নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সেদিন একটা বাংলাদেশি ড্রামা সিরিয়াল দেখতে বসলাম। আমার প্রিয় নাট্য অভিনেত্রী মাহজেবিন এর।
বাংলাদেশী কেন বললাম! এ যুগে আকাশ সংস্কৃতি, ওয়েব সিরিজ, নেটফ্লিক্স সবকিছুর এমন ছড়াছড়ি যে কোনটা রেখে কোনটা দেখি! বাংলাদেশি, কোলকাতা, মুম্বাই, মাদ্রাজ, হাল আমলে অসমিয়া, ত্রিপুরা, পাঞ্জাবী, ইউকে, হলিউড তো বরাবরই, ইরানী, তুর্কী, সিরিয়ান, আলজেরিয়ান, কোরিয়ান, জাপানীজ, রাশিয়ান, চাইনিজ, মঙ্গোলিয়ান, মালয়েশিয়ান, ইন্দোনেশিয়ান, অস্ট্রেলিয়ান ড্রামা, ম্যুভির এতোটাই ছড়াছড়ি!
এর মাঝে বেশ নস্টালজিয়া নিয়েই বাংলাদেশি নাটক দেখতে বসা! একটা স্বদেশী স্বদেশী ভাব ধরা ফিলিংস!
তো সেই নাটকের অনেকটা উল্লেখযোগ্য অংশ ছিল “আন্টি” সম্বোধন! নাটকটার নাম ‘তিথিডোর’। মেয়ের বয়স তিরিশ, বিয়ে কোন একটা কারণ বশতঃ হয় না, বা মেয়েটা রাজি হয় না। এখন আর ভাল প্রপোজালও আসে না। আসলে ছেলের বয়স কম! এই হেন তেন। মেয়েটা খুবই আপসেট তার চেহারাটা বুড়িয়ে যাচ্ছে!
তার চেয়ে অনেক খ্যাপ্পা, একটা ছোট মেয়ে কেন তাকে আন্টি ডাকলো! ভীষণ রেগে মেয়েটাকে বকা দেয়!
এই জায়গাতে এসেই আসল কাহিনী!
আমি নস্টালজিক হয়ে গেলাম! আহা! এরকম একটা ফিলিংস এক কালে আমারও ছিল। আমার আশপাশের বড় আপাদেরও ছিল, আমার বন্ধু বান্ধবদের মাঝেও এই সেদিন এই টপিকে আলোচনা ছিল! আচ্ছা, মাহজেবিন বলেন তো, ঘরের কথা পরে জানলো ক্যামনে?! আপনি ক্যামনে আমাদের এই মনের কথাডা নাটকে দেখাইয়া ফালাইলেন! আপনিও কি বাস্তবে এইরকম সময় পার করতাছেন? ক্যামনে জিগাই। উনার ফোন নাম্বার তো আমার কাছে নাই! এফ বি ফ্যান পেজ টাইপ ব্যাপারে আমার বেশি একটা মজা লাগে না!
মাহজাবিন আপারে আমার আরো কিছু নাটকের কনসেপ্টের কারণে ভাল লাগে। সেই কাহিনী আরেকদিন। আজ আজকের টপিকেই থাকি!
তাসনিয়া ফারিন আপুটারেও ভালা পাই! সেই গল্প আরেকদিন এর জন্য তোলা রইলো! হাল আমলে গায়িকা হিসেবে আভির্ভূত হয়েছেন! তবে উনার জুহি চাওলা মার্কা লুকটাই আমার বড় ভাল লাগে!
নাহ্, বুঝলাম বেশি আফসুস-এর কারণ নাইক্কা! অখনতরি বেশি বুড়া হই নাইক্কা! মন এখনো এভারগ্রীইইইন!
এবার মেইন টপিকে ফিরি! সেই আন্টি কাহিনী!
এই ব্যাপারে প্রথম অনুভূতির গল্পটা শুনেছিলাম আমার ঢাবির ডিপার্টমেন্টের এক সিনিয়র আপার কাছে। আমরা ক্লাসের ফাঁকে সবাই কমনরুমে। সেই আপু প্রথমে এসে ভীষণ খুশি! জানো, আজকে আমার মাস্টার্স পরীক্ষার শেষ পরীক্ষাটা দিলাম! কি মজা! আমাকে সারাজীবন আর পরীক্ষা দিতে হবে না!
আমরাও সুর মিলালাম, কংগ্রেইটস! পরীক্ষা বিদায়!
