নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি সেই দিন হব শান্ত....

বিদ্রোহী ভৃগু

সকল অনাচার আর অনিয়ম জাগায় দ্রোহ.....

বিদ্রোহী ভৃগু › বিস্তারিত পোস্টঃ

শূন্যতার আরাধনায় অপদার্থ হও

২২ শে এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১০:১০



অসীম ডাকে -শূন্যতায় শূন্য হতে-

মন ছুটে যেতে চায়
হাসফাস করে দেহের বাঁধনে!
শূন্যতার আরাধনায় অপদার্থ হতে
নিরন্তর কান্নারা দীর্ঘশ্বাস হয়ে শূন্যতায় মিলায়!

পরম ডাকে পরমাত্মায়-পরমে মিশতে

আত্মা উড়তে গিয়ে
খাঁচায় ছিটকে পড়ে-রক্তাক্ত নিয়তির বাঁধনে
সময়ের বাধ্যবাধকতায়
মুক্তি-অজানা অপেক্ষায় ডানা ঝাপটায়।

সত্যের আহবান- প্রকাশ্য গোপন

প্রকাশে অপ্রকাশ্য দেয়াল
বুঝেও অবুঝ হৃদয় তড়পায় সন্ধানে
একই অনুভব সত্যে হোসাইন ভুলে ইয়াজিদ
ব্যবধান সূক্ষতায় সূক্ষতর পর্দায়-!

আনাল হক -মৃত্যুর পরোয়ানায়

কি অবলীলায় মনসুর হাল্লাজ
আপনারে আপনি চিনে বলে যায়-
ভীরু, মোহাচ্ছন্ন আর লুুলুপ -আত্মায়
জং ধরে! অসীম, পরম, সত্য; সসীমে-আড়ালে লুকায়।।



উৎসর্গ: প্রিয় ব্লগার শ্রদ্ধেয়- ডঃ এম এ আলী

[প্রিয় জুনাপু এবং সহব্লগারদের অনুরোধে সংযুক্ত:
বস্তুবাদী দেহবাঁধনে অবস্তু (অপদার্থ -যাহা পদার্থ নয় অর্থে) মনের দ্বন্ধ। অসীম, পরম, সত্য মনকে নিত্য
আহবান করে সত্য, সুন্দর আর শুচিতার পথে। কিন্তু বস্তুগত দেহ, বস্তু নির্ভর বলেই বারংবার ষড়রিপুর
বোধে মনকে আটকে রাখতে চায়। বস্তু, পদার্থ, দৃশ্যমানতা, অবয়ব তাকে পুলকিত করে। অথচ সূখ, অনুভব
প্রশান্তি, ব্যাথা, যন্ত্রনা সবই অবস্তু, অদৃশ্য।
যখন বস্তুনির্ভরতা কাটিয়ে মন বিজয়ী হয়- সত্য অনুধাবনে আসে- তখন মনসুর হাল্লাজের মতো নির্ভয়
হওয়া যায়। কিন্তু প্রচলিত জাগতিকতার বন্ধন আমাদের ভীরু, মোহাচ্ছন্ন করে রাখে- অসীম সত্য তখন
সসীমতার আড়ালে হারায়।]


মন্তব্য ৪২ টি রেটিং +১১/-০

মন্তব্য (৪২) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১০:৫৮

বিলিয়ার রহমান বলেছেন: চমৎকার অর্থবহ কবিতা!

আমার কাছে বেশ লেগেছে!



