্দের এই প্রশ্ন আমাদের নতুন এক চিন্তার সম্মুখিন করে তোলে। মহাবিশ্ব সৃষ্টির জন্য একটি আদেশ এর প্রয়োজন ছিলো। সুক্ষ সমন্ময় এর জন্য প্রয়োজন ছিলো এই আদেশ। নইলে এতটা সুক্ষভাবে মহাবিশ্ব সকল দিক দিয়ে সমানভাবে সম্প্রসারিত হতে পারে না। অতএব একটি কমান্ডিং প্রকিয়া এই মহাবিশ্ব সৃষ্টির মূল কারন। যদি কমান্ডিং প্রক্রিয়ার কথা ভাবতে হয় সেক্ষেত্রে মহাবিশ্ব এর বাইরে অবস্থিত বিশাল শুন্যতায় মাঝে অতিলৌকিকিক কোন চেতনার উপস্থিতি আমাদের স্বীকার করতে হবে। যার কমান্ডিং সিষ্টেম কোয়াস্টাম দ্যেদুল্যময়তা সৃষ্টি করে। হয়তো আমরা সেই চেতন সত্ত্বাকে উপলদ্ধি করতে পারছি না বলেই তার অস্তিত্ব স্বীকার করি না। “তাহারা যে বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করে নাই –তাহা অস্বীকার করে”( আল কোরআন 10:39)। একটি কমান্ড একটি পরিকল্পনা মহাবিশ্ব নির্মানের উপযুক্ত কারন। “সেই মহান সত্ত্বা আকাশসমূহ ও পৃথিবী সমূহকে সৃষ্টি করিয়াছেন অতি সুক্ষ সমতায়। তিনি যখন আদেশ করেন হও, অমনি হয়ে যায়।(৬.৭৩) আল কোরআন প্রকাশ্যে ঘোষনা করছে একটি সত্ত্বাই সৃষ্টির কারন। “আমি আকাশমন্ডল সৃষ্টি করেছি আমার শক্তি বলে এবং আমিই মহাসম্প্রসারণকারী।”(51:47 আল কোরআন) আল্লাহ তার শক্তি হতে মহাবিশ্ব সৃষ্টি করেছে। অতএব শক্তি কোথা থেকে এলো তার ও একটি গ্রহণযোগ্য ব্যাক্ষা আছে আল কোরআনেই।

আমরা কোথা থেকে এসেছি এ প্রশ্নের গ্রহনযোগ্য একটি ব্যাক্ষা হতে পারে শন ক্যারল এর মতবাদে। বিশিষ্ট বিজ্ঞানী শন ক্যারল লস এ্যাঞ্জেলস টাইমস্ এর সাথে একটি সাক্ষাতকারে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেছিলেন। তিনি বলে ছিলেন- আপনি যদি বিশ্বাস করে নেন যে মহাবিস্ফোরনের মাধ্যমে মহাবিশ্বের সৃষ্টি হয়েছে এবং এর আগে কিছুই ছিলো না, তাহলে সমস্যাটা ব্যাক্ষা করা খুব কঠিন হয়ে পড়বে। পর্দাথবিজ্ঞানে এমন কোন সুত্র নেই যাতে বলা হয়েছে, মহাবিশ্বকে নিম্ন এনট্রপি থেকে শুরু হতে হবে এবং ধীরে ধীরে এনট্রপির পরিমান বাড়তে থাকবে। কিন্তু বাস্তবে মহাবিশ্ব এমন আচরনই করেছে। আমার অনেক স্মার্ট কলিগ ঠিক এ কথাটাই বলেন। তারা বলেন “তুমি এটা নিয়ে কেনো চিন্তা করছ? আদি মহাবিশ্ব ছোট ছিলো এবং তার এনট্রপি ছিলো খুব কম, এটাই তো সবচেয়ে যুক্তিযুক্ত”। কিন্তু আমি এটা মনে করি এটা এক ধরনের প্রেজুডিস। আমাদের মহাবিশ্বে বিষয়টা এরকম, এ কারনে আমরা মনে করি এটাই প্রাকৃতিক তথা স্বাভাবিক, অন্য কথায় এটাই প্রকৃতির নিয়ম। হ্যা, পর্দাথবিজ্ঞানের বর্তমান সুত্রগুলো দিয়ে এর ব্যাক্ষা করা সম্ভব না। কিন্তু আমি বলতে চাচ্ছি, বিষয়টা ধ্রুব সত্য বলে মেনে নেওয়া উচিত নয়। এক প্যাকেট কার্ড নিয়ে প্যাকেট থেকে সেগুলো বের করলে হয়তো দেখা যাবে, সবগুলো ক্রমান্ময়ে সাজানো আছে। কিন্তু, এক প্যাকেট কার্ড থেকে দৈবভাবে কিছু কার্ড নিলে এটাই স্বাভাবিক যে, সেগুলো অগোছালো হবে। নিম্ন এনট্রপির সাথে উচ্চ এনট্রপির সংর্ঘষটাও এখানে। কার্ডেও প্যাকেট খুললে সবগুলো কার্ড সাজানো অবস্থায় দেখা যায়। এটা দেখে আপনি আশ্চার্যান্বিত হন না। কারন এটা নয় যে, সাজানো অবস্থায় থাকাই স্বাভাবিক এবং প্রাকৃতিক। বরং মূল কারন হচ্ছে, কার্ডের প্যাকেট কোন বদ্ধ ব্যবস্থা নয়। প্যাকেটটাও এ থেকে বড় কোন ব্যবস্থা থেকে এসেছে যে ব্যবস্থায় একটা কারখানা ছিলো আর সে কারখানাতেই কার্ডগুলো সাজানো হয়েছে। তাই আমি মনে করি, এর আগে আরেকটি মহাবিশ্ব ছিলো যা আমাদের তৈরী করেছে। এক কথা, আমরা সেই বৃহৎ মহাবিশ্ব থেকে বেরিয়েছি। এটা বৃহত্তর কোন স্থান-কাল থেকে এসেছে যাকে আমরা পর্যবেক্ষন করতে পারি না। উচ্চ এনট্র্রপির কোন বৃহত্তর স্থানের অতি সামান্য এক অংশ থেকে আমাদের এই মহাবিশ্ব এসেছে।