একটু পরে বা মে বি আর দুই একদিন পরে আপু বাইরে কোথাও থেকে এসে উনার অনুভূতি শেয়ার করছেন। জানো, একটা ছেলে শুনলাম আন্টি ডাকছে! আমার সামনে দাঁড়িয়ে। আমই এপাশ ওপাশ দু দিকে তাকিয়ে আন্টিস্থানীয় কাউকেই দেখতে পেলাম না। ছেলেটা আবারো ডাকলো, আন্টি! বুঝলাম আমাকেই ডাকছে! ভীষণ মন খারাপ ইমো হইবেক!
এত্তো বড় সাহস! আমরা বললাম, আপু কি বলেন! আল্লাআআ! এই অবস্থা! ওই ছেলের আক্কেল জ্ঞান কিছুই নেই!
এবার আমার পালা! ফোর্থ ইয়ারে, মাস্টার্সে আমি হলে ছিলাম না, বেবি হবার কারণে মিরপুর থেকে ভার্সিটি বাসে আসা যাওয়া করতাম।ভার্সিটির বাসেই আসা যাওয়া করতাম, বাসটার নাম ছিল চৈতালী! ! কোন এক কারণে সেই দিন নীলক্ষেতে কোন কাজ ছিল মনে হয়। পাবলিক বাসে বাসায় ফিরছিলাম। ঢাকা কলেজের সামনে আসলেই একটা হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। এক ঝাঁক ছেলে হৈ হৈ করতে করতে বাসে ওঠে, বিশেষ করে কলেজ ছুটির টাইম থাকলে। এরকম আরো কয়েকদিন দেখেছি! হৈ হৈ হৈ হৈ, দল বেঁধে বাসে ওঠা! দাপুটেপনা। বাসের সবাই সেঁটে থাকে, কন্টাটরের দেখার মতো অবস্থা! ওদের সামলানোই দায়!
এরকমই একদিন একটা ছেলে বললো, আন্টি একটু সাইড দিন প্লীজ! ভিতরে যাব। ছোকরা ফাজিল! বলে কি! আন্টি! সেই আপুটার কথা মনে পড়ে গেল! আমারো খুব লাগলো এই সম্বোধন! যদিও তখন আমি দুই বাচ্চার মা! তবুও মন মানতে চাইলো না এই ‘আন্টি’।
এই রোযার ঈদের ছুটিতে কয়েকজন কলেজের বন্ধুর সাথে দেখা হলো! আমার মেয়েকে দেখেই একজন বলছে, আম্মু এখানে আসো, আমার পাশে বসো!
একটু পরে সবাই শেয়ার করলো, এককালে ভার্সিটির কোন ছেলে মেয়েকে আম্মু, আব্বু, বাবা মা এরকম ডাকতে পারতো না। অস্বস্তি হতো। এখন অনাসায়েই মা-বাবা ডেকে ফেলা যায়, নিজেদের ছেলে মেয়েরাই যে সে বয়স পার করছে!
আরেক বন্ধু বললো, আজকাল কোন তরুণী মেইয়ে ভাই ডাকলেই বরং তার স্ত্রী মাইন্ড করে! ও, ভাইয়া! এখনো বয়স হয় নাই! চুল পাকে নাই! মাঞ্জা মারো!
নাহ্, দিনে দিনে অনেক বেলাই গেল, চুলও পাকিলো! মোটাও হইলুম, এখন একাধারে মা, আন্টি, চাচি, মামি – সবই সয়! কয়দিন পর মেয়ে বিয়ে দিব! আপনাদের দাওয়াত রইলো!
আমার বেলা যে যায় সাঁঝবেলাতে, তোমার সুরে সুরে সুর মেলাতে!
১৩ ই জুলাই, ২০২৪ দুপুর ২:৫২
নাজনীন১ বলেছেন: মন এবং স্বাস্থ্য দুটোই ভাল রাখা দরকার এবং তারুণ্যের সাথে থাকা দরকার!
২| ১৩ ই জুলাই, ২০২৪ দুপুর ২:৫৭
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: আফসোস।
১৫ ই জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৫
নাজনীন১ বলেছেন:
৩| ১৩ ই জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৪:০০
হাসান জাকির ৭১৭১ বলেছেন: সম্ভবত ২০০৬ সাল, তখনো বিয়েই করিনি। মার্কেটিংয়ে চাকুরি করি বরিশাল, কিন্তু বিশাল ভাব-সাব নিয়ে চলাফেরা করি। দেখতে-শুনতেও কম না, তাই সহকর্মীরা সবাই নায়ক বলে টিপ্পনি কাটত। যাহোক- একদিন মেডিকেলের ইনডোরে দাড়িয়ে আছি, স্কুল বা কলেজ পড়ুয়া এক ছেলে এসে বলছে- আঙ্কেল মেডিসিন বিভাগটা কোথায়? প্রথমে ভাবলাম অন্য কাউকে বলছে, তাই পাত্তা দিলাম না। ২/৩ বার বলার পরে ছেলেটার দিকে তাকালাম, তারপর আশেপাশে চারদিকে তাকিয়ে বুঝতে চেষ্টা করলাম সে কাকে বলছে? দেখলাম আশেপাশে কেউ নেই।
ছেলেটাকে জিজ্ঞেস করলাম- তুমি কি আমাকে কিছু বলছ?
