নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানুষ পথিক বেশে ঘুরছে দেশে দেশে একটু ছায়াতলে থমকে দাঁড়ায়, স্মৃতিটুকু রেখে শুধু একদিন তো চলে যায়।
একবার রবীন্দ্রনাথ ও গান্ধীজি একসাথে বসে প্রাতরাশ করছিলেন। গান্ধীজি খাচ্ছিলেন রোজকারের মত পরিজ এবং রবীন্দ্রনাথ গরম লুচি।
গান্ধীজি বললেন, "গুরুদেব, তুমি জানো না যে তুমি বিষ খাচ্ছ"।
উত্তরে রবীন্দ্রনাথ বললেন, “বিষই হবে, তবে এর অ্যাকশন খুব ধীরে, কারণ আমি বিগত ষাট বছর যাবৎ এই বিষই খাচ্ছি"।
♥
রবীন্দ্রনাথ একবার এক ভদ্রলোককে বললেন, "আপনাকে আমি দন্ড দেব"। ভদ্রলোক ভীষণ বিব্রত হ’য়ে বললেন, "কেন গুরুদেব! আমি কী অপরাধ করেছি"?
রবীন্দ্রনাথ বললেন, "গতকাল আপনার লাঠি, মানে দণ্ডটি আমার বাসায় ফেলে গেছেন, এই নিন আপনার দণ্ড"।
♥♥
একবার শরৎচন্দ্র একখানা টেলিগ্রাম পাঠালেন রবীন্দ্রনাথকে। সেকালে সাধারণত কোনও গুরুতর সংবাদ হ’লেই টেলিগ্রাম করা হ’ত। কাজেই টেলিগ্রাম এলে সকলেই কিঞ্চিৎ ভীত হতেন। তা, সেই টেলিগ্রাম খুলে দেখা গেল, শরৎবাবু লিখেছেন “গুরুদেব, আমি ভালোই আছি”। অর্থাৎ মস্ত এক ঠাট্টা!
রবীন্দ্রনাথও কি আর যে সে পাত্র! তিনিও এর উত্তরে বিশাল এক পাথরখন্ড পার্সেল করলেন শরৎচন্দ্রকে, তার সাথে চিরকুটে লিখলেন, “তব কুশল সংবাদ পাইয়া আমার হৃদয় হইতে এই পাষাণভার নামিয়া গিয়াছে”।
♥♥♥
একবার রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনে তাঁর একটি নাটক পাঠ করছেন, শরৎচন্দ্র সেই আসরে উপস্থিত হলেন। একদা জুতো চুরি হবার কারণে তিনি জুতোজোড়া কাগজে মুড়ে বগলদাবা করে আসরে ঢুকতেন। রবীন্দ্রনাথ জানতে পেরে একদিন বলে উঠলেন, "শরৎ, তোমার বগলে ওখানি কী? পাদুকাপুরাণ"? এ নিয়ে বিস্তর হাসাহাসি হয়েছিল।
♥♥♥♥
একবার দোলপূর্ণিমার দিনে নাট্যকার দ্বিজেন্দ্রলাল জামার পকেট থেকে আবির বের করে কবিগুরুকে রাঙিয়ে দিলেন। আবিরে রঞ্জিত রবীন্দ্রনাথ বলে উঠলেন,”এতদিন জানতাম দ্বিজেনবাবু গান ও নাটক লিখে সকলের মনোরঞ্জন করে থাকেন, আজ দেখছি দেহরঞ্জনেও তিনি একজন ওস্তাদ”।
♥♥♥♥♥
মরিসসাহেব ছিলেন শান্তিনিকেতনে ইংরেজি ও ফরাসি ভাষার অধ্যাপক। একদা তিনি তৎকালীন ছাত্র প্রমথনাথ বিশীকে বললেন, “গুরুদেব, চিনির ওপর একটি ভারি মিষ্টি গান লিখেছেন। তারপর গাইতে শুরু করলেন, ‘আমি চিনি গো চিনি তোমারে’…প্রমথনাথ জিজ্ঞেস করলেন, "চিনির ওপর, এই ব্যাখ্যা আপনি কোথায় পেলেন"?
