নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একটি পথ, আপনি চাইলে হেঁটে দেখতে পারেন....

জীয়ন আমাঞ্জা

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দর্শন হল হিসাব বিজ্ঞানের ডেবিট এবং ক্রেডিট । সবসময় যতখানি ডেবিট, ঠিক ততখানিই ক্রেডিট হয় । পরকালের হিসেব যা-ই হোক, এই ইহকালে আমরা ঠিক যেভাবে শূন্য হাতে পৃথিবীতে এসেছি, সেভাবে শূন্য হাতেই পৃথিবী ছেড়ে যাব । এটাই পৃথিবীর আবর্তনিক নিয়ম । অনেকে আমরা এটা বুঝতে ব্যর্থ হই ।আপনি কারো ক্ষতি করবেন তো আজ অথবা কাল আপনার ক্ষতি হবেই হবে । ভালো করলেও তার ফল আপনি জীবদ্দশাতেই পাবেন ।অনেকে দেখবেন রাস্তাঘাটে অযথা হোঁচট খায়, অসুখে ভোগে- এসব এমনি এমনি নয়, হয় এর অতীত, নয়তো ভবিষ্যৎ প্রসারী কোন কারণ আছে । যদি আপনি কারো ক্ষতি না করেন, তবে আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি, আপনার কোন ক্ষতি হবে না । কেউ চেষ্টা করলেও আপনার ক্ষতি করতে পারবে না ।শুদ্ধ থাকুন, শুদ্ধতার শুভ্রতাকে উপভোগ করুন । জীবন সুন্দর হবে ।আমি সবার মতের প্রতিই শ্রদ্ধাশীল।আশা করি আপনিও তাই।সৌজন্যবোধ ও মানবতার জয় হোক !

জীয়ন আমাঞ্জা › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিভেদ সমাচার

২৮ শে আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১:০৬

আপনারা সমরেশ বসু'র প্রজাপতি উপন্যাসটি পড়েছেন?
উপন্যাসটি নিষিদ্ধ হয়েছিল আপত্তিকর বিবরণের দায়ে। মামলা মোকদ্দমার পর বইটি পরে আবার মুক্তি পায়। যুক্তিতে সমরেশ বসু বলেছিলেন, রাস্তার পাশে আবর্জনা জমে থাকার ছবি যদি কোন সাংবাদিক পত্রিকায় প্রচার করে, তবে দায়ী কাকে করা হবে? যে সাংবাদিক ছবিটি প্রচার করে সবার চোখ খুলে দিল তাকে, না যথাযথ কর্তৃপক্ষকে??
লেখকের এই এক দায়িত্ব, এই এক মূল্যবোধ।
লেখক তার লেখনী দিয়ে মানুষকে সচেতন করে তোলে, চেতনাকে তাড়িত করে, বিবেককে আলোড়িত করে, এ-ই লেখকের সার্থকতা।
বাংলাদেশে এখন যতগুলো মানুষ আছে, তারচেয়ে বোধকরি ফেইসবুক লেখকের সংখ্যা বেশি। স্ট্যাটাস আপলোড দিয়ে এখন সবাই লেখক। কারো লেখক হয়ে ওঠাতে আমি দোষ দেখি না, তবে লেখকের দায়িত্ব কজনে বোঝে?
এই দায়িত্ব প্রসঙ্গে আরেকটু দৃষ্টান্ত দিয়ে নিই, সমরেশ বসুকে সবাই না চিনলেও সমরেশ মজুমদারকে কমবেশি সকলেই চেনেন, এবং সমরেশ মজুমদার মানেই সবার আগে যে বইটি চকচক করে ওঠে, সেটি সাতকাহন। সাতকাহন প্রথম খণ্ডেই যদি সমাপ্ত হত, তবে সেটি হত অনন্য নিখুঁত একটি উপন্যাস। তবে সাতকাহন দ্বিতীয় খণ্ড লিখে সমরেশ মজুমদার উপন্যাসটির প্রথম অংশের চমতকারিত্বকেও খর্ব করেছেন।
কিভাবে করেছেন বলছি, দীপাবলিকে দেখান হয়েছে একজন এগিয়ে যাওয়া স্বাধীনচেতা নারীর আদর্শ হিসেবে, খুবই আশাব্যঞ্জক, খুবই প্রসংশার্হ। কিন্তু অলোকের সঙ্গে দীপার ডিভোর্স যদি মুক্তমননের পরিচায়ক হয় তবে সেই মুক্তমননকে আমি নিন্দা জানাই। সংসারে মতপার্থক্য, পছন্দ অপছন্দের দ্বন্দ্ব ইত্যাদি সব দম্পতিরই আছে, স্বাধীন চেতনার নামে, নিজের মতামতকে বড় করে দেখার নামে, আপোষহীনতার নামে একটি সংসারকে ভেঙে দিয়ে কোন বিরাট বাহাদুরির পরিচয় হতে পারে না! বাস্তবতা অনেক দুর্বিসহ হতেই পারে, কিন্তু একজন লেখকের হাতে যখন এদের নিয়তি নির্ধারণের ক্ষমতা ছিলই, তবে কেন সে লেখক এই সমস্যাগুলোকে সমাধান করে দিয়ে সংসারটাকে সুন্দর কিভাবে করা যায় সেই ছবিটি এঁকে দিয়ে বাংলার আর দশটা দম্পতির কোন্দলের একটা সুষ্ঠু সমাধান কেন করে দিলেন না??? বিভেদ করে দিয়ে কোন স্বাধীন চেতনার মঙ্গলবার্তাটা প্রচারিত হল শুনি??

