নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইল্লু

ইল্লু › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিলিতিসের গান Songs of Bilitis(ধারাবাহিক)

১৩ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১:২১

প্রথম প্রকাশিত হয় ১৮৯৪ সালে,গ্রীসের নামকরা কবি,সাপ্পোর সমসাময়িক,বিলিতিস নামের কোন এক কবির অনুবাদ হিসাবে,ফরাসী লেখক পিয়ের লুইসের অনুবাদ।বিরাট এক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে লেখাটা অনুরাগীদের মনে-খ্রীষ্টপূর্ব ৬০০ সালের এ ধরনের সর্ম্পূন লেখা খুঁজে পাওয়া ছিল অনেকটা অবিশ্বাস্য।আর প্রকাশ্য ভাবে সমকামিতা নিয়ে প্রকাশনা সেটা তো আরও অভাবনীয়।পরে অবশ্য জানা যায়-বিলিতিস বলে কোন কবির অস্তিত্বই ছিল না,ঐ সময়।ওটা আর কিছু না পিয়ের লুইসের তৈরী করা একটা অভাবনীয় ফেরেপবাজী।সাজানো হলেও, তবুওএক পুরুষের লেখা মেয়েদের নিয়ে বেশ সাহসী এক প্রকাশনা,লেখার মর্যাদাটা আজও কমে যায়ন

(১১) এ গানটা,এ গল্পটা-আমার জীবনের

নিশ্চয়ই আমি গান করবো না আমার রক্ষিতাদের নিয়ে।হয়তো ওরা কেউ বেঁচে নেই,কি লাভ তাদের কথা বলে।আমিও তো অনেকটা তাদের মত যদিও?তবে আমার কি নিজেকে নিয়ে ভাবার আর তেমন কিছুই কি নাই?

আমি তোমাকে ভুলে যাব পাসিফে,যদিও তোমার কামনার ঝড়ো আকাশ পাগল করে দিত,আমাকে।প্রশংসা করবো না তোমার সাইরিঙ্কস,তোমারও না বাইলবিস,
প্রশংসা করবো না ধবধবে সাদা চামড়ার হেলেন তোমাকে,যদিও দেবী তুমি সকলের মাঝে।

কারও কষ্ট নিয়ে,তেমন কোন যন্ত্রনা অনুভব করিনা আমি।কেউ যদি আমাকে ভালবেসে থাকে,আমার ভালবাসা ছিল অনেক বেশী তার চেয়ে।আমার গানটা জীবনের কথা নিয়ে,কোন হারানো প্রেমিকাদের কথা নেই সেটাতে।

হাঁটু গেড়ে বসে থাক,আমার কামনার জোয়ার ভঁরা শরীর-অপেক্ষা করে থাক,কখন ছুটে আসবে আনন্দের স্রোত এ দিকে।আনন্দ যা পাও খুঁজে নাও আজকেই,কার জানা আছে আগামীকাল,সেটা আছে না নাই।আনন্দ ছুটে আসবে না স্রোতের মত,জানা না জানা আনন্দ যা পাও,খুঁজে নাও আজকেই,যদি না হয় তোমার মৃত্যুর দিন।


সুবাস

সারা শরীরে মাখাবো সুগন্ধি,ভ্রমরের মত ছুটে আসে যেন প্রেমিকের দল।
তারসোসের সুগন্ধি তেল রুপার গামলায় বসে মাখাবো উরুতে,মাখাবো মিশর থেকে আনা গোলাপের নির্যাসটাও।

বগলের নীচে মাখালাম পদিনা তেলের সুবাস,চোখের পাপড়িতে,পাতায়-মাজোরাম থেকে আনা রং,আগরবাতির সুবাস ছড়ানো চুল বেঁধে দিল আমার ক্রীতদাসেরা।

এটা কাইপ্রোসের পাহাড়ের সুবাসিত তেলঃমাখাবো দুই স্তনের মাঝখানে,
আর ফাসেলিসের গোলাপ জল দিয়ে স্নান করবো শরীর,ঘাড় আর গাল।

কোন ভাবেই ভুলবো না যোনীর ত্রিভুজে লিডিয়ার বাকারিস থেকে আনা সুবাস দিতে,লিডিয়ান ঐ সুবাসের কথা জানা দরকার সব বারবনিতার,পেলোপেন্নায়সের ঐ সব আঁচার সংষ্কারের চেয়েও।



