নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দর্শন হল হিসাব বিজ্ঞানের ডেবিট এবং ক্রেডিট । সবসময় যতখানি ডেবিট, ঠিক ততখানিই ক্রেডিট হয় । পরকালের হিসেব যা-ই হোক, এই ইহকালে আমরা ঠিক যেভাবে শূন্য হাতে পৃথিবীতে এসেছি, সেভাবে শূন্য হাতেই পৃথিবী ছেড়ে যাব । এটাই পৃথিবীর আবর্তনিক নিয়ম । অনেকে আমরা এটা বুঝতে ব্যর্থ হই ।আপনি কারো ক্ষতি করবেন তো আজ অথবা কাল আপনার ক্ষতি হবেই হবে । ভালো করলেও তার ফল আপনি জীবদ্দশাতেই পাবেন ।অনেকে দেখবেন রাস্তাঘাটে অযথা হোঁচট খায়, অসুখে ভোগে- এসব এমনি এমনি নয়, হয় এর অতীত, নয়তো ভবিষ্যৎ প্রসারী কোন কারণ আছে । যদি আপনি কারো ক্ষতি না করেন, তবে আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি, আপনার কোন ক্ষতি হবে না । কেউ চেষ্টা করলেও আপনার ক্ষতি করতে পারবে না ।শুদ্ধ থাকুন, শুদ্ধতার শুভ্রতাকে উপভোগ করুন । জীবন সুন্দর হবে ।আমি সবার মতের প্রতিই শ্রদ্ধাশীল।আশা করি আপনিও তাই।সৌজন্যবোধ ও মানবতার জয় হোক !
দুই ঘণ্টা ধরে হাসিমুখ করে বসে আছেন লতিফ সাহেব। হাসিমুখটা এখন ধরে রাখতে কষ্ট হচ্ছে। এই যে হাসিমুখটা, সেটা কার জন্য কীসের জন্য এখন নিজেকেই নিজে উত্তর যোগাতে পারছেন না। একটা মানুষও তাঁর দিকে ফিরে দেখেনি। প্রথম দিকে দুইজন ক্রেতা তাঁকে সেলসম্যান ভেবে অমুক বই তমুক বইটা দেখাতে বলেছে, লজ্জায় লতিফ সাহেবের গাল লাল হয়ে গেছে তখন! সেলসম্যান ছেলেটা তড়িঘড়ি করে এসে শুধরে দিল, উনাকে বইলেন না, উনি রাইটার!
ওহ, রাইটার! আচ্ছা আচ্ছা!
কী রাইটার, কীসের রাইটার বা কী বই লিখেছে তা নিয়ে কেউ আগ্রহ দেখাল না, তাদের পছন্দের বই নিয়ে তারা চলে গেল! দুই ঘণ্টায় স্টল থেকে মোট তেরোটা বই বিক্রি হয়েছে। লতিফ সাহেবের খুব লজ্জা লাগছে, তাঁর বই কেউ ধরে দেখছে না। অথচ আসার আগে সকালে তিনি যখন ফেইসবুকে পোস্ট করলেন যে, "আজ বিকেল তিনটায় আপনাদের সঙ্গে সময় কাটাতে বইমেলার আদু ভাই প্রকাশনীর বিপনিতে থাকছি আমার প্রকাশিত 'কাসুন্দির ঘ্রাণ' বইটি নিয়ে, দেখা হবে প্রাণের উৎসবে!" -তখন একশো লাইক পেয়েছে! অনেকেই কমেন্ট করেছে, দেখা হবে প্রাণের উৎসবে!
অথচ দুই ঘণ্টায় কেউ তো আসেইনি, ফেইসবুকেও নতুন কোন কমেন্ট পড়ছে না!
ভেতরে ভেতরে লজ্জা পাচ্ছেন লতিফ সাহেব, আদু প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী আনোয়ার ভাই এরমধ্যে দুইবার এসে জিজ্ঞেস করল, কী ভাই, কেমন লাগছে?
লতিফ সাহেব ফিরতি হাসি দিয়ে বলেন, এই তো, আপনার বিক্রি দেখি।
আনোয়ার ভাইকে ডাকতে গেলে মুখে বারবার আদু ভাই এসে যায়, আনোয়ার ভাই হো হো করে হাসে, আদু ভাই নামটাও খারাপ না, ডাকেন কোনো মাইন্ড নাই।
তা আপনার ফ্যান ফলোয়ারদের ডাকেন, আসুক, বই কিনুক!