ফেইসবুক লেখক সমাজ আজ দুইভাগে বিভক্ত, একদল মৌলবাদী, অপরদল মুক্তমনা। আমি বলি, এঁরা কেই সঠিক নয়। মৌলবাদীদের কথা নতুন করে বলা নিষ্প্রয়োজন, তারা বাতিল, বয়কট, নিক্ষিপ্ত। মুক্তমননের দৌরাত্ম্য নিয়ে বলার আছে।
বরং দ্বিমত হও- এটাই বোধকরি মুক্তমননের অমোঘ সংজ্ঞা। দ্বিমতটা কিসে? কোথায়? সূর্য পূর্বদিকে ওঠে বললেও সেখানে দ্বিমত করতে হবে? বলতে হবে, না, ঠিক পূর্ব দিকে নয়, উত্তর পূর্ব কোণাকুণি ওঠে? এই বাহেজের নামই কি মুক্তমনন?

যে খোলা চোখে, নিরপেক্ষ বিবেচনায় ভাল আর মন্দ, সত্য আর অসত্যকে নিশ্চিত করে দেখতে পায়, সে-ই মুক্তমনা! কেবল সবকিছুর জাতগুষ্ঠি উদ্ধার করে বিদ্রোহ করলেই মুক্তমনা হয় না! একজন মুক্তমনা মানুষ সত্য আর অসত্যকে অবশ্যই পৃথক করে দেখাবেন, ভালো আর মন্দকে নির্ণয় করবেন এবং কেবল প্রতিবাদ করার নামে কেবল উস্কে দিয়েই যদি চুপ মেরে গিয়ে খেলা দেখতে বসে যান, তবে তিনি জাতির অনিষ্টকারী বই আর কিছুই নন। প্রতিবাদ নয় শুধু, সমাধানের পথও আপনাকে প্রস্তাব করে দেখাতে হবে। যদি সমাধান খোঁজার চেষ্টা আপনার না থাকে, তবে আপনাকে একটা কথাই কড়াকড়ি করে বলার আছে, অপপ্রচার বন্ধ করুন, কলম ছেড়ে দিন।
ফেইসবুকের পোস্টগুলোতে আমি কেবল বিভেদই পেয়েছি, মুসলিমরা জঙ্গী বলে একপক্ষ মুহাম্মদকে বিবিধ উপমায় জঘন্যভাবে অপমান করছে, হিন্দুরা প্রাণহীন নগ্ন মূর্তির পূজারক বলে অপরপক্ষ তাদের গালিগালাজ করে যাচ্ছে, হুজুগে পাবলিক সেসবে বাহবা দিয়ে যাচ্ছে সোৎসাহে!
সম্প্রীতির কথা কেউ বলে না কেন?????
এই জাতীয় উস্কানির ফলে সৃষ্ট বিভেদের দায়ে এইসব লেখককে কেন অভিযুক্ত করা হবে না??
কেবল উস্কে দিয়েই বাহবা উপার্জনের এই প্রবৃত্তিকে আমি ধিক্কার জানাই।