প্লাস! :)

২২ শে এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১১:১০

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ

অর্থটুবু বুঝৈ আসলেই কবিতা সার্থক :)

শুভেচ্ছা প্লাসে :)

২| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১১:৪৯

জুন বলেছেন: শ্রদ্ধেয় এবং পন্ডিত ব্যাক্তি - ডঃ এম এ আলী কে উৎসর্গ করেছেন বলেই এত কঠিন কবিতা ভৃগু #:-S
আমাদের মত কিছু অবুঝ নাদান কবিতা পাঠকদের জন্য কবি ব্লগার বিলিয়ার রহমানের মত অর্থ লিখে দিবেন এরপর থেকে B-)
অনেক ভালোলাগা রইলো যতটুকু বুঝতে পারলাম :)
+

২২ শে এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১২:০৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: হা হা হা

বিসয়টা আসলে অমন নয় প্রিয় জাুনাপা :)

উনার অদ্ভু বিশ্লেষনী সক্ষমতা, আধ্যাত্ববাদের সাথে চলমানতার সমন্বয় সব নিয়ে শেষ কবিতায় উনার মন্তব্য আমাকে যারপরনাই মুগ্ধ করেছে। তাই উনার জন্য আমার মৌলিক ভাবনার এই দারুন প্রিয় চরণ কটি উৎসর্গ করেছি। :)

কবি ব্লগার বিলিয়ার রহমানের মত অর্থ লিখে দেবার আইডিয়া মন্দ না। এমনি কবিতা পাঠক কম। তায় দুর্বোধ্যতার মাত্র থাকলে আরো বুঝি নাই হয়ে যাবে ;) হা হা হা

ভাললাগা টুকু যতনে রেখে দিলাম অনন্তের তরে।

শুভেচ্ছা অফুরান।


৩| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১১:৫৪

ধ্রুবক আলো বলেছেন: অনেক দিন পর । কেমন আছেন?

২২ শে এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১২:০৬

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: হুম। মাঝে বেশ ব্যস্ততার শূন্যতায় হারিয়ে গেসিলাম ;) হা হা হা

পরমের দয়ায় ভাল । কৃতজ্ঞতা তার প্রতি।

আপনিও নিশ্চয়ই ভালই আছেন?

৪| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১১:৫৭

ধ্রুবক আলো বলেছেন: খুব সুন্দর কবিতা,

প্লাস

২২ শে এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১২:০৬

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ :)

শুভেচ্ছা অফুরন্ত

৫| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১২:০৩

কানিজ রিনা বলেছেন: পরমে পরম জানিয়া, সসীমে আড়ালে লুকায়।
আমি কোনটা দেহে না মনে, আত্ব্যা উড়াল
দেয় আমাকে ছেরে।
তাইত আমি কোন জন সে কোন জনা।
আপন ঘরে বোঝাই সোনা আমি হলাম
জন্ম কানা না পাই দেখিতে।
মন পরম ধন নিজেই যদি করি যতন,
প্রেম পাইয়া পরম রতন। সবই লালন,

২২ শে এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১২:১৩

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: হুম!

দেহের বস্তুগত বাঁধায় লুকানো আত্মাকে খুঁজে নিতে হয়
বাঁধনে বাঁধতে হয় সময় থাকতে!
নয়তো -পরে আর ধরা যায় না- বন্ধন হীন হলে হারিয়ে যায় চক্রপাঁকে

উত্তম পথ, উচ্চ মার্গ, স্বর্গ, মুক্তির জন্য চাই নিরন্তর মুক্তি সাধনা!

শুভেচ্ছা অনেক অনেক :)


৬| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১২:১৬

জুন বলেছেন: অভ্যাসবশত ভালোলাগা চিনহ দেই কিন্ত অনেক সময় ক্লিক করতে ভুলে যাই ভৃগু :(
আসলে বুড়ি হচ্ছিতো তাই এত স্মৃতিভংশ :P
কিন্ত মনে পরার সাথে সাথেই দিতে ভুল হয় না কিন্ত B-)

২২ শে এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১৭

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: হা হা হা
ইটস অকে :) বুড়িপু :P সময়ের ঘড়িতে আমরা সবাই একদিন এই পথ পরিক্রমা পার হবো !

অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা ক্লিক পুনরাগমনে B-)

৭| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১:৪০

শাহরিয়ার কবীর বলেছেন:
খুব সুন্দর কবিতা গুরু +++++



২২ শে এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২২

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই

এই নাদানে আপনার ভালবাসায় আপ্লুত :)

৮| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩৯

আহমেদ জী এস বলেছেন: বিদ্রোহী ভৃগু ,




আপনারে আপনি চিনিতে নাহি পারে কেহ,
দিনশেষে একদিন ধরার মাটিতে লুটাইবে এই দেহ ।

জীবন যখন এমন সত্যের পানে ধায় , তখন লালনের মতোই বলতে হয় --
"খাঁচার ভিতর অচিন পাখি
কেমনে আসে যায়
তারে ধরতে পারলে মন বেড়ি
দিতাম পাখির পায়ে।"

দেহের বাঁধনে হাসফাস করা মনপাখি যদি উড়ে যেতেই চায়, তবে খাঁচা ভেঙ্গে সে পাখি পালাবেই ! এমন দেহপাখিকে ধরা সহজ নয় ।

২২ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৮:০০

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: হুম। সুন্দর বলেছেন। ধন্যবাদ অফুরান।


নিয়তির বাঁধনে
সময়ের বাধ্যবাধকতায়
মুক্তি-অজানা অপেক্ষায় ডানা ঝাপটায়।

-এই জ্বালা টুকু সেই অপত্য সেই সত্যের প্রতি প্রেমকেই বাড়ায় কেবল! যে অনুভব করে।

আবারও শুভেচ্ছা অনেক অনেক।


৯| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ৯:২৬

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: নিজে দুচার লাইন কবিতা লিখলেও কবিতা কম বুঝি। বিলিয়ার ভাই কবিতা লিখে তার মানে ও বলে দেন। জুন আপুর মত আমিও একমত।
কঠিন কবিতাই বটে। ভাল থাকুন । ধন্যবাদ।

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ৯:৫৮

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: হুম।

বিলিয়ার ভাইতো দেখী কাম বাড়াইয়া দিলেন ;) হা হা হা

কবিতাও লিখুম আবার তাফছিরও করুম ;) হা হা হা হা উখে দেন..

অনেক শুভেচ্ছা

১০| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১০:০৬

মোঃ সাইফুল্লাহ শামীম বলেছেন: কবিতা বেশ জটিল! তবে গভীর অর্থবহ। চিন্তা করার মতো অনেক শব্দ এবং লাইন আছে!
কবি এবং ডঃ আলী। দুজনের জন্যই অনেক অনেক শুভকামনা।

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১১:১২

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ সাইফুল্লাহ শামীম ভ্রাতা :)

শুভকামনা আপনার জন্যেও

১১| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১০:২৮

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: অসাধারণ
ভাল লাগায় ভরপুর কবিতা

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১১:১৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: :)

অনেক অনেক ধন্যবাদ কাজী ফাতেমা ছবি :)

ভরপুর ভাললাগা টুকু প্রেরণা হয়ে রইল :)

শুভেচ্ছা অফুরান

১২| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১২:৫০

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: কি কঠিন কবিতারে বাবা!!! সংযুক্তির কারনে কিছুটা বোধগম্য হয়েছে।

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ২:৪৬

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: লিটন ভাই ভাল আছেন?

হা হা হা

যাক সংযুক্তি তবে কিছুটা কাজে লেগেছে :)

শুভেচ্ছা অফুরান

১৩| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ২:৫৯

সুমন কর বলেছেন: আসলেই কঠিন। সংযুক্ত দেবার জন্য ধন্যবাদ।

৭ম +।

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৫:২১

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ সুমন দা!

