নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একটি পথ, আপনি চাইলে হেঁটে দেখতে পারেন....

জীয়ন আমাঞ্জা

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দর্শন হল হিসাব বিজ্ঞানের ডেবিট এবং ক্রেডিট । সবসময় যতখানি ডেবিট, ঠিক ততখানিই ক্রেডিট হয় । পরকালের হিসেব যা-ই হোক, এই ইহকালে আমরা ঠিক যেভাবে শূন্য হাতে পৃথিবীতে এসেছি, সেভাবে শূন্য হাতেই পৃথিবী ছেড়ে যাব । এটাই পৃথিবীর আবর্তনিক নিয়ম । অনেকে আমরা এটা বুঝতে ব্যর্থ হই ।আপনি কারো ক্ষতি করবেন তো আজ অথবা কাল আপনার ক্ষতি হবেই হবে । ভালো করলেও তার ফল আপনি জীবদ্দশাতেই পাবেন ।অনেকে দেখবেন রাস্তাঘাটে অযথা হোঁচট খায়, অসুখে ভোগে- এসব এমনি এমনি নয়, হয় এর অতীত, নয়তো ভবিষ্যৎ প্রসারী কোন কারণ আছে । যদি আপনি কারো ক্ষতি না করেন, তবে আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি, আপনার কোন ক্ষতি হবে না । কেউ চেষ্টা করলেও আপনার ক্ষতি করতে পারবে না ।শুদ্ধ থাকুন, শুদ্ধতার শুভ্রতাকে উপভোগ করুন । জীবন সুন্দর হবে ।আমি সবার মতের প্রতিই শ্রদ্ধাশীল।আশা করি আপনিও তাই।সৌজন্যবোধ ও মানবতার জয় হোক !

জীয়ন আমাঞ্জা › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে বলছি

২৬ শে আগস্ট, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৬

যেকোন দেশের জনগোষ্ঠী হয় তিন প্রকার।

১. এরা যে দলকে পছন্দ করে দুনিয়া উল্টে গেলেও সেই দলের বিরুদ্ধে যায় না। সেই দলকেই ভোট দেবে। সেই দলকে জিতিয়ে দিতে নিজের জান পর্যন্ত দেবে, অপরের জান নেবেও!

২. এরা কোন দলই করে না, ভোটও দিতে যায় না!

৩. এরাই আসল গেইম চেইঞ্জার। এরা সরল মানুষ, অল্পতেই কনভিন্সড হয়, একটু পরই বিশ্বাস হারায়, আবার একটু পর আরেকজনকে বিশ্বাস করে! ফলে এরা একবার আওয়ামীলীগকে ভোট দেয়, দিয়ে ঠকে, তারপর বিএনপিকে ভোট দেয়, দিয়ে ঠকে, তারপর আবার নৌকায় ওঠে, বিশ্বাসে চোট পায়, আবার ধানে ওঠে! এই পক্ষটাই সাধারণত একবার নৌকা একবার ধানের শীষকে জিতিয়ে এসেছে পর্যায়ক্রমে।

এই তৃতীয় নম্বরের জনতাই আসলে মূল জনতা, এরাই গেইম চেইঞ্জার যেহেতু এবং এদেরকেই যেহেতু অল্পতেই কনভিন্স করা যায়, তাই যাবতীয় প্রচারণা, অপপ্রচারণা, ক্যাম্পেইন সব এই জনতাকে ঘিরেই৷ এই জনতার শক্তি বেশি, আবার সরলতাও বেশি, ফলে ভুলের ভয়ও এদের তরফ থেকেই বেশি।

আমি স্রোতের বিপরীতে বলার কথা বলছিলাম, অথচ এখনও পক্ষেই বলে যাচ্ছি, বিপরীতটা তবে কী? বিপরীতটা হল আপনার চারপাশে ঘুরতে থাকা এজেন্ডা! সেইসব হৃদয়গ্রাহী এজেন্ডা যা সহজেই আপনাকে কনভিন্স করে আরেক দিকে নিয়ে যাবে।

