নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দর্শন হল হিসাব বিজ্ঞানের ডেবিট এবং ক্রেডিট । সবসময় যতখানি ডেবিট, ঠিক ততখানিই ক্রেডিট হয় । পরকালের হিসেব যা-ই হোক, এই ইহকালে আমরা ঠিক যেভাবে শূন্য হাতে পৃথিবীতে এসেছি, সেভাবে শূন্য হাতেই পৃথিবী ছেড়ে যাব । এটাই পৃথিবীর আবর্তনিক নিয়ম । অনেকে আমরা এটা বুঝতে ব্যর্থ হই ।আপনি কারো ক্ষতি করবেন তো আজ অথবা কাল আপনার ক্ষতি হবেই হবে । ভালো করলেও তার ফল আপনি জীবদ্দশাতেই পাবেন ।অনেকে দেখবেন রাস্তাঘাটে অযথা হোঁচট খায়, অসুখে ভোগে- এসব এমনি এমনি নয়, হয় এর অতীত, নয়তো ভবিষ্যৎ প্রসারী কোন কারণ আছে । যদি আপনি কারো ক্ষতি না করেন, তবে আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি, আপনার কোন ক্ষতি হবে না । কেউ চেষ্টা করলেও আপনার ক্ষতি করতে পারবে না ।শুদ্ধ থাকুন, শুদ্ধতার শুভ্রতাকে উপভোগ করুন । জীবন সুন্দর হবে ।আমি সবার মতের প্রতিই শ্রদ্ধাশীল।আশা করি আপনিও তাই।সৌজন্যবোধ ও মানবতার জয় হোক !
একবার এক শিম্পাঞ্জিকে পরীক্ষা করার উদ্দেশ্যে তার বাচ্চাসহ একটি খাঁচায় রাখা হয়৷ এরপর খাঁচার চারপাশে আগুন জ্বালানো হয়৷ আগুন দেখে এবং উত্তাপ টের পেয়ে মা শিম্পাঞ্জি খাঁচার চারদিকে ছুটতে থাকে বাচ্চা নিয়ে, মোটামুটি সে তার বাচ্চাকে রক্ষা করতে যত রকম চেষ্টা চালানো যায়, চালায়৷ ওদিকে পরীক্ষার জন্য আগুন ধীরে ধীরে আরো নিকটে আনা হয়, শিম্পাঞ্জি আরো ছুটতে থাকে বাচ্চা নিয়ে৷ একপর্যায়ে আগুন একদম খাঁচার কাছে নিয়ে আসা হয় এবং খাঁচাও খুব উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, যেখানে জীবন রক্ষা করা প্রায় কঠিন৷ এমন সময় মা শিম্পাঞ্জিটি আর উপায় না দেখে বাচ্চাকে নিচে ফেলে তার ওপর ভর দিয়ে নিজে দাঁড়ায়, যেহেতু খাঁচার মেঝে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল৷ যদিও, কেউই ক্ষতিগ্রস্ত হয় না এবং তখনই তাদের বাঁচানো হয়েছিল, যেহেতু বিষয়টা ছিল পরীক্ষা করার জন্য৷ গবেষকগণ পরীক্ষাটা করেছিলেন প্রাণীকুলের মাঝে মাতৃভাবের একটা মাত্রা বোঝার জন্য৷ ফয়সালা হয় এটাই যে সবশেষে জীবের সহজাত প্রবণতা হয় ওই আত্মরক্ষাই৷ একমাত্র মানবজাতির মধ্যেই নিজের জীবন উৎসর্গ করে অপরকে বাঁচিয়ে দেবার মত আবেগ রয়েছে- মানুষকে আর দশটা প্রাণীর চেয়ে শ্রেষ্ঠ বিবেচনা করার পেছনে এই আবেগটাও একটা অন্যতম কারণ৷ অনেক মায়ের নজিরই আছে যারা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সন্তানকেই রক্ষা করে যায়, সন্তানকে বাঁচাতে নিজে মরে যায়৷ এই নজির সহস্রাধিক, যদিও এর কোন পরিসংখ্যান হয় না৷
