নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একটি পথ, আপনি চাইলে হেঁটে দেখতে পারেন....

জীয়ন আমাঞ্জা

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দর্শন হল হিসাব বিজ্ঞানের ডেবিট এবং ক্রেডিট । সবসময় যতখানি ডেবিট, ঠিক ততখানিই ক্রেডিট হয় । পরকালের হিসেব যা-ই হোক, এই ইহকালে আমরা ঠিক যেভাবে শূন্য হাতে পৃথিবীতে এসেছি, সেভাবে শূন্য হাতেই পৃথিবী ছেড়ে যাব । এটাই পৃথিবীর আবর্তনিক নিয়ম । অনেকে আমরা এটা বুঝতে ব্যর্থ হই ।আপনি কারো ক্ষতি করবেন তো আজ অথবা কাল আপনার ক্ষতি হবেই হবে । ভালো করলেও তার ফল আপনি জীবদ্দশাতেই পাবেন ।অনেকে দেখবেন রাস্তাঘাটে অযথা হোঁচট খায়, অসুখে ভোগে- এসব এমনি এমনি নয়, হয় এর অতীত, নয়তো ভবিষ্যৎ প্রসারী কোন কারণ আছে । যদি আপনি কারো ক্ষতি না করেন, তবে আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি, আপনার কোন ক্ষতি হবে না । কেউ চেষ্টা করলেও আপনার ক্ষতি করতে পারবে না ।শুদ্ধ থাকুন, শুদ্ধতার শুভ্রতাকে উপভোগ করুন । জীবন সুন্দর হবে ।আমি সবার মতের প্রতিই শ্রদ্ধাশীল।আশা করি আপনিও তাই।সৌজন্যবোধ ও মানবতার জয় হোক !

জীয়ন আমাঞ্জা › বিস্তারিত পোস্টঃ

দান, দাতা বনাম ধান্ধা

১৪ ই এপ্রিল, ২০২৩ বিকাল ৫:৩১

কয়েকদিন আগে লিখেছিলাম, মধ্যবিত্ত ছাড়া আর কেউ টাকার অভাবে না খেয়ে মারা যায় না৷

নিচের বিশাল একঘেয়ে লেখা পড়তে না চাইলে সারাংশটা একবাক্যে বলি- কাউকে একবেলা খাওয়ানোতে কোন উপকার হয় না, উপকার হয় তাকে বরং খাবার রোজগারের একটা ব্যবস্থা করে দিলে৷

সবিস্তারে আসি৷ বড়লোকের টাকা আছে খাবারও আছে৷ গরীব বা নিঃস্বেরও টাকা আছে, খাবারও আছে৷ সামনে আরো আলোচনা আছে, তাই ব্যাখ্যা দিলাম না৷ একটি গরীব পরিবারের বুড়ো থেকে বাচ্চা সবাই ইনকাম করে৷ গরীব বলতে কোন গরীব বোঝাচ্ছি, আশা করি আর ভেঙে বলতে হবে না৷ তারা টাকার জন্য প্রয়োজনে হাত পাতে, ভিক্ষাও করে৷ কোন ফুটপাতে পড়ে থাকা কাউকে আপনি কখনও না খেয়ে মরতে দেখবেন না, এক পাগল ব্যতিরেকে৷ হাত পেতে চেয়ে চিন্তে ঠিকই সে তার ক্ষুন্নিবারণ করে ফেলে৷

তাহলে ফুটপাতের মানুষকে খাবার খাওয়ানোটা কি জনসেবা নয়?
আমাদের এক শামীম ভাই আছেন, উনি এ বিষয়ে ভালো বলেন, তিনি প্রায় সময়ই দুইটা উদাহরণ দেন- মানুষ মানুষকে তিনবেলা খাওয়াতে রাজি, কিন্তু ঘরে রাখতে রাজি না; আর বলতেন- মানুষ মানুষকে অনাহারে দেখলে তাকে খাওয়াতে রাজি, কিন্তু রুজির ব্যবস্থা করতে রাজি না৷
আমার মনে হয় এই উদাহরণটাই যথেষ্ট৷

