নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাড়ির কাছে আরশিনগর সেথা পড়শি বসত করে, একঘর পড়শি বসত করে আমি একদিনও না দেখিলাম তারে।

অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য

মানুষ পথিক বেশে ঘুরছে দেশে দেশে একটু ছায়াতলে থমকে দাঁড়ায়, স্মৃতিটুকু রেখে শুধু একদিন তো চলে যায়।

অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য › বিস্তারিত পোস্টঃ

জীবনের প্রথম বিড়ি-সিগারেট খাওয়ার গল্প

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৪৬

বিড়ি
কোন এক ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সময়ের কথা অথবা জাতীয় সংসদ নির্বাচনও হতে পারে। সময়টা ঠিক মনে করতে পারছি না। তখন বয়স কম, শুধু এদিক-সেদিক ছোটাছুটি করি। ছোটাছুটি বলতে গাছে উঠা, পুকুরে সাঁতার কাটা, খেলাধুলা এসব আর কী!

নির্বাচন উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মিছিলে যাই। স্লোগান দেই। তারপর প্রার্থীদের বাড়িতে গিয়ে চানাচুর-মুড়ি খাই। বাজারে চায়ের স্টল ফ্রি করে দেওয়া। যে যত ইচ্ছে চা খেতে পারে। মিছিলে যাওয়ার আগে চা খেতে ভুলি না।

একদিন বাড়িতে একা বসে আছি। মামাত ভাইয়ের সাথে দিনের পরিকল্পনা শেয়ার করছি। এমন সময় কয়েকজন লোক এল পান-বিড়ি নিয়ে। বাড়িতে বড় কেউ না থাকায় তারা আমাদের কাছেই ওসব রেখে গেল। আর বলে গেল, অমুক মার্কায় ভোট দিতে বলো।

পাটকাঠিতে আগুন ধরিয়ে অনেক টেনেছি, কাগজ মুড়িয়ে চুরুট বানিয়েও কম টানি নি। হাতে বিড়ি পাওয়ার পর দুষ্টু বুদ্ধি চাপলো মাথায়। হেঁশেল থেকে দেয়াশলাই নিয়ে দূরের জঙ্গলে ছুটলাম। আমার সঙ্গী মামাত ভাই।

বাড়িতে বিড়ি টানতে দেখলে মার খাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা। তাই এই লুকিয়ে টানার বুদ্ধি। বিড়ির প্যাকেট কয়েকটা। ওগুলো খুব সম্ভব আকিজ বিড়ি ছিল। গ্রামাঞ্চলে এ বিড়ির খুব চাহিদা ছিল তখন। এখন তো সিগারেট এর দাপটে বিড়ির বাজার কমে গেছে।

বিড়িতে অগ্নিসংযোগ করে টান দেওয়া শুরু করলাম, মামাত ভাইকেও দিলাম। ধুঁয়া ভেতরে ঢুকতেই খুল্লুর খুল্লুর কাশি শুরু হলো। এ তো মহা বিপদ! লোকজন যদি এসে দেখে ফেলে! পরিচিত কেউ দেখলে লঙ্কাকাণ্ড বেঁধে যাবে তো। জঙ্গলের আরও গভীরে প্রবেশ করলাম।

একটা-দুটো টানার পর ধীরেধীরে ধাতস্থ হলাম। মামাত ভাইকে নিয়ে মনে হয় এক প্যাকেট শেষ করেছিলাম। যদিও ইচ্ছে ছিল কয়েক প্যাকেট শেষ করবো, ইচ্ছেটা আর পূরণ হয় নি। প্যাকেটে তো অনেক বিড়ি থাকে। এত বিড়ি টানলে কাশির ঠেলায় গলা দিয়ে রক্ত এসে যেত। এমনিতেই চোখ লাল হয়ে গিয়েছিলো।

সিগারেট

স্কুলে বোর্ডিং খোলা হলো। পড়ালেখা করতে হয় রাত বারোটা-একটা পর্যন্ত। ঘিঞ্জিমারা পরিবেশ, এমন পরিবেশে এত পড়তে ভালো লাগে? একেবারে দমবন্ধ অবস্থা। যে কোন মুহূর্তে মরে যাবো এমন মনে হয়।

এর মধ্যে দশম শ্রেণির বড় ভাইয়েরা এক মহা পরিকল্পনা করলো। সবাই মিলে সিনেমা দেখতে যাবে। আমাদের ক্লাসের কয়েকজনকেও সাথে নিলো। যদিও আমরা ভয়ে ছিলাম স্যার জানতে পারলে পিঠের চামড়া থাকবে না আর বাড়িতে জানলে তো খবরই আছে।
আমাদের আশ্বস্ত করা হলো, দিন থাকতেই চলে আসা হবে। কেউ কিছু জানতেই পারবে না।