আলাপ আলোচনা

-শুভদিন।
–শুভদিন।
–কোথায় ছুটছো এত তাড়াহুড়া করে।
–তাড়াহুড়া ভাবছো কেন,ঠিক অত তাড়াহুড়া হয়তো না।

-জান,তুমি খুবই সুন্দরী একটা মেয়ে।
–হয়তো এত সুন্দর যা জানা নেই তোমার।

-সুন্দরী তোমার নামটা কি?
-এত তাড়াহুড়ায় আমার নাম বলবো না।
–কার সাথে কাটাবে আজকের সময় তোমার।
–কেন আমার প্রেমিক আছে,তার সাথেই।
–কি ভাবে যৌন খেলা কর,তোমরা?
-যে ভাবে সে চায়।

-আজকের রাতের খাবার আমার সাথে খাবার সময় হবে তোমার?
-তুমি যদি চাও,তবে কি দিবে,আমাকে?
-না,এই হাতে আছে,পাঁচটা ড্রামাক।
–ওটা তো আমার ক্রীতদাসের জন্যে।আর আমাকে কি দিবে তুমি?
-বল তুমিই বল।
–আরও একশ ড্রামাক।

-কোথায় তোমার বাড়ী?
-ঐ দূরের নীল বাড়ীটা।
–বল কখন আসবো,কখন দেখা হবে তোমার সাথে?
-কেন,এখনই চল।
–ঠিক আছে,চল আমি যাচ্ছি তোমার পেছনে পেছনে।


ছিন্নভিন্ন পোষাক

হ্যা,দুই দেবতার দোহাই দিয়ে বলছি কে সেই অসভ্য,পা দিয়ে তছনছ করলো আমার পোষাকটা?
-যে মানুষটা ভালবাসে তোমাকে।
–ও অমানুষ,বুদ্ধু একটা।
–আমি আনাড়ী,ক্ষমা করো আমাকে।

গর্দভ একটা!আমার হলদে সুন্দর পোষাকটা ছিঁড়ে গেছে পেছনে,আর এ ভাবে রাস্তায় হেঁটে গেলে,ভাববে সবাই আমি হয়তো রাস্তার ব্যাবসায়ী মেয়ে একজন,
যার কোন কিছুতে দ্বিধা নেই পয়সার খাতিরে।

-তুমি কি থামবে?
-আমার মনে হয় ও তোমার সাথে না,আমার সাথে কথা বলছে।
–এত রেগে গেছ তুমি কি,চলে যাবে নাকি এখনই?
...উত্তর দিবে না তুমি?হায়রে,আর একটাও কথা বলা হবে না আমার,তাহলে।

-আমাকে বাড়ী তো যেতেই হবে কাপড়টা বদলানোর জন্যে।
-আমি কি তোমার সাথে যেতে পারবো?
-তোমার বাবার নাম কি?
-জাহাজের ব্যাবসায়ী,ধনী নিকিয়াস আমার বাবা।
–তোমার সুন্দর চোখ দুটো বেশ মায়াবী,প্রশংসা না করে পারলাম না।


মনিমুক্তা

সোনার একটা মুকুট,আমার সাদা চুলের ছোট্ট মাথায়।পাঁচটা ছোট ছোট কটা সোনার হার ঝুলে আছে গালের এ ধার থেকে ওধারে,চুলে আটকানো সোনার দুটো টিকলি।

হাতে পরা গহ্নাগুলো দেখলে সেটা স্বয়ং দেবী আইরিসের ঈর্ষার কারণ হয়ে দাঁড়াবে,তেরটা রুপার বালা সাজানো একের পর এক।এত ভারী ভারী সেগুলো,এগুলো অনেকটা অস্ত্রের মতঃওটার মার খাওয়া শত্রুদের জানা আছে ওজনটা।

সোনার জরিতে কাজকরা পোষাক পরে আছি আমি,আর স্তন দূটো মোড়ানো
ঢাকা সোনার পাতায়,অনেক দেবীর মুর্তিও হয়তো সাজানো হয় না এত প্রাচুর্যতায়।

বেশ ভারী পোষাকটা,অর্ন্তবাসটায় সাজানো রুপার জরিতে লেখাঃ ‘ভালবাসবে আমাকে সবসময়,তবে অসুখী হবে না কখনও,যদিও হয়তো আমি পরকীয়া খেলায় মত্ত হই দিনে তিনবার’।