আপনিও ;) হা হা হা

এই ভাবার্থের সহজ ভার্সন আরেকটা লিখতে হবে দেখছি :)

অনেক অনেক শুভেচ্ছা

১৪| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৩:০০

জুন বলেছেন: হায় আল্লাহ কঠিন বাক্য দিয়ে দেখা লেখা অর্থ তো দেখি আরো কঠিন ভৃগু :-&

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৫:২৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: এইবার বুঝলাম - রবি ঠাকুরের সেই কথার মর্মার্থ
সহজ কথাটি সহজ করিয়া বলা সহজ নয় ;)

আমার কাছে এত সাবলীল মনে হল- লেখার পরও বেশ কবার দেখৈই পোষ্ট করলাম!
এখন দেখছি - আমার সহজতা সবার জন্য সহজ নয়!

অকে- এই ভাবার্থের সহজ ভার্সন করার চেষ্টা করব।

১৫| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৫:৪৮

নীলপরি বলেছেন: প্রকাশে অপ্রকাশ্য দেয়াল
বুঝেও অবুঝ হৃদয় তড়পায় সন্ধানে
একই অনুভব সত্যে হোসাইন ভুলে ইয়াজিদ
ব্যবধান সূক্ষতায় সূক্ষতর পর্দায়-!


অসাধারণ লাগলো ।

শুভেচ্ছা আপনাকে ও ডঃ এম এ আলীকে ।

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩৭

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ নীলপরি :)

শুভেচ্ছা আপনাকেও :)

১৬| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৮:২৩

জেন রসি বলেছেন: সাবধান! কল্লা ফেলে দিতে পারে কিন্তু! ওদের কাছে আজকাল নাস্তিক আর উচ্চস্তরের আস্তিক সবই এক।

অনুসন্ধান চলুক। সাধনা সফল হোক। আর কবিতার ভালো লাগা। :)

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৯:২৫

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: হা হা হা
তা যা বলেছেন! যথার্থই বটে!

শুভকামনায় কৃতজ্ঞতা আর ভাল লাগায় আপ্লুত :)

১৭| ২৫ শে এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৩:৩৪

সামিয়া বলেছেন: ভালোলাগলো

২৫ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৯:১২

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অনেক অনেক শুভেচ্ছা :)

ভাল থাকুন নিরন্তর

১৮| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৭ ভোর ৬:৫৪

সামিউল ইসলাম বাবু বলেছেন: অনেক ভালোলেগেছে ++

২৭ শে এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১০:০৮

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অনেক অনেক শুভেচ্ছা

ভাললাগা আর প্লাসে কৃতজ্ঞতা।

ভাল থাকুন।

১৯| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১১:৫৮

সিনবাদ জাহাজি বলেছেন: চমৎকার কবিতা ।
অনেক ভাল লেগেছে।
+++

২৭ শে এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১২:০২

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ সিনবাদ ভ্রাতা!!!

বহুদনি পর এলেন.. শুক্রিয়া :)

+++

২০| ০৩ রা মে, ২০১৭ রাত ১:২৬

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: প্রথমেই দু:খ প্রকাশ করছি এই মুল্যবান কবিতাটি যথাসময়ে না দেখার জন্য । সারা জীবনই ছিলাম ব্যক বেঞ্চার সেটা আর ইহজীবনে মনে হয় কাটিয়ে উঠতে পারবনা । এছাড়া আমার নীজের একটি অতি সাধারণ লেখার পিছনে গত সপ্তাহটাই কেটে গেছে দারুন ব্যস্ততায় , বাংলা টাইপের গতি আমার খুবই স্লো , তাছাড়া অভ্র কি বোর্ড ব্যবহার করি বলে টাইপেও বেশ সমস্যা হয় , বার বার ফন্ট বদলায় , একটি অক্ষরই কয়েকবার লিখতে হয় । গুনে মানে কিছু না হলেও পোষ্টটি বড় হয়ে যাওয়ায় সময়টা লেগে গিয়েছে অনেক বেশী ,তাই অনেকের লেখাই দেখতে পারিনি সময়মত , এর কারণে আমাকেই যে পস্তাতে হবে জানলাম কেবল আপনি আমার পোষ্টে যাওয়ার পরে ।