আসলে আমি লিখতে চাইছিলাম মাদারহুড এ্যান্ড বেসিক ইন্সটিংক্টস নিয়ে৷ বলা হয়ে থাকে, যত নিরীহই হোক না কেন, কোন মাকেই চ্যালেঞ্জ করতে নেই, ক্ষ্যাপাতে নেই৷ একজন মা ক্ষেপলে তারচেয়ে শক্তিশালী কোন দেবদেবীও হয় না৷ এক মায়ের খবর এসেছিল সম্ভবত গত বছর, যে তাঁর প্রবাসে আটকা পড়া ছেলেকে ঠিকই উদ্ধার করে এনেছে৷ লেখাপড়া, রুলস রেগুলেশনস না জানা এমন কি কখনও শহরে না আসা সেই মা এমব্যাসির সঙ্গে যুদ্ধ করে পরদেশ থেকে ছেলেকে উদ্ধার করায়! কেবল মানুষ কেন, যে কোন প্রাণীর বেলায়ই মাতৃত্বের এই অদম্য অকল্পনীয় রূপটি সত্য৷ বেজি, বাজপাখি কিংবা গুঁইসাপ বাচ্চা নিতে এলে নিরীহ মুরগীও কেমন যুদ্ধাংদেহী হয়ে ওঠে এ নজির আমরা কমবেশি সবাই দেখেছি৷ যাইহোক, মাতৃত্ব নিয়ে মহিমা বর্ণন করতে গেলে তা আর শেষ হবে না৷ আলোচনা যে ট্র্যাকে শুরু করেছিলাম সেদিকেই আসি আবার৷ প্রাণীজগতের মধ্যে মাতৃত্বের একটা সীমা আছে, অর্থাৎ শাবক যখন পূর্ণতা পায় এরপর আর মাতৃত্বের দায় থাকে না, সে শাবকটি হয়ে যায় একদমই পৃথক সত্তা৷ সন্তান জীবনযাপনে তৈরি বা স্বাবলম্বী হয়ে গেলে সব প্রাণীই সন্তানকে আলাদা করে দিলেও একমাত্র মানুষের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা ব্যতিক্রম রয়ে যায়৷ সন্তান যত বড় হোক, যত বুড়ো হোক বাবা মায়ের কাছে বাচ্চাটা বাচ্চাই থেকে যায়! যত ম্যাচিউর্ড হোক, যত স্বাবলম্বীই হোক, সন্তান বাইরে গেলে বাবা মায়ের ভাবনা থাকে- সহীহ সালামত ঘরে ফিরবে তো? অসুখ হলে চিন্তা আসে, আমার সন্তান এ যাত্রা টিকবে তো??
বাবা-মা পর্যায়ে চলে এসেছি, শুধু মা নিয়ে বলতে চাইছিলাম৷ মানব সন্তানের জন্য মা খুব জরুরি একটা বিষয়, সন্তানের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি কানেকশন থাকে মায়ের৷ একটা সন্তানের বেড়ে ওঠা মনস্তাত্ত্বিক গঠনে মায়ের ভূমিকা অসীম৷ মায়ের শরীরের সঙ্গে সন্তানের এটাচমেন্ট থাকা জরুরী৷ যে সব পুরুষকে নারী বিদ্বেষী বা নারীর প্রতি ভোগ-লোলুপ মানসিকতার দেখা যায়- তাদের বেশিরভাগেরই দেখা যায় হয় শৈশবে মা ছিল না, কিংবা মা থাকলেও মায়ের সঙ্গে এটাচমেন্ট ছিল না৷ বাইশ বছরের যে যুবক মায়ের বুকে শিশুর মত মাথা রেখে ঘুমাতে পারে, সে যুবক নারী শরীরকে অন্তত লোলুপ চোখে দেখবে না, ভীড়ের মধ্যে অন্য নারীকে অহেতুক ছোঁবার নোংরা চেষ্টা করবে না৷ নারী শরীরের সংস্পর্শ সম্পর্কে তারা অজ্ঞ থাকে বলেই তাদের মধ্যে এক নোংরা হীন চেতনা কাজ করে৷
