নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একটি পথ, আপনি চাইলে হেঁটে দেখতে পারেন....

জীয়ন আমাঞ্জা

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দর্শন হল হিসাব বিজ্ঞানের ডেবিট এবং ক্রেডিট । সবসময় যতখানি ডেবিট, ঠিক ততখানিই ক্রেডিট হয় । পরকালের হিসেব যা-ই হোক, এই ইহকালে আমরা ঠিক যেভাবে শূন্য হাতে পৃথিবীতে এসেছি, সেভাবে শূন্য হাতেই পৃথিবী ছেড়ে যাব । এটাই পৃথিবীর আবর্তনিক নিয়ম । অনেকে আমরা এটা বুঝতে ব্যর্থ হই ।আপনি কারো ক্ষতি করবেন তো আজ অথবা কাল আপনার ক্ষতি হবেই হবে । ভালো করলেও তার ফল আপনি জীবদ্দশাতেই পাবেন ।অনেকে দেখবেন রাস্তাঘাটে অযথা হোঁচট খায়, অসুখে ভোগে- এসব এমনি এমনি নয়, হয় এর অতীত, নয়তো ভবিষ্যৎ প্রসারী কোন কারণ আছে । যদি আপনি কারো ক্ষতি না করেন, তবে আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি, আপনার কোন ক্ষতি হবে না । কেউ চেষ্টা করলেও আপনার ক্ষতি করতে পারবে না ।শুদ্ধ থাকুন, শুদ্ধতার শুভ্রতাকে উপভোগ করুন । জীবন সুন্দর হবে ।আমি সবার মতের প্রতিই শ্রদ্ধাশীল।আশা করি আপনিও তাই।সৌজন্যবোধ ও মানবতার জয় হোক !

জীয়ন আমাঞ্জা › বিস্তারিত পোস্টঃ

নিয়োগ পরীক্ষা এবং তিনটি প্রস্তাবনা

১৩ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ১:০৭


বাংলাদেশে বর্তমানে বলতে গেলে প্রতি সপ্তাহেই কোন না কোন নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়, সারাদেশ থেকে লাখ লাখ চাকরীপ্রার্থী রওনা হয় ঢাকার উদ্দেশ্যে, এটা অবশ্যই ইতিবাচক দৃশ্য! অফিসের কাজে আমাকে প্রায়ই ঢাকা চট্টগ্রাম করতে হয় এবং সেই সুবাদে এসব নিয়োগপ্রার্থীদের চিন্তাভাবনা এবং প্রতিক্রিয়া আমার জানার সুযোগ হয়েছে, তার আলোকেই আমার মাথায় এই প্রস্তাবনা তিনটি এসেছে।

১. বিকেন্দ্রীকরণ
কেন্দ্রীয়করণ বিকেন্দ্রীকরণ গোছের তুলনা আমার মাথায় কখনই আসত না, কিন্তু সেদিন একজন যা বলল তাতে আমারই ভিমড়ি খাবার যোগাড়! তার বক্তব্য হল, "পাকিস্তানীদের সঙ্গে আমাদের বিরোধের মূল কারণই ছিল তাদের রাজধানী ভিত্তিক সবকিছুর কেন্দ্রীয়করণ, এদেশে যা কিছু হত, সব ওই ইসলামাবাদে গিয়ে জমা হত, স্থানীয়রা বঞ্চিত হত, এখনও তেমন সব কিছু ঢাকা কেন্দ্রিক! আমি চট্টগ্রামের মানুষ আমাকে সারারাত নির্ঘুম, বাসে চড়ে সকালে গিয়ে পুরান ঢাকার অলিগলি চষে একটি নির্দিষ্ট স্কুল বা কলেজ খুঁজে বের করতে হবে এবং সেখানে পরীক্ষা দিতে হবে! আমি কোন ব্যাগ নিতে পারব না, কোথাও ফোন করে খোঁজ নেব যে, সেটারও উপায় নেই, মোবাইল বহন নিষেধ!"

আমি বললাম, দেখ, সারাদেশে পরীক্ষা নিতে হলে যে এত খরচ, তা কিভাবে পোষাবে কর্তৃপক্ষের?

ছেলেটি চোখ কপালে তুলে বলল, ঢাকায় মোট চল্লিশটির বেশি স্কুল কলেজে এই পরীক্ষা হয় না! এই চল্লিশটি স্কুল কলেজ কেবল ঢাকায় না করে প্রতি জেলায় একটি করলেই হয় না?