আরেকটু আঁতলামি করে মূল কথায় আসি। আমরা যখন কোন ভিডিওতে দেখি একটা হরিণকে একটা বাঘ তাড়া করছে, কিংবা একটা মহিষকে একটা কুমির তাড়া করছে, আমাদের বুক ঢিপঢিপ করা প্রার্থনা এটাই হয় যে, ঈশ্বর বাঁচিয়ে দাও, ওকে বাঁচিয়ে দাও!
তাই না? আমাদের সব মায়া, সব সফট কর্ণার ভর করে ওই আক্রমণ হওয়া প্রাণীটির প্রতি! আক্রমণ হওয়া গরু বা হরিণটি বেঁচে গেলে আমরা আনন্দে হাততালি দেই! আক্রমণ করা বাঘ বা কুমিরটি হতাশ হয়ে চলে যায়, আমরা সেটা খেয়াল করি না!

এবং আমরা এটাও ভাবি না যে, ওই বাঘটা বা কুমিরটারও তো খাবার ছিল এই প্রাণীটাই! ও তাহলে খাবে কী?

নিয়মটা প্রাকৃতিক, ঠিক যে নিয়মে আপনি মুরগি খান, গরু খান, কিংবা শাকসবজি খান (উদ্ভিদেরও প্রাণ আছে, ব্রো)!
এই একই কনসেপ্ট পরশু থেকে দেখা যাচ্ছে বিচারপতি মানিককে ঘিরে! মানিক অসুস্থ, আপনাদের বুক ফেটে জামা ছিঁড়ে যাচ্ছে! আপনাদের সেন্টিমেন্ট নিমিষেই ভুলে যাচ্ছে সে কতবড় হায়েনা! দ্যাটস ইট!

ইয়েপ, মূল ঘটনা ওটা নয়, এখন ঘটনায় আসি।

আপনাদের সম্ভবত গণিত শিক্ষক পরিমলের কথা মনে আছে, আছে না?
না থাকুক, বাদ দেন, বেডা মানুষ, বলে চলে যাবেন না, জাস্ট "শিক্ষকের অনৈতিক"— এইটুকু লিখে গুগলে সার্চ দেন৷ সহকর্মীর সঙ্গে তো পাবেনই ছাত্রীদের জিম্মি করে একেকজন মহান মোমবাতিহস্তেধারী শিক্ষক তাদের সঙ্গে কত অনাচার করছে, তার হাজার ফিরিস্তি পেয়ে যাবেন। আপনি কি সেই শিক্ষককে শ্রদ্ধা করেন?????
শিওর, করেন না।

আপনি শ্রদ্ধা করেন আপনার জীবনে পাওয়া পরম পবিত্র শিক্ষক মানুষটিকে। আপনার শিক্ষক যতটা মহান, পরিমল ততটা মহান নয়। সিম্পল। আপনি আমি এই বয়সেও আমাদের শিক্ষকদের দেখে যেভাবে কাচুমাচু হয়ে সালাম দেই, আপনার কি মনে হয় না বর্তমান প্রজন্ম সেই সম্মানটা একদমই বোঝে না???
অবশ্যই বোঝে।

আপনি নিজে একজন টিচার হলে এ সম্পর্কে আরো বেটার উত্তর দিতে পারবেন। আপনি বলুন আগে, আপনার ছাত্রছাত্রীরা আপনাকে সম্মান করে না অসম্মান করে??
যদি সম্মান করে কেন করে? যদি অসম্মান করে সেটাই বা কেন করে?
যদি আপনাকে অসম্মান করে, অথচ অন্য একজন শিক্ষককে অত্যন্ত সম্মান করে, সেটাও তাহলে কেন করে?
যদি আপনাকে সম্মান করে, আর অন্য একজন শিক্ষককে খুবই অপছন্দ করে তাহলে সেটারই বা কারণ কী???

