নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চুপ থাকা, নির্লিপ্ততা! আপাততঃ ধ্যান করছি।

নাজনীন১

আমি বাংলাদেশি নারী।

নাজনীন১ › বিস্তারিত পোস্টঃ

এইম ইন লাইফ এর বিবর্তনের জীবন্ত সাক্ষী!

২০ শে আগস্ট, ২০২৪ সকাল ১১:৫০

আপনারা নিশ্চয়ই ভাবছেন কে সেই বিবর্তনের সাক্ষী?

আর কেউ নয়, আমার ছোট্ট ঘরের ছোট্ট ছেলেটি! এই ছয় বছরেই তার জীবনের বড় হবার নানান লক্ষ্য কি হারে যে বিবর্তিত হয়েছে!
একেবারেই যখন ছোট ছিল, মাত্র আড়াই বছর! ওকে আমি দুই মাস বয়স থেকে ছড়া শেখাই। আমি ওর সামনে ছড়াগুলো বলতে থাকতাম! সে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতো অবাক নয়নে! ঠোঁটের নড়াচড়া মনোযগ দিয়ে দেখতো! কিছুদিন পর সেও ঠোঁট নাড়াতো, কথা বলতে চাইতো!

যখন কিছুটা বোল ফুটলো, তার বিস্ময় ছিল বাস, এতো বড় গাড়ি! তার কাছে সেটাই ছড়ার ঘোড়ার গাড়ি। বাস দেখলেই তার সেই বাসে ওঠা চাই! সে ঘোড়ার গাড়িতে চড়বেই!

তো, দরকার না হলেও মাঝে মাঝে বাসে করে এদিক সেদিক যেতাম, তাকে ঘোড়ার গাড়ি চড়াতে।ড্রাইভারের পিছনের দিকে মেয়েদের বসার সিট। তাকে নিয়ে উঠতে নামতে সুবিধার জন্য বাসের দরজার কাছেই বসতাম! সেই সুবাদে রাকীন বাসের হুইল ঘুরানোটো ভাল করেই দেখতো! বাসায় এসে খাবারের প্লেটকে হুইল বানিয়ে ঘুরাতো ডানে বামে, খুবই উপভোগ্য ব্যাপার তার কাছে। যেন বিশ্ব জয় করেছে! এবং সে বড় হয়ে বাসের ড্রাইভার হবে! স্যরি, ঘোড়ার গাড়ির ড্রাইভার হবে!

তো, ভাবলাম একদিন তাকে সত্যিকারের ঘোড়ার গাড়ি দেখিয়ে আনি! গুলিস্তান নিয়ে গিয়ে সেখান থেকে সদরঘাট, আবার ফিরতি সদরঘাট থেকে গুলিস্তান তাকে টমটমে চড়ালাম! সত্যিকারের ঘোড়া দেখেও সে বেজায় খুশি! একবার মিরপুরের বুদ্ধিজীবী শহীদ মিনারের চত্বরে ঘোড়ায়ও চড়ালাম! আমরা ছোটবেলায় চিড়িয়াখানায় হাতিতে চড়তাম, সেটা এখন আর নেই!

সবকিছুর পরেও তার বাসের ড্রাইভার হবার শখটা রয়েই গেল! কত আকাশের প্লেন দেখাই, হেলিকপ্টার দেখাই, বিমান বাহিনীর জাদুঘরে বিমানে চড়াই, হেলিকপ্টারে চড়াই, কিন্তু সেগুলো নড়ে না, ওড়ে না। আমার ছেলেও বেশি মজা পায় না! আকাশের প্লেনটা কিভাবে চড়ে সরাসরি দেখতে পায় না! তাই পাইলট না হয়ে সে ড্রাইভারই হবে!

এরপর আরেকটু বড় হয়ে দোতলা বাসে ওঠে। দোতলায় উঠে একেবারে সামনের সিটে বসে সে বুলিস্তানে যাবে, এতে যে তার কি আনন্দ! শিশুদের অনাবিল, নির্মল আনন্দিত মুখ যে কারোরই দুঃখ ভুলিয়ে দেয়ার জন্য যথেষ্ট! সে আমার মতোই অনেক বেড়ু বেড়ু পার্টি!

তারপর অভিজ্ঞতায় আরো কিছু যুক্ত হলো! লঞ্চে উঠলো! সারেং এর হুইল ঘোরাতে দেখলো, লঞ্চ পানি কেটে এগিয়ে চলে! এইবার সে লঞ্চও চালাবে!

ট্রেন যেতে দেখলে তার দেখা চাই-ই, চাই। ট্রেন দেখার জন্য সে রিকশার উপর উঠে দাঁড়াবে, বাসায় যাওয়ার পথে রেললাইন ক্রস করতে হয়, যতবার পার হবো, ততবারই তার ট্রেন দেখা চাই। একদিন এয়ারপোর্ট স্টেশনে তাকে নিয়ে দুই তিন ঘন্টা প্ল্যাটফর্মে বসে থাকলাম। কত ট্রেন দেখবি, ভাল করে দেখ! রাস্তায় কত দাঁড়িয়ে থাকা যায়! ট্রেনেও চড়েছে। কিন্তু ইঞ্জিনরুম এ তো যেতে পারে না, তাই ট্রেন ড্রাইভার হবার শখ তৈরী হয়নি। তবে ট্রেনে চড়তে, লঞ্চে চড়তে ভালই লাগে তার। চলন্ত কিছুই যেন তার জীবনকে চালিয়ে নেয়! গন্তব্য ঠিক করে দেয়!

অপেক্ষায় আছে কবে প্লেনে চড়বে, প্লেনে চড়ে আমার মতো, বাবার মতো বিদেশে যাবে! কিন্তু পাইলটিংটা যে কিভাবে দেখাবো! এটা ইউটিউব দেখে হয় না! তার নিজের অভিজ্ঞতা লাগবে!

যাক, ইদানীং তার মক্তবের হুজুর নতুন একটা এইম ইন লাইফ ঠিক করে দিয়েছে। আজান দেয়া শিখছে, সূরা শিখছে, হুজুর বলেছেন, বড় হলে সে ইমাম হতে পারবে, সে সামনে দাঁড়াবে, সবাই তার পিছনে নামাজ পড়বে! দেখলাম যে, সে খুবই উৎফুল্ল! এ আইডিয়া তার খুব পছন্দ হয়েছে! নেতৃত্ব দেয়া!

আপাতত সে আজান শেখা এবং দেয়া নিয়ে খুব ব্যস্ত!

ওহ, ইদানীং সে, হেই গাইস! ইউটিউবার/ ভ্লগার হবার চেষ্টাও করছে! প্রায়ই বাসায় মোবাইল হাতে নিয়ে ভিডিও করা শুরু হয়, নিজের হাবিজাবি অনেক কথা বলে, এর আগে পরে চ্যানেল সাবস্ক্রাইব, লাইক, বেল আইকনে চাপ দেন, বাইইইই!





আজকাল অনেক বাচ্চারাই এ স্বপ্ন দেখে! ইউটুবার বা আমার ভাষায় উতুবার হবে!




মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে আগস্ট, ২০২৪ বিকাল ৫:২২

কামাল১৮ বলেছেন: ভুল দিকে বিবর্তিত না হয়ে যায়।

২৩ শে আগস্ট, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৭

নাজনীন১ বলেছেন: সে বিষয়গুলো তো বাবা-মাকেই লক্ষ্য রাখতে হবে! দোয়া করবেন যেন দেখে শুনে বড় করতে পারি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.