এই দেশটা সিরিয়া প্যালেস্টাইন হয়নি এখনও৷ অভাব অবশ্যই আছে আমাদের, সমস্যা আছে, কিন্তু ভাতের অভাব/ বুভুক্ষা চলছে না এখনও৷ এ দেশে ভিক্ষার সর্বনিম্ন স্কেল এখন দশ টাকা! এর কম দিলে ভিক্ষুক নিতে চায় না৷ ভিক্ষুকের দৈনিক উপার্জন কত তা নিয়ে আর না বললাম এখানে৷ একজন রিকশাওয়ালার দৈনিক ইনকাম কত, তার মোট পারিবারিক উপার্জন কত আপনি হয়ত জানেন, হয়ত জানেন না৷ একজন রাজমিস্ত্রী, একজন দিনমজুরের দৈনিক উপার্জন কত আপনি হয়ত জানেন, হয়ত না৷

যাইহোক, ফুটপাতের কাউকে আপনি পাবেন না যে না খেয়ে ঘুমাচ্ছে৷ চুরি করে হোক, ভিক্ষা করে হোক খাবার তার ঠিকই যোগাড় হবে৷ এটা বেসিক নিড, সে এটার ব্যবস্থা করে ফেলবেই৷ শুধু এটাই না, খাবারের পরে সে একটা বিড়িরও ব্যবস্থা করবে৷ এবং তাকে আপনি গাঁজা টানতে, জুয়াও খেলতে দেখবেন যদি তার মুড ভালো থাকে৷ অতএব, একবেলা খাওয়ালেই যে আপনি তার বিরাট কাণ্ডারী হয়ে গেলেন, বিরাট উপকার করে ফেললেন এটা আমি মনে করছি না৷ যারা মনে করছেন, তাদের জন্য এই পোস্ট৷ এটুকু তো ক্লিয়ার যে, ওর খাবারের বন্দোবস্ত আপনি না করলে ও নিজেই করত৷ আপনি যখন খাবারের ব্যবস্থা করলেনই, তখন ওর মধ্যে দুইটা প্রতিক্রিয়া হবে৷ এক. ও যদি তিন বেলা আপনার কাছে খাবারের যোগান পেয়ে যায় তাহলে ও কাজ করা ছেড়ে দেবে; দুই. খাবারের বেঁচে যাওয়া টাকা দিয়ে হয় ও এবার নেশা করবে, নাহলে জুয়া খেলবে! অফকোর্স, ইউ নোও দ্য নেচার অব পিপল ফ্রম দ্যাট লেভেল!

তো এখন, কী ভায়া? দরদে নেগে গেল খুব? আমাঞ্জা খুব নিষ্ঠুর, খুব কৃপণ? খুব শ্রেণী বৈষম্য করে? গরীবদের মানুষ মনে করে না? কোনো মায়া মমতাজ নাই আমাঞ্জার?

ওরে ব্রো দয়াময়, আপনি ফুটপাতের ওই মানুষটাকে একবেলা খাওয়ালেন, তাতে তার কী এমন উপকার করলেন? আপনি না খাওয়ালে ও বসে থাকত? ঠিকই তো খেত৷ হতে পারে আপনি একবেলা বিরিয়ানি খাইয়েছেন- যা সে গত একমাসে খায়নি এই যা!
এতেই বিরাট উপকার হয়ে গেল?
না গো ব্রো৷ পরের বেলাতেই আপনার ওই উপকার ওর টয়লেটের সাথে নিষ্কাশিত হয়ে গেছে৷ ও তারপর আবার সেই ফুটপাতেই শুয়ে আছে! নাথিং চেইঞ্জড!