উত্তরে মরিসসাহেব জানালেন, “কেন স্বয়ং গুরুদেবই আমায় বলেছেন একথা”।
♥♥♥♥♥♥
রবীন্দ্রনাথ একদিন বিকেলে ছেলেমেয়েদের নিয়ে নৃত্যনাট্যের রিহার্সাল করাচ্ছেন, একজন এসে বললেন, "গুরুদেব, চা খাবেন"? রবীন্দ্রনাথ বললেন, "আমি না-চা’র দলে (অর্থাৎ নাচের দল, আবার চা না খাবার দল) সেই ব্যক্তি বুঝলেন রবীন্দ্রনাথের রসিকতা, ভাবলেন গুরুদেবকে ইংরেজিতে প্রশ্ন করে জব্দ করবেন। তিনি বললেন, “won’t you have tea?” রবীন্দ্রনাথ তেমনই মুচকি হেসে বললেন, “আমি no-tea’র দলে”(নটী)।
♥♥♥♥♥♥♥
সাহিত্যিক ‘বনফুল’ তথা শ্রী বলাইচাঁদ-এর এক ভাই অধ্যয়নের জন্য শান্তিনিকেতনে পৌঁছে কার কাছে শুনলেন গুরুদেব কানে একটু কম শোনেন। দেখা করতে গেলে রবীন্দ্রনাথ বললেন, "তুমি কি বলাইয়ের ভাই কানাই নাকি"? তখন বনফুলের ভাই চেঁচিয়ে জবাব দিলেন, “আজ্ঞে না, আমি অরবিন্দ"! রবীন্দ্রনাথ তখন হেসে উঠে বললেন, “না কানাই নয়, এ যে দেখছি একেবারে সানাই"!
♥♥♥♥♥♥♥♥
জীবনের শেষদিকে রবীন্দ্রনাথ একটু সামনে ঝুঁকে উপুড় হয়ে লিখতেন। তা দেখে এক শুভাকাঙ্ক্ষী বললেন , “গুরুদেব, আপনার নিশ্চয়ই ওভাবে লিখতে কষ্ট হচ্ছে, একখানা চেয়ারে হেলান দিয়ে তো আয়েশ করে লিখতে পারেন”! চুপচাপ কিছুক্ষণ তাকিয়ে রবীন্দ্রনাথ বললেন, “তা তো পারি, তবে কি জানো, উপুড় হ’য়ে না লিখলে কি আর লেখা বেরোয়? পাত্রের জল ক’মে তলায় এসে ঠেকলে একটু উপুড় তো করতেই হয়”।
২০ শে নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ২:৫৩
অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: শুভেচ্ছা আপনাকে।
২| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:২০
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
চমৎকার রসবোধ ছিলো কবি গুরুর। তিনি হাস্য-কৌতুক খুব ভালবাসতেন। সাহিত্যের একটি বিশাল জায়গাজুড়ে রয়েছে রবীন্দ্রনাথের হাস্য- কৌতুক। শুধু সাহিত্যেই নয় ব্যক্তিগত দৈনন্দিন জীবনে আলাপ আলোচনায়ও রবীন্দ্রনাথ ছিলেন হাস্য রসের নিপুণ কারিগর।
রবীন্দ্রনাথ এক গ্রামে গেছেন বেড়াতে। আপ্যায়নের মহা আয়োজন। খাওয়ার দাওয়াত পড়ল এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে। বহু আইটেম দিয়ে গৃহস্বামী খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করলেন। কবি বসলেন খেতে। সঙ্গে আছেন ক্ষিতি মোহন সেন শাস্ত্রী। গৃহস্বামী নিজে পরিবেশন করছেন। শাস্ত্রী মশাই ডিম খেতে গিয়েই বুঝলেন ডিমটা পচা। কী করবেন আড় চোখে দেখছিলেন কবি কী করেন। কবিও ডিম পচা বলে বুঝলেন। বুঝেও তিনি ডিমটা ভাতের সঙ্গে মুখে দিয়ে দিলেন। শাস্ত্রী মহাশয় পড়লেন মহা বিপদে। পচা ডিম তিনি খাবেন কী করে? গুরুর দেখাদেখি অগত্যা ওই পচা ডিমটিই তাকে গিলতে হলো। কিন্তু তার পেটটা তৎক্ষণাৎ প্রমাদ গুনল। সেই পচা ডিমটি এক মুহূর্তও সহ্য করল না, শাস্ত্রী মশাই সঙ্গে সঙ্গেই করলেন বমি। পরবর্তীতে সুযোগ পেয়ে কবিকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি এই পচা ডিমটি হজম করলেন কী করে? আমি তো খেয়েই বমি। রবীন্দ্রনাথ হেসে বললেন। ‘আমি তো পচা ডিম খাইনি তাই বমিও করিনি।’ শাস্ত্রী মশাই অবাক হয়ে বললেন, সে কী কথা। আমি স্বচক্ষে দেখলুম ডিমটি আপনি মুখে দিলেন। কবি উত্তরে বললেন, আমিও কি সেই ডিম খেয়েছি নাকি? আমি সাদা দাড়ির ভেতর দিয়ে সেই ডিম চাপকানের মধ্যে চালান করে দিয়েছি। এখন মানে মানে বাড়ি ফিরতে পারলেই বাঁচি।
একবার এক বৈজ্ঞানিকের পুত্র কবির সাথে দেখা করতে আসেন। ছেলেটির ছিল মস্তিষ্ক বিকৃতি। কবির কাছে সে বায়না ধরলো কবিকে হাপু গান শোনাবে। কবি ধৈর্য ধরেই ছেলেটির গান শুনলেন। গান গেয়ে ছেলেটি বিদায় নিলে কবি বললেন, গানই বটে! একেবারে মেশিনগান।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ তখন খুবই অসুস্থ। শান্তি নিকেতন থেকে কবিকে কলকাতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। ঠিক সে সময় একটি ফুটফুটে ছোট্ট মেয়ে বায়না ধরে বসল কবিকে তার অটোগ্রাফ দিতে হবে। রবীন্দ্রনাথ তার খাতায় কাঁপা হাতে অটোগ্রাফ লিখে দিল। তবু মেয়েটির মন ভরল না। মেয়েটি কেঁদে কেটে বায়না ধরল-কবির অটোগ্রাফের পাশে কবিতা লিখে দিতে হবে। ছোট্ট মেয়েটিকে নিরাশ করলেন না কবি। তিনি তাৎক্ষণিক লিখলেন-
