নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
“ মানূষের জীবনকাল মাত্র দুই দিনের যার একদিন যায় স্বপ্ন দেখতে- একদিন যায় স্বপ্ন ভাঙ্গতে ” ।
'আরাকানের' এই মাটিতেই
বাপ- দাদাদের ভিটা /
এই মাটিতে আছে মায়ের
'রক্ত- নাড়ি'র ছিটা ।
তোমরা যতোই কোপাও মোদের
এই কোপানো শেষ না /
যতোই বলো 'বাংলা' তোমার-
'বাংলা' আমার দেশ না ।
যতোই দেখাও পোড়া চোখে
সামনে বুকের মানিক/
'বুটপায়েতে' গলায় বুকে
পিষ্ট করো খানিক ।
কিংবা ছুরি-বেয়নেটে
বহাও রক্ত গঙা/
সহস্র বার বলবো হেসে
আমিই 'রোহিঙ্গা' ।
যতোই করো আজ আমাদের
'নারীর' সম্ভ্রমহানি/
'নরক যন্ত্রণা' দিয়ে
ঝড়াও চোখের পানি ।
কিংবা পা-হাত কেটে
তাদের জীবন করো শেষ /
চিৎকারে বলবো লক্ষ বার
'রাখাইন' আমার দেশ ।
'ইতর তোরা জংলি পশু'-
'ধ্বংসেই' হও সূখী !
তোদের আছে 'ডাইনি মাতা'
'অং সান সুকি' ।
মোদের 'রক্ত' পান করে-
যার 'তৃপ্তি টুকুই' শেষ না ;
যতোই বলো 'বাংলা' তোমার
'বাংলা আমার দেশ না !!'
___________
নৃতাত্ত্বিক ও ইতিহাসবিদদের মতে, বাংলার সঙ্গে আরাকানের রয়েছে হাজার বছরের দীর্ঘ সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক যোগসূত্র। আরাকানে রোহিঙ্গা মুসলমানদের বসতি হাজার বছরের পুরনো। ঐতিহাসিক এন এম হাবিব উল্লাহ রচিত ‘রোহিঙ্গা জাতির ইতিহাস’ বইয়ে লেখা হয়েছে, ৭ম শতকে আরব বণিকদের মাধ্যমে আরাকানের সঙ্গে মুসলমানদের প্রথম পরিচয় ঘটে। আরাকানের চন্দ্রবংশীয় রাজবংশের সংরক্ষিত ইতিহাস ‘রদজাতুয়ে’ এ তথ্য উল্লেখ রয়েছে। ঐতিহাসিকদের কেউ কেউ এ সম্পর্কের সূত্রপাত দেখিয়েছেন খলিফা হজরত ওমর বিন আব্দুল আজিজের সময়কালে। নানা ইতিহাসগ্রন্থের সাক্ষ্য মতে, ১৪০৬ সালে মিয়ানমার রাজা আরাকান আক্রমণ করলে রাজা নরমিখলা বাংলার রাজধানী গৌড়ে এসে আশ্রয় নেন। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে তিনি সোলায়মান শাহ নাম ধারণ করেন। ১৪৩০ সালে গৌড়ের সহায়তায় আরাকান পুনরুদ্ধার করেন। ১৫৩০ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১০০ বছর গৌড়ের সুলতানকে কর দিতো আরাকান। ১৫৩০ সালের পর গৌড়ের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের সুযোগে আরাকান স্বাধীন হয় এবং ১৭৮৪ সাল পর্যন্ত আরাকান ম্রাউক উ রাজবংশের অধীনে শাসিত হয়। দীর্ঘ এ সময় পর্যন্ত আরাকানের সব শাসক তাদের নামের সঙ্গে মুসলিম উপাধি ব্যবহার করতেন। গৌড়ের অনুকরণে তাদের মুদ্রার এক পিঠে আরবিতে কালিমা ও রাজার মুসলিম নাম ও তার ক্ষমতা আরোহণের সময় উল্লেখ থাকতো। সরকারি ভাষা ছিল ফার্সি এবং সৈনিকদের প্রায় সবাই ছিল মুসলমান। পরে জেকুক শাহ’র আমলে পর্তুগিজ নৌ-সেনাদের সহায়তায় মগদের নিয়ে গঠিত তাদের নৌবাহিনী পরবর্তীতে জলদস্যুতে পরিণত হয়। মগ জলদস্যুরা চট্টগ্রামসহ বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় নির্বিচার লুণ্ঠন আর হত্যাযজ্ঞ চালায়। এ সময় অগণিত মুসলমান নর-নারী ধরে নিয়ে যায় আরাকানে এবং তাদের দাস হিসেবে বিক্রি করে। এভাবেও বিপুলসংখ্যক মুসলমানের আগমন ঘটে আরাকানে। ১৭৮৪ সালে বার্মার রাজা ভোদাপায়া দখল করে নেয়ার পর তাদের অধীনে শাসিত হয় আরাকান। ১৮২৬ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সঙ্গে যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পর সংঘটিত চুক্তিতে আরাকান, আসাম ও ত্রিপুরার ওপর থেকে দাবি প্রত্যাহার করে তৎকালীন বার্মা সরকার। ১৯৪৮ সালে বৃটিশ শাসন থেকে মিয়ানমার স্বাধীন হলে আরাকানকে মিয়ানমারের ভাগেই দেয়া হয়। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, ১৭৮৪ সালে বার্মার রাজা ভোদাপায়া (আরাকান) দখল করে নিয়ে এককালের স্বাধীন আরাকান রাজ্যের বিলুপ্তি ঘটার পাশাপাশি বর্মী বাহিনীর অত্যাচারে রোহিঙ্গা হিন্দু-মুসলিম, রাখাইন নির্বিশেষে দলে দলে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে প্রবেশ করে। বর্মী বাহিনীর হত্যা ও নির্যাতন থেকে বাঁচতে ১৭৯৮ সালে আরাকানের তিন ভাগের এক ভাগ জনসংখ্যা আশ্রয় নেয় চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে। ১৯৪৮ সালে বার্মা বৃটিশ কর্তৃক স্বাধীনতা লাভ করার পর পর বিপুলসংখ্যক আরাকানি চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে আসে। বিশেষ করে মিয়ানমারের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এসেছে পার্বত্য চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় দুটি জনগোষ্ঠী চাকমা ও মারমা জনগোষ্ঠী। এছাড়া বৃটিশ আমলসহ বিভিন্ন সময়ে এসব অঞ্চল একই প্রশাসনের অধীনে থাকায় নানা সময়ে নানা জনগোষ্ঠীর মানুষ মিয়ানমারে যেমন গেছে, তেমনি এসেছে বাংলায়। ইতিহাসের বিভিন্ন বাঁকে বঙ্গ এবং চট্টগ্রাম থেকে যেমন মানুষ আরাকানে গেছে তেমনি আরাকানসহ মিয়ানমারের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে দলে দলে রাখাইন, চাকমা ও মারমা জনগোষ্ঠীর লোকজন এসেছে বাংলাদেশে। বর্তমানে তারা চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও পটুয়াখালীসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন উপকূলীয় অঞ্চলে বসবাস করছেন। ইতিহাসবিদরা বলছেন, মিয়ানমারের ইতিহাসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর নাম। মাত্র দুই দশক আগেও বার্মার মূলধারার রাজনীতি এবং নির্বাচনে ছিল তাদের উজ্জ্বল উপস্থিতি। কিন্তু দেশটির সামরিক জান্তা দেশ, রাজধানী, আরাকান, আকিয়াবের নামের মতোই পাল্টে দিয়েছে অনেক কিছুই। সুপরিকল্পিতভাবে মুছে ফেলতে চাইছে একটি জাতিগোষ্ঠীর চিহ্ন। ১৯৮২ সালে বিতর্কিত এক আইনের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়ার পর রোহিঙ্গাদের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করে না মিয়ানমার। রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ থেকে যাওয়া অভিবাসী হিসেবে প্রচারণা চালাচ্ছে দেশে-বিদেশে।
বর্তমান এই সভ্য বিশ্বে এ অবস্থা এক বিরল দৃষ্টান্ত হিসেবে ইতিহাসে উল্লেখ থাকবে ।
( তথ্য উপাত্ত সংগৃহীত ) ।
০৬ ই অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৮:৫২
আহমেদ রুহুল আমিন বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ ।
২| ০৬ ই অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৯
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: ভালো লাগলো কবিতা পোস্ট
০৬ ই অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৮:৫৩
আহমেদ রুহুল আমিন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ মেডাম, ভালো থাকবেন ।
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৯:৫৯
শেখ রফিকুল হক বলেছেন: তথ্যবহুল লেখা। ধন্যবাদ।