নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রকৃত সত্যকে উপলদ্ধি করতে হবে খোলা মন নিয়ে।
নাস্তিক্যবাদী বিজ্ঞান তো আত্মার অস্তিত্বের বিষয়কে অস্বীকার করে। তাদের মতে জড় বস্তুুর বিভিন্ন ঘাত প্রতিঘাত, ক্রিয়া-বিক্রিয়াই অনুভুতী সৃষ্টির কারন। এর জন্য আত্বার প্রয়োজন নেই। অতি দৈবাৎ অলৌকিক এমন বিষয়কে নাস্তিকেরা আজো পর্যন্ত অস্বীকার করছে। তাহলে ধর্মের এই আত্মা বিষয়টি কি মিথ্যা? প্রানময় আত্মা বা মহাজাগতিক আত্মা শুধু কি রুপকথার গল্প নাকি এর সত্যিই বাস্তব কোন প্রয়োগ আছে ? যদি আল কোরআন আমাদের বলছে আত্মা সম্পর্কে আমাদের সামান্যই জ্ঞান দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই সামান্য পরিমান জ্ঞান সম্পর্কে জ্ঞাত হওয়ার কথা। আধুনিক বিজ্ঞানের অগ্রসরতা হয়তো আমাদের আত্মার স্বরুপকে উদঘাটন করে দিতে পারবে। বর্তমানের আধুনিক বিজ্ঞানের জ্ঞানের পরিধি হিসেবে এমনকি কোন তথ্য আমাদের হাতে আছে যা দ্বারা কিছুটা হলেও আমরা আত্মা বিষয়টি উপলদ্ধি করতে পারবো। আর এই বিষয়টি জানতে গেলে আমাদের প্রথমেই জানতে হবে ‘ষ্ট্রিং থিওরি’ নিয়ে। আধুনিক বিজ্ঞানের চরম জ্ঞানের অস্ত্র হিসেবে আবির্ভুত হয়েছে এই ষ্ট্রিং থিওরি। ষ্ট্রিং থিওরি নিয়ে আমাদের জানতে গেলে প্রথমেই আমাদের জানতে হবে পর্দাথের মৌলিক অনু-পরমানু সহ জানতে হবে সকল মৌলিক কনিকা সর্ম্পকে ।
ষ্ট্রিং তাত্ত্বীকদের ভাষায় আমাদের পর্যবেক্ষন করা সকল বস্তুু কনিকা ও বল কনিকা আর কিছুই নয় শুধু ষ্ট্রিং এর বিভিন্ন রুপের কম্পনের প্রতিফলন। গীটার এর তারে কম্পনের ফলে যেমন বেজে ওঠে এক একটি সুর কিন্তু ষ্ট্রিং বা তন্তুু গুলোর কম্পনের ধরন অনুসারে এক একটি কনিকা আবির্ভূত হয়। কম্পনের ফলে বিভিন্ন রকম কনিকা যেমন দেখা যায় তেমনি তন্তু গুলোর কম্পনের ধরন অনুসারে কনিকাগুলোর ভর ও চার্জ নিধারিত হয়। একটি ইলেকট্রনের ক্ষেত্রে ষ্ট্রিং গুলো কাপছে একরকম আর কোয়ার্কের ক্ষেত্রে কাপছে আরেক রকম। ১০-৩৩ সেমি দৈঘ্য এই সকল ষ্ট্রিং স্পন্দিত হয়ে কনিকার ভর, চার্জ, ঘূর্নণ বিভিন্ন রকম বৈশিষ্ট প্রকাশ করে। আর এ সকল বৈশিষ্টের কারনে একটি কনিকা আরেকটি কনিকা থেকে পৃথক হয়। ষ্ট্রিং তাত্ত্বিকদের মতে টিভি স্কিন বা কম্পিউটারের ঔজ্জল্যেও ক্ষুদ্রতম একক হচ্ছে পিক্সেল তেমনি ষ্ট্রিং গুলো বস্তুজগতের ক্ষুদ্রতম একক। তার একটি সীমা নির্ধারন করা হয়েছে। যে দৈঘ্যগুলোকে আমরা বলছি প্লাংকের দৈঘ্য তা আসলে ষ্ট্রিং গুলোর নিজস্ব দৈর্ঘ্য। আধুনিক ষ্ট্রিং তাত্ত্বিকেরা বলেন ‘ এই সকল ষ্ট্রিং এর কম্পনের কারনে আজ এই মহাবিশ্বের সকল বিষয় পরিচালিত। এমনকি মানুষের হাসি কান্না দুঃখ হতাশা সমস্তটাই অনু-পরমানুর মধ্য দিয়ে বিভিন্ন কনিকার উপস্থিতির মধ্য দিয়ে কিছু ষ্ট্রিং এর কম্পনের ফসল। বিশিষ্ট ষ্ট্রিং তাত্ত্বিক এ্যাডোয়ার্ড