নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একে একে সব স্বপ্ন মাটি দিয়ে এখন প্রহর গুনছি দেহটা কবে আমাকে মুক্তি দেবে।

মিজানুর রহমান এএমএস

মৃত ব্যক্তির কোন অভিব্যাক্তি থাকতে নেই। স্বপ্নেরা নিছে ছুটি, আমি রয়ে গেছি দেহ টা বয়ে বেড়াতে।

মিজানুর রহমান এএমএস › বিস্তারিত পোস্টঃ

মশার আড়ত !

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:৪৩

এক রুমে তিনজন মানুষ গাদাগাদি করে থাকে। তিনটা খাট আছে থাকার জন্য, মাঝখানে একটু জায়গা ফাকা। প্রত্যেকটা খাটের পাশে একটা করে টেবিল রাখা। অগোছালো টেবিল, ছড়ানো ছিটানো কাপড়-চোপড়। তিনটা টেবিলের জন্য একমাত্র চেয়ার, সেটাও নড়বড়ে । একজন টেবিলে বসে ব্যস্ত গেম নিয়ে। আরেকজন পরীক্ষার পড়া নিয়ে। আর অন্যজন রুমেই থাকে না। এখন রাত একটা বেজে পনের মিনিট কিন্তু ওদের দেখে মনে হচ্ছে রাত মাত্র শুরু হয়েছে। মেসের সবাই কিন্তু এই চরিত্রের অধিকারী না। এই চিত্রিত মানুষের মাঝে বিচিত্র একজন আছে যে সন্ধ্যা ৮ তাঁর মধ্যে খাওয়া শেষ করে আর ঘুমায় নয়টার মধ্যে ওঠে সকাল পাঁচ কিংবা ছয়টায়। অথচ কেউ কেউ ভোর ছয়টায় ঘুমুতে যায়। আচ্ছা যাইহোক যে রুমের বর্ণনা দিচ্ছিলাম সেই রুমে মশার প্রকোপ প্রকাণ্ড রকমের। কয়েল লাগালে মশার যন্ত্রণা বেড়ে যায়। আর কারেন্ট না থাকলে এই রুমে তিরিশ মিনিট টিকে থাকা দায়।

এই রুমকে ঘিরে একটা কাহিনী আছে। সবাই একরকম নম্র , স্পষ্টবাদী কিন্তু একটু কিসের যেন অভাব আছে । একজন কথায় কথায় মজা দিয়ে থাকে, মানুষটা লম্বা কিন্তু একেবারে হ্যাঙলা পাতলা। ছিমছাম গড়নের, প্রোগ্রামিং এ হাত বেশ চালু। ক্যাম্পাসের একটা মেয়েকে সে পছন্দ করে বললে ভুল হবে বলতে হয় ভালবাসে। মেয়েটাকে নিয়ে ওর বন্ধু মহল থেকে শুরু করে বড়,ছোট সবাই খেপায়। পছন্দ করেছে কুমিল্লার ভিক্টোরিয়া কলেজের পড়ে আসা সুপরিচিত এক মেয়েকে। মেয়েটিকে নিয়ে এবার ঘটে যাওয়া টি২০ বিশ্বকাপ দেখার জন্য টিকেট পর্যন্ত যোগার করেছিল ।কিন্তু এক অজানা কারণে ছেলেটি খেলা দেখতেই পারেনি ।
মাঝে মাঝে দুজনের মোবাইলে কথা হয়। ছেলে ভাল তাঁর আরেকটা প্রমাণ আছে, প্রেম করবে এর জন্যে তাঁর মায়ের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। কিন্তু তাঁর মা করা ভাবে নিষেধ করেছেন, এ জন্য তাঁর মন খারাপ দুদিন যাবত। একদিন ইউসিতে বসে এক আপু এ নিয়ে তালিমও দিয়েছেন বটে, মেয়েটিকে ভুলে যাওয়ার জন্য, কারণ মেয়েটি প্রেম-ট্রেম করবে না। ফেবু স্ট্যাটাস এ স্পষ্ট কোন এক ছেলের সাথে চুটিয়ে প্রেম করছে হাতিটি । স্ব ঘোষিত হাতির হতাশার ছাপ সপ্তাহে কয়েকবার ভেসে উঠে ফেবুর স্ট্যাটাসে। ছেলেটি ওর চেয়ে বহুগুণ ভাল লেভেল এর। কিন্তু কে বুঝাবে ?
এই রুমে ভাল ছেলেটির এক বন্ধুও থাকে, ওই বন্ধুটি অনেকটা বন্ধু-সুলভ আবার মজা করতে ওস্তাদ, বন্ধুদের সাথে যেমন মিশুক তেমন জুনিয়রদের সাথে সিরিয়াস, পরিশ্রম করতে তাঁর কোন দ্বিধা নেই কিন্তু সিস্টেমের মধ্যে থেকে করতে পছন্দ করে। অল্পতেই রেগে যায় কিন্তু সেটা বেশিক্ষণ থাকে না। একটা নাটকের সহ-নির্দেশনা দিয়েছে সে। মেয়ে মহলে এক রহস্যময় ছেলে । তাঁর ডিপার্টমেন্টের দুইজন মেয়ে তাঁর পিছনে সব সময় ঘুরে কিন্তু ছেলেটা বুঝতেই চায় না। কোন এক ডিপার্টমেন্টের পুনর্মীলনীতে অডিটোরিয়াম এর শেষ শারিতে প্রিয় বান্ধবীকে নিয়ে মজে ছিল সারা সন্ধ্যা । কিন্তু তাঁর ভাষ্য মতে মেয়েটি আরেক জনের প্রেমিকা! প্রেম তাঁর দ্বারা হবে না, সে বিয়ে করবে পড়াশোনা দিয়ে। ঐ বিয়েটাই করুক।
আর রুমের বাকি একজন ব্যক্তি এখনো রুমে আসেনি, এই ব্যক্তি সহ চার বন্ধু এক জনের প্রেমে মজেছে। মেয়টাকে বড় ভাইদেরও পছন্দ হয়েছে এবারের পহেলা বৈশাখে। পহেলা বৈশাখে দেখলাম চারজনই আশে পাশে আছে। কেউ পানি খাওয়াচ্ছে, কেউ বা পান আবার কেউ একজন পায়েশ এনে দিচ্ছে। দেয়নি শুধু এই রুমের মানুষটি। কারণ হিসেবে যেটা দেখলাম তাতে দেখা যাচ্ছে এই ভাই অন্য মেয়ের প্রেমে জড়িয়ে গেছে। মানুষটিকে দেখে শেখার অনেক কিছু আছে। তাঁর অনেক গুলো টি-শার্ট আছে, মেসের উদ্বাস্তু একটা মেরে দেয়ার ধান্দায় আছে, কিন্তু খুব একটা সুবিধা করতে পারবে বলে মনে হয় না। উদার মানুষটি মাঝে মাঝে কৃপণ হতে বাধ্য হয়। তা না হলে খালি গায়ে থাকতে হত। এক প্রতিযোগিতায় অনেক গুলো বই প্রাইজ হিসেবে পেয়েছে। বইগুলো মেস পেরিয়ে অনেকের বাসায় চলে গেছে, তাঁর নিজের কাছে ঠিক কয়টা আছে গুনে দেখতে হবে।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:০৬

ব্লগার মাসুদ বলেছেন: দারুন লাগলো

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.