আমাদের এই মহাবিশ্ব বৃহত্তর কোন স্থান-কাল থেকে উদ্ভুত। উচ্চ এনট্রপির বৃহত্তর স্থানের অতি সামান্য অংশ থেকেই আমাদের এই মহাবিশ্ব এসেছে। আবার সকল জড়জগৎ ধ্বংশ হলে মুল সত্ত্বা উচ্চ এনট্রপিতে ফিরে যাবে। আলকোরআনও ঠিক এমনই কথা বলছে। আল কোরআন বলে “আল্লাহর সত্তা ব্যতীত সমস্ত কিছুই ধ্বংশশীল। বিধান তাহার এবং তাহারই নিকট তোমরা প্রত্যাবর্তিত হইবে।”(২৮:৮৮) যার অর্থ দাড়ায় চিরন্তন একটি সত্ত্বা যা কখনও ধ্বংশ হয় না এবং তারই নিয়ম দ্বারা প্রতিষ্ঠিত এই সকল কিছু। এবং আমাদের জীবনের মূল সত্ত্বাটি উচ্চ এনট্রপির বৃহত্তর স্থানে প্রত্যাবর্তিত হবে। এ ক্ষেত্রে আমাদের মেনে নিতে হয় এ মহাবিশ্ব সৃষ্টির পূর্বে আরেকটি বিষয়বস্তু ছিলো যা আমাদের তৈরী করেছে। এক কথা, আমরা সেই বিষয়বস্তু থেকে বেরিয়েছি। উচ্চ এনট্র্রপির কোন বৃহত্তর স্থানের অতি সামান্য এক অংশ থেকে আমাদের মহাবিশ্ব এসেছে’ যাকে আমরা পর্যবেক্ষন করতে পারি না।”

মহাবিশ্ব উৎস সন্ধানে নেমে আমরা এতটুকু উপলদ্ধি করি চুড়ান্ত কোন শক্তির উৎস হতে উদ্ভুত শক্তি স্থান কালরুপে আত্মপ্রকাশ ঘটিয়েছে যা আমরা দেখছি মহাবিশ্ব রুপে। বীজটি সম্প্রসারনের কারন আল্লাহর সম্প্রসারনকারী ইচ্ছা। আল কোরআনে বলে “আমি আকাশমন্ডল সৃষ্টি করেছি আমার শক্তি বলে এবং আমিই মহাসম্প্রসারণকারী। আর ভূমী! আমি উহাকে বিছাইয়া দিয়াছি। আমি কত সুন্দর প্রসরণকারী” (৫১.৪৭-৪৮)। অথাৎ আধুনিক বিজ্ঞানীদের দীর্ঘদিনের গবেষনার ফসল “বিগব্যাং তত্ত্ব” ক্ষুদ্র একটি আয়াতের দ্বারা উল্লেখ করা হয়ে গেছে। অথাৎ আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এই আয়াতের দ্বারা বোঝাচ্ছেন তিনি শক্তির আধার হতে মহাবিশ্বের উদ্ভব ঘটিয়েছেন। এবং এই মহাবিশ্বকে শক্তিদ্বারা সম্প্রসারণ ঘটিয়ে এত বিশাল করে তুলেছেন। তাহলে এ শক্তি কোথা থেকে এলো এই প্রশ্নের উত্তর উপরোক্ত আয়াতেই উল্লেখিত। “আমার শক্তি” অথাত আল্লাহর শক্তি।

