নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একটি পথ, আপনি চাইলে হেঁটে দেখতে পারেন....

জীয়ন আমাঞ্জা

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দর্শন হল হিসাব বিজ্ঞানের ডেবিট এবং ক্রেডিট । সবসময় যতখানি ডেবিট, ঠিক ততখানিই ক্রেডিট হয় । পরকালের হিসেব যা-ই হোক, এই ইহকালে আমরা ঠিক যেভাবে শূন্য হাতে পৃথিবীতে এসেছি, সেভাবে শূন্য হাতেই পৃথিবী ছেড়ে যাব । এটাই পৃথিবীর আবর্তনিক নিয়ম । অনেকে আমরা এটা বুঝতে ব্যর্থ হই ।আপনি কারো ক্ষতি করবেন তো আজ অথবা কাল আপনার ক্ষতি হবেই হবে । ভালো করলেও তার ফল আপনি জীবদ্দশাতেই পাবেন ।অনেকে দেখবেন রাস্তাঘাটে অযথা হোঁচট খায়, অসুখে ভোগে- এসব এমনি এমনি নয়, হয় এর অতীত, নয়তো ভবিষ্যৎ প্রসারী কোন কারণ আছে । যদি আপনি কারো ক্ষতি না করেন, তবে আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি, আপনার কোন ক্ষতি হবে না । কেউ চেষ্টা করলেও আপনার ক্ষতি করতে পারবে না ।শুদ্ধ থাকুন, শুদ্ধতার শুভ্রতাকে উপভোগ করুন । জীবন সুন্দর হবে ।আমি সবার মতের প্রতিই শ্রদ্ধাশীল।আশা করি আপনিও তাই।সৌজন্যবোধ ও মানবতার জয় হোক !

জীয়ন আমাঞ্জা › বিস্তারিত পোস্টঃ

চিরকুমারসন্দর্শন

০১ লা নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:০৮


কোন নারী যদি একা জীবন কাটাতে চায় তখন তাকে সমীহের চোখে দেখা হয়! স্বাধীনচেতা, আত্মনির্ভরশীল, পুরুষের দাসত্ব বিরোধী ইত্যাদি ইত্যাদি বিশেষণে অলঙ্কৃত হয় সে! কিন্তু একজন পুরুষ যদি একা জীবন কাটাতে চায় তখন সমাজ তাকে প্রশংসা নয়, বলা যায় খুবই নিকৃষ্ট করে দেখে!

মন্তব্যটা নারী পুরুষ বিদ্বেষ মূলক ঠেকতে পারে বা দুর্বোধ্য শোনাতে পারে; এখানে বিদ্বেষের কিছু নেই, বাস্তবতাটা বিশেষ একটা সমস্যা তুলে ধরতেই উল্লেখ করা হল, পরবর্তী পাঠে তা সুস্পষ্ট হয়ে উঠবে বলেই বিশ্বাস করি।

পরিবার বিষয়টা সহজে মানতে চায়নি, জোর করে বিয়ে দেবার চুড়ান্ত সব চেষ্টা করেছে, আমি শেষমেশ মানাতে পেরেছি যে আমার কারও প্রতি কোন অভিযোগ নেই, নিজের ব্যক্তিগত দর্শনের কারণেই আমি বিয়ে বিহীন একাকী জীবন কাটাতে চাই! খুব সহজে মানেনি কেউ, পনেরটা বছর ঘর ছেড়ে অন্য শহরে গিয়ে ছিলাম। আমার মা শোকে শোকেই মারা গেলেন! আমি নিশ্চিত, আমার পরিবারের সবাই অর্থাৎ ভাই বোন এবং মরার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত মা নিজেও- আমার এই একাকী জীবনের জন্য প্রত্যেকেই নিজ নিজকে দায়ী ভেবেছে! জীবিতরা এখনও ভাবছে!

আমার বয়স এখন আটচল্লিশ! বুড়ো হয়ে গেছি পুরোপুরি! আমার ভাই বোন নিজ নিজ সংসার জেঁকে বসেছে, তবু সবার সহমর্মিতার অর্ধেক দৃষ্টি থাকে আমার দিকে! ওরা পারলে আমাকে এখন শিশুর মতই লালন পালন করতে চায়! কিন্তু ওদের তো সংসার আছে, নিজেদের ব্যক্তিগত জীবন আছে, আমি সেখানে ঝামেলা হব না বলেই নিজের পথ নিজে করেছি। একা একটা বাড়িতে থাকি। বাড়িটা কোনমতে নিজে করেছি। একজন চিরকুমারকে কোন বাড়িওয়ালা যে বাসা ভাড়া দিতে চান না এই সহজ সত্যটা আপনারা সকলেই তো জানেন!

চিরকুমারের জীবন কাটাতে গিয়ে যেসব সমস্যার শিকার হয়েছি তাই লিখছি এখন। একজন পুরুষ বিয়ে করছে না মানেই প্রথমে সবার যে চিন্তাটা মাথায় আসে তা হল পৌরুষের অক্ষমতা! সবাই সন্দেহে ভোগে, নিশ্চয়ই সঙ্গমের ক্ষমতা নেই, কিংবা হিঁজড়া নয় তো!
কী অদ্ভুত না? মানদণ্ড এই সঙ্গমের যোগ্যতা! কানাঘুষা শুনতে হয়েছে বিস্তর! অনেকে ইঙ্গিতে এমনও জানতে চেয়েছে যে উত্তেজনা উঠলে কী কী করেন! কেউ কেউ সমকামী ভেবেও এড়িয়ে চলেছে! কখনও কোন বাচ্চাকে কোলে নিতে গেলেও তা ভালোভাবে নেওয়া হয়নি। বিকৃত যৌনরুচির বলে সন্দেহ করেছে! চিরকুমার হতে গিয়েই জেনেছি, সব কিছুরই আবর্তে মানুষের কেবলই যৌন চেতনা! ওটাই প্রধান মাপকাঠি!
কোথাও গেলে পেছনে অনেকগুলো সন্দিহান চোখ আটকে থাকে আমার দিকে, আমি টের পাই!

