নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দর্শন হল হিসাব বিজ্ঞানের ডেবিট এবং ক্রেডিট । সবসময় যতখানি ডেবিট, ঠিক ততখানিই ক্রেডিট হয় । পরকালের হিসেব যা-ই হোক, এই ইহকালে আমরা ঠিক যেভাবে শূন্য হাতে পৃথিবীতে এসেছি, সেভাবে শূন্য হাতেই পৃথিবী ছেড়ে যাব । এটাই পৃথিবীর আবর্তনিক নিয়ম । অনেকে আমরা এটা বুঝতে ব্যর্থ হই ।আপনি কারো ক্ষতি করবেন তো আজ অথবা কাল আপনার ক্ষতি হবেই হবে । ভালো করলেও তার ফল আপনি জীবদ্দশাতেই পাবেন ।অনেকে দেখবেন রাস্তাঘাটে অযথা হোঁচট খায়, অসুখে ভোগে- এসব এমনি এমনি নয়, হয় এর অতীত, নয়তো ভবিষ্যৎ প্রসারী কোন কারণ আছে । যদি আপনি কারো ক্ষতি না করেন, তবে আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি, আপনার কোন ক্ষতি হবে না । কেউ চেষ্টা করলেও আপনার ক্ষতি করতে পারবে না ।শুদ্ধ থাকুন, শুদ্ধতার শুভ্রতাকে উপভোগ করুন । জীবন সুন্দর হবে ।আমি সবার মতের প্রতিই শ্রদ্ধাশীল।আশা করি আপনিও তাই।সৌজন্যবোধ ও মানবতার জয় হোক !
আমি রাতের জন্য তিল তিল করে অপেক্ষা করি,
ঘড়ির কাঁটার টিকটিকের সাথে
আমার অপেক্ষা দমে দমে হাহাকার করে!
সারাটা দিন ছটফট করি, সে বোঝে না৷
সে শুধু ছুটে বেড়ায়- আপিসে, দপ্তরে,
সারা ঘরময়।
প্রজাপতির মত উড়ে উড়ে বেড়ায়,
কখনও কিচেনে, কখনও টেবিলে,
বইয়ের পাতায়,
কখনও ড্রেসিংটেবিলটার সামনে বসে গুনগুন করে,
পিঠের ওপর বিলিয়ে দিয়ে দীঘল চিকুরজাল!
লোলুপ আয়নাটা প্রথমে আমায় ভ্রুকুটি করে,
তারপর আয়েশ করে সময় নিয়ে
গিলতে থাকে তার সৌন্দর্য!
আমার প্রতীক্ষা দীর্ঘ হতে দীর্ঘতর হয়,
সে বোঝে না৷
ছুটির দিনে তো অন্তত আমায় একটু বেশি সময় দিতে পারে!
তাও না!
সে ছুটির দিনে আরো ব্যস্ততায়
রঙ তুলি নিয়ে বসে।
তার কপোলে রঙ মেখে যায়,
তুলিটা অসভ্যের মত জিভ লেলিয়ে যায় সুযোগ পেলে!
আমি অসহায়ের মত দেখতে থাকি!
এত খাটুনি তার! আমার কষ্ট হয়!
ওই নরম শরীরে আর কতটা সয়!
কী হয় দুপুরে একটু ঘুমালে?
অন্তত ঘরে থাকা অবস্থায়
দুয়েকবার গা তো এলাতেই পারে,
একটু বসলেই পারে আমার কোল ঘেঁষে!
নাহ! তা সে করে না!
বই পড়তে বসে রকিং চেয়ারে!
চেয়ারটাও শালা, সারা পিঠে লোভাতুর স্পর্শ বুলিয়ে চলে!
হাতল দুটোকেও বলিহারি!
লম্পটের মত জীবন্ত হয়ে ওঠে যেন!
ওরা আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসে!
আমার গা জ্বলে যায়!
আমি সারাদিন ছটফট করি৷
আমার অপেক্ষা খাপরাহস্ত হয়!
কখন রাত আসবে,
কখন তার চোখের পাতায় আদিম নেশা ভর করবে,
কখন তার বুকের চুঁটিতে মুখ লুকিয়ে
নিঃশ্বাস ভরে শুষে নেবার সুযোগ পাব
খোমারি পারফিউম!
কখন তার গলা বেয়ে ঘাম
টুপ করে গড়িয়ে পড়বে আমার নাকের ডগায়!
কখন তার বুকের ধুকপুকানিতে তাল মিলিয়ে
কেঁপে কেঁপে গলে যাবার রাতটুকু আসবে?
