নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মৃত ব্যক্তির কোন অভিব্যাক্তি থাকতে নেই। স্বপ্নেরা নিছে ছুটি, আমি রয়ে গেছি দেহ টা বয়ে বেড়াতে।
এবার একটু রিলাক্স হয়ে ভাবলাম কে কে হতে পারে এই ফাজিল টা। প্রথমত আমি কন্ঠ শুনিনি, সুতরাং এটা কোন জেন্ডার তা জানি না।
দ্বিতীয়ত আগের প্রেমিকা হতে পারে, আমার প্রেম হয়েছে কিনা সেটা জানার জন্য চেষ্টা করতে পারে্ যে আবার প্রেম শুরু করছি কিনা, প্রেম করলে মেয়েটা কে।
তৃতীয়ত, ঐ আপুও হতে পারে, সে জানতে চেষ্টা করতে পারে যে, আমি তার বোনের প্রেম এ গদগদ করছি নাকি? অথবা তাঁর বোন আমাকে ভালবাসে কিনা।
চতুর্থঃ, কোন ছেলে আমাকে খেপানোর আপ্রাণ চেষ্টা করতে পারে । সব বিষয় চিন্তা ভাবনা করে মোবাইল বন্ধ করে ঘুম দিলাম।
সকালে চালু করতেই ভয় লাগছিল, আবার কি লিখছে কে জানে? তবুও চালু করলাম, ঐ নাম্বার থেকে চারটা টেক্সট। না পড়েই দিলাম ডিলিট করে। ক্লাস করে বিকালে ঈশাদের বাসায় গিয়ে ঐ নাম্বার এ টেক্সট করলাম, কোথায় তুমি? কোন উত্তর নেই কিন্তু নাম্বার চালু, কল করলাম কিন্তু কোন রেসপন্স নেই। এবার ঈশাকে কিছুটা সন্দেহ হল। আমার মামা ঢাকায় র্যাব-১ এ চাকরি করেন। এটার ইঙ্গিত দিলাম। এবার কেমনে আমি বের করতে পারি তার বিবরণ দিলাম। কিন্তু কাজ হল না। বুঝলাম ঈশা এটা করেনি। তাই নিঃসন্দেহে পড়াতে লাগলাম।
আমি যে ভিশন বিরক্ত তা সে বুঝে গেছে। আমি মাঝে মাঝে বলি এখনো ঐ নাম্বার আমাকে জালাচ্ছে। কয়েকদিন কিছু বললাম না ঈশাকে দেখি কি করে। আগের প্রেমিকার সাথে তো কথাই বলি না। ঐ আপুর সাথে তো কথা হয় না অনেক দিন। একটা ভুলের কারণে কথা বলা বন্ধ করে দিছে। কারো সাথে শেয়ার করতে পারছি না। তাই ফেসবুকের আশ্রয় নিলাম। নাম্বারটা দিয়ে একটু বের করতে বললাম কিন্তু কেউ কোন সুখবর দিতে পারলনা। শেষ পর্যন্ত পরাজিত হয়ে হাল ছেড়ে দিলাম।
ঈশাকে বললাম এবার ঈদ এ বাসায় গিয়ে মামাকে বলব যেন এই নাম্বার এর মালিক কে খুজে বের করে দেন। কিন্তু কোন কাজ হল বলে মনে হল না। তাসফিয়া জান্নাত নিত্যদিন বিরক্ত করতে লাগল, ঈশা এই সুযোগ নিয়ে আমকে একটু একটু করে গ্রাস করছে। আমিও একটু একটু করে ছাড় দিচ্ছি, আমি যে নির্দোষ সেটা বলছি না।