আমি বারবার ফুটপাতের মানুষের কথা বলছি কারণ এর উপরের যে লেভেল, তাদের ক্রয় ক্ষমতা এবং উপার্জন একজন নিম্নমধ্যবিত্তের চেয়ে বেশি, অনেকক্ষেত্রে মধ্যবিত্তের চেয়েও বেশি৷

আচ্ছা, আগের কথায় আসি৷ আপনি সত্যিই ওই লোকটার উপকার করতে চাইলে ওকে একটা রিকশা কিনে দিন, বা সব্জি বেচার একটা ভ্যান কিনে দিন, বা একটা ওজন মাপার যন্ত্র কিনে দিন যাতে ও বাকি জীবন উপার্জন করে খেতে পারে৷

তা ব্রো, সেটা করেন না কেন??
আপনি রোজ একশোজনকে খাওয়াবেন, আর সেটার ছবি তুলে প্রচার করে করে এভাবেই নোবেলের ফতে এগিয়ে যাবেন চিঁহি টগবগ করতে করতে- এই না?

অতএব, এটা ক্লিয়ার হল যে, একবেলা খাওয়ানোতে কোন উপকার নেই, ওটা একটা পাবলিক স্টান্ট৷

এবার আসি পরের ইন্টারেস্টিং অংশে৷ একসময় আমার মোটামুটি সামর্থ্য ছিল দান করার৷ এক রোজার মাসে ইফতার করতে বসে হিসাব করে দেখলাম দশ রোজা আসতে না আসতেই ইতোমধ্যে আঠারো হাজার একে ওকে দান করা শেষ৷ এটাই বিড়বিড় করে মায়ের সামনে বললাম৷ আমার মা সহজ সরল খুব, কোথায় কী বলতে হবে দিশ পান না, বরং আমাদেরই শিখিয়ে দিতে হয় যে এখানে এটা বল, ওখানে ওটা বল!

সেই সহজ সরল মা সেদিন আমাকে থামিয়ে দিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, আঠারো হাজার টাকা তুই কাকে দিয়েছিস?
আমি বললাম, একজনকে না, কয়েকজনকে৷
মা জিজ্ঞেস করলেন, কী দেখে দিয়েছিস?
বললাম, দেখি নাই, সমস্যায় আছে শুনে দিয়েছি৷

তখন মা বললেন, আমাদের গ্রামে অমুক আছে চিনিস? বেচারা পরিবার নিয়ে খুব অসহায় আছে, জানিস তো?
আমি বললাম, হু, জানি৷
মা আবার বললেন, গ্রামের অমুককে চিনিস? পঙ্গু, উপার্জন করতে পারে না৷
বললাম, হু, চিনি৷
মা আবার বললেন, আমার যে অমুক খালা আছে, তোর সম্পর্কে নানী হয়, তার একটা ছেলে মেয়ে নাই, খুব কষ্টে আছে, জানিস তো?
বললাম, হু, জানি৷

ব্যস, এবার মা বললেন, তাহলে তোর টাকায় কার অধিকার আগে? তোর চোখের সামনে এত মানুষ অসহায়, তাদের রেখে তুই ফেইসবুকে যাদের দিচ্ছিস তাদের সমস্যা নিজ চোখে দেখছিস? দেখিস নাই৷ আচ্ছা, তারা যে অসহায়, তাদের সাহায্য করার মত তাদের এলাকায় কেউ নাই? সে এলাকার সবাই নিষ্ঠুর? কেউ দান করে না সেখানে? যে কারণে তোর এত দূর থেকে পাঠাতে হবে? ওদের কষ্ট তুই নিজে দেখিস নাই, কিন্তু আমি যাদের কথা বললাম, তাদের কষ্ট তুই নিজে দেখছিস, অথচ তুই তাদের হেল্প না করে কোন ফেইসবুকে দান করছিস কারণ কি, নিজের প্রচারণা??

আমার তখন মাথা ঘুরতে লাগল৷ আসলেই তো৷ আমি যাদের চিনি তাদের তো কোন উপকার করিনি, দান করছি এমন মানুষদের যাদের আমি চিনি না৷ সেসব মানুষ আমার কাছে যেমন ইনবক্সে চাইছে, আরো কয়েকজনের কাছেও তো নিশ্চয় চেয়েছে! যাহোক সবচেয়ে জরুরি যেটা উপলব্ধি করলাম তা হল, আপনি যদি দান করার জন্য অসহায় মানুষ খুঁজতে নামেন তাহলে গোটা পৃথিবীর সব সম্পদ নিয়ে দাঁড়ালেও দেখবেন কম পড়ছে৷ সাহায্যপ্রার্থীর সংখ্যা এতই বেশি হবে!

