নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রায় অর্ধলগলিত এক নারীর লাশ আজ কবর খুঁড়ে তোলা হলো। আবারো মর্গে নিয়ে ফরেনসিক করা হবে। তবে এবারের তদন্ত কর্তা একটু অন্যরকম। তিনি প্ল্যানচেট না করেই লাশের স্মৃতি থেকেই সরাসরি রেকর্ড নিবেন। কোন আত্মার সাথে কথোপকথন নয়। সরাসরি স্মৃতি রোমন্থন, লাশের স্মৃতি!
এসিপি দীপুঃ হ্যালো! ভাল আছেন?
মৃতদেহের করোটির ভিতরে কেমন যেন আলোড়ন তৈরী হলো। ভীষণ ব্যাথা! বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠলো! শ্বাস তো নেই! বুকের ব্যাথাটা ভেতরেও গুমরাতে লাগলো। কেমন জানি দমবন্ধ! মস্তিষ্কের ভিতরে যেন অনেক দূর থেকে একটা কথা ভেসে এলো, কেমন আছেএএএএএন? একটা গোঙ্গানী, মৃত্যুর যন্ত্রণা অনুভব হচ্ছে…
মৃতদেহঃ কে? কে? কে ওখানে? আমাকে বাঁচাও। ওরা আমাকে মেরে ফেলছে। প্লীজ তাড়াতাড়ি আসেন, আমাকে মেরে ফেলছে!
এসিপি দীপুঃ আমি দুঃখিত। আমার এখন আর সেই সুযোগ নেই!। আপনি আসলে প্রায় ছয় মাস আগেই মারা গেছেন! আমি এসেছি আপনার কাছ থেকে আপনার সেই সময়কার অনুভূতিগুলো জানতে। আপনি এখন মৃত!
মৃতদেহঃ কিইইই বলেন! আমার ছেলেরা কোথায়? গুন্ডারা ওদের মেরে ফেলবে! প্লীজ ওদের বাঁচান! ওদের বাবা বাড়ি নেই!
এসিপি দীপুঃ হ্যাঁ, হ্যাঁ ঠিকাছে। ওরা সবাই ভাল আছে। আপনাকে অনেক মিস করে তারা। আপনার ছোট ছেলে এখনো আপনার জন্য কাঁদে! আপনাকে ছাড়া ঘুমোতে চাই না। বাড়ির কাজও করতে চাই না। ওদের নানু ওদেরকে দেখাশোনা করে। ওরা ভালই আছে। আপনি ভাল তো?
মৃতদেহঃ না, ভীষণ কষ্ট, খুব ব্যাথা হচ্ছে, এই দেখুন রক্তে ভেসে যাচ্ছি আমি! আমাকে হাসপাতালে নিয়ে চলুন। প্লীজ জলদি!
এসিপি দীপুঃ আমি খুবই দুঃখিত! আচ্ছা, আপনার নাম কি?
মৃতদেহঃ আমি, আমার নাম তাসনিয়া, না আয়াত, না নুসরাত। মনে করতে পারছি না! আমার মাথায় ভীষণ ব্যাথা হচ্ছে, রক্ত ঝরছে, আমি নড়তে পারছি না!
এসিপি দীপুঃ আচ্ছা, সেদিন ঠিক কিভাবে কি হলো? কারা কারা এসেছিল আপনার সামনে, আপনি দরজা খুললেন কেন? তারা আপনাকে কিভাবে কাছে পেল? কি ঘটেছিল?
মৃতদেহ গোঙাচ্ছে, ফোপাচ্ছে, দম ফেলতে পারছে না। কেমন যেন বুকের ভেতর শ্বাস আটকে আছে, বুকে ভীষণ ব্যাথা হচ্ছে। সারা শরীরে ব্যাথা হচ্ছে ভীষণ।
মৃতদেহঃ পানি, প্লীজ পানি, পানি খাব।
এসিপি দীপুঃ এই সেন্ট্রি, একটু পানি নিয়ে আসো, উনার মুখে ঢেলে দাও। উনার স্মৃতি উনাকে ভীষণ কষ্ট দিচ্ছে।
মৃতদেহঃ আমাকে ওরা, ওরা, মানে আমার পরিচিত বলেই দরজা খুলেছিলাম। প্রায়ই আমাদের বাসায় আসতো। ওদের নাম, নাম, কি যেন, চাচা, আংকেল, উসদাজ, কে যেন, মনে করতে পারছি না। ব্যাথা, ব্যাথা, পুড়ে যাচ্ছি, কেরোসিন ঢেলেছে, সারা শরীর, আগুন লাগিয়েছে! আমাকে ভীষণভাবে … … … আমি বলতে পারছি না। অনেক গুলো টুকরো, হাত কেটেছে আগে, আমি চিৎকার করতে পারিনি, মুখ বাঁধা ছিল। … কষ্ট, কষ্ট, খুব কষ্ট, আমি মা-এর কাছে যাব, সবাইকে বলে দিব, আমাকে বাঁচান!