উইটেনের ভাষায় “ আপনার কাছে যদি বেহালা বা পিয়ানো থাকে, তাহলে লক্ষ্য করবেন যে এটির তার বিভিন্ন আকৃতিতে কাপতে পারে। আমরা স্ট্রিং তত্ত্বে যে ধরনের তারের কথা বলছি, তাদের সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হলো যে, এসব তারও নানা সম্ভাব্য আকার নিতে পারে। কাজেই ইলেকট্রন, প্রোটন, নিউট্রিনো এ জাতীয় কনিকা গুলি একই মৌলিক তন্তুসমূহের বিভিন্ন মোডের কম্পনের প্রকাশ’-এর ব্যাক্ষা থেকে প্রাথমিক কনিকাসমূহের একত্রিকরণের ধারণাটি উদ্ভুত হয়। ষ্ট্রিং তাত্ত্বিকদের অভিমত । ষ্ট্রিং তত্ত্ব আজ আলবার্ট আইনষ্টাইনের সেই স্বপ্ন ‘ইউনিফাইড ফিল্ড থিউরি’র দ্বারপ্রান্তে। আলবার্ট আইনষ্টাইন যা অনুমান করতেন একটি থিউরির যা সকল প্রশ্নের জবাব দিতে পারবে। ষ্ট্রিং থিউরি কোয়ার্কের দুলুনি থেকে বাইনারি ষ্টারের পরিক্রমন, সামান্য অগ্নিপিন্ড থেকে বিগব্যাং অথবা র্ঘূনায়মান ঘড়ির কলগুলি থেকে বিশাল নীহারিকা পযর্ন্ত সমস্ত কিছুর ব্যাক্ষা করতে পারবে।
স্ট্রিং তাত্ত্বীকদের যুগান্তকারী এক বক্তব্য ইদানিং বিজ্ঞান জগৎ আড়োলিত করেছে। বিষয়টি সত্যিই পিলে চমকাবার মতো। তাদের বক্তব্য মতে ‘আমরা সচরাচর মহাবিশ্বের যে তিনটি মাত্রা দেখি আসলে এই মহাবিশ্ব তিনটি মাত্রাই সীমাবদ্ধ নয়। গুপ্ত মাত্রা বলে আরো কিছু মাত্রা রয়েছে যা আমরা দেখি না। স্ট্রিং সংক্রান্ত ৫টি তত্ত্বকে একটি তত্ত্বে সমন্মিত করা ‘এম থিউরি’ তে উল্লেখ করা হয়েছে মহাবিশ্বের মোট মাত্রা ১১টি। ৩টি প্রকাশ্য মাত্রা (দৈঘ্য, প্রস্থ, উচ্চতা), ৭ টি গুপ্ত মাত্রা এবং সময়কে ধরে ১ টি মাত্রা। তাহলে এখন প্রশ্ন হলো ‘আর ৭টি মাত্রা কোথায়? আমরা তাকে দেখিনা কেনো? অথবা বুঝতে পারি না কেনো? আধুনিক ষ্ট্রিং তাত্ত্বিকদের মতে এই মাত্রা গুলো কোকড়ানো প্যাচানো অবস্থায় এমন একটি সুক্ষ স্তরে রয়েছে যে দৃষ্টিগ্রাহ্যভাবে কোনভাবেই তা বুঝে উঠা সম্ভব নয়। অনেক স্ট্রিং বিজ্ঞানীর ধারনা বিগব্যাং এর মূহুত্বে যখন মহাজাগতিক প্রসারন ঘটেছিলো তখন এই প্রকাশ্য ৩টি মাত্রাই দেশকালের মধ্যে প্রকাশিত হতে পেরেছিলো আর অন্যান্য মাত্রাগুলো বাকানো কোকড়ানো অবস্থায় দৃষ্টিসীমার বাইরে আনুবীক্ষনিক আকারে রয়ে গেছে যা অতিন্দ্রিয় রুপেই বিরাজিত। বিশ্ববিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী ষ্টিফেন ডব্লিউ হকিং তার “গ্রান্ড ডিজাইন” বইতে এম তত্ত্বের স্থানিক মাত্রা সংক্রান্ত বিষয়ে বলেছেন “মহাবিশ্বের প্রকাশ্য মাত্রার কথাই ধরুন। এম তত্ত্ব মতে স্থান-কালের দশটি স্থানিক মাত্রা এবং একটি কালিক বা সময়ের মাত্রা রয়েছে। ধারনাটা হলো, এদের সাতটি স্থানিক মাত্রা এত ক্ষুদ্রভাবে জড়িয়ে পেচিয়ে গুটি পাকিয়ে আছে যে আমরা তাদেরকে লক্ষ্য করিনা। ফলে আমরা এই বিভ্রান্তিতে পড়ি যে স্থানের মাত্রা শুধুমাত্র আমাদের পরিচিত বৃহৎ তিনটি। এখনো পর্যন্ত এম তত্ত্বের একটা খোলা প্রশ্ন হলো বৃহৎ মাত্রা কেনোই বা তিনটি আর অন্য মাত্রাগুলোই বা কেনো গুটি পাকিয়ে গেলো? অনেকে বিশ্বাস করতে চাইবেন হয়তো এমন কোন প্রক্রিয়া আছে যার ফলে স্বতস্ফুর্তভাবেই স্থানের মাত্রাগুলো গুটি পাকিয়ে যায়। আবার অন্যভাবে দেখলে হয়তো শুরুতে সব মাত্রাই গুটি পাকিয়ে ছিলো। এবং পরে কোন বোধগম্য কারনে এদের তিনটি মাত্রা প্যাচ খুলে বৃহৎ আকার ধারণ করেছে। অন্যগুলো করেনি। ----- তাহলে সেই গুটি পাকানো মাত্রাগুলোর কি হলো? মনে করে দেখুন, এম তত্ত্বে বাকী গুটিপাকানো মাত্রা গুলি অর্ন্তবতী জগতে ঠিক কি আকৃতি ধারণ করে আছে সেটাই বিভিন্ন ভৌত ধ্রুবকের মান। যেমন ইলেকট্রনের চার্জ এবং মৌলিক কনিকাসমূহের মধ্যকার মিথস্ক্রিয়ার প্রকৃতি অথাৎ প্রকৃতির বলসমূহ নির্ধারন করে।”এম তত্ত্ব এর যুগান্তকারী এই উদ্ঘাটন আমাদের চমকে দেয়। মহাবিশ্বের স্থানিক বৃহৎ মাত্রা তিনটি আর গুপ্ত মাত্রা সাতটি। এই সাতটি মাত্রা গুটি পাকিয়ে পেচিয়ে অর্ন্তবর্তী জগতে আছে। আর তার পেচিয়ে থাকার ধরনের উপর নির্ভর করছে মহাবিশ্বের নিয়মসমূহের একসেট অথাৎ মহাবিশ্বের এই গুপ্ত মাত্রাগুলিই মহাবিশ্বকে নিয়ন্ত্রিত করছে। অর্ন্তবর্তী জগতের গুপ্ত মাত্রাগুলো কিভাবে পেচিয়ে আছে তার উপর নির্ভর করছে মহাবিশ্ব পরিচালনার বিভিন্ন নিয়ম। অর্ন্তবর্তী জগতের গুপ্ত মাত্রাগুলোর পেচিয়ে থাকার আকৃতিই প্রকৃতির দৃশ্যমান নিয়মগুলো নিয়ন্ত্রন করে। দৃশ্যমান নিয়ম বলতে মৌলিক চারটি বল, তাদের পরস্পরের সাথে মিথস্ক্রিয়ার ধরন, মৌলিক কনিকা যেমন কোয়ার্ক নিউট্রিনো ভর আধান ইত্যাদির কথা বোঝানো হচ্ছে। অর্ন্তবর্তী জগতের এই গুপ্তমাত্রা গুলোর উপরই যদি সব নির্ভর করে তবে এই গুপ্তমাত্রাগুলো কি তাদের ইচ্ছেমতো পেচিয়ে আছে? না! এখানেও রয়েছে রহস্য! ষ্ট্রিং থিওরি বলে এই গুপ্তমাত্রাগুলো ইচ্ছে মতো পেচিয়ে থাকতে পারে না। কারন তাদের এই পেচিয়ে থাকার জন্য একটি গানিতিক নিয়ম রয়েছে। “ক্যালাবি ইয়া মেনিফোল্ড” “Calabi Yea manifold” নামে একটি বিশেষ গানিতিক উপায়ে এরা জড়িয়ে পেচিয়ে থাকে। এই পেচিয়ে থাকাকে ষ্ট্রিং তত্ত্বের ভাষায় বলা হয় “Compactification” কপপেক্ট্যাফিকেশন। আপনি কি একবার ভেবে দেখতে পারেন ১১ মাত্রার এই জগৎ টি কেমন হতে পারে? দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, উচ্চতা এই হলো স্থানিক তিনটি মাত্রা আর সাত টি মাত্রা অর্ন্তবর্তী জগতে গুপ্ত! কল্পনা কি করা যায়। কল্পনা করাও অসম্ভব। বিশিষ্ট ষ্ট্রিং তত্ত্ব নিয়ে গবেষক ব্রায়ান গ্রীন এর ভাষায় “আমি এই দশ এগারো মাত্রার জগৎ কে কল্পনায় চোখের সামনে ভাসাতে পারিনা। আর আমি এমন কারো দেখা পাইনি যিনি পারেন।” (সুত্র-The Fabric of the cosmos: Space, Time and the texture of reality- Brian Green) এই সমস্যার কারনে অর্ন্তবর্তী জগতের গুপ্তমাত্রার বিষয়টি কল্পনা করতে নিষেধ করা হয়েছে।