তো এই উদাহরণ থেকে আমরা কী শিখলাম? আমাঞ্জা অনেক দানশীল লোক, তাকে শান্তিতে নোবেল দেওয়া হোক?

না ব্রো৷ আমরা শিখলাম যে, দান করতে হলে নিজে দেখে নিজের হাতে দান করুন৷

আচ্ছা, ধরা যাক, আমি আমাঞ্জা খুব জনসেবা করি৷ রোজ মানুষকে খাওয়াই, সেসব ছবি ফেইসবুকে দিয়ে আপনাদের কাছে হাত পেতে বলি, আজ এতজনকে খাওয়াবো, বাজেট শর্ট আপনারা দান করেন৷ যেহেতু আমাঞ্জা রোজ খাওয়ায়, আপনি আমার দান করা দেখছেন ফেইসবুকে সেহেতু আপনি আমাকে চোখ বুজে টাকা দিলেন ওদের খাওয়ানোর জন্য৷

প্রথম প্রশ্ন, আপনি টাকা দিয়েছেন, আপনার মত আর কতজন দিয়েছে আপনি জানেন? আমি মোট কত পেয়েছি আপনি জানেন? আমি সেখান থেকে মানুষ খাওয়ানোতে কত খরচ করেছি আপনি জানেন? জানেন না৷ তাহলে সেখানে আমি কত টাকা ধান্ধা করেছি আপনি জানছেন না৷

কী বলেন, ধান্ধা করি নাই? ব্রো, আমি সারাদিন পড়ে আছি এই দান খয়রাত নিয়ে, তাহলে আমার নিজের উপার্জন কোথায়? নিজের উপার্জনের জন্য আমি কী করি? সারাদিন তো এই দানের পেছনেই সময় দিচ্ছি লাইভ করছি, তাহলে আমার চলছে কীভাবে? আমার নিজের খরচ কোত্থেকে আসে?

পরের প্রশ্ন, এই যে খাওয়ানো বা হেল্প, এখানে আমি নিজের পকেট থেকে কত দিচ্ছি? আদৌ কি দিচ্ছি? আমি তো আপনাদের কাছ থেকে টাকা তুলে মানুষকে খাইয়ে সেটার ছবি তুলে নিজেকে হাইলাইট করছি, প্রচারণাটা হচ্ছে কার? বিখ্যাত কে হচ্ছে? অথচ ইনভেস্টটা কার?
আপনাদের টাকায় আমি নিজেকে দানবীর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করছি তাই না? অতএব, আমি কতই না মহৎ মানুষ! আপনি আমাকে টাকা পাঠাচ্ছেন, যাতে আমি স্টান্ট করতে পারি, অথচ আপনার ঘরের পাশে কয়জন না খেয়ে আছে আপনি জানেন না৷

আমি একজনকে চিনি, সে করোনার সময় হতে মোটামুটি নিজেকে ভাইরাল করেছে,মানুষের কাছ থেকে টাকা তুলে অসহায় মানুষকে সহায়তা করার প্রচেষ্টা দিয়ে৷

কী ভায়া, মোনটা নরোম হয়ে গেল??

সেই ব্যক্তির সাহায্য চাওয়ার ধরন শুনবেন?
"অমুক মসজিদের একটা মাইক এখনও ম্যানেজ করতে পারলাম না৷"
"অমুক মাদ্রাসার জন্য একটা কোরআন শরীফের টাকা এখনও যোগাড় করতে পারলাম না!"
অমনি এসব পোস্টে হাজার হাজার লাইক! মন্তব্যে কম হলেও পনের জন বলবে, নম্বর দেন একসেট কোরআন শরীফের টাকা আমি পাঠাচ্ছি৷

তুমি একসেট কোরআন কিনে দিতে চাও, অথচ দিতে পারছ না এজন্য ফেইসবুকে টাকা তোলা লাগছে! ভায়া, একসেট কোরআন শরীফ কিনতে কয় টাকা লাগে? তোমার শরীর স্বাস্থ্য বলে তুমি না খেয়ে থাকো না, তুমি এক বেলা একটু কম খেলেও তো একসেট কোরআন শরীফের টাকা ম্যানেজ হয়ে যায়, তোমার এই টাকার জন্যও হাত পাতা লাগে?