মোর কাছে চাহ তুমি পদ্য
চাহিলেই মিলে কি’তা সদ্য।
তাই আজ শুধু লিখিলাম
নিজের নাম,
এর বেশি কিছু নহে অদ্য।
২০ শে নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ২:৫৩
অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: অসাধারণ।
৩| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:২৪
মোহাম্মদ জন চক্রবর্ত্তী বলেছেন: পড়ে খুব সুন্দর লাগল। ধন্যবাদ।
২০ শে নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ২:৫৯
অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: ভালো থাকবেন।
৪| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:৫৫
মনিরা সুলতানা বলেছেন: প্রিয় তে নিলাম ।
ধন্যবাদ ।
২০ শে নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:০০
অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: শুভ কামনা রইলো।
৫| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:৫৬
চাঁদগাজী বলেছেন:
জমিদারের পুত্র জমিদার, সাহিত্যিক; মন কিছুটা উদার
২০ শে নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:০১
অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: হুম! উদার না হলে কি এত বড় সাহিত্যিক হওয়া যায়?
৬| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:০১
রাতুল_শাহ বলেছেন: বেশ লাগলো রসবোধ।
২০ শে নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:০২
অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: ধন্যবাদ।
৭| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:১২
মলাসইলমুইনা বলেছেন: নো- টির ঘটনাটাই আমি শুধু ডক্টর আশরাফ সিদ্দিকীর "রবীন্দ্রনাথের শান্তি নিকেতনে" বইয়ে পড়েছিলাম | অন্য ঘটনাগুলোও ভীষণ মজার লাগলো | মজার একটা লেখার জন্য ধন্যবাদ নিন |
২০ শে নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:০৩
অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা টুকরো টুকরো ঘটনা আর কী! শুভেচ্ছা নেবেন।
৮| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:২৪
ঢাকাবাসী বলেছেন: গুরুদেবেকে নিয়ে লেখাটি চমৎকার লাগল।
২০ শে নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:০৫
অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: ধন্যবাদ।
৯| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:৩৮
ওমেরা বলেছেন: হাসি- তামসা সবার জীবনেই থাকে।
২০ শে নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:০৫
অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: তা তো অবশ্যই।
১০| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:০৭
গেম চেঞ্জার বলেছেন: খানিকটা হেসে নিলাম!
২০ শে নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:১১
অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: দেখতে গম্ভীর হলেও লোকটা কিন্তু রসিক ছিলেন। উনাকে ঘিরে প্রচলিত গল্পগুলো পড়লে বোঝা যায় ।
১১| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৬
করুণাধারা বলেছেন: বেশ হাসলাম। ধন্যবাদ আপনাকে।
০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:০০
অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: ভালো থাকবেন।
১২| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১১:১৪
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে
১৮ ই আগস্ট, ২০১৮ ভোর ৬:২৬
অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: শুভেচ্ছা।
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:০১
আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: কবিগুরুর অসাধারণ রসবোধ সত্যিই উপভোগ্য।
ধন্যবাদ ভাই অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য।