শব্দ বেরোচ্ছে না। বুকের ভিতরে শব্দ বাজছে, মুখ বাঁধা, শব্দ বেরোচ্ছে না, গোঙানি… পুড়ে যাবার কষ্ট!
মৃতদেহঃ আমার গলা কেটে দিল। যাতে আমি কাউকে জানাতে না পারি! অনেক লাশ, গলিত লাশ, অনেক মাটিচাপা লাশ, খড়ের গাদায় লুকোনা লাশ, ফ্যান-এ ওড়না প্যাঁচানো লাশ!
এসিপি দীপুঃ কাদের কথা বলছেন? আর কে কে ছিল আপনার সাথে?
মৃতদেহঃ আমাদের বাঁচান, ওরা আমাদের ধরে এনেছে, বিক্রি করে দিয়েছে। জাহাজে উঠিয়েছে, অন্ধকার, নিচে, খোলের ভিতর! বলে ক্যাম্প! ওরা এসেছিল, দালালেরা এসেছিল। আমাদের অনেক মেরেছে। আমাদের চোখ মুখ বাঁধা, চিৎকার দিতে পারি না।
এসিপি দীপু হতবাক! কি বলছেন এসব কাদের কথা বলছেন!
মৃতদেহঃ বাঁচান! পানি! ক্ষিদে পেয়েছে! আমরা যাব না! বাঁচান। মা! মা! বাবা! বাবা! ভাইয়া! আমাদের ছেড়ে দেন! যেতে দেন! ভীষন দুর্গন্ধ! বাথরুমে যেতে দেয় না, খেতে দেয় না! অনেক জীপ আসে, হেডলাইট, ভীষণ আলো!
গোঙানি, ভীষণ কষ্ট, বুকে ভীষণ ব্যাথা হচ্ছে! রক্ত ঝরছে! মাথার পিছনে ব্যাথা! কাঁধে ব্যাথা, হাত নেই, পা নেই, পুড়ে যাচ্ছে! গলা শুকিয়ে যাচ্ছে…
২৫ শে মে, ২০২৩ রাত ১২:৫০
নাজনীন১ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া। হ্যাঁ, অনেক খুনের রহস্য ক্লু লেস থাকে।
২| ১৭ ই মে, ২০২৩ বিকাল ৪:৫৮
রানার ব্লগ বলেছেন: মনে হলো আরো আছে । গল্পের মধ্যের অংশ পড়লআম ।
২৫ শে মে, ২০২৩ রাত ১২:৫১
নাজনীন১ বলেছেন: দুই বার এসেছিল। এডিট করেছি।
৩| ১৭ ই মে, ২০২৩ রাত ৮:১৭
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: লেখাটা দুবার হয়ে গেছে। আসলে মৃত্যুর পর অনেক নবলা কথা মানুষ আর জানতে পারে না।
২৫ শে মে, ২০২৩ রাত ১২:৫২
নাজনীন১ বলেছেন: হ্যাঁ, অনেক খুনের প্রকৃত রহস্য অজানাই থেকে যায়!
৪| ১৭ ই মে, ২০২৩ রাত ১০:০২
হাসান জামাল গোলাপ বলেছেন: ভালোই লাগছিল, কিন্ত এডিটিং করতে সমস্যা হয়েছে সম্ভবত।
২৫ শে মে, ২০২৩ রাত ১২:৫২
নাজনীন১ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া!
৫| ১৮ ই মে, ২০২৩ দুপুর ১:০৭
রাজীব নুর বলেছেন: থ্রিলার।
২৫ শে মে, ২০২৩ রাত ১২:৫১
নাজনীন১ বলেছেন: একটু চেষ্টা করলাম!
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই মে, ২০২৩ বিকাল ৪:৫২
মিরোরডডল বলেছেন:
লেখার কথা কি বলবো!
যদিও গল্প কিন্তু অনেক নারীর না বলা চাপা যন্ত্রণার কথা বলে গেলো।
ওপারে চলে যাওয়ায় যাদের সেই যন্ত্রণার কথা কখনও কারো জানা হয়নি।
চমৎকার লেখা আপু।