পাঠক, আমি এতক্ষন ধরে ষ্ট্রিং তত্ত্বের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করলাম। আলোচনা করলাম দুটি জগৎ নিয়ে। একটি বস্তুজগৎ ও আরেকটি অর্ন্তবর্তী জগৎ। মহামতি প্লেটো তার জীবদ্দশাই ধারনা করতেন এরকম দুপ্রকার জগতের ।প্লেটো কল্পনা করতেন আমাদের জগতের বাইরেও একটা স্বর্গীয় জগত আছে, সেখানে সব নিখুঁত গাণিতিক বিমূর্ত ধারণাগুলো বাস করে। আমরা আমাদের জগতে শতভাগ নিখুঁত রেখা, বৃত্ত, ত্রিভুজ, অসীম সংখ্যক সমান্তরাল রেখা দেখতে পাই না। আমাদের জগতে না পাওয়া গেলেও প্লেটো ভাবতেন সেগুলো পাওয়া যাবে সেই স্বর্গীয় জগতে। শুধু জ্যামিতিক অবয়ব নয়, আমাদের সংখ্যা পদ্ধতি, গাণিতিক, অনুপাত, ধ্রুবক সবকিছুরই বাস্তব অস্তিত্ব রয়েছে সেই স্বর্গীয় জগতে। গণিতবিদদের মধ্যে যারা এখনো, প্লেটোর রিপাবলিকের অর্ধশতাব্দী পরেও এই স্বর্গীয় ফ্যান্টাসিতে আচ্ছন্ন হয়ে আছেন তাদের বলা হয় ‘প্লেটোনিস্ট’। তারা সত্যই মনে করেন এমন এক জগত আছে যেখানে গণিতের ‘পাই’, ‘সুবর্ণ অনুপাত’, ‘ফিবোনাচি রাশিমালা’ এরা সবাই হাত ধরাধরি করে বাস করে। যেমন, কলেজ ডি ফ্রান্সের বিশ্লেষণ এবং জ্যামিতি বিভাগের চেয়ারপার্সন অ্যালেইন কোনস বলেন, ‘মানব মনের বাইরেও আদি এবং ইমিউটেবল গাণিতিক বাস্তবতার অস্তিত্ব রয়েছে’। প্লেটনিস্ট গণিতবিদেরা মনে করেন গণিতবিদের কাজ হচ্ছে সেই গণিত বাস্তবতাগুলো ‘ডিসকোভার’ করা, ‘ইনভেন্ট’ নয়। অর্থাৎ গণিতের নিয়মগুলো তৈরি করা যায় না, কেবল খুঁজে বের করা যায়। পদার্থবিজ্ঞানের সূত্রগুলোও ঠিক তেমনি, এর বাস করে বিমূর্ত এক কল্পলোকে, আর এরা বাস্তব জগতকে স্পর্শ করে তখনই যখন তারা এর উপর ক্রিয়া করে। এ যেন, অনেকটা নীচের ছবির মতো
আমরা যদি গভীরভাবে উপলদ্ধি করার চিন্তা করি তবে এটা উপলদ্ধি করতে পারবো যে এ বস্তুজগতের বাইরে আরেকটি জগৎ বিদ্যমান আর সে জগৎ রুহানী জগৎ। যাকে আমরা বলতে পারি আত্মার জগৎ বা রুহানী জগৎ। একটি সীমারেখা যেখান থেকে আসে বস্তুজগতের তথ্য নির্দেশ আর সেই নির্দেশ অনুসারেই চলছে বস্তুজগৎ চালিত হচ্ছে। এখন আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে আত্মা কি? আধুনিক বিজ্ঞান আত্মার ব্যাপারে উৎসাহি নয়। কারন যা পর্যলক্ষন করা যায় না তা বিজ্ঞানের স্বীকৃত বিষয় হতে পারে না। এমনকি নাস্তিক্যবাদী বিজ্ঞান তো আত্মাকে একেবারেই অস্বীকার করে। আল কোরআনে রুহু বা আত্বা সম্পর্কে বলছে “ রুহ এবং উহাকে সুগঠিতরুপে সুষ্টিকারীর শপথ’ যিনি তাদের অন্তরে ভালো ও মন্দ ঢেলে দিয়েছেন। ” (সুরা শামস:৭-৮) অবএব রুহু সৃষ্টিশীল একটি বিষয়। আমি পূর্বেই বলেছি মহাবিশ্বকে বুঝতে হলে আগে বুঝতে হবে মানুষকে। মানুষ জ্ঞানের প্রধান অংশ হলো অনুভূতি। বিভিন্ন তরঙ্গই মানবদেহে অনুভ’তী