রোজায় পড়বে না। তাই রোজার দুদিন আগে বিদায় নিয়ে চলে এলাম, আমি নিজেকে সরিয়ে নিতে চাইলাম এই সুযোগে, এখনো ভাল আছি। আমি মনোযোগ দিলাম নিজের প্রতি। রোজা শুরু হল, ইফতারের বাজার করে রুম এ বসে আছি। আবার ঐ জান্নাত, জাহান্নামের বানি নিয়ে এসেছে। মাঝে মাঝে টেক্সট পড়ি, আজ ও পড়লাম। “ আপনি আমার ফোন রিসিভ করেন না কেন? প্লিস আপনার কথা না শুনলে আমার ঘুম ধরে না। প্লিস প্লিস”।
একটু পরেই কল এলো রিসিভ না করে সাইলেন্ট করে রেখে দিলাম। ইফতার করে দেখি অনেক গুলো মিসকল, আম্মু আর ঈশার বড় আপুও আছে। আম্মুর সাথে কথা বলে আপুকে কল করলে তিনি বললেন এতক্ষন ধরে কল করছি রিসিভ করতেছ না কেন? আমি যেটা ঘটনা সেটা বললাম, বলল ঐসব আজে বাজে নাম্বার এর জন্য কি আমরাও সঠিক সময় তোমাকে পাব না? বললাম পাবেন, ব্লক লিস্ট এ দিয়ে দেব। এই মোবাইল এ নেই। ঈদের পর নতুন মোবাইল নেব। ঈশা তোমাকে যেতে বলছে। কাল গিয়ে দেখ কি বলে। ওর নাকি অনেক প্রবলেম হচ্ছে একা পড়তে। দেখি বলে রেখে দিলাম।
মাথায় হাত ফেসে গেলাম তাহলে। আমি এমন কেন? না করতে পারিনা কেন? না শব্দটা কেন যে আসে না , জানি না। দুপুর তিনটায় গেলাম, বলল কাল থেকে ইফতারের পরে আসবেন । রোজা থেকে পড়তে ভাল লাগে না। বললাম ঠিক আছে, পড়াতে শুরু করলাম, বলল আপনি এমন কেন? কিসে এতো দেমাগ? আপনি আমাকে পছন্দ করেন না? বললাম কেন বলতেছ এসব?
দেখুন আপনি আমাকে ভালবাসেন কিন্তু বলেন না কেন?
আমি এবার বলেই ফেললাম এতে তোমার লাভ কি? আর তোমাকে ভাল বাসব কেন? শোন আসলে তোমাকে অপছন্দের কিছু নেইতো।
আপনি তো পা সরিয়ে নেন না। আর ......
আর কি? আচ্ছা তুমি কি প্রেম কর?
না। ধমকের শুরে বলল সে,
আগে করতে?
এসব কি বলেন? আমি তো কথাই বলতে পারি না, প্রেম করব কেমনে?
আচ্ছা, আমি কি তোমার প্রথম?
না শততম। আপনাকে একটু আগে বললাম যে প্রেম করিনি, সুতরাং বোঝা উচিত ছিল আপনি... আর কিছু বলল না। আমি বললাম দুদিন ভেবে দেখি ।
ঈশা রেগে বলল ভাবাভাবি বাদ, আপনি আমাকে পছন্দ করেন, বলেন করেন না,
তুমি আমার ছাত্রী, তোমাকে ঘৃণা করব কেন?
তাঁর মানে আপনি আমাকে ভালবাসেন?
আমি প্রতিবাদ করলাম, না, আমি এসব এর মধ্যে নেই। আমি গেলাম । কাল থেকে আর আসব না। বলেই রওনা হলাম। কিন্তু আবার সেই পিছন থেকে হাত...............