পাওয়ার যোগ্যতার অতিরিক্ত সন্মান প্রদর্শন করার জন্য কৃতজ্ঞ । উৎসর্গিত কবিতাটি আমার দেখার কথা ছিল সর্বাজ্ঞে অথচ কপালমন্দ আমি দেখলাম তা সকলের পরে । আশা করি নীজ গুণে ক্ষমা করে দিবেন ।

কবিতাটি বেশ কয়েকবার পাঠ করেছি , অনেক বিজ্ঞ সহ ব্লগার বলেছেন বেশ কঠিন এর অর্থ বুঝা । আমার কাছেও এটা মনে হয়েছে অনেক অর্থবোধক, এর ভাবগাম্ভির্য আনেক বিস্তৃত , দর্শনের কোন শাখাই বাদ যায়নি কবিতাটি হতে । ভাববাদী দর্শনের ‘পরম সত্তা,’ অস্তিত্ব , স্বয়ংসম্পূর্ণতা , বস্তুবাদী দর্শন ,সত্তার সাথে অপর সত্তার সম্পর্কের পারস্পারিক নির্ভরতা , অসীমের পানে ধাওয়া সকলই উঠে এসেছে একে একে । চরম শুন্যতা বলে কিছু নাই আবার তেমনি শুন্যতায় কোনো অস্তিত্বের কল্পনা করাও চলে না। অস্তিত্বমাত্রই আপেক্ষিক। আপেক্ষিকের জটিল সম্মেলনে সে সামগ্রিক সত্তা সে তার অংশসহ নিরন্তর পরিবর্তমান ও বিকাশশীল। তবে মানুষের জ্ঞান-মাধ্যমের গ্রাহ্য বস্তু, ভাব এবং ভাবনা অর্থ্যাৎ জ্ঞান সাপেক্ষ জগৎই সত্য। জ্ঞান-সাপেক্ষ জগতের সামগ্রিক ধারণাই বিমূর্ত ধারণা। জ্ঞান-জগতের উধ্বে অজ্ঞেয় বিমূর্ত সত্তার সন্ধানেই অনেকে রত । বিষয়টিও উঠে এসেছে কবিতায়-

সত্যের আহবান- প্রকাশ্য গোপন
প্রকাশে অপ্রকাশ্য দেয়াল
বুঝেও অবুঝ হৃদয় তড়পায় সন্ধানে
একই অনুভব সত্যে হোসাইন ভুলে ইয়াজিদ
ব্যবধান সূক্ষতায় সূক্ষতর পর্দায়-!


গ্জ্জালী দর্শনেও বলে যুক্তির মাধ্যমে সত্যকার জ্ঞান অর্জন সম্ভব নয়। বিশ্ব-স্রষ্টার সন্ধান এবং বিশ্ব-রহস্য উদঘাটন কেবল আত্মোপলব্ধির মাধ্যমেই সম্ভব। অপর দিকে দেখি আল –কিন্দী বিশ্ব-জগতের রহস্যোদঘাটনের জন্য কার্যকরণের বিধানকে ব্যাখ্যা করার সময় বলেছেন বুদ্ধিগত জ্ঞানের চেয়ে অহিগত জ্ঞান শ্রেয়। কিন্দীর মতে বিশ্বজগৎ শাশ্বত নয়। স্রষ্টা কোনো একদিন শূন্যাবস্থা থেকে বিশ্বকে সৃষ্টি করেছেন। ভবিষ্যতে কোনো একদিন বিশ্বজগৎ বিধাতার হুকুমে শূন্যে বিলীন হয়ে যাবে।আল্লাহকে আল –কিন্দী সৃষ্টির মূল বলে স্বীকার করেছেন। বস্তু ও প্রাণীর মধ্যে স্তরক্রমে তাঁর প্রতিচ্ছায়া পড়ে। এই স্তরক্রম্যের মধ্য দিয়ে আত্মা দেহের বন্ধন থেকে মুক্তিলাভ করে অমরতা প্রাপ্ত হয়। তাইতো দেখা যায় যখন কবিতায় যখন লেখা হয়-
মন ছুটে যেতে চায়
হাসফাস করে দেহের বাঁধনে!
শূন্যতার আরাধনায় অপদার্থ হতে
নিরন্তর কান্নারা দীর্ঘশ্বাস হয়ে শূন্যতায় মিলায়!