মুক্তমননের আরেকটি বড় দিক হিসেবে আমরা দেখতে পাই নারীবাদিতা!

আমি চিৎকার করে প্রশ্ন করতে চাই, নারীবাদিতা আবার কী জিনিস????? নারী আবার বাদিতা! নারী মানেই তো দুর্বল হিসেবে দেখা হয়ে আসছে, এবং নারীবাদিতা বলতে গিয়েই আপনারা নারীত্বকে আবারও দুর্বল হিসেবে সাব্যস্ত করে দিচ্ছেন!! বলতে হয় বলুন মানবতাবাদিতা! নারী নয়, কেবল নারী নয়, বলুন মানুষ। এবার মানবতাবাদিতার কথা বলতে গিয়ে আপনি নারী নামক মানব সম্প্রদায়ের পক্ষে কথা বলুন, তাদের দুর্দশা দুরবস্থার কথা তুলে ধরুন আমি সেটাকে সাধুবাদ জানাব। মানব সমাজ পুরুষতান্ত্রিক ছিল এবং এখনও অনেক ক্ষেত্রে আছে, সেটা কেন? একমাত্র নারী দুর্বল বলে। নারীকে সবল করার কথা বলুন, সেটাই হবে প্রকৃত হিতৈষণা। আমি দাম্পত্য সমাচার লেখার কথা বলেছিলাম, সেখানে কেবল এই বিষয়টি নিয়েই আরো বিস্তারিত বলব, এখন শুধু এটুকু বলি, পুরুষ নারীকে নির্যাতন করার সুযোগ পাচ্ছে নারী তার সমকক্ষ হয়ে উঠছে না বলেই। এই সমকক্ষতা দৈহিক বলের সমকক্ষতা নয়, এটা ব্যক্তিত্বের সমকক্ষতা। ব্যক্তিত্ব যদি দৃঢ় হয়, তবে নারী উপার্জন করুক আর নাই করুক, পুরুষ তার সংসারে এবং সমাজেও নারীকে সমীহ করতে বাধ্য হবে।
নারীবাদিতার নামে আমরা কেবল বিভেদটাই তুলে ধরার চিত্র দেখতে পাচ্ছি সব জায়গায়! নারীবাদীদের হাহাকার স্বরূপ দেখা যায় সমাজের সর্বত্রই পুরুষ খল, পুরুষ ব্যভিচারী পুরুষ দুশ্চরিত্র, পুরুষ শোষণকারী ইত্যাদি ইত্যাদি। কেন?? কেবল খুঁজে খুঁজে এই দৃষ্টান্তগুলোই কেন? নারী আর পুরুষের সম্পর্কের অসংখ্য ভালো দিকই তো আছে, সেগুলো কেন বলা হয় না?? সেই পুরুষটার কথা কেন একবারও বলা হয় না, যে বৌয়ের জন্যে একটা শাড়ী কেনার জন্য আরো দুই ঘণ্টা রিকশায় বেশি প্যাডেল মারে?? সেই স্বামীটার কথা কেন বলা হয় না, যে অভিমানী স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার জন্য শ্বশুরবাড়ীতে গিয়ে পা ধরাধরি করে???