নিঃস্বার্থ একজন মানুষ

যখনই কেউ ঘরে ঢুকলো সে যেই হোক না কেন, ( তাতে কি যায় আসে)।‘দাড়াও’,আমি বলি ক্রীতদাসকে, ‘সুপুরুষ একজন,আর তাকে যে পায় কি আনন্দ ঐ বারবনিতার’।


আমি তাকে ডাকি এডোনিস নামে,আরেস না হয় হেরাকেলেস বলে,মুখের ধরণটা দেখে,না হয় বা সমুদ্রের বুড়ো জেলে,চুলগুলো যদি তার পাকা হয়।আর কতই না অবজ্ঞাই আমার অবুঝ যৌবনে।

‘আহ’,আমি বললাম, ‘ এমন যদি হয় আগামীকাল,কোন ফুল কিনতে হবে না,
বা স্বর্নকারকে কোন টাকাপয়সা দিতেও হবে না।আনন্দেই না বলতে পারবো তোমাকে, ‘চাই না তোমার টাকাপয়সা গহনা,আমি তো তোমার ভালবাসার ক্রীতদাস’।

তারপর ও যখন কাঁধে হাত দিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরবে,চোখে পড়বে সুপুরুষ একজন মাঝি,একজন স্বর্গের দেবতা ছুটে যাচ্ছে,আমার শরীরের ত্রিভুজে।



গামলার পরিষ্কার জল

‘গামলার পরিষ্কার জল,নিশ্চুপ আয়না বল না আমাকে আমার রুপের কথা।
–তুমি বিলিতিস বা তেথিস না হয় মিষ্টি চেহারার আমফ্রিটি যেই হও না কেন-বলার অপেক্ষা রাখে না,তুমি সুন্দরী একজন।

‘তোমার মুখটা লুকিয়ে থাকে,চুলের আড়ালে,সুবাসে ভঁরা আর জড়ানো ফুলে।তোমার যৌনাঙ্গের ঠোঁট খোলে না সহজে,ক্লান্ত উরুদুটো ভালবাসার উচ্ছাসে’।

‘তোমার সুডৌল স্তনের ওজনে নত হয়ে যায় তোমার শরীর,রক্তাক্ত নখের আঁচড়ে,চুমুর ঝড়ে নীল হয়ে আছে তোমার ঠোঁট,হাতগুলো লাল হয়ে গেছে ভালবাসার যুদ্ধে,তোমার চামড়ার প্রতি ভাঁজে লুকোনো প্রেমের ইতিহাস’।


-‘গামলার পরিষ্কার জল,তোমার শুদ্ধতা আমাকে নিয়ে যাক শান্তির দেশে।
জড়িয়ে ধর আমাকে,বড় ক্লান্ত আমি।মুছে দাও আমার গালের লাল দাগ,ঘেমে থাকা যৌন ত্রিভুজ,আর ফেলে আসা রাত্রির স্মৃতিটা।


আকাঙ্খা

রাতে আমরা গেলাম,একটা গোলাপের বাগানে।গরম ঘাম নেমে যাচ্ছিল আমাদের
বগল থেকে স্তনে,শরীর খেলার চরম আনন্দে ক্লান্ত আমরা দুজন।

খাঁচার চারটা নরম ঘুঘু পাখী উড়ছিল,ভিন্ন ভিন্ন সুবাস ছড়ানো তাদের
শরীরে।ডানা থেকে ভেসে আসা সুবাস ছিল নগ্ন মেয়েদের শরীরটায়,
আমিও তখন আইরিস ফুলের গন্ধে উন্মাদ।

ক্লান্তি্,বড্ড ক্লান্ত আমি!আমার গালটা তখন এক কিশোরীর নাভিতে,আমার ভেজা চুলের ঠান্ডা ছোঁয়ায় কিছুটা রেহাই পেল তার শরীর-এই গরমে।আমার ঠোঁটগুলো মাতাল তখন তার জাফরান রং এর চামড়ার নেশায়।ধীরে ধীরে সে উরু দুটো তুলে চেপে ধরলো আমার মুখে।

স্বপ্ন ভেসে গেলাম,ক্লান্তিতে জেগে উঠলাম কিছুক্ষন পর,ভোরের পাখীগুলো ডাকছিল দূরে কোথাও পাগলের মত।কাশতে কাশতে কাঁপছিলাম আমি।আমার একটা হাত ভেসে বেড়াচ্ছিল ফুলের মত আকাশের চাঁদে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.