লতিফ সাহেব মিনমিন করে বললেন, পোস্ট তো করেছি ফেইসবুকে, দেখি কজন আসে!
কেউ আসছে না। যারা কমেন্ট করেছে "দেখা হবে প্রাণের উৎসবে", তাদেরকে মেসেজ দিয়ে জিজ্ঞেস করতে পারলে ভালো হত যে, কী ভাই, কদ্দূর এলেন, আমি তো বসে আছি, আসেন, আড্ডা দেই!
কিন্তু এটা বলতে গেলে বেহায়াপনা হয়ে যায়!
একটি বই এখানে খুব ধুমিয়ে বিক্রি হচ্ছে, বইটার নাম "মায়াবী কান্না"। কবিতার বই, লেখকের নাম ম্যাথিউ মামুন! "ম্যাথিউ মামুন" ব্যাপারটা দেখে লতিফ সাহেবের চোখ ছানাবড়া! আদু ভাই আশেপাশে নেই, সেলসম্যানকে জিজ্ঞেস করবেন কি না ভাবছেন যে এই ম্যাথিউ সাহেবের পরিচয় কী, খ্রিস্টান, না মুসলিম? ম্যাথিউ সাহেবের বইটা এর মধ্যে পড়া শেষ, তিন ফর্মার বই, সূচীপত্রে দেখা গেল চল্লিশটি কবিতা। কবিতা পড়ে লতিফ সাহেবের মুখে পানি জমতে আরম্ভ করছে, থুতু না ফেললেই নয়!
এক জায়গায় কবি লিখেছেন,
তোমার মেসেঞ্জারে আমার চ্যাট
অথবা আমার চ্যাটে তোমার মেসেজ,
ইংরেজির তেজ
ছেড়ে সোজা বাংলায় বলি
আমার চ্যাটে আর মেসেজ করো না!
এটা যে কী রকম কবিতা, ভাষার শৈল্পিকতা ইত্যাদি ভাবতে গিয়ে লতিফ সাহেবের মাথা ঘুরাচ্ছে! এবং এই বইটাই সাত কপি বিক্রি হল গত দুই ঘণ্টায়! কে সঠিক পথে আছে, লেখক না পাঠক লতিফ সাহেব বুঝতে পারছেন না!
লতিফ সাহেব বই প্রকাশ করেছেন প্রবন্ধের! রাজনীতি, সাহিত্য হেনতেন সর্ববিষয়ের আলোচনা টাইপের বই। ফেইসবুকে তাঁর এসব আলোচনার কারণে অনেকেই তাঁকে পছন্দ করে। খু্বই যৌক্তিক লেখা লিখতে পছন্দ করেন তিনি, আবোল তাবোল অন্তত লেখেন না। প্রবন্ধ সবাই পছন্দ করে না, এই বুঝ তাঁরও আছে। কিন্তু যেসব পাঠক ফেইসবুকে তাঁকে উৎসাহ দেয় তারা অন্তত কিনবে এই বিশ্বাসেই বই ছেপেছেন তিনি। বাকিটা যা হয় দেখা যাবে!
উঠে গিয়ে এবার একটা সিগারেট না খেলে আর চলছে না। সিগারেটও খাওয়া হবে, অন্যান্য দোকানের বেচাবিক্রিও দেখা যাবে। সেলসম্যানকে বললেন, কেউ যদি আমার খোঁজে আসে, একটা কল দেবেন আমাকে। বইমেলায় লেখকমঞ্চ করা হয়েছে, একটা পাঠকমঞ্চও এখানে হওয়া দরকার ছিল লতিফ সাহেব ভাবলেন, পাঠকগণ তাঁদের পাঠপ্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে পারতেন তাহলে, পরক্ষণেই মাথায় এল এতে হিতে বিপরীতও হতে পারে, দেখা গেল কোন পাঠক বাংলায় মেসেজ আর চ্যাট নিয়ে আপত্তি জানিয়ে বই ছিঁড়ে প্রতিবাদও করে বসতে পারে, সেটা মোটেই ভালো হবে না।
প্রায় দোকানেই অটোগ্রাফ পর্ব দেখা যাচ্ছে, পাঠক লেখকের সঙ্গে ছবি তুলছে গর্বিত মুখে! লতিফ সাহেব ভাবছেন, এই যে এত এত বই প্রকাশিত হয়েছে, এই বইয়ের মধ্য হতে কয়টা বই আগামী এক বছর পর্যন্ত পাঠকের মনে থাকবে? সাহিত্য অঙ্গনে স্থান করে নেবার মত কোন বই কি এবার এসেছে?