ইয়েস, কাম টু দ্য পয়েন্ট৷ আমি আমাঞ্জা যদি দানবীর হই, এবং আমি যদি আপনাকে বলতে আসি যে মসজিদের সিমেন্ট কিনতে টাকা দরকার আমাকে সাহায্য করুন, তাহলে প্রথমে আমাকে দেখাতে হবে কোন মসজিদ, সেখানে আমি কত দিচ্ছি, আর কত শর্ট৷ অন্যকে দানের জন্য আপনার কাছে হাত পাততে হলে আমাকে আমার নিজের অবস্থান থেকে আগে সর্বোচ্চ দান করে আসতে হবে তারপর বলতে হবে যে ভাই, আমার সামর্থ্য হতে আমি এতটা পেরেছি, এখন বাকিটা আপনারা এগিয়ে আসেন৷ সেটা কি আদৌ কেউ করে? বেশিরভাগই এমন হয় যে নিজের পকেটেরটা পকেটেই থেকে যায়, মাছ ভাজা হয় মাছের তেলেই, বরং কখনও পকেটে আরো আসে৷

অনেক লম্বা চড়া করলাম আলাপ৷ আপনারা কতটুকু বুঝেছেন আমি শিওর না৷ তবে বিদ্যানন্দ নিয়ে যে এখনও কিছু বোঝেন নাই, তা আমি নিশ্চিত৷ আমি এতক্ষণ যে ভূগোল বোঝালাম, তার অর্থ হচ্ছে, দান করলে নিজের চোখে দেখে, নিজের হাতে দান করুন৷ পাঁচশো টাকা নিয়ে পথে নামুন, দেখবেন দান করার মত হাত পেতে থাকা মানুষের অভাব হবে না৷ নিজের হাতে নিজে কারো উপকার করে দেখুন, আত্মায় অন্য রকম শান্তি লাগবে৷ নিজেকে নিজের কাছেই একজন ভালো মানুষ হিসেবে মনে হতে থাকবে৷

আপনি আমি কেউ জানি না, বিদ্যানন্দের দৈনিক প্রাপ্ত ডোনেশন কত? বাৎসরিক আয় কত ব্যয় কত? ডোনেশনে প্রাপ্ত টাকা কোন কোন খাতে কত খরচ হয়েছে আমরা জানি না৷ কত টাকা উদ্বৃত্ত আছে আমরা জানি না, কতজনকে এপর্যন্ত স্বাবলম্বী করে দিয়েছে আমরা জানি না৷ কেন? টাকাটা কার? আপনার আমার!

সেই আগের পয়েন্টটা মনে আছে তো?
এক টাকায় আহার দিয়ে মানুষ খাওয়ানোতে কোন উপকার নেই, উপকার করতে হলে একেকজন অসহায়কে ধরে স্বাবলম্বী করে দেন! সেটা করবেন না৷ কারণ, সেটা করলে আর রোজ রোজ খাওয়ানোর নামে টাকা তোলার ব্যবসায়টা আর চলবে না৷

তো, কী মনে হয় ব্রো? আমার বিদ্যানন্দে এনার্জি? থুক্কু এলার্জি? আমি ইনিয়ে বিনিয়ে এখন আসসুন্নাহ-তে দান করতে বলব?