পরের দিন থেকে ইফতার পরবর্তি সময়ে পড়ানো শুরু করলাম। প্রথম দিন কেমন একটা আবহ তৈরি হল। আগের মত কথা বলতে পারি না। ধমক দিতেও কেমন মুখ বন্ধ হয়ে আসে, পড়া শেষ করেনি কিন্তু একবারও কিছু বললাম না, দুদিন এভাবে গেল, কেমন একটা প্রেম প্রেম ভাব চলে আসে। পড়াতে পারি না। গল্প শুরু করে দেয় সে। আমিও কিছু বলতে পারতেছি না। এ জন্যেই কি সে আমাকে?? প্রশ্ন জাগল মনে। তবুও পড়াচ্ছি। ১৭ জুলাই প্রথম প্রেমের পরিচয় হল। হাত ধরে কি যেন বলল আমি বরফের মত গলে পানি হয়ে গেলাম। আমি রুহান বাসায় ফিরে খুব শিহরিত হচ্ছিলাম। নিজের কাছে একটু খটকা লাগলেও মনে হল বিয়ে তো করবই এত দ্বিধা কেন? এবার মনে হল ঐ নাম্বারটা ঈশার, র্যাব দিয়ে বের করতে পারলে ঐ নাম্বার এর মালিককে জেলে ভরতে বাধ্য হব জেনে, ঈদ এ যাওয়ার আগে একটা চিঠি দিল। বাসা থেকে বের হয়ে দেখি।
স্যার
আমি আপনার পা ধরে বলি আপনি আপনার মামাকে বলবেন না, ঐ নাম্বারটা আমার এক বান্ধবীর, নাম দিয়াসা, ওই আমাকে বলতে বারণ করেছিল। প্লিস মাফ করে দিন ওকে।
আমি বিশ্বাস করে নিলাম। কিচ্ছু করলাম, আর টেক্সট ও দেয় না। অনেক দিন ধরে। তাই আর ঘাটাঘাটি করলাম না। বাসা থেকে ফুরফুরা মেজাজে ফিরলাম। ফিরে শুনি ওর একটা সমস্যা হইসে। আসলে ঘটনা কি বলল না, পড়াতে আর ভাল লাগে না, তবুও যেতে হয়। আম্মুকে বললাম, আম্মু বলল, দেখ রুহান, তুই এখনো পড়াশোনা শেষ করিস নাই, তুই তোর পছন্দেই বিয়ে করিস কিন্তু আগে নিজের পায়ে দাড়াতে শিখ।
সপ্তাহে তিন দিন এর জায়গায় চারদিন যেতে হয়, একটা অংক করতে নেয় বিশ মিনিটের পরিবর্তে চল্লিশ। সময় বেশী নেয়ার কারণে অন্য টিউশন টা হাত ছাড়া হয়ে গেল। তবুও ভাল, একটা সময় বুঝতে পারলাম অনেক বড় একটা ট্র্যাপে পরে গেছি।
আসল ঘটনা জেনেছি অনেক দিন পর। শততম কথার অর্থ টা যে বুঝিনি, যেদিন বুঝলাম ততদিনে লালনের বিখ্যাত গান “ সত্য কাজে কেউ নয় রাজি” এর একটা লাইন বার বার মনে পড়তে ছিল, “ গোপনে যে বেশ্যার ভাত খায়, তাতে ধর্মের কি ক্ষতি হয়”
রুহান কি শেষ পর্যন্ত লালন সাঁই এর কথা রাখতে পারছিল? নাকি সভ্য সমাজের তালিকাতে নিজের নাম লিখে ভদ্র মানুষের মুখোশ পরেছিল? আর সেই শততম এর কি অবস্থা? শুনেছি রুহান খুব চেষ্টা করেছে সেই বালিকার একটু সাক্ষাৎ পেতে, বালিকা কেমন আছে সেটা ও জানে না। ভাল নাকি খারাপ, আর শততম এর প্রথম জন এর সাথে কি তাঁর আজও চলছে?
সকল প্রশ্নের উত্তর কেবল ইশা জানে, রুহান শুধু জানে শত দুর্ঘটনার মাঝে সে নিজে একজন আহত রোগী। সেরে উঠতে সময় লাগবে কিন্তু শরীরের একটা অঙ্গ প্যারালাইজড হয়ে গেছে, ভাল হলে হতেও পারে, না হলে আশ্চর্যের কিছু নেই।
(কল্পনার আধারে লিখতে বসেছি, একটু আধটু কোন ব্যক্তির সাথে যদিও মিলে যায়, প্লিজ ব্যক্তিগতভাবে নিবেন না, ব্যক্তিগতভাবে নিলে আমি দায়ী নই ।
©somewhere in net ltd.