তিনি নিজে লিখেছেন প্রবন্ধের বই, প্রবন্ধ বাংলা সাহিত্যে এখন তেমন কোন স্থান পাচ্ছে না, তাও তিনি যদি কোন পত্রিকার কলামিস্ট হতেন, হয়ত তাঁর লেখাকে ভিন্নভাবে দেখা হত। কিন্তু গল্প উপন্যাসগুলো তো এক্ষেত্রে সহজেই জায়গা করে নিতে পারবে যদি তা পাঠকহৃদয় ছুঁতে পারে!
এখন ব্যাপার হল কে কার বই কিনবে, কেন কিনবে?
একজন নতুন লেখকের বই যতই ভালো হোক মানুষ যেহেতু তাকে চেনে না, তার বই মানুষ কেন কিনবে! লতিফ সাহেবের মনে হল, প্রচ্ছদ সত্যিই একটি বইয়ের বিক্রিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে! যতই বলা হোক, ডোন্ট জাজ এ বুক বাই ইটস কভার, বাস্তবতা হল, সুন্দর কভারের বই হলে তা একটু হাতে ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছে হয়! ওই যে প্রথমে দর্শনদারী, তারপর গুণবিচারী!
মানুষ টাকা দিয়ে একটা বই কিনবে, সে বই থেকে মানুষ কী পাবে সে জবাবদিহিতারও একটা ব্যাপার এখন সৃষ্টি হয়েছে! ওপার বাংলার শংকরের বই সম্পর্কে বলতে ইচ্ছে হয় যে এই একটা লেখক বই প্রকাশকে ব্যবসায়িক মাত্রায়ই নিয়েছেন, এবং তাঁর বইতে তিনি এমন কিছু অবশ্যই রাখেন যা পেয়ে বইয়ের ক্রেতা পয়সা উশুল হয়েছে এমন সান্ত্বনা পায়!
লতিফ সাহেবের বন্ধু জামান বলেছিল, তুই প্রবন্ধ না লিখে একটা গল্পের বই লিখতি, বই প্রকাশের আগেই আমরা তার সমালোচনা লিখে পাবলিক উস্কে দিতাম, তখন দেখতি বিক্রি না হয়ে যায় কই!
বই বিক্রয়টাও এখন একটা ব্যবসায়ের পর্যায়ে নেমে এসেছে! এখন বইতে কী থাকছে তার বিজ্ঞাপন চলতে থাকে বই প্রকাশের শুরু থেকেই!
মানিক বন্দোপাধ্যায়ের বই তাঁর জীবদ্দশায় মর্যাদা পায়নি, জীবনানন্দের কবিতা মূল্য পায়নি, অভাবে মরেছেন এঁরা। কিন্তু সেগুলো অক্ষয় সাহিত্য সত্যই হয়েছে। আর এখন লেখকরা কেউ মানিক জীবনানন্দ হতে চান না বলেই বই বিক্রয়ের দায়টাও নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছেন! লেখকই ক্রেতা ধরে আনছেন, নিজেই দাঁড়িয়ে বিক্রি করছেন!
লতিফ সাহেব গোটা বইমেলায় আরেকটা জিনিস লক্ষ করলেন, অসংখ্য মানুষ মেলায় এসেছে, ছবি তুলছে, বই কিনছে তার পাঁচ ভাগ! এদেশে পাঠক কই! তাঁর নিজের চারপাশে যত মানুষ চেনাজানা তাদের মধ্য হতে একশোজন বড়জোর পাওয়া যাবে যাঁরা পত্রিকা নিয়মিত পড়েন, পঞ্চাশজন হয়ত মিলবে যাঁরা সাহিত্যপ্রেমী বা বই পড়তে পছন্দ করেন। বেশিরভাগ মানুষই বই পড়তে অনাগ্রহী! পাঠক নেই, লেখকই পাঠক এমন অবস্থা আসতে বেশি দেরি নেই! এখন যে হারে মানুষ আগডুমবাগডুম ছেপে বিক্রি করছে চেনাপরিচয়ের সূত্র ধরে জোর করে, তাতে আরো দশজন আগডুমবাগডুম আগামীতে নিজেও বই ছাপার উৎসাহ পাচ্ছে! জীবন সম্পর্কে গভীরতা খুম কম লেখকের আছে! ওই যে, "রাত বাড়ছে, হাজার বছরের পুরনো সে রাত!" -এরকম একটা প্রবাদসম বাক্য বাংলা সাহিত্যে এখন আর কেউ লিখতে পারছে না!