সে আবারও বলল- আঙ্কেল মেডিসিন বিভাগটা কোন দিকে?
ওর কথা শুনে পুরাই টাস্কি খেলাম, বেশ কিছুক্ষণ ওর দিকে তাকিয়ে থেকে মাথাটা ঠান্ডা করে শান্ত ভাবে বললাম- ডান দিকে তৃতীয় তলায় যাও, বাবা।
বুঝলাম- বয়স হয়েছে!
অন্তত: বিয়েটা এবার করা উচিৎ!!
১৫ ই জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১২:৫০
নাজনীন১ বলেছেন: সেইম, সেইম!
৪| ১৪ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১:৪৯
কিশোর মাইনু বলেছেন:
ইন্টারে পড়তাম তখন। তখন থেকেই টাই পড়ার অভ্যাস ছিল, বাট শার্টের হাতা আবার গোটানো থাকত। তো এরকম একদিন আড্ডা মারছি বন্ধুর এক্টার সাথে। হঠাৎ করে পিছন থেকে মেয়েলি কন্ঠে কে জানি ডাকল, "আংকেল, এই ঠিকানা টা কোথায়?"
তো তখন আমার অলরেডী ৩/৪ টা ভাগ্নী আছে। তো প্রথমে খুব একটা খেয়াল করিনি। মেয়েটাকে দিক নির্দেশনা দিতে যাচ্ছি তখন মাথায় বাড়ি মারল। কিরে এই মেয়ে তো আমার ৩/৪ বছরের বেশী ছোট হবে না। দ্যান আমার তো পুরাই মেজাজ খারাপ, দিকনির্দেশনা না দিয়ে আমার প্রশ্ন -" অই, আমারে কোন দিক দিয়ে আংকেলের মত লাগে?"
আমার ফ্রেন্ড আর অই মেয়ের ফ্রেন্ড হাসতে হাসতে একটা অবস্থা। আর এখন ৪/৫ বছরের ছোট মেয়েদের আমি নিজেই আম্মু দেখে কথা বলি। কারণ আমার ভাগ্নী এক্টাই এখন ভার্সিটি পড়ে কিনা।
১৫ ই জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩
নাজনীন১ বলেছেন: মামা! ব্যাপার না!
ছেলেদের তো ব্যাপার একটু আলাদা, তারা বন্ধুদেরকেও মামা ডাকে!
৫| ১৪ ই জুলাই, ২০২৪ দুপুর ২:০২
ধুলো মেঘ বলেছেন: ব্যাপার না। ভার্সিটিতে থাকতে ডিপার্টমেন্টের জুনিয়র এক মেয়ে আমাকে ডেকে ফটোকপি করে দিতে আদেশ করেছিল - আমি বিনয়ের সাথে প্রত্যাখ্যান করেছি ব্যস্ততার অযুহাতে। পরে ঐ মেয়েটি তার বড় বোনের কাছে - যে কিনা আমার ক্লাসমেট আমার পরিচয় জেনে বেশ মাফ টাফ চেয়েছিল।
৬| ১৫ ই জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৫
নাজনীন১ বলেছেন: এরকম ভুল মাঝে মাঝেই আমার হয়, দোকানে অন্য কেউ দাঁড়িয়ে থাকলে হতেই পারে! কে চিনে কে দোকানদার, কে খদ্দের!
©somewhere in net ltd.
১| ১৩ ই জুলাই, ২০২৪ দুপুর ২:৪০
নয়া পাঠক বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন! বয়স নিয়ে ভাবার সময় পাই না, এটা তার চিরন্তন নিয়মে শুধু বয়েই যাবে, থামানোর বা কমানোর উপায় নেই। তাই যা অবধারিত তা নিয়ে শুধু শুধু কেন মনটা খারাপ করবেন। আমি চিরযৌবনা, চিরনবীন হয়েই এই পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে চাই। মনটাকে কখনও বুড়ো হতে দিই না, বরং দিন দিন যেন আরও তরুণ বা নবীন করে তুলছি, হাস্যরস আর সরলতায় ভরিয়ে তুলছি নিজেকে।