পরার্থ অপদার্থবাদ বিষয়টিও এসে যায় কবিতাটিতে, সাধারণ অর্থে অপরার্থবাদ দ্বারা অপরের জন্য দুঃখ-কষ্ট সহ্য করা বা ত্যাগ স্বীকারের মনোভাবকেই বুঝায়। আত্মবাদের ন্যায় বস্তবাদও মানুষের একটি সহজাত প্রবৃত্তি বলে অগাস্ট কোঁতের মত দার্শনিক মনে করেন। কোঁতের মতে স্বার্থপরতা কেবল মানুষের নয়। মনুষ্যেতর জীবের মধ্যেও এর সাক্ষাৎ পাওয়া যায়। এটা কেবল মৌলিক জৈবিক অনুভূতি যা নিরন্তর কান্না বা দীর্ঘশ্বাস হয়ে শূন্যতায় মিলায়!

হেনরী বার্গসঁ বলেন মানুষ এ স্তরে আত্মবিনাশকারী সংঘর্ষের নিরসন করে সুস্থ স্বাভাবিক নতুন মানবে পরিনত হতে পারে এর জন্য প্রয়োজন মানুষের সৃজনশীল ক্ষমতার উপর আস্থা রেখে বাস্তব সঙ্কট মোকাবেলা করে আর জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা এবং বস্তুর সত্যাসত্যতার প্রশ্ন তুলে চিন্তার জাল বুনে চলা। দৃশ্যত বস্তু বিভিন্ন আকারের এবং বহু প্রকারের। দূর অতীতেও মানুষ স্বাভাবিকভাবে এই বহুর পেছনে বহুর উৎস বা কারণ হিসাবে একটি মূলের সন্ধান করেছে। কিন্তু বিচিত্রের মূলে মাত্র একটি সত্তা আছে, এ সিদ্ধান্ত মানুষ শুরুতেই করতে পারে নি তাই নবি রাসুলের হাত ধরে আরাধনাকে ধর্মের অঙ্গীভূত করেছে । বস্তুরতির রেশ আধুনিক কালেও প্রায় প্রতিটি ধর্মে যথা মূর্তিপূজা, ক্রশ ধারণ, পাথর চুম্বন প্রভৃতিতে প্রচলিত আছে । ‘বস্তুরতি’ বা আরাধনা আজকাল কিছুটা ব্যাপকতর অর্থেও ব্যবহৃত হয়। কোনো কিছুর উপর মাত্রাতিরিক্ত গুরুত্ব আরোপ করাকে অদৃশ্য শুন্যতায় বিরাজমান পরম সত্তায় আরাধনা ছাড়া আর কি বলা যায় । তবে এ প্রসঙ্গে হিউমের মতে আসলে মানুষ বস্তুর জ্ঞান আদৌ লাভ করতে পারে না। তার অর্থ এই নয় যে, বস্তু নেই- সেখানে কেবলি শুন্যতা একথাও মানুষ বলছেনা । বস্তু আছে বা নেই, জ্ঞান দ্বারা মানুষ এর কোনো উত্তরই দিতে পারে না। জ্ঞান যেথানে নিশ্ফল ধ্যন ও পরম সত্তায় বিলীন হওয়াই সেখানে আশ্রয় যা দেখিয়েছেন আনাল হক ও মনসুর হাল্লাজ ।