হঠাৎ একটা নারী কণ্ঠ ভীড় পেছন থেকে রিনরিনে কণ্ঠে ডাক দিল, লতিফ ভাইয়া, এই যে, লতিফ ভাইয়া! লতিফ সাহেব পেছনে ফিরে জ্বলজ্বল করতে থাকা এক সুন্দরীকে দেখতে পেলেন! কাছে এসে ফিক করে হেসে ফেলল নারীটি! লতিফ সাহেব ঠাহর করতে পারছেন না কে হয় এই নারী!
চিনতে পারলেন না? আমি আপনার ফেইসবুক ফ্রেন্ড, স্রোতস্বিনী দামিনী!
ওহ, আরে কেমন আছেন?
খুবই ভালো আছি ভাইয়া, আপনারা এত এত ভালোবাসা দিয়েছেন যে আমার মানবজনম ধন্য হয়ে গেছে!
কে কোথায় কী ভালোবাসা দিয়েছে আর সেখানে লতিফ সাহেবেরই বা কতটুকু কী অবদান তা তিনি বুঝতে না পেরে মুখে একটা অমায়িক হাসির ভঙ্গি করলেন।
যাইহোক, পেয়ে গেলাম আপনাকে, আজকের দিনটি খুবই সুন্দর হয়ে উঠল আমার, চলুন!
লতিফ সাহেব একটু খুশিই হলেন, এমন সুন্দর কেউ তাঁকে এভাবে গুরুত্ব দিল, বাহ!
লতিফ সাহেব গলায় উৎসাহ ফুটিয়ে বললেন, কোনদিকে যাওয়া যায়!
আরে আসুন আমার সাথে, আপনাকে চমকে দেব চলুন!
দামিনী স্রোতস্বিনী তাঁকে বেশ উৎসাহের সঙ্গে খুবই উৎসব উৎসব আমেজসহকারে একটি দোকানের সামনে নিয়ে গিয়ে কণ্ঠে খুশির ফোয়ারা বইয়ে হাঁক দিল, পাশা ভাই, দেখুন কাকে নিয়ে এসেছি, ইনি লতিফ ভাইয়া, আমার লেখার খুবই প্রশংসা করেন সবসময়! ইনি একাই মিনিমাম আমার পাঁচ কপি বই কিনবেন দেখেন!
লতিফ সাহেবের বুক মোচড় দিল! ও খোদা! এজন্যই এত খাতির! আর এভাবে সবার সামনে বলে বসলে বই না কিনে উপায় আছে!
লতিফ সাহেব বললেন, কই দেখি, বই কেমন হল!
সেলসম্যান অমনি পাঁচ কপি তুলে দিল সামনে!
লতিফ সাহেব বললেন, আমি এখন দুই কপি নেব, আমাকে দুই কপি দিন!
দামিনী গদগদ হয়ে পাশা ভাই নামক লোকটিকে বলল, কী, বলেছিলাম না?
লতিফ ভাই, বলেন, কী লিখি আপনাকে অটেগ্রাফে?
লতিফ সাহেব বললেন, আপনার মনে আমার জন্য যে শুভকামনাটি আছে, তাই লিখে দিন!
দামিনী লিখল-
প্রিয় লতিফ
প্রিয় ব্যক্তিত্ব!
এ নদী তোমারই অনুরক্ত!
দামিনী লতিফ সাহেবের মেয়ের বয়সী হবে! লতিফ সাহেব বই হাতে ফিরলেন, আর কোথাও ঘুরতে সাহস হল না, আবার কোথায় কোন অনুরক্তের সামনে পড়ে যান এই আশঙ্কায়! স্টলে ফিরে দেখলেন ম্যাথিউ সাহেব চলে এসেছেন! তাঁকে ঘিরে অটোগ্রাফ চলছে! একেকটি মেয়ে সামনে আসছে, ম্যাথিউ সাহেব খুবই মায়া মায়া চোখে তাকাচ্ছেন তাদের দিকে, এখানেও সেই অনুরক্তি টের পাওয়া যাচ্ছে, অনুরক্তির চোটে ম্যাথিউ এবং তার ভক্তরা পরস্পরের কাছে বিগলিত হচ্ছে! এক মেয়ে কাছে এসে সেলফি তুললে আরেক মেয়ে কেমন হিংসার চোখে তাকাচ্ছে, লতিফ সাহেব ভেবে পেলেন না ঘটনা কী!