সৃষ্টি করে। বিদ্যুৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ আমাদের অক্ষিপটে আঘাত করে। অথচ মস্তিস্কে পৌছায় স্নায়ু স্পন্দন মাত্র। এই স্নায়ু স্পন্দনই আমাদের মধ্যে বিভিন্ন অনুভ’তী সৃষ্টি করে। কখনও দৃষ্টির অনুভ’তী সৃষ্টি করে, দেহপটে আঘাতের অনুভ’তী সহ সুখ দুঃখ ভালবাসা কষ্ট ভালোলাগা, কখনও খাবারের স্বাদ, কোন কিছুর গন্ধ। এসকল অনুভ’তী সমূহ বিদ্যুৎ চুম্বকীয় তরঙ্গের প্রভাবে ঘটলেও মস্তিস্কে পৌছায় স্নায়ু স্পন্দন। এতেই মস্তিস্ক বুঝে যায় এটা কি জাতীয় মানসিক ক্রিয়া। ফলে মানুষ অনুভ’তী উপলদ্ধি করে থাকে। এসকল মানসিক ক্রিয়াগুলোই মনের কর্মকান্ডের মধ্যে পড়ে সত্য তারপরও মনের আলাদা একটি ক্রিয়া আছে যাকে আমরা বলতে পারি আদেশ ঘটিত ক্রিয়া। অথাৎ মানব দেহের বিভিন্ন ইন্দ্রিয় অনুভুতীর উপর নির্ভর করে মানুষ মস্তিস্ক যে আদেশ ক্রিয়া চালায় তাই হলো মানুষের মন। যেমন শরীরে মশা কামড়াচ্ছে মস্তিস্ক হাতকে আদেশ করলো হাত তুমি মশাকে আঘাত কর, আর অমনি হাত এসে মশার উপর আঘাত করলো। এই যে স্বল্প সময়ে মানুষের মানসিক ক্রিয়া টার প্রভাব এক সুক্ষ কমান্ডিং প্রকিয়ার মাধ্যমে ঘটে। দেহ অভ্যন্তরে এই কমান্ডিং বিষয়টাই মন, আত্মা বা আল কোরআনের ভাষায় যা আদেশ ঘটিত ব্যাপার। মূল কথা হলো চেতনাই হলো আত্মার স্বরুপ। চিন্তা হলো আত্মা হতে উদ্ভুত একটি কার্যক্রম।
মানুষের সকল অনুভ’তী সমূহ বিদ্যুৎ চুম্বকীয় তরঙ্গের প্রভাবে ঘটলেও মস্তিস্কে পৌছায় স্নায়ু স্পন্দন মাত্র। এতেই মস্তিস্ক বুঝে যায় এটা কি জাতীয় মানসিক ক্রিয়া। প্রতিটা মানুষের মস্তিস্ক এক জাতীয় তরঙ্গ প্রেরণ করে না অথবা প্রতিটিা মানুষের মস্তিস্ক তরঙ্গ এক রকম নয়। প্রতিটা মানুষ ভিন্ন ভিন্ন তরঙ্গ প্রেরণ করে। মানুষ মাত্রই যদি মস্তিস্ক হতে প্রেরিত তরঙ্গ এক রকম হতো তবে আত্মা বা ভিন্নতা বিষয়টি উপলদ্দি করা যেতো। যেহেতু প্রতিটা মানুষের মস্তিস্ক হতে প্রেরিত তরঙ্গ ভিন্ন তাহলে এটা বোঝা যায় আত্মার ভিন্নতা অবশ্যই রয়েছে। প্রতিটা মানুষের মস্তিস্ক তরঙ্গ ভিন্ন হিসাব করে ইদানিং বিজ্ঞানীরা মানুষের এই মস্তিস্ক তরঙ্গকে পার্সওয়াড হিসেবে চিন্তা করছে। বিজ্ঞানীরা এমন এক যন্ত্র আবিস্কার করছেন যা কোন মানুষের মাথায় স্থাপন করলে মস্তিস্কে এক ধরনের শব্দ তরঙ্গ প্রেরণ করবে। তখন এই তরঙ্গ মানুষের অস্তির মধ্য দিয়ে পরিবাহিত হবে। যার ফলশ্রুতিতে মাথার খুলি একটি নির্দিষ্ট কম্পাঙ্কের শব্দ তরঙ্গ প্রতিফলিত করবে যা ঐ যন্ত্রে সংরক্ষিত থাকবে।