জাস্ট এইটুকু যদি স্পষ্ট সত্যি হিসেবে বলতে পারেন তাহলে আর কোন ক্যাচাল থাকেই না।

একেকটা প্রতিষ্ঠানে প্রিন্সিপালের সঙ্গে একেকরকম আচরণ হচ্ছে, যা দেখলে কষ্ট লাগে! আমি ওই শিক্ষার্থীদের বাবা মাকে দোষ দেবার আগে, ওই শিক্ষার্থীদের অভিশাপ দেবার আগে প্রশ্ন করতে চাই, ওই প্রতিষ্ঠানের আর সব শিক্ষককে পদত্যাগ না করিয়ে বিশেষ একজনকে পদত্যাগ করানোর বা তার ওপর সব শিক্ষার্থীর একযোগে ক্ষিপ্ত হবার কারণ কী? সেই টিচার খুব নীতিবান বলেই?? সেই টিচার খুব ভালো পড়ায় বলেই????

ইজ ইট???
রিয়েলি ইজ ইট???
দেশের সব প্রতিষ্ঠানেই এই পদত্যাগ হচ্ছে, না কিছু কিছু জায়গায় হচ্ছে??
সেই কিছু কিছু জায়গায় হবার কারণ কী?

আমি নিজে শিক্ষকতা করেছি, শিক্ষা নিয়ে ব্যবসায় করতে চাইনি বলেই শিক্ষকতা ছেড়েছি! আমি অসংখ্য শিক্ষক দেখেছি, ভুল পড়ায়, অসংখ্য শিক্ষক দেখেছি নৈতিকতাহীন, দেখে প্রতিবাদ করে কমিটির সঙ্গে ফাইট করে শেষে বিরক্ত হয়ে শিক্ষকতা ছেড়েছি৷ আমার ছাত্ররা এখনও পথে দেখা হলে দাঁড়িয়ে সালাম দেয়, কেউ কেউ কদমবুসিও করে বসে! আপনি আমি শিক্ষক হলেই সবাই সম্মান করবে এই অলিখিত প্রার্থনা ছেড়ে দিন, আপনি সম্মান অর্জন করতে পেরেছেন কি না আগে সেদিকে তাকান! বাংলাদেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের অপমান লাঞ্ছিত করা হচ্ছে না, তাদেরকেই করা হচ্ছে যারা ছাত্রদের কাছে সম্মান অর্জন করতে পারেনি, যারা পড়ানোর চেয়ে ব্যবসায় হিসেবে পরিচালনা করেছে প্রতিষ্ঠানকে, যারা প্রতিষ্ঠানে রাজনীতি ফলিয়েছে, এবং আরো ভালনারেবল বিষয়— তারা ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পাশে তো দাঁড়ায়ইনি, বরং টিসি দেবার ভয় দেখিয়েছে, ছাত্রদের লাশ পড়লেও, গুলি হলেও ছাত্রদের আগলাতে আসা তো দূর, কলেজের গেইট পর্যন্ত খোলেনি!

যে দাঁড়িওয়ালাকে কানে ধরে ওঠবস করানো হয়েছিল, আপনারা আহা উহু করেছিলেন, পরে ঠিকই জানলেন, সেই লোক সম্মান পাবার যোগ্য না, সে ধর্ষক মহিব্বুলাহ! তখন আবার স্বীকার করলেন, জেনারেশন ভুল করেনি। অতএব, আবেগ প্রকাশের আগে তদন্ত করুন একটু।

পুনশ্চ—
১. আমার এক পঁয়ষট্টি বছরের শিক্ষককে খুব ভক্তি করতাম, সেই শিক্ষক আমার এক দরিদ্র ক্লাসমেটকে কম বেতনে পড়ানোর সুবাদে তার স্পর্শকাতর শরীরে হাত দিয়েছিল! এরপর আমি কী করেছি, আপনারা কল্পনাও করতে পারবেন না৷ না বললাম সেটা, শুনলে আপনারা আবারও হায় হায় গেল গেল আরম্ভ করতে পারেন৷

২. শুধু রাজনৈতিক কারণে যে শিক্ষককে আমি সবচেয়ে বেশি জ্বালিয়েছিলাম, আমার সবচেয়ে দরকারের সময় সেই মহান শিক্ষকই আমাকে তাৎক্ষণিক সহযোগিতা করেছিলেন৷ তাঁর মৃত্যতে তাঁর এই সকল মহানুভবতা নিয়ে আমিই বিবৃতি দিয়েছিলাম।