পাঠক এতক্ষন ধরে আমরা বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করলাম একটি কারনে যে আমরা কোথা থেকে এসেছি কোথায় ফিরে যাবো? পূর্বেই আমি শন ক্যারল এর বক্তব্য থেকে উদ্ধৃতি করে বলেছি “আমাদের এই মহাবিশ্ব বৃহত্তর কোন স্থান-কাল থেকে উদ্ভুত। উচ্চ এনট্রপির বৃহত্তর স্থানের অতি সামান্য অংশ থেকেই আমাদের এই মহাবিশ্ব এসেছে। আবার সকল জড়জগৎ ধ্বংশ হলে মুল সত্ত্বা উচ্চ এনট্রপিতে ফিরে যাবে।” আর আল কোরআনের ভাষায় “আল্লাহর সত্তা ব্যতীত সমস্ত কিছুই ধ্বংশশীল। বিধান তাহার এবং তাহারই নিকট তোমরা প্রত্যাবর্তিত হইবে।”(২৮:৮৮ আলকোরআন)

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ৯:৩২

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: তথ্যবহুল ও শ্রমসাধ্য পোস্ট। হাঁ, আমরা আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছেই প্রত্যাবর্তিত হবো।

ধন্যবাদ রাশিদুল ইসলাম লাবলু।

২| ২৭ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ৯:৪৯

কি করি আজ ভেবে না পাই বলেছেন: কুন ফা ইয়া কুন
অসম্ভব ভালো লাগার একটা পোষ্ট।
অনেক অনেক ধন্যবাদ।
এবং অবশ্যই প্রিয়তে................

১৯ শে জুন, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৭

রাশিদুল ইসলাম লাবলু বলেছেন: লেখাটি পড়ার জন্য অাপনাকেও ধন্যবাদ

৩| ২৯ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ৮:৩৬

দইজ্জার তুআন বলেছেন: ভালো লাগা

৪| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৮:১৪

নাইক্যডিয়া বলেছেন: ++++++++++++++

৫| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ৯:৫৫

হুমম্‌ বলেছেন: দারুন

৬| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ৯:৫৮

নতুন নকিব বলেছেন:



ধন্যবাদ।

৭| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:০১

জ্যাকেল বলেছেন: সুবহান আল্লাহ বলতেই হয় তাঁর অপার সৃষ্টিশীলতা দেখে। কোন মানুষের সাধ্য নেই এইভাবে সৃষ্টির। এই সৃষ্টিকর্তাকে অস্বীকার করা সবচেয়ে বড় বোকামি নয় কি।

৮| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ৮:১২

সাসুম বলেছেন: আরিফ আজাদ হুজুরের পর আপনাকে দেখতে পেলাম বিজ্ঞান কে ইসলামের সাথে কানেক্ট করতে। আশা করি দুনিয়ার সকল থিউরিটিকাল ফিজিসিস্ট আপনার মত করে চিন্তা করবে এবং আস্তে আস্তে আলোর পথে আসবে। আশা রাখি আপনি সাম্নের বছর ফিজিক্সে নোবেল পুরষ্কার টা আমাদের দেশে নিয়ে আসবেন আপনার যুগান্তকারী এইসব লিখার জন্য।

আপনার থিউরিটিকাল ফিজিক্সের উপর লিখা জার্নাল, আর্টিকেল, বই ও জ্ঞান বিজ্ঞান একটু শেয়ার করিয়েন, খুজে দেখার চেষ্টা করব কি করে ইসলাম আর আল্লাহ তাআলাকে ফিজিক্স এর মহাবিশ্বের সাথে কানেক্ট করেছেন।

জাজাকাল্লাহ খায়রান

৯| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ৮:৩৬

সোবুজ বলেছেন: জানি না মানে জানি না।তার পরে আর কোন কথা নাই।জানার চেষ্টা করাই বিজ্ঞানিদের কাজ।কিছু লোক মনে করে,সবকিছু জানা হয়ে গেছে এবং সেটা আছে পবিত্র গ্রন্থে।এই ধারনা থেকেই তারা তেনা পেচাতে শুরু করে।বৈজ্ঞানিক প্রমান ছাড়া আবল তাবল বলতে শুরু করে।এই পোষটি তেমন একটা পোষ্ট ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.