আমি হেসে বললাম, জেলা তো চল্লিশটা নয়!

ছেলেটি আমায় থামিয়ে দিয়ে বলল, ওয়েল, এই যে আমি চট্টগ্রাম থেকে পরীক্ষা দিতে যাচ্ছি, যাওয়া আসা বাবদ আমার প্রায় আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা খরচ হচ্ছে, তো আমি যদি আমার এই পরীক্ষার খরচ বাবদ কর্তৃপক্ষকে দেড় হাজার টাকা করেও দেই তাতে তাদের পরীক্ষার খরচ করেও প্রায় এক কোটি টাকা লাভ থাকে, খেয়াল করেছেন?

উপরের যুক্তি তর্ক থেকে আপনারা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন আমার প্রথম প্রস্তাবনা কী! সারারাত নির্ঘুম গাড়িতে চড়ে গিয়ে আড়াই হাজার টাকা খরচ করে পরীক্ষা দেবার চেয়ে দেড় হাজার টাকা ফি দিয়ে নিজের জেলার মধ্যে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা উচিত! এতে নিয়োগপ্রার্থীরা সতেজ মন মগজ নিয়ে পরীক্ষা দেবার সুযোগ পাবে, মোবাইল বহন সংক্রান্ত ঝামেলাও হবে না, বাইরে মাঠের কোণায় অরক্ষিত অবস্থায় মোবাইলসমেত ব্যাগ রেখে পরীক্ষা দিতে বসে একটু পর পর টেনশন করার চেয়ে এই প্রস্তাবটা বেশি লাভজনক না? এবং রাস্তায় জ্যামের কারণে অনেকেই পরীক্ষায় সময়মত উপস্থিত হতে না পারার ঝুঁকিটাও রইল না! আমার মনে হয় ঢাকা নিবাসী সুবিধাভোগী নিয়োগপ্রার্থী ছাড়া আর সবাইই এই প্রস্তাবে একমত হবেন, এবং সে মর্মে কর্তৃপক্ষের নেক নজর আশা করছি!

২. ডিজিটাল বিড়ম্বনা
এটা সত্য যে, ডিজিটালের নামে নিয়োগ তথা ভর্তি প্রক্রিয়াগুলো একদিকে সহজ হলেও নিখুঁত এখনও হয়নি, বিড়ম্বনাও বেড়েছে কিছু কিছু ক্ষেত্রে! এ বিষয়ে প্রথমে আলেকপাত করি, তারপর প্রস্তাবনা।
বেশিরভাগ পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন বা প্রবেশপত্র সংক্রান্ত নির্দেশনা বা দলিল আসে মোবাইলে মেসেজের মাধ্যমে। মেসেজিংয়ের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে এটা নিশ্চয় আপনারা প্রত্যেকেই অবগত! সার্ভারের সমস্যার কারণে আপনাকে পাঠানো মেসেজটি আপনার মোবাইলে নাও যেতে পারে। এবং মেসেজ না এলে আপনার জানারও উপায় নেই। কিংবা ধরুন, আপনার মোবাইলটি বন্ধ ছিল অনিবার্য কারণে, মেসেজটি আপনি পেলেন না পরে। আজকের মেসেজ কাল আর ঢুকবে না, তো আপনি ওটা হারালেন, কী করবেন তখন? কিংবা আপনি মেসেজ পেয়েছেন, আপনার ফোনটি হারিয়ে গেল, বা সিমটি নষ্ট হয়ে গেল, তখন ওই মেসেজ কোথায় পাবেন আর? আর মেসেজ ছাড়া কিভাবে কী করবেন? সঅঅব শেষ!

তাহলে উপায়?
উপায় খুবই সহজ ছিল, আমরা ডিজিটাল হয়েছি, ইন্টারনেট নির্ভর হয়েছি, এবং পরীক্ষাগুলোতে আবেদনের সময় আমাদের ইমেইল আইডিও ঠিকই নেওয়া হয় কিন্তু হর্তাকর্তাদের মাথায় এটা এখনও ঢোকেনি যে মেসেজে এই এই সমস্যা হতে পারে, তারচেয়ে ইমেইল নোটিফিকেশন আরও বেশি নিরাপদ!
আপনার ফোন হারাক, সিম গোল্লায় যাক, কেন সমস্যা নেই, আপনি যেকোন জায়গায় যখন তখন মেইল বের করতে পারবেন। এবং যারা নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে, তাদের মধ্যে নিশ্চিতভাবেই এমন কেউ নেই যার এ্যান্ড্রয়েড, ইন্টারনেট, ফেইসবুক, জিমেইল ইত্যাদির সঙ্গে পরিচয় নেই! তাহলে? প্রক্রিয়াটা খুবই সহজ হয় না? এই প্রস্তাবনাটা কি কর্তৃপক্ষ ভেবে দেখবেন?