তারপর থেকে আর কারও বাচ্চাকে কোলে নেবার সাহস হয়নি। একটা সন্তানের লোভ আমার বরাবরই হত। একবার বাচ্চা দত্তক নেবার সিদ্ধান্ত নিলাম। যোগাযোগ করলাম এক এতিমখানায়! আমি বিবাহিত নই জেনে তারা আর রাজি হল না! আমার নিজেরই সংসার নেই, আমি বাচ্চা পালব কিভাবে! তার উপর আমার শখ ছিল একটি মেয়ের! কোন কর্তৃপক্ষই রাজি হল না, কেউ কেউ পার্ভার্ট বলে সন্দেহও করল! আশা ছেড়ে দিলাম শেষমেশ!

দিনকে দিন বিচ্ছিন্ন হতে লাগলাম সমাজ থেকে, একঘরে হয়ে পড়লাম পুরোপুরি! এখন বয়স আটচল্লিশ, চামড়ায় ভাজ পড়েছে, মাথার চুল ঝরে গেছে অনেকাংশেই, নিজের চিরচেনা শরীরটাকে দুর্বল হিসেবে আবিষ্কার করতে আরম্ভ করেছি! প্রায়ই মনে হয়, এই একটা মানবজীবন পেলাম, কেমন তরতর করে শেষ হয়ে গেল! কবি শহীদ কাদরী মারা গেলেন জার্মানিতে, খবর পেলাম! মরার সময় নাকি কেউ পাশে ছিল না! কবি হেলাল হাফিজের কথা শুনলাম, একা থাকেন, এক গ্লাস পানি ঢেলে দেবার মত একজন মানুষের অভাবও কখনও কখনও বোধ করেন! এই বার্ধক্যে এসে এখন নতুন করে ভাবতে বসেছেন, আজীবন একা থাকার এই সিদ্ধান্ত কি ভুল ছিল, না সঠিক!

আমি বুঝতে পারি, একা একা মরে যাবার মত কষ্টের কিছু নেই। জীবন একটাই পেয়েছি, হিসেব কষিনি, দেনা পাওনাও রাখিনি। একা থেকে ভুল করেছি কি না ভাবি না কখনও, শুধু জানি, আবেগের অসম্মান করিনি, যা আমার কাছে সুন্দর ছিল, তাকে নষ্ট হতে দিইনি।

জীবনের যা সঞ্চয় তা দিয়ে একটি এতিমখানা খোলার কথা ভাবছি, আমার এই বাড়িটাতেই শুরু করব। একটি সন্তানের হাহাকার ছিল, এবার আমি শত শত শিশু পাব, আমার নিজের রক্ত কথা না বলুক, শত সন্তানের রক্ত আমার হয়ে কথা বলবে সেই বা কম কী!

শুভরাত্রি!

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:১১

রাজীব নুর বলেছেন: সংসারে শান্তি নাই।
তাই কোনো পুরুষেরই বিয়ে করা উচিত না।
খাও দাও ফুর্তি করো। এই মানসিকতা নিয়ে জীবন পার করে দেওয়া উচিত। জীবন তো একটাই।

২| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:১২

রাজীব নুর বলেছেন: আপনি একজন গ্রেট লোক।

০১ লা নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:১৭

জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: আরে না ভাই, এটা একটা নাটকের কনসেপ্ট। পয়েন্ট ডাউন করে রাখলাম। না লিখলে পরে আর মাথায় থাকে না। ওদিকে কনসেপ্ট চুরি হবারও ভয় থাকে। আবার লেখার পর সেটা লুকিয়ে রাখার মত শক্ত কাজ আর নেই, প্রকাশ না করা পর্যন্ত অশান্তি লাগে!

৩| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:২৮

জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: ভালো গল্প।

০১ লা নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:৩৩

জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: ধন্যবাদ, ভাই।

৪| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:৩৩

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: আরে না ভাই, এটা একটা নাটকের কনসেপ্ট। পয়েন্ট ডাউন করে রাখলাম। না লিখলে পরে আর মাথায় থাকে না। ওদিকে কনসেপ্ট চুরি হবারও ভয় থাকে। আবার লেখার পর সেটা লুকিয়ে রাখার মত শক্ত কাজ আর নেই, প্রকাশ না করা পর্যন্ত অশান্তি লাগে!

ঠিক আছে। তবে গল্পটা সেই হইছে।

০১ লা নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:২১

জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: একজন ব্যাচেলরের জীবনকাহিনী চিত্রায়ণ করলে হৃদয় ছুঁতে পারবে বলেই মনে হচ্ছে।
দেখা যাক, পারি কি না শেষমেশ!

৫| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:৪৪

মা.হাসান বলেছেন: হাজি মহসিনের কথা পড়ে দেখতে পারেন।

মানুষ নিজে যে রকম অপরকে সে রকম ভাবে। হয়তো ভবিষ্যতে এদেশের মানুষের চিন্তার পরিবর্তন হবে। বিয়েকে আমি খুব খারাপ, কিন্তু প্রয়োজনীয় একটা জিনিশ হিসেবেই দেখি। আপনার প্লট সুন্দর হয়েছে।

০১ লা নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:০৩

জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: ধন্যবাদ, ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.