ওরে না! চোখ মেলে দেখেন, আমি আগেই বলেছি দানটা নিজে দেখে নিজের হাতে করুন৷ আপনার দান কোন খাতে কার হাতে যাবে সেটার কর্তৃত্ব আপনারই৷ শুধু মাথায় রাখবেন, সহায়তাটা যেন এক বেলার না হয়ে একটা স্থায়ী সমাধান হয়৷ একা না পারলে আপনার এলাকায় আরো যারা দান করতে ইচ্ছুক, তাদের সঙ্গে মিলে ব্যবস্থা করুন৷ তাও না পারলে একটু এক্সট্রা ইফোর্ট দিয়ে দুয়েকমাস আলাদা ফান্ড করে কাউকে একটা সেলাই মেশিন কিনে দিন৷ এভাবেও সম্ভব৷

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই এপ্রিল, ২০২৩ বিকাল ৫:৫৭

নিবর্হণ নির্ঘোষ বলেছেন: প্রথমত আপনার এক অনুজ ব্লগার থেকে শুভেচ্ছা জানুন এভাবে নিরেট সত্য বলবার জন্য !!

ব্লগে এই প্রথম চরম বাস্তবকে সামনে রেখে সত্য বলতে দেখলাম । আসলেই এই একবেলা খাওয়ানোতে কারও কোন উপকার হয় না । এবং এটাও ঠিক একমাত্র মধ্যবিত্তরাই সবচেয়ে অসহায় । নিম্নবিত্তের বেলায় তো সেটা নরকতূল্য । কিন্তু যারা দরিদ্র তারা সবচেয়ে বেশি আয় করে অপরাধ থেকে বিশেষ করে মাদক বেঁচে । আমি যেখানে থাকি তার আশেপাশে যারা আছেন এমন দরিদ্র তারা প্রত্যেকেই এমন ব্যবসায়ের সাথে জড়িত । আমার এই এলাকা ছাড়াও দেখেছি একই চিত্র !!

এবার বলি যে বা যারা এক বেলা খাওয়াটাকে অনেক বড় করে দেখেন তারা আসলে এটা করেন আলসেমির জন্য ! আসলে এত কষ্টের কি প্রয়োজন এই অল্পতেই যখন আত্মগ্লানি মেটে তো ?

আর একটি NPO তো কেবল সেবামূলক কাজই করে না মুনাফাও অর্জন করে বটে যদিও উৎপাদনমূলক কাজে অংশগ্রহণ করে না বলে তাঁদের অমুনাফাভোগী প্রতিষ্ঠান বলে যদিও তাঁদেরও আয় ব্যয় হিসাব হয় । এবং আপনার এই কথাটা ঠিক যে আমরা জানি না তাঁদের আয় আসলেই কত !!

যাকগে , আপনার এই সত্য কথার বিপরীতে অনেক কথা আসবে । তবে আপনি যে বাস্তবের ওপরেই দাঁড়িয়ে আছেন সেটা একদম নিশ্চিত । শুভকামনা রইল , আল্লাহ আপনাকে এমন সত্যের ওপর স্থায়ী হবার তৌফিক দিক সব সময় !!!

১৪ ই এপ্রিল, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:২০

জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: অনেকেই ব্যাপারটা আঁচ করে সরে এসেছে৷ তবে কেউ গুছিয়ে সমস্যাটা বলতে পারছে না পাবলিক সেন্টিমেন্ট আর সংঘবদ্ধ চেতনাজীবীদের আক্রমণের ভয়ে৷ আমি চেষ্টাটা করলাম৷ আশা করি, ভিত্তিহীন বা যুক্তিহীন কিছু বলিনি৷ আমার বিশ্বাস এখানকার মানুষজন যুক্তি এবং বাস্তবতা বোঝেন, সত্য এবং মিথ্যাকে সুস্পষ্ট চেনেন৷

২| ১৪ ই এপ্রিল, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:১৭

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ভিক্ষা করা যাদের পেশা এদের দেয়ার দরকার নাই। ভিক্ষাকে পেশা হিসাবে নেয়া যাবে না। এটাকে উৎসাহিতও করা যাবে না। যারা লজ্জায় হাত পাততে পারে না তাদেরকে সাহায্য করতে হবে। কাউকে আয়ের ব্যবস্থা চাইলেই করা যায় না। আয় যাদের আছে তারাও অনেক সময় অনেক বিপদে পড়ে।