আমরা মানুষ। যারা ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে বিশ্বাস করি তারা জানি এবং বিশ্বাস করি আমাদের আত্মা রয়েছে। এই আত্মা আমাদের চালিকা শক্তি। এবং এটাও জানি এই সমগ্র জগতের একটি আত্মা রয়েছে। যাকে আমরা পরমাত্মা নামে অভিহিত করে থাকি। এই জিজ্ঞাসার উত্তর আল কোরআনই আমাদের দেয়। ‘হে মুহাম্মদ উহারা তোমাকে আত্মা সম্পর্কে প্রশ্ন করে, তুমি উহাদের বল আত্মা একটি আদেশ ঘটিত ব্যাপার এ সম্পর্কে তোমাদের সামান্যই জ্ঞান দেওয়া হয়েছে।” আল কোরআনের ভাষায় আত্মার কার্যক্রম সম্পর্কে আমরা অবগত হলাম। আমরা বুঝতে পারছি আত্মা একটি আদেশ ঘটিত ব্যাপার। আদেশ বা কমান্ড বিষয়টি প্রসেসিং হচ্ছে আত্মা দ্বারা। সৃষ্টির শুরুতে আল্লাহ যে ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন সেই ইচ্ছাপ্রকাশ এনার্জিময় মৌলিক তরঙ্গে পরিনত হয়ে সৃষ্টি করে সকল বস্তু ও শক্তি এবং এদের মিথস্ক্রিয়া ঘটিয়ে সৃষ্টি করে মহাবিশ্ব সহ মহাবিশ্বের একটি অতিজাগতিক শক্তি। যা সৃষ্টির শুরুতে ¯স্রষ্টার কমান্ড এর কিয়দংশকে ধারণ করে বা সংরক্ষণ করে জগতের আত্মা রুপে প্রতিষ্ঠা পায় সৃষ্টিশীল জগৎকে পরিচালনার জন্য। বিশিষ্ট পদার্থবিদ ষ্টিফেন ডব্লিউ হকিং এর ভাষায় আপনি সেই অতিজাগতিক শক্তিকে বলতে পারেন ‘ঈশ্বরের মন’। সৃষ্টিকাল শেষ হওয়ার পরবর্তী পযার্য়ে শুরু হয় সৃষ্টির চলমান কাল। সৃষ্টির এই চলমান কালেই ঈশ্বরের মনের পূর্ন বিকাশ পায়। যাকে আমরা বলতে পারি শিশু মহাবিশ্ব থেকে বার্ধক্যময় মহাবিশ্বের পানে এক মহাযাত্রা। মহাবিশ্বের অভ্যন্তরস্থ্য আত্মা হতে সকল তথ্য কনা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে একটি ধারাবাহিকতায়। অনুরুপ মহাবিশ্বের একটি আত্মা আছে যা পরমআত্মা হিসেবে সকল বস্তুকে নিয়ন্ত্রিত করছে। আমরা এতটুকু অবগত হলাম মহাবিশ্ব যেমন শুন্য শক্তির গর্ভ হতে জন্ম নিয়েছে এবং তেমনি এই মহাবিশ্বেরও মৃত্যু বা ধ্বংশ অনিবার্য এবং সৃষ্টির প্রাক্কালে আল্লাহর আদেশকে ধারন করে রাখার মতো পর্যাপ্ত ক্ষমতাইই হলো মহাবিশ্বের আত্মা। সেক্ষেত্রে আমরা মহাবিশ্বকে একটি প্রান বা বুদ্ধিমত্তার সত্তা বলেই অভিহিত করতে পারি এবং সেই বুদ্ধিমান সত্ত্বার ইচ্ছাশক্তি দ্বারা মহাবিশ্ব নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হচ্ছে। আল্লাহ যে আদেশ করেছেন ‘হও’ সেই আদেশটি দ্বারা মহাবিশ্ব সৃষ্টি হয়েছে এবং সেই আদেশের ফলশ্রুতিতেই জগতের নিয়ম বা নির্দেশ, বিধান বা পরিচালনার নিয়ম কানুন আত্মা রুপে সংগঠিত হয়েছে। নিয়ম বা পরিচালনার সকল প্যার্টান আত্মা রুপে কমান্ড প্রসেসিং ফ্যাক্টরি হিসেবে মহাজাগতিক বিষয়সমূহকে নিয়ন্ত্রন করছে।
মহাবিশ্বকে জানতে গেলে মানুষকে নিয়ে জানা অনেক বেশি প্রয়োজন। আমরা জানি আমরা মানুষ আমাদের একটি আত্মা আছে যার কারনে আমরা বেচে আছি। আত্মা না থাকার অর্থ হলো মৃত্যু। আমাদের নিউরোসাইন্স এখন বুঝতে পারছে মানবদেহ ঘিরে ম্যাগনেটিক ফোর্স এর লেনাদেনা। অর্থাৎ মানুষের হার্ট এর ম্যাগনেটিক ফোর্স এর সাথে মানুষের মস্তিস্কের যে যোগসুত্র সৃষ্টি করে। আত্মা একটি কমান্ডিং প্রক্রিয়া যা বস্তুজগতের উপর কার্যক্ষম হয়। রুহানী জগতে অবস্থান করেই সে বস্তুজগৎ পরিচালনা করে। এই বস্তুজগত বা মানবদেহের আলাদা প্রতিজগৎ হলো আত্মা। মানুষ এখানে যাই করুক তা তার প্রতিজগতকে প্রভাবিত করে। ইতিমধ্যে বিজ্ঞান প্রমান করে দেখিয়েছি একটি বস্তুর উপর যেকোন ক্রিয়া প্রতি বস্তুর উপর প্রভাবিত ঘটাতে পারে।