৩. স্বচ্ছতা
এখন যেটি বলতে যাচ্ছি তার জন্য আগেই ক্ষমা চেয়ে নিই, পরবর্তী অপ্রীতিকর বা নেতিবাচক বক্তব্যের জন্যে! আমরা জানি ঘুষ একটি বিরাট ভূমিকা রাখে সব চাকরিতে! ঘুষের ব্যাপারটি আমাদের কাছে ওপেন সিক্রেট, খুবই গোপনীয় অথচ সবাইই জানি, কিছুই করার নেই! কিন্তু টেকার পরে ঘুষ হয়, না ঘুষের কারণে টেকানো হয় সেই রহস্য আমাদের আসলে জানা নেই! নিয়োগ পরীক্ষার্থীরা ফি দিয়েই পরীক্ষা দেবে মাননীয় কর্তৃপক্ষ, কিন্তু একটি পরীক্ষা কক্ষের দশ জন প্রার্থীর মধ্যে যাকে নির্বাচিত করেছেন, তাকে কত নম্বর পাবার কারণে নেওয়া হল, আর যাকে যাকে নেওয়া হল না সে কত নম্বর পেয়ে পরাজিত হল সেটা অবশ্যই প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর জানার অধিকার আছে। মোটেই কষ্টের কাজ নয় এটুকু করা, কেবল রেজাল্টটাও রোল নম্বরের পাশাপাশি উল্লেখ করে দিন, তখন কেউ আর বলতে পারবে না যে আমি একশোতে ৮৮ পেয়েও কেন টিকলাম না এটার কোন উত্তর নিজেকে দিতে পারছি না!

প্রযুক্তি উন্নত হচ্ছে, আমরা তার সুবিধা পেতে আরম্ভ করেছি, আমার বিশ্বাস প্রক্রিয়া নির্ধারকগণ বিষয়গুলো ভেবে দেখবেন এবং প্রক্রিয়াগুলোর ফাঁকফোকর বন্ধ করে ব্যবস্থাকে আরো সহজ করতে এগিয়ে আসবেন।
ধন্যবাদ।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ৩:৩২

জাহিদ অনিক বলেছেন:

ভালো প্রস্তাবনা। মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষাগুলো হচ্ছে তো সারাদেশে একযোগে।

২| ১৩ ই জুলাই, ২০১৮ সকাল ১০:০৮

করুণাধারা বলেছেন: আপনার তিনটি প্রস্তাবই খুব ভালো, কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আমাদের দেশের কেউ চলে আসা সিস্টেম পরিবর্তন করতে চায় না, কারন তাতে তাদের কিছু পরিশ্রম করে নতুন নিয়ম তৈরি করতে হয়। এই পরিশ্রম করাতেই তাদের অনীহা!!!

প্রায়ই দেখি কিছু স্কুল-কলেজের সামনে ফুটপাতে ব্যাগ দিয়ে মানুষ বসে আছে। এরা ভোরবেলায় ঢাকার বাইরে থেকে ঢাকায় এসে পৌছে, থাকার কোনো জায়গা না থাকায় পরীক্ষা হলের সামনের রাস্তায় বসে থাকে। এদের পরীক্ষা কেমন হবে ঢাকার পরীক্ষার্থীদের তুলনায় তা সহজেই অনুমেয়।

ধন্যবাদ আপনাকে একটা সচেতনামূলক লেখার জন্য।

৩| ১৩ ই জুলাই, ২০১৮ সকাল ১১:৪৪

রাজীব নুর বলেছেন: মন খারাপ করা পোষ্ট দিয়েছেন।

একটু হাসুন-
মন খারাপ করা পোষ্ট দিয়েছেন।

একটু হাসুন-

বাংলাদেশের স্টাইল আইকন।যিনি ফুলহাতা শার্ট এর নিচে আরেকটি হাফ হাতা শার্ট পরেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.