বিদ্যানন্দ বা এই জাতীয় প্রতিষ্ঠানের উচিত হবে প্রকৃত অসহায় মানুষ খুঁজে বের করে সাহায্য করা। রাস্তার ফকির মিসকিনকে খেতে দিলে লাভ নাই। কারণ ফকির মিসকিন খাবার না পেলে হাত পেতে টাকা আয় করতে লজ্জা বোধ করে না। কিন্তু এই সমাজে অনেক মানুষ আছে যারা লজ্জায় হাত পাততে পারে না কিন্ত তাদের খাবারের অভাব আছে। তাদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা ভালো। আয় রোজগারের ব্যবস্থা করে দিতে পারলে আরও ভালো। তবে অনেক দরিদ্র লোক আছে যাদের পক্ষে আয় রোজগার করাও সম্ভব না। যেমন অতি বৃদ্ধ, নেশাখোর (এদের আগে চিকিৎসার দরকার), মানসিক রোগী, নারী, শিশু। এদের প্রতি সদয় হতে হবে।

বিদ্যানন্দ যতটুক পাড়ছে করছে। এতো সমালোচনা না করে তার চেয়ে ভালো কিছু করে দেখাতে হবে। তারপরে সমালোচনা করতে হবে। এই ধরণের প্রতিষ্ঠানের দরকার আছে। বিদ্যানন্দের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে সেটা প্রমাণ সহ হাজির করা উচিত। পিনাকি তার ভিডিওতে বিদ্যানন্দের যে সমালোচনা করেছে তার মধ্যে ফাঁক আছে। হিসাবের গড়মিল সম্পর্কে সে অনুমান ভিত্তিক কথা বলেছে। হিসাব না বোঝার কারণে এগুলি বলেছে।

৩| ১৪ ই এপ্রিল, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:২৫

জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: পিনাকীর ভিডিও দেখনি কখনও তার পোস্টও পড়া হয় না৷ বিদ্যানন্দ নিয়ে অনেকেরই এখন আপত্তি প্রকাশ পাচ্ছে৷ আমি কোন দায় দুর্নীতি নিয়ে বলিনি, আমার বক্তব্য একদম সুস্পষ্ট৷ মানবসেবা ওভাবে হচ্ছে না, লোক দেখানোই হচ্ছে শুধু৷

৪| ১৪ ই এপ্রিল, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৩৫

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: আপনার মায়ের বক্তব্যটা সবচেয়ে ভালো মনে হয়েছে। চেনাজানা অভাবীদের আগে সহযোগিতা করা উচিত। তখন নিজের কাছে স্বচ্ছ থাকা যায় এটা ভেবে যে, দানটা বৃথা যাচ্ছে না। পঙ্গু বা আহতদেরও সাহায্য করা উচিত। কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা যে করে দিতে পারবে না, একবেলা-দু'বেলা খাওয়ালে দোষের কিছু দেখি না। খাওয়ানোতে যারা দোষ ধরে, তারা যে কাজের ব্যবস্থা করে দেয়; এমন কিন্তু না। এরাও এটেনশন সিকার। একেবারে সাহায্য না করার চেয়ে অল্প হলেও সাহায্য করা ভালো।

১৪ ই এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১০:০৫

জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: মা যতই সরল, অপ্রতিভ বা কম শিক্ষিতই হোক, তাঁর পেটেই তো আমরা হয়েছি, আমরা যতই স্মার্ট আর দুনিয়াদারীতে দক্ষ হই না কেন, মা বাবা আমাদের চেয়ে পৃথিবীটাকে বেশিই দেখেছেন৷ ❤️

৫| ১৪ ই এপ্রিল, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:২২

কামাল১৮ বলেছেন: বাংলাদেশের মোট যে সম্পদ আছে এর বেশি সম্পদ কেউ আকাশ থেকে আনতে পারবেনা।এই সম্পদের বন্টনে বিরাট গরমিল আছে।কারো আছে একটাকা কারো আছে একশো হাজার কোটি টাকা।এই বৈষম্য থেকে বের হয়ে আসতে হবে।কিছুটা সমতা আনতে হবে।বাকি সব চেষ্টাই বৃথা যাবে।