বিজ্ঞানী ফোটন কনার মাধ্যমে এ প্রমান পেঝেছেন। আলোর কনা ফোটন। এক জোড়া ফোটন কনা থেকে যদি ১ টি ফোটন কনা দুরে কোথাও নিয়ে যাওয়া হয় এবং তাকে বিভিন্ন অবস্থায় নড়াচড়া করা হয় তাহলে অপর ফোটন কনিকাটিও একইভাবে নড়ে চড়ে ওঠে। তাদের মধ্যে অনেক দূরত্ব বজায় থাকে। এতে প্রমানিত হয় পৃথিবীর মানুষ যাই করুক তার প্রতিচিত্র তার প্রতিজগতের উপর প্রতিষ্ঠিত হয়। তার বিপরীত সত্তার উপর হুবহু প্রতিফলিত হবে। এতে কোন প্রকার ব্যতিক্রম ঘটবেনা। কারন এ মহাবিশ্বের মানুষ সহ প্রতিটা বস্তুই আলোর কনিকা ফোটন দিয়ে উতপত্তি যা বর্তমান আধুনিক বিজ্ঞানে প্রমানিত সত্য এক বিষয়। আল কোরআর বলে ‘হে মুহাম্মদ উহারা তোমাকে আত্মা সম্পর্কে প্রশ্ন করে, তুমি উহাদের বল আত্মা একটি আদেশ ঘটিত ব্যাপার এ সম্পর্কে তোমাদের সামান্যই জ্ঞান দেওয়া হয়েছে।” এই আত্মা সম্পর্কে আমেরিকান Dr Stuart Hameroff এবং ব্রিটিশ বিজ্ঞানী Sir Roger Penrose একটি তত্ব প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তারা ধারনা করছেন মানুষের মস্তিস্কের সেলের স্নায়ুনালীর মধ্যে আত্মা অবস্থান করেন। মানুষের মস্তিস্ক একটি জৈব কম্পিউটার যা ১০০ মিলিয়ন নালীকা বা স্নায়ুকোষের লম্বা সুতোর মতো যে অঙ্গের মাধ্যমে কোষ থেকে স্পন্দন পরিবাহিত হয় সেখানেই তথ্য নেটওয়ার্ক কার্যক্ষম হয় কোয়ান্টাম মহাকর্ষ এর প্রভাবে।মানষে যখন মৃত্যু পথযাত্রী তখন কোয়ান্টাম ক্ষেত্রটি থাকেনা। এবিষয়ে তাদের গবেষনা সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন তুলে ধরলাম।
"American Dr Stuart Hameroff and British physicist Sir Roger Penrose developed a quantum theory of consciousness asserting that our souls are contained inside structures called microtubules which live within our brain cells. Their idea stems from the notion of the brain as a biological computer, "with 100 billion neurons and their axonal firings and synaptic connections acting as information networks". Dr Hameroff, Professor Emeritus at the Departments of Anesthesiology and Psychology and Director of the Centre of Consciousness Studies at the University of Arizona, and Sir Roger have been working on the theory since 1996. They argue that our experience of consciousness is the result of quantum gravity effects inside these microtubules - a process they call orchestrated objective reduction. In a near-death experience the microtubules lose their quantum state, but the information within them is not destroyed. Or in layman's terms, the soul does not die but returns to the universe. Dr Hameroff explained the theory at length in the Morgan Freeman-narrated documentary Through the Wormhole, which was recently aired in the US by the Science Channel. The quantum soul theory is now trending worldwide, thanks to stories published this week by The Huffington Post and the Daily Mail, which have generated thousands of readers comments and social media shares. "Let's say the heart stops beating, the blood stops flowing, the microtubules lose their quantum state," Dr Hameroff said. "The quantum information within the microtubules is not destroyed, it can't be destroyed, it just distributes and dissipates to the universe at large. 'If the patient is resuscitated, revived, this quantum information can go back into the microtubules and the patient says "I had a near death experience".' In the event of the patient's death, it was "possible that this quantum information can exist outside the body indefinitely - as a soul".
Dr Hameroff believes new findings about the role quantum physics plays in biological processes, such as the navigation of birds, adds weight to the theory.
আত্মা সম্পর্কে আমরা খুব বেশি কিছু জানিনা সত্য। তবে কিছুটা আমরা জানবো। আমাদের বিজ্ঞান যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে আমরা একদিন প্রমান করতে পারবো আমরা যারা স্রষ্টাতে বিশ্বাস করি আত্মাতে বিশ্বাস করি তারা সঠিক পথে আছি। এই ব্যাপারে আল কোরআন বলে “এই লোকদের সামনে সে অবস্থা এসে গেছে, যাতে খোদাদ্রোহিতা হতে বিরত রাথার বহু শিক্ষাপ্রদ উপকরণই নিহিত রয়েছে এবং এমন পূর্ণতাপ্রাপ্ত বিজ্ঞানসম্মত যুক্তিও (বৈজ্ঞানিক আবিস্কার) রয়েছে যা উপদেশ দানের পূর্ণমাত্রায় পূরণ করে।” (৫৪:৪-৫ ‘আল-কোরআন’)
১২ ই জুলাই, ২০১৬ সকাল ১১:৪৬
রাশিদুল ইসলাম লাবলু বলেছেন: লেখাটি ভালো লেগেছে বলে খুশি হলাম। আপনার লিংক অনুসারে আপনার লেখাটি্ও পড়লাম, ভালো লাগলো। আপনাকে ধন্যাবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ১১ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১১:৩৮
মুদ্দাকির বলেছেন: আপনার লেখাপড়েই ঢুকলাম, ভালো লিখেছেন। পড়তে পারেন রূহ নিয়ে লিখেছিলাম। ( Click This Link ) আসলে বিজ্ঞান এই বিষয়ে তেমন আগাবে বলে মনে হয় না। তবে অনেক রকমের অনুমানতো চলবেই।