নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজের বাচ্চাসহ কাজিনদের পড়ানোর সুবাদে স্কুলের এখনকার সিলেবাস কিছুটা হলেও দেখা হয়েছে। কন্টেন্ট যথেষ্ট সমৃদ্ধ! আমাদের সময়কার চেয়ে অনেক গুণ! ফেইসবুকে কিছু সেকুলারিজম বনাম ইসলামিক গল্প সাহিত্য নিয়ে আলোচনা - সমালোচনা দেখেছি, সেটা একটা দিক। কিন্তু এটা বাদ দিলে সাধারণ অর্থে জানার মতো বহু কিছুই আছে এখনকার সিলেবাসগুলোতে। এখন প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে শিক্ষকদের পাঠদান পদ্ধতি এবং প্রশ্ন করার পদ্ধতির উপর।
ঠিক এই দুটো বিষয়কে কেন্দ্র করেই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়সহ অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের নানারকম ট্রেনিং দেয়ানো হচ্ছে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি সেমিষ্টারেই নতুন জয়েন করা শিক্ষকদের এক সপ্তাহ ট্রেনিং দেয়ানো হয় কিভাবে ছাত্রদের ক্লাসে এনগেজড করতে হবে, মানে ইন্টারেকশনাল শিক্ষাপদ্ধতি (বাই লেটারেল), [ওয়ান ওয়ে নয়, মানে শিক্ষক কেবল বলবে, ছাত্ররা কেবল শুনবে, নোট নিবে এমন নয়]। ছাত্ররাও যেন একটা আপকামিং টপিকের উপর নিজেদের কিছু চিন্তাভাবনা শেয়ার করতে পারে সে সুযোগ তৈরী করে দিতে হবে, সাডেন কুইজ, পোলিং সিস্টেমের মাধ্যমে ছাত্ররা বিভিন্ন সমস্যার বা প্রশ্নের ব্যাপারে তাদের মতামত তুলে ধরবে ইত্যাদি ইত্যাদি... এর থেকেও আরো উন্নত ধারনা নিয়ে হাজির হয়েছে বিশ্বব্যাংক, IQAC (Internal Quality Assurance Cell) ট্রেনিং দেয়া হচ্ছে বিভিন্ন পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরকে। শেখানো হচ্ছে কিছু কি-ওয়ার্ড যা দিয়ে প্রশ্নের ধরণ ও কোয়ালিটি নির্ধারণ হবে, যা কিনা ভেরিফাই করা হবে ব্লুমস ট্যাক্সোনমি নামক একটা ছক দিয়ে, সাধারণত নিচের ক্লাসগুলোতে মুখস্থ বা বোঝা বা ব্যাখ্যা করা টাইপ প্রশ্ন বেশি হতে পারে আর উপরের ক্লাসের প্রশ্নতে বিশ্লেষণধর্মী, মাপকাঠি নির্ধারণ, নতুন কিছু চিন্তা করার মতো প্রশ্ন বেশি থাকবে। প্রতিদিনকার লেসন প্ল্যান তৈরীর পদ্ধতি যাতে থাকবে নির্দিষ্ট টপিকের উদ্দেশ্য, আউটকাম, ডিটেইলস টপিকের কোনটা কত সময় ধরে পড়ানো হবে, কি কি টুলস ব্যবহার করা হবে, কিভাবে তার এসেসমেন্ট হবে, মোদ্দাকথা ৯০ মিনিটের একেকটা ক্লাস একজন শিক্ষক কিভাবে দক্ষতার সাথে ছাত্রদের সমান বা অনেকটা একটিভ অংশগ্রহণ এর মাধ্যমে সম্পন্ন করবেন, সেটাই থাকবে এই লেসন প্ল্যানে। আর ২০-৩০টা লেসন প্ল্যান নিয়েই তৈরী হবে একটা কোর্স প্রোফাইল/ সিলেবাস। এরকম প্রায় ৪৮-৫০টা কোর্স প্রোফাইল/ সিলেবাস নিয়ে তৈরী হবে কারিকুলাম।
আবার কেবল সাবজেক্ট জ্ঞান নয়, পাশাপাশি একজন পূর্নাঙ্গ মানুষ হিসেবে বেড়ে ওঠার জন্য কারিকুলামে যুক্ত করা হয়েছে 'আর্ট অফ লিভিং' নামক কোর্স, যার মাধ্যমে ছাত্ররা তাদের জীবনধারা, চিন্তাধারা আমুল পরিবর্তন করে নিতে পারবে এবং অনেকেই এর মাধ্যমে উপকৃত হচ্ছে। কিভাবে কথা বলতে হয়, কিভাবে পরিবারের এবং পরিবারের বাইরের মানুষগুলোর সাথে আচরণ করতে হয়, দায়িত্ব পালন করতে হয়, কিভাবে একটা সোশাল গেদারিং এ আচরণ করতে হবে, একতা ইন্টারভিউ বা অফিসের বস এর সাথে ইন্টারেকশান কেমন