তাই দেখা যায় মনে ভাবের সৃষ্টি এবং বস্তুজগতের সাথে তার সম্পর্কের প্রশ্নটি বিশেষ জটিল প্রশ্ন। বস্তুবাদের ব্যাখ্যায়, ভাব ও মন অস্বীকৃত হয়ে সবকিছু অনড় বস্তুপুঞ্জে পর্যবসিত করে । বস্তুজগতকে সামগ্রিকভাবে অনুধাবনের জন্য প্রয়োজনীয় দুটি সূত্র অসীম ও সসীম বিশেষ বিতর্কের সূত্রপাত করেছে। অনেক দার্শনিকের মতে অসীম ও সসীমের পারস্পরিক সম্পর্ক নির্দিষ্ট করার সমস্যা একটি চিরন্তন সমস্যা এবং এর সমাধান সম্ভব নয়। অনেকে আবার অসীমকে একেবারে অস্বীকার করেন। তাঁদের মতে মানুষ অভিজ্ঞতায় কেবল সসীমকেই পায়, অসীমকে নয়। এ কারণে অসীম বলে কিছু আছে বলে সাধারণ মানুষ দাবি করতে না পারলেও এ কবিতায় দেখা যায় -
আনাল হক -মৃত্যুর পরোয়ানায়
কি অবলীলায় মনসুর হাল্লাজ
আপনারে আপনি চিনে বলে যায়-
ভীরু, মোহাচ্ছন্ন আর লুুলুপ -আত্মায়
জং ধরে! অসীম, পরম, সত্য; সসীমে-আড়ালে লুকায়।।


ধর্ম অবশ্যই অসীমকে বস্তু বলে কল্পনা করে না। ধর্মীয় বিশ্বাসে বস্তুজগত হচ্ছে সসীম, কিন্তু বস্তুজগতের স্রষ্টা যিনি তিনি যেমন অ-বস্তু তেমনি অসীম। ধর্মের সীমাবদ্ধতা হচ্ছে এই যে, সেই অসীম অবস্তুকে বস্তুগত গুণ বা ধারণা ছাড়া অপর কিছুর দ্বারা ধর্ম প্রকাশ করতে পারে না। ধর্মীয় অসীম বস্তু হলেও তাঁর দয়া-মায়া, দন্ডদানের এবং সৃষ্টি ও ধ্বংসের ক্ষমতা আছে। ধর্মীয় অসীমের মধ্যে মানুষ মাত্রেরই অসীমবোধের একটা প্রয়োজনীয়তার যেমন স্বীকৃতি আছে তেমনি সে ব্যাখ্যা রহস্যময় হয়ে সসীম ও অসীম উভয়ের বৈজ্ঞানিক ধারণার বিকাশে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেছে। এ ভাবধারাটি ফুটে উঠেছে আপনার ফুটনোটের বর্ণনায় -
বস্তুবাদী দেহবাঁধনে অবস্তু (অপদার্থ -যাহা পদার্থ নয় অর্থে) মনের দ্বন্ধ। অসীম, পরম, সত্য মনকে নিত্য
আহবান করে সত্য, সুন্দর আর শুচিতার পথে। কিন্তু বস্তুগত দেহ, বস্তু নির্ভর বলেই বারংবার ষড়রিপুর
বোধে মনকে আটকে রাখতে চায়। বস্তু, পদার্থ, দৃশ্যমানতা, অবয়ব তাকে পুলকিত করে। অথচ সূখ, অনুভব
প্রশান্তি, ব্যাথা, যন্ত্রনা সবই অবস্তু, অদৃশ্য

