নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একে একে সব স্বপ্ন মাটি দিয়ে এখন প্রহর গুনছি দেহটা কবে আমাকে মুক্তি দেবে।

মিজানুর রহমান এএমএস

মৃত ব্যক্তির কোন অভিব্যাক্তি থাকতে নেই। স্বপ্নেরা নিছে ছুটি, আমি রয়ে গেছি দেহ টা বয়ে বেড়াতে।

মিজানুর রহমান এএমএস › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্কুল_ডায়েরি_৩

০৪ ঠা জুন, ২০২১ সকাল ৯:৩০


স্বিদ্ধান্ত হল স্কুলের নারিকেল গাছ থেকে নারিকেল চুরি করব এবং সেগুলা খাব। কিন্তু ঝামেলা হল আমাদের দারওয়ান আর নাইট গার্ড বেলাল ভাইকে ফাকি দেয়া মুশকিল। তবে আশার আলো যে বেলাল ভাই প্রতি তিন-চারদিন পর পর রাতের বেলা থাকে না। মান্নে বাসায় থাকে আরকি। আর এই রাতকেই বাছাই করে আমাদের পরিকল্পনা সাজানো হল। আমি ছিলাম বানর প্রকৃতির, ছোট বেলা থেকেই গাছ বাওয়া অভ্যাস। সুতরাং আমি গাছে উঠবো আর বাকিরা ডাব, নারিকেল সংগ্রহ করার দায়িত্বে এবং পাহারার কাজ দেখবে। আর অফিসের সামনের গাছ সহ আমরা সারা দিন ঘুরে ঘুরে কোন গাছে কয়টা পাকা নারকেল আর কোন গাছে বেশি ডাব আছে এগুলো নির্ধারন করলাম। লাটের গুরু যেহেতু আমি। তাই আমিই ঠিক করলাম যে মই কোঁথায় থাকে, মোসাদ্দেক স্যার কখন আমাদের রাতের ব্যাচ ছুটি দিয়ে বাসায় ফিরে এবং কতটা সময় নেব এই মহাচুরির কাজ সাড়তে।
নির্ধারিত তারিখে আমরা পড়লাম একটু মুছিবতে। দিলিপ কুমার স্যার হোস্টেল এ ঘুমাবেন। কিন্তু স্যার একবার ঘুমালে ভোরের আগে আর বের হয়না আর স্যার যদি ধরেও ফেলে ওনাকে ম্যানাজ করা খুব কষ্ঠ হবে না । স্যার আমাদের কে একটু বকা দেবে কিন্তু মাইর দেবে না এটা নিশ্চিত হয়েই কাজে নেমে পড়লাম। আমি ট্রাউজার পরিধান করে গাছে উঠতে শুরু করলাম। শালার যেই না অর্ধেক গাছ উঠেছি ট্রাউজার গেল ফাটাস করে ফেটে। থামবার মত বানর আমি নই। ওদের বললাম উপর দিকে যেন লাইট না মারে নইলে আমার মূলধন যাবে! গাছে উঠে নারিকেল টপাটপ ফেলছি। ওরা সংগ্র করবে কি এর আগেই ব্যাংক থেকে একজন এসে দেখে নারিকেল দুইটা নিচে পড়া। গাছে লাইট মারার আগেই নিজেকে গাছে উপরে আড়াল করলাম। নইলে বেটায় আমার এই অবস্থা দেখে নিশ্চিত ভয় পেত! উনি কাউকে না পেয়ে নারকেল দুইটা নিয়ে চলে গেল। আমাদের কাজ শেষ করলাম, গুনে গুনে ৪ টা গাছের নারকেল আর ৩০-৪০টা ডাব পেরে। স্যার যে বস্তায় বই ভরে নিয়ে গেছিলো সেই বস্তায় আমরা নারিকেল ভরে নিয়ে গেলাম হোস্টেলে।

আনার পর খাব কি করে সেটা কিন্তু কোন প্লান ছিল না তখন। মনে হয় রোজার মাস ছিল তাই দিনের বেলাও খাওয়া সম্ভব না। তো রাতেই খেতে হবে। এদিকে হোস্টেলের পাশের রুমে বটি আছে কিন্তু ওরা জানলে সর্বনাশ।বুদ্ধি বের করল আল আমিন আর কাওছার। ডাব স্টিলের স্কেল দিয়ে কেটে পান করা হল। কিন্তু নারকেল কি করে খাব সেটার একটা গতি করা দরকার। স্টিলের স্কেল দিয়েই আশ ছাড়ানোর পর নারকেল ভাঙ্গা বেশ সহজ ফ্লোরে আছাড় মারলেই হয়। কিন্তু পাশের রুমেই যেহেতু দিলিপ কুমার স্যার ঘুমাচ্ছেন সেই সাথে অন্যপাশের রুমে খাটাস রানা আর সোহেল ঘুমাচ্ছে এরা জানলে দিনের বেলা বাকীগুলাও যাবে। ঘুম ভাঙলে জেগে আছি এর জন্যই বেশি বকাঝকা করবেন দিলিপ স্যার । আমাদের নিয়ম রাত ১২ টার মধ্যে ঘুমাতে হবে ফজরের সময় মোসাদ্দেক স্যার ডেকে নামাজ পড়িয়ে পড়াতে বসাবেন। এখন বাজে আনুমানিক দুইটা।

শেষমেশ বুদ্ধি হল আমি আজান দেব, মানে যেই আল্লাহু আকবার বলব ওমনে বাঁ ওই আজানের তালে তালে নারকেল ফ্লোরে আছাড় দিয়ে ফাটাবে। একটা এরকম করে ফাটিয়ে খাইছি আরেকটা প্রসেস শেষ। যেইনা আজান দিচ্ছি স্যার ধমক দিয়া বলে নারকেল ভাঙ্গবি ভাঙ আজান দেশ কেন? কে কার আগে লাইট বন্ধ করে, নারকেল- ডাব লুকায়, সে এক হুলুস্থল অবস্থা। নারকেল ডাব লুকিয়ে ৫ মিনিটের মধ্যে সব নীরব।

সবার মনে এক ভয় সকালে যদি সহকারী প্রধান শিক্ষক জান, তো প্রতিশোধ আমাদের উপরই নিবে। সকালের যুদ্ধের ময়দানে পেঁদানি খাওয়ার মনোবাসনা নিয়ে চুপাচাপ শুয়ে ছিলাম সবাই। কিন্তু সকালে স্যার উঠে আমাদের পড়তে বসালেন যেন গতকাল রাতে কিছু হয়নি। বিকাল এ খালি এসে বললেন আমারে একটা নারকেল দিস! উনি যে একজন মজার স্যার ছিলেন এই একটা কথায় তা বুঝা যায়।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.