৩. আমি পার্শিয়াল নই, অবিবেচকও নই। আমি জানি, কিছু জায়গায় এমনও হয়েছে, যেখানে প্রিন্সিপাল কঠোর নিয়মতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতেন বলে তার প্রতি ছাত্রদের উস্কানি দিয়ে জল ঘোলা করে ফায়দা নেবার চেষ্টা করেছে অনেক কুচক্রী সাধারণ শিক্ষক! এমন শয়তানও আছে! শিক্ষার্থীদের একেকটি স্টেপের ওপর এখন দেশের অনেক ভাবমূর্তি, অনেক সিদ্ধান্ত, অনেক কিছুই নির্ভর করে, তাই শিক্ষার্থীদের মানুষ চিনতে হবে, তোমাদের মাথায় হাত রেখে কেউ ফায়দা নিতে এলে তাকে তোমরা চিনবেই, এটা আমি বিশ্বাস করি, তোমরাও এর প্রমাণ আন্দোলন থেকে শুরু করে প্রতিটি পদক্ষেপে দিয়ে এসেছ!

এরপরও কোন শিক্ষকের প্রতি অন্যায় হয়ে থাকলে সেই শিক্ষকের পুনরায় কর্তৃত্ব ফিরে পাবার আইনি সুযোগ আছে। কোন শিক্ষকের প্রতি অবিচার হবার ক্ষেত্রে আমি এখনও এমন শিক্ষককে দেখলাম না যিনি ছাত্রছাত্রীদের পদত্যাগ করাতে আসার সময় বুক ফুলিয়ে বলতে পেরেছেন, তোমরা আমার সন্তান, আমি এত বছর ধরে পেলেছি তোমাদের, তোমরা আমার সাথে এটা করতে পারছো??

বরং আমি উল্টা চেয়ার আঁকড়ে বসে থাকতে দেখেছি, স্টুডেন্টদের সাথে ঝগড়া করতে দেখেছি এবং সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখলাম প্রিন্সিপাল মেয়েটাকে মারার জন্য হাত তুলছে আর মেয়েটা সেই হাত ধরে মোচড় দিয়েছে!

আমি একজন প্রাক্তন টিচার হিসেবে বলতে পারি, যখন দেখছি আমাকে অসম্মান করতে ওরা আসছে, আমার প্রথম কথা হবে, তোমরা কি আমাকে চাও না? ঠিক আছে, তোমাদের প্রতি দোয়া রেখেই আমি চলে যাচ্ছি! ব্যস, এইটুকু বললেও তখন তেড়ে আসা ছেলেরা বিবেকের দোটানায় পড়ে যেত! বাট না, আমাকে তো এখনও পলিটিক্যাল পাওয়ার, ক্ষমতার জোর দেখিয়ে ফাইট করতেই হবে!!

একটা ছেলে কী একজন টিচারের মাথায় চাটা দিয়েছে বলে দাঁত কেলাচ্ছে, ছেলেটাকে ডাকেন, আবার জিজ্ঞেস করেন, শোনেন, ঠিক কেন সে একজন টিচারের গায়ে হাত তোলে, ওই টিচার তার কাছে কেন এতখানি অশ্রদ্ধার হল?
ট্রল বা হায় হায় না করে জিজ্ঞেস করেন, উত্তর পেয়ে যাবেন।

আই সেইড, হোয়াটএভার আই সেইড, এবার আপনি পড়ে মন্তব্য করেন, বুঝে মন্তব্য করেন, কিংবা অর্ধেক পড়ে মন্তব্য করেন, ব্যপার না৷ কমেন্ট বক্স ইজ ওপেন, আমি আর কোন লজিক আরগিউমেন্টে যাবই না৷ এই দীর্ঘ পোস্টে আমি যথেষ্ট ব্যাখ্যাই করেছি।

চিয়ারিও!!

মন্তব্য ১ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে আগস্ট, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১৬

এস.এম.সাগর বলেছেন: সম্পূর্ন একমত।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.