১৪ ই এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১০:০৮

জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: সুষম বণ্টন আদতে কেউ করে দেবে না৷ ওই যে প্রান্তিক শ্রেণির মানুষগুলো বা ভিক্ষুকেরা, যাদের উপার্জন আমাদের চাইতে বেশি, তারাই পরের প্রজন্মে সম্পদের মালিক হবে, বড়লোকেরা আবার রুচির কারণে পয়সা বিলাতে বিলাতে একপর্যায়ে দরিদ্র হবে৷ এটাই সাইকেল৷ এর শেষ নেই সম্ভবত৷

৬| ১৪ ই এপ্রিল, ২০২৩ রাত ৮:০৬

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আপনি শুধু একজন কবি ও বিদ্গ্ধ কবিতা-আলোচকই নন, যে-কোনো বিষয়ে একজন যৌক্তিক আলোচকও। কথাগুলো খুবই যুক্তিসঙ্গতভাবে তুলে ধরেছেন। ভালো লেগেছে।

১৪ ই এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১০:১০

জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: কত উদার আর সুন্দর মনের মানুষ হলে এভাবে প্রশংসা করা যায়! ❤️❤️
ধন্যবাদ, ভাই৷

৭| ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৩ সকাল ১০:৫৯

বিটপি বলেছেন: রমজান মাস আসলে একদল মানুষকে দেখা যায় রাস্তার মানুষদেরকে ফ্রি খাওয়াতে। অনেকে আবার এদেরকে উৎসাহও দেয়। আমি এই ব্যাপারটাকে শুরু থেকেই খারাপ চোখে দেখে আসছি।

রমজানে এমনিতেই বাজারে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির চাপ থাকে। যারা নিজের উপার্জনের পয়সা খরচ করে বাজার করে, তাদের হিমসিম খেতে হয় এই চাপ সামলাতে। তারপরে আবার যদি এইসব সো কল্ড হাতেম তাঈরা অসহায় মানুষদের খাওয়ানোর নামে বাজার থেকে জিনিসপত্র কিনতে শুরু করে - তাহলে সেই দ্রব্যমূল্যের চাপ কোথায় গিয়ে ঠেকবে?

আপনার টাকা আছে, লোকজনের উপকার করতে চান ভালো কথা। ১০০ মানুষকে না খাইয়ে একজন মানুষকে দাঁড় করান। সে যদি নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে আরও ১০ জন মানুষের দায়িত্ব নিতে পারে - তাহলে তো আপনি পরোক্ষভাবে ১০০ মানুষ খাওয়ানোর পুণ্যই অর্জন করলেন, নাকি?

৮| ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ১২:৩৬

নতুন বলেছেন: সবাই ভাইরাল হতে চায় তাই এক বেলা খাবার দিয়ে ছবি তুলতে চায়।

যেটা করা দরকার সেটা হলো আয়ের ব্যবস্থা করে দিতে হবে , যাতে সে নিজেই কাজ করে খেতে পারে।

যারা কাজে অক্ষম তাদের জন্য দেখাশুনার স্থায়ী ব্যবস্থা করতে হবে।

যদিও এই কাজগুলি সরকারেরই করার কথা।

অবশ্য আরেকটা বিষয়ও আছে যে অনেকেই দরিদ্র্র তাদের সভাবের জন্য। তাদের টাকা দিলে তা নস্ট করে আবার ফুটপাতে পড়ে থাকবে :(

৯| ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ১:১২

রাজীব নুর বলেছেন: যেহেতু আমরা মানুষ হয়ে জন্মেছি, তাই আমাদের মানুষের পাশে থাকতে হবে। মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। পৃথিবীতে যত খাবার হয়, সেটা দিয়ে পৃথিবীর সমস্ত মানুষের হয়ে যাবে। কিন্তু বন্টন হয় স্বচ্ছ ভাবে।

১০| ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৩ বিকাল ৫:৪৭

গেঁয়ো ভূত বলেছেন: বাস্তবতার আলোকে যৌক্তিক আলোচনা, একমত আপনার সাথে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.