নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মনে ও মননে রবীন্দ্রনাথ ও লালনকে ধারন করেছি তাই মানুষেই পরম ভক্তি।
মা,
তোমার জন্য শুধুমাত্র একটি দিন তুলে রাখা আমার পক্ষে সম্ভব না। আশৈশব লালিত আমার একটি উচারিত শব্দে আত্মার অনুরণন অনুভব করি। আর আত্মা ছাড়া এই দেহটার কি কোন মূল্য দেয়া সম্ভব ?
মা,
নয় মাসের কষ্ট সহ্য করে তোমার মা হওয়ার পর থেকে তোমার জীবনের এক নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে। তারপর থেকে তোমার পূর্ণতার দিকে যাত্রা শুরু। স্রষ্টার কাছ থেকে পাওয়া একটি সপ্রাণ অস্থি মাংসের দেহ তোমার প্রচেষ্টায় শুধু মানুষ হিসেবে প্রকাশ পেয়েছে। আজ যখন লিখছি তখন নিজেকে মানুষ বলেই চিন্তা করতে পারছি কেবল তোমার জন্য। জানি না কর্মে তোমার প্রয়াসটাকে কতটা বাস্তব করতে পেরেছি।
মা,
বয়সের ভারে নুব্জ রোগাক্রান্ত দেহটাকে তুমি বয়ে বেড়াচ্ছ। আমার সাধ আর সাধ্যের সম্মিলন তোমার আরোগ্য লাভের জন্য যথেষ্ট হয়ে ওঠে নি আজও। তবু এ যন্ত্রণা নিয়েও আমার সুস্থ, আমার শুভ কামনায় তোমার সদা সচেষ্ট থাকা এর থেকে বড় আর কি প্রাপ্তি আমার জীবনে থাকতে পারে। তোমার যন্ত্রণাকাতর নির্ঘুম রাতের অশ্রুর কোন মূল্য কি আজও আমি দিতে পারছি ? অসম্ভব বলেই হয়তো।
মা,
আমার ও বয়স বাড়ছে। সংসারধর্ম আক্রান্ত আমি। নিজের সন্তানকে লালন পালনের ভার নিয়েছি বাবা হিসেবে। কিন্তু আমি জানি আমার পর তুমিই আমার সন্তানকে নিজের অখণ্ডআত্মা জেনেছো। শুধু দায়িত্ব থেকে কারো পক্ষে এটা সম্ভব নয়। কিন্তু তুমি জানো না যে পৃথিবীটা বড়ই অকৃতজ্ঞ। আমার সন্তানও তোমাকে আত্মা জ্ঞান করে আমি জানি। কিন্তু তারপরও সেখানে বিচ্ছিন্নতা অবশ্যম্ভাবী হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মা,
জানি তুমি কখনই আমার এই লেখাটা পড়বে না। কিন্তু আমি জানি আত্মার অনুরণণ আমি কখনোই অগ্রাহ্য করতে পারবো না। এই লেখায় বারংবার মা সম্বোধন সাহিত্য বিচারে হয়তো লেখাটাকে দুর্বল চিহ্নিত করবে সমালোচকদের কাছে। কিন্তু আমার কাছে তা মুখ্য নয়। এখানে প্রতিবার লেখার সময় আমার প্রাণের অনুরণণটাকে আমি অনুভব করেছি। এটা সন্তান হিসেবে তোমাকে লেখা আমার প্রথম চিঠি মাত্র। কোন সাহিত্য রচনার ইচ্ছাপ্রসূত রচনা নয়।
মা,
আরো অনেক কথাই তোমাকে বলতে চাইছিলাম। কিন্তু আবেগ আপ্লুত ভাষণ ভেবে লোকের সহানুভূতি কড়ার প্রয়াস বা পাঠক বাড়ানোর চেষ্টা মনে করতে পারে। তাই এখানেই শেষ করছি।
ইতি
তোমার সন্তান
©somewhere in net ltd.