তখন অশ্লীল সিনেমার যুগ। যত্রতত্র অশ্লীল পোস্টার টানানো থাকত। হলের সামনে গিয়ে দেখি মারাত্মক রকমের পোস্টার। আমরা তো এতকিছু জানতাম না।
চলেই যেহেতু এসেছি, না দেখলে কেমনে হয়। সাহস করে দেখেই এলাম (রগরগে দৃশ্যগুলো দেখার সাহস হয় নি)। সিনেমার নাম ছিল "অ্যাকশন লেডি"।

আসতে আসতে সন্ধ্যে। আতঙ্ক আমাদের মনে! যদি স্যারের হাতে ধরা পড়ি! মার একটাও মাটিতে পড়বে না।
পা টিপে টিপে লুকিয়ে লুকিয়ে স্কুলে প্রবেশ করলাম। কপাল ভালো ছিল যে কেউ দেখে নি। পরেও কেউ জানতে পারে নি।

সন্ধ্যের পর পড়তে বসলাম। কিছুক্ষণ পড়ার পর দেখি মাথা ঘোরায়। সারাদিন ধকল তো কম গেল না, মাথা আর সহ্য করতে পারছে না। নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে চেষ্টা করলাম।
কিছুক্ষণ পর দেখি ঘুম পাচ্ছে। এই সাতটার সময়ই যদি ঘুম পায় বারোটা পর্যন্ত জাগবো কেমনে?
চা খাওয়া যেতে পারে। কিন্তু চা পাবো কোথায়? বাজার তো এখান থেকে প্রায় দশমিনিট এর পথ। সবাই একসাথে গেলে তো ধরা পড়ে যাবো। এমনিতে এক পাপ করে আতঙ্কে আছি।

ঠিক করলাম বাজার থেকে এক দৌড়ে সিগারেট কিনে আনতে হবে। এটা টানলে নাকি ঘুম চলে যায়। দৌড় প্রতিযোগীতায় বিজয়ী একজনকে এই বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হলো।

তখন সবে শেখ সিগারেট বাজারে এসেছে। দাম মাত্র এক টাকা করে। সেটাই আনা হলো। আমরা স্কুলের পেছনে গিয়ে একজন একজন করে টেনে আসবো- এটাই ঠিক হলো।

কেউই সিগারেট টানায় অভ্যস্ত নয়। একটা গোলমাল শুরু হলো। কাশতে কাশতে গলা ব্যথা শুরু হয়ে গেল। ঘটনা কী দেখতে স্যার লাঠিসমেত উপস্থিত। বাকিটা ইতিহাস।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:১৪

নজসু বলেছেন: বলেন কি? :-B

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৫৫

অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: হ্যাঁ।

২| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:১৭

নজসু বলেছেন:




আমি জীবনে একবার বিড়িতে টান দিয়েছিলাম।
ওটাই প্রথম আর ওটাই শেষ।
ক্লাশ ফোরে থাকতে।
মা বাবার যৌথ প্রযোজনায় মাইর খেয়ে ঐ নামটা আর মুখে আনিনি। :-B

তবে, পাটকাঠিতে আগুন লাগিয়ে বিড়ি টানার অভিজ্ঞতা আমারও আছে। কেশেছি। মুখ পুড়ে গেছে অনেক ঘটনা আছে।
কখনও গলা খুশখুশ করে মা নিজেই তেজপাতার বিড়ি বানিয়ে টানতে দিতেন। :-B

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৫৮

অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: বিড়ির চল কমে গেছে। এখন ধনী-গরীব সবাই সিগারেট টানে।

৩| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৩০

মাহের ইসলাম বলেছেন: বিড়ি টানতে কিন্তু আলাদা একটা আনন্দ আছে, কেমন যেন একটা ভাব আসে মনের মধ্যে।

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:০০

অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: আর দেখতেও কিন্তু ভালো লাগে। কতজন যে কত স্টাইলে টানে।

৪| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:০১

যোখার সারনায়েভ বলেছেন: ধূম্রপান কখনো করিনি। তাই অনুভূতি বলতে পারছিনা।

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২৬

অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: পুরুষ মানুষ ধূমপান করেন নি; এটা কোন কথা হলো?

৫| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৩

ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: বিড়ির সাথে সিগারেটের পার্থক্য হলো, বিড়ি অপরিশোধিত

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২৬

অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: সিগারেট পরিশোধন করে কেমনে?

৬| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪৭

রাজীব নুর বলেছেন: আমার বিড়ি খাওয়ার গল্প মনে পড়ে গেল।

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:০৬

অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: এসব ঘটনা মনে হলে এখনও রোমাঞ্চিত হই।

৭| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ২:২০

কালীদাস বলেছেন: শুনেছি বিড়ি নাকি সিগারেটের চেয়েও কড়া এবং আরও বেশি ক্ষতিকর। কড়ার কথাটা কি সত্য?
সেই জমানায় এক টিকিটে দুই ছবি নামে একটা টার্ম ছিল :P

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:০৯

অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: বাস্তব অভিজ্ঞতায় তো সত্যিই মনে হয়। একটিকিটে দুই ছবি আমিও দেখেছি কয়েকবার। ছবি ভালো না লাগলে পুষিয়ে নেওয়ার সে-ই একটা সুযোগ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.