হতে হবে -- এসব কিছুই শেখানো হচ্ছে এই কোর্সটিতে। এর পাশাপাশি টিম ওয়ার্ক গড়ে তোলার জন্য নানারকম ক্লাব একটিভিটিস, খেলাধূলা, বিতর্ক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান তো রইলো আগেকার মতো। সাথে যুক্ত হয়েছে সোশাল নেটওয়ার্কিং এ লেখালেখি, ফেইসবুক, ব্লগ, ফোরামে বিভিন্ন বিষয়ের উপর লেখালেখি করাটা রীতিমত শিক্ষকদের পারফরমেন্স উন্নতির মাপকাঠি হিসেবে দেখা হচ্ছে। গবেষণার জন্য ফান্ড এখনো অপ্রতুল হলেও দিনে দিনে ফান্ড বাড়ানো হচ্ছে।
নতুন করে আরেকটি কোর্সের প্রস্তাব নিয়ে এলো ভারতের তিনজন প্রফেসর। আমাদের মতো এই উপমহাদেশে ভারতেও শিক্ষার হার বেড়েছে, কিন্তু মূল্যবোধ কমেছে। এ নিয়ে সুপ্রীম কোর্টের এক রায় আমলে নিয়ে সেখানে শুরু হয়েছে ব্যাপক শিক্ষাব্যবস্থা সংস্কার। তারই একটি বড় অংশ হলো "হিউম্যান ভ্যালুস এবং প্রফেশনাল এথিকস" নিয়ে কাজ করা। প্রায় ৩৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই কোর্সটি চালু হয়েছে, বিভিন্ন জায়গায় ওয়ার্কশপ চলছে, ভুটান ও বাংলাদেশে এরই ধারাবাহিকতায় ওয়ার্কশপ হয়ে গেল। সেখানে শেখানো হচ্ছে প্রত্যেক মানুষের পটেনশিয়ালিটি আছে, সবাই সুখী হতে চায়। কাউকে দুঃখ দেয়াটা ইন্টেনশনাল বিষয় নয়, যোগ্যতার অভাবেই এমনতা হয়ে থাকে। সত্যিকার অর্থে কেউ কাউকে দুঃখ দিতে চায় না।
আমেরিকা বলি, বিশ্বব্যাংক বলি বা ভারত বলি, আর্ট অফ লিভিং বলি আর হিউম্যান ভ্যালুস বলি, প্রত্যেকটা ধর্মের বা নৈতিকতার মূল কথাই হলো নীতিবান হওয়া, বিনয়ী হওয়া, বিচক্ষণ হওয়া, প্রজ্ঞাবান হওয়া। ফাউন্ডেশন ডে উদযাপন উপলক্ষে আমার ডিপার্টমেন্ট আয়োজন করতে যাচ্ছে 'আর্ট লিভিং ইন ইসলাম' নামক সেমিনার। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাশাপাশি স্কুল কলেজগুলোতেও যদি এরকম প্রজেক্ট চালু করা যায়, আশা করি শিক্ষাক্ষেত্রে এক বড় ধরনের বিপ্লব ঘটাতে যাচ্ছি আমরা। বিশ্বব্যাংকের এই প্রজেক্ট অনুসরণ করে শ্রীলংকা, মালয়েশিয়ার শিক্ষাব্যবস্থা আজকের এই পর্যায়ে এসেছে। আমরাও নিশ্চয়ই আগামীতে এরকম আন্তর্জাতিক মানের উচ্চাসনে যেতে পারবো।
৩১ শে মে, ২০১৬ বিকাল ৪:৩৬
নাজনীন১ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।
২| ৩১ শে মে, ২০১৬ বিকাল ৪:৪৩
বিজন রয় বলেছেন: ভাল পোস্ট আর লোকে পড়ে- না।
১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৫১
নাজনীন১ বলেছেন: ধন্যবাদ।
৩| ০৭ ই জুন, ২০১৬ দুপুর ২:৫৩
এইচ এম শরীফ উল্লাহ বলেছেন: অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যবহুল আলোচনা।
১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৫১
নাজনীন১ বলেছেন: ধন্যবাদ।
৪| ১১ ই জুন, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৬
খায়রুল আহসান বলেছেন: একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে চমৎকার আলোচনা করেছেন। আলোচনাটি খুবই ভাল লাগলো, তাই এ পোস্টে প্রথম প্লাস + + রেখে গেলাম।
১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৫২
নাজনীন১ বলেছেন: ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ৩১ শে মে, ২০১৬ বিকাল ৩:২০
বিজন রয় বলেছেন: অনেক ভাল লেখা।
+++++