আগেও একবার বলেছিলাম, আমরা পুরুষেরা নারীর কোলেই তো বেড়ে উঠি, অথচ পরিবারেই আমরা শিখে যাই- বাবা মাকে অবলা হিসেবে পেটাবে, ভালো খাবারটা বোনকে না দিয়ে সবসময় ভাইকে দেওয়া হবে, সব দোষ মেয়েটার হবে, ছেলের বেলায় সাতখুন মাফ হবে- এইসব থেকেই তো পুরুষ সন্তানটি একজন তথাকথিত পুরুষতান্ত্রিক পুরুষে পরিণত হয়৷ মানুষ হয়ে ওঠার শিক্ষার খুঁতটা ওখান থেকেই শুরু৷
অনেক বকবক করে ফেলছি, তথ্যমূলক তেমন কিছুই হচ্ছে না৷ আরেকটু চেষ্টা করে ক্ষান্তি দেই বরং৷ বিড়াল পুষতে গিয়ে আরো আশ্চর্য একটি বিষয় খেয়াল করলাম, বাচ্চা অসুস্থ হলে মা বিড়াল খুব আগলায়, যত্ন করে, কিন্তু যখন পরিস্থিতি এমন হয় যে বাচ্চাটা আর বাঁচবে না- মা বিড়াল তা বুঝে ফেলে, এবং অমনি সেই বাচ্চার সঙ্গে সব সংশ্রব বন্ধ করে দেয়, আর কাছে যায় না৷ বাচ্চাটাও বুঝে যায় আর বাঁচবে না, নিজেকে সেও গুটিয়ে নেয়৷ অতঃপর অপেক্ষা চলে বিদায়ের, শেষ নিঃশ্বাসের৷ আমি আমার সামনে এখনও কোন মানুষের মৃত্যু দেখিনি৷ এমন পরিবেশে আমি সরে গেছি প্রত্যেকবার৷ একটা মানুষ মরে যাচ্ছে, তার অস্তিত্ব শেষ হয়ে যাচ্ছে এই দৃশ্য আমার দেখতে ইচ্ছে করে না৷ দেখতে চাইও না৷ তবু বিড়ালের বাচ্চার মৃত্যু আমি একবার দেখেছি, শেষপর্যন্ত চেষ্টা করেছিলাম বাঁচাবার৷ আর তখনই এই অদ্ভুত সত্যটা জানতে পারলাম৷ They get signals from their instincts, and when it appears, there’s nothing more to do!
যে একবার যাত্রার প্রস্তুতি নিয়ে বসে, তাকে আর ধরে রাখা যায় না...
শুভরাত্রি৷
২| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ৯:১২
বিটপি বলেছেন: শিম্পাঞ্জির ব্যাখ্যা মনপুত হলনা। কিছু কিছু মা আছে, সন্তানকে বাঁচানোর জন্য নিজের জীবন দিয়ে দেয়। এটা বেসিক সারভাইভ্যাল ইন্সটিংক্ট। সন্তানের মধ্যে দিয়ে নিজের জিনকে আরো কিছুদিন দুনিয়াতে টিকিয়ে রাখতে চায়।
ন্যাট জিওতে দেখেছি এক অল্প বয়েসী পুরুষ সিংহ এক নারী সিংহের বাচ্চাদেরকে আক্রমণ করে মেরে ফেলে। সিংহী বাঁচানোর অনেক চেষ্টা করে কিন্তু পুরুষটির সাথে পেরে ওঠেনা। কিন্তু বাচ্চাগুলো মরে যাবার পরে সেই সিংহীই আবার পুরুষটির সাথে রং ঢং শুরু করে।
৩| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:৩১
রাজীব নুর বলেছেন: ভাল লিখেছেন।
©somewhere in net ltd.
১| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০২৩ ভোর ৫:০৮
কামাল১৮ বলেছেন: বিষয়টাকে আপনি কোন দৃষ্টিকোন থেকে দেখছেন তার উপর নির্ভর করবে আপনার ব্যাখ্যা।ক্যাপিটালিষ্টরা দেখবে এক দৃষ্টিকোন থেকে, সোশালিষ্টরা দেখবে অন্য দৃষ্টি কোন থেকে আবার মানবতাবাদিরা দেখবে আরেক ভাবে।