তার শরীরে লম্বা হয়ে জড়িয়ে
পেচিয়ে নিঃশ্বেষ হয়ে যাওয়াই যে আমার জীবনের সার্থকতা!
হায় চিদ্রূপের বিদ্রূপ,
আমি এক হাতহীন,
পা- হীন,
ঠোঁটহীন,
জিভহীন,
প্রেমার্ত কোলবালিশ!
টীকা:
কোলবালিশ লইয়া প্রায় একই বা কাছাকাছি থিমের একটি গল্প লিখিয়াছিলেন বনফুল৷ গল্পের নাম "অক্ষমের আত্মকথা"৷ ঠিক কোলবালিশ নয়, উহা ছিল বালিশ লইয়া লেখা গল্প৷ আমার এই অপদস্ত কবিতার সঙ্গে ওই গল্পের কোন যোগ নাই, তথাপি ইহারা কাছাকাছি প্লটের৷
একজনকে পটাইতে গিয়া বলিলাম, ডেবী, টোমার কোলবালিশকে আমার হিংসে হয়!
চটুল শ্রীমতীখানা এই সামান্যতে পটিলেন না৷ উল্টো আমায় চ্যালেঞ্জ ছুড়িয়া বলিলেন, ঝটপট একটা কবিতা লিখে দিন তো কোলবালিশ নিয়ে!
এই কবিতা লিখিবার সময় আমার চিন্তার কোথাও বনফুল ছিলেন না, না তাঁহার বালিশ লইয়া গল্প, আমার মাথায় শুধুই ঘুরিতেছিল ক্রাশের কোলবালিশটি আমি হইলে আমার মনে কী কী চেত্তা উদিত হইত৷
ইহা কেবলই বিনোদন৷ পাঠক নিম্নের মন্তব্য বাকশে যথেচ্ছা নিন্দে নিকুচি করিতে পারিবেন, আমি নাসাগামী ওমরসানীর ন্যায় ওইসব "না দেখার ভান করে থাকব"!
ধন্যবাদ৷
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১০:২৯
জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: ধন্যবাদ, উৎসাহ পেলে আরো...
২| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ৯:৩৭
মনিরা সুলতানা বলেছেন: খারাপ হয় নাই কিন্তু !
পড়তে ভালোই।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১০:৩৪
জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: তবে মনে হয় উতরে গেলাম!
৩| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১১:১১
ধূসর সন্ধ্যা বলেছেন: কোলবালিশ নিয়েও যে এমন আবেগময় কবিতা হতে পারে আপনার কবিতা না পড়লে জানাই হত না । তবে পড়তে কিন্তু খারাপ লাগে নি ।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১১:৩৪
জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: ধন্যবাদ, ভাই৷
৪| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ৩:০৪
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: সত্যি কথা কী, এমন সাবলীল কবিতা ব্লগে পেলাম বহুদিন পর। আপনার লেখনিশক্তি খুবই সাবলীল। আপনাকে নবীন কবি ভেবে গুরুগিরি করতে এসে নিজেই শিখে গেলাম কবিতা কীভাবে লিখতে হবে।
দু-এক জায়গায় একটু দুর্বল লেগেছে আমার কাছে - 'তাও না'। মনে হয়েছে এ কথাটা হালকা বা দুর্বল করেছে কবিতাকে। অন্যভাবে লেখা যেতে পারে।
আপিস লিখলেন কেন? এমন না যে আরো কোনো ইংরেজি শব্দ নেই। 'অফিস' ফার বেটার স্যুটেড।
যেহেতু ভালো কবিতা লেখেন, বানান ভুল টুল যেন না হয়
শুভেচ্ছা নিয়েন।
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:৪৪
জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: আপিস, হা রে, চেত্তা, কী বুলচেন, ভগমান, দেকচো- এমন অনেক শব্দই ব্যবহার করি শুধু ঢং করে৷ মাথার ভেতর যে লোকটা ভাঁড়ামি করে তার মধ্যে খানিকটা সনাতন ঘেঁষা হাবভাব চলে!
তাও না- এটা স্রেফ স্বগতোক্তি৷ ভেতরে একটা লোককে ধরে এনে বসিয়ে দেই, তারপর বলি, বলো বাবা বলতে থাকো যা খুশি, শুধু বলার ঢঙটা হারিয়ো না৷ ব্যস৷
অনেক ধন্যবাদ বিশ্লেষণের জন্য ❤️❤️
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ৯:১৩
আমি আগন্তুক নই বলেছেন: দারুণ লাগলো।