অস্তিত্বহীনতার মধ্যে কোনো অস্তিত্ব বিরাজ করতে পারে না। নিরেট শূণ্য বা নাস্তিত্ব বলতে কিছু থাকতে পারে না। নাস্তিত্বের মধ্য থেকে কোনো অস্তিত্ব আবির্ভুত হতে পারে না। কাজেই বস্তুর কোনো সীমানা নির্দিষ্ট করলে তার বাইরে সীমাহীনতাও একটি অস্তিত্ব। আর তা বস্তু ছাড়া কিছু হতে পারে না। বস্তু ছাড়া কোনো অস্তিত্বের কল্পনা বিজ্ঞান করে না। এ কারণে বস্তুর সীমানার বাইরেও বস্তু। অর্থাৎ বস্তু সীমাহীন ও সময়হীন। বস্তুর মধ্যে সীমা আছে অর্থাৎ সীমাবদ্ধ বস্তুপুঞ্জ দিয়েই বস্তু গঠিত; কিন্তু সমগ্র বস্তুর কোনো সীমা নেই। বস্তুর সময় নেই অর্থাৎ বস্তু কোনো এক সময়ে সৃষ্টি হয়েছে এবং সেই নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বে শূণ্যতা ছিল এমন কল্পনাও বৈজ্ঞানিকভাবে করা সম্ভব নয়। বস্তুর সময় আছে, পরিবর্তন আছে। বস্তুর জন্ম ও পরিবর্তনকে চিহ্নিত করা চলে। তাই বলা যায় যে, সসীম হচ্ছে একটি আপেক্ষিক ধারণা এবং অসীম ও সসীমের সম্পর্ক হচ্ছে একটি দ্বান্ধিক সম্পর্ক। সসীম দিয়েই অসীম তৈরি। তাই আপনি যতার্থই বলেছেন যখন বস্তুনির্ভরতা কাটিয়ে মন বিজয়ী হয়- সত্য অনুধাবনে আসে- তখন মনসুর হাল্লাজের মতো নির্ভয় হওয়া যায়। কিন্তু প্রচলিত জাগতিকতার বন্ধন আমাদের ভীরু, মোহাচ্ছন্ন করে রাখে- অসীম সত্য তখন সসীমতার আড়ালে হারায় ।

অসাধারণ কবিতাটির জন্য রইল আন্তরিক অভিনন্দন ।

০৩ রা মে, ২০১৭ সকাল ৯:৩০

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: বেটার লেট দেন নেভার ;)

আপনার সহজাত বিনয়ের উত্তর মাথা নত করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ছাড়া অন্তরের গহন আবেগ প্রকাশে কথা যেন খুব সীমাবদ্ধ।
আমার উৎসর্গ, আমার কাব্য এবং আমি পূর্নতার স্বাদ পেলাম আপনার সু-দীর্ঘ, সুলিখিত, জ্ঞান-প্রজ্ঞা আর মনীষায় পূর্ন অনুভবের গহনে ডুবে তুলে আনা দারুন বিশ্লেষনী মন্তব্যে।

অপেক্ষার ফল মিঠা হয় ;) আবারো প্রমানীত হল। হা হা হা

অসাধারন বাঁধাই করে রাখার মতো মন্তব্যে হ্যাটস অফ কৃতজ্ঞতা! আবারো।

কবিতার অপূর্ণতা, দুর্বোধ্যতার অভিযোগ মন্তব্যে এসে বিলীন হয়ে যায়। আপনার অনন্য উপস্থাপনা, সমৃদ্ধ তথ্যপূর্ন উদ্বৃতি আর দারুন বিশ্লেষনে।
এরকম একটা মন্তব্যের জন্য যুগযুগান্ত অপেক্ষা করা যায়-যেখানে জ্ঞান, ধ্যান,প্রজ্ঞা মিলেমিশে ফুল হয়ে সুগন্ধি ছড়ায়। :)

অন্তহীন ভাললাগা আর শুভেচ্ছা আপনার জন্য।

২১| ০৩ রা মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১৩

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: ধন্যবাদ , মুগ্ধ কাব্যিক প্রতি উত্তরে ।
শুভেচ্ছা রইল ।

০৪ ঠা মে, ২০১৭ সকাল ১০:০২

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: :)

আপনাকেও অনেক অনেক শুভেচ্ছা :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.