তিনিও লেখক, কিন্তু তাঁকে ঘিরে কারও কোন আগ্রহ নেই, তাঁর বইকে ঘিরে আগ্রহ আছে কি না সেটাও বোঝা যাচ্ছে না! সেলসম্যানকে জিজ্ঞেস করলেন কেউ এসেছিল কি না তাঁর খোঁজে, উত্তর হল, কেউ আসেনি!
দোকানের ভেতর ঢুকবেন কি না, নাকি চলে যাবেন, নাকি আরো একটু ধৈর্য ধরে দেখবেন কেউ আসে কি না লতিফ সাহেব মনস্থির করতে পারছেন না। এমন সময় আনোয়ার ওরফে আদু ভাই এলেন, ম্যাথিউ সাহেবকে নিয়ে কিছুক্ষণ রসিকতা প্রসংশা ইত্যাদি করলেন, তারপর লতিফ সাহেবের দিকে ফিরে বললেন, চলুন, টেনে আসি!
সিগারেট খেতে খেতে আদু ভাই বললেন, শোনেন লতিফ ভাই, যে টাকা খরচ করছেন সেটা কিন্তু এই মেলা থাকতে থাকতেই তুলতে হবে। এজন্য আত্মীয় স্বজন বন্ধু বান্ধব যত যা আছে, সবাইকে ইনভাইট করবেন, কী পারবেন না?
এই মেলা শেষ হয়ে গেলে কিন্তু বই কোন দোকানেও নিতে চাইবে না, বুঝতেছেন? বিজনেস! বুঝলেন, বিজনেস, সবকিছুই এখন বিজনেস, প্রচারেই প্রসার!
লতিফ সাহেব মুচকি হেসে বললেন, তা তো বটেই!
লতিফ সাহেব সেদিনের মত বাড়ি ফিরে এলেন, দোকানে বসে আর নিজেকে নিজের কাছে অথর্ব করতে চাইলেন না।
গোটা বই মেলায় লতিফ সাহেবের মোট দুইটি বই বিক্রি হল, আর তিনি নিজের পয়সায় মানুষ দিয়ে নিজের বই কিনেছেন পনের কপি। তাঁর বই বিক্রি হচ্ছে না, প্রকাশকের কাছেও তিনি লজ্জা বোধ করছেন! তাই এই পনের কপি তিনি কিনিয়ে একে ওকে উপহার দিয়েছেন। কিন্তু মূল বিক্রি ওই দুইটিই, তাও তাঁর দুই বন্ধু কিনেছে!
পরের বছর তাঁর বইটি দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি পত্রিকার পক্ষ হতে পুরস্কৃত হয় এবং তিনি কলাম লেখার আহ্বান পান সেখান থেকে।
আগামীতে লতিফ সাহেবের বই হয়ত বিক্রি হবে।
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:৪৩
জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: ধন্যবাদ!
২| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:৪৩
রাজীব নুর বলেছেন: লেখা, ভাষা এবং স্টাইল খুব সুন্দর হয়েছে। পড়তে একটুও বিরক্ত লাগে নি।
চমৎকার রস কস সবই আছে।
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:৪৫
জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: অনেক দিন পরে জোর করে একটা গল্প লিখতে গিয়ে মনে হচ্ছে লেখার ক্ষমতা একেবারেই শেষ হয়ে যায়নি!
৩| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১২:২১
করুণাধারা বলেছেন: কবিতার মত গল্পও আপনি ভালো লেখেন।
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:৪৬
জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: কৃতজ্ঞ বোধ করছি এই অনুপ্রেরণার জন্য!
প্রতিদানে আমি আরো লিখতে চাই, জোর করে হলেও লিখতে চাই!
৪| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১২:৪৮
মা.হাসান বলেছেন: খুব সুন্দর লিখেছেন।
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:৪৭
জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: ধন্যবাদ, ভাই!
©somewhere in net ltd.
১| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:৪২
রাজীব নুর বলেছেন: বাস্তব গল্প লিখেছেন। ১০০% বাস্তব।