কুকুরে মানুষ কামড়ালে সেটা নিউজ হয় না, কারণ সেটা স্বাভাবিক; অথচ মানুষে কুকুর কামড়ালেই সেটা নিউজ হয়, কারণ সেটা অস্বাভাবিক। দেশের কোটি সংসারের নিরানব্বই লক্ষ পুরুষ স্ত্রীকে বুকে মাথায় করে রেখে সুখে জীবন যাপন করলে সেটা নিয়ে কোন প্রশংসা হয় না, কেবল এক লক্ষ পুরুষের স্ত্রীর প্রতি নির্যাতনকেই আলোকিত করে দেখান হয় যদি তবে সেটাও একধরণের উস্কানিই। আমার কথার মানে এটাও নয় যে, এই এক লক্ষ নির্যাতনকারী পুরুষকে ক্ষমা করে দেওয়া উচিত বা এটাকে হিসাবে না ধরা উচিত। নির্যাতন করলে তার বিচার আছে, বিচার হতেও হবে, কিন্তু কেবল বিদ্বেষটাকেই কেন প্রচার করা হবে????

নারীবাদী আন্দোলনে পুরুষের শিশ্নের সমূল কর্তন করার চেয়ে, পুরুষকে ঝাঁটাপেটা করে বয়কট করার শ্লোগান না দেখিয়ে কিভাবে নারী পুরুষের সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটানো যায়, নারী আর পুরুষের সুন্দর সম্পর্কের দৃষ্টান্তগুলো কেমন হতে পারে সেই আশার বাণীটা কেন প্রচারিত হয় না?????
সবখানে এরকম বিভেদটাই কেবল কেন প্রোজ্জ্বলিত করা হচ্ছে???
নারীর ওড়না, নারীর ছলনা, হেন তেন নিয়েই বা কেন রসাত্মক প্রচারণা করা হবে???
ইতিবাচক প্রচারণা কেন নয়??

আপনারা স্ট্যাটাস পোস্টের নামে লাইক কামানোর জন্য এসব উস্কানি কখন বন্ধ করবেন?? খুঁচিয় খুঁচিয়ে কোন্দল বাঁধানোতে বাহবার কিছু নেই, সমস্যা তুলে ধরে তার সমধানের ব্যবস্থা দেখাতে পারলেই সেটা প্রকৃত সমাজ সংস্কার! বরং দ্বিমত হও মতবাদে যারা বিশ্বাসী, তারা কখনই সমাজের উপকার করছে না, তারা কেবলই সমাজে বিভেদ সৃষ্টি করছে, একতাকে দ্বিমতের চক্রান্তে দ্বিখণ্ডিত করছে।

বরং একমত করুন, ঐক্যমত্যের আহ্বান করুন, সবাইকে এক সুন্দর শুদ্ধতার মঞ্চে তুলে আনতে চেষ্টা করুন, সেটাই হবে প্রকৃত মুক্তচেতনা, প্রকৃত সমাজ হিতৈষণা!

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ২:০৭

গোফরান চ.বি বলেছেন: একটু আগেও আকাশ টা রৌদ্রোজ্জ্বল ছিল । এখন মেঘাচ্ছন্ন।

মানুষের জীবন টাও এমন। কখনো কান্না , কখনো হাসি, কখনো দুঃখ কখনো যন্ত্রণাদায়ক। আবার কখনো মুহূর্তেই জীবন কে অর্থহীন মনে হয়।

এর জন্য দায়ী কি জানেন ? একমাত্র দায়ী হচ্ছে মানুষে মানুষে ভেদাভেদ, হিংসা, লোভ, প্রতিযোগিতা আর অহংকার। হিংসার আধুনিক ভার্সন জেলাসি।

আমরা সভ্যতার চরম শিকড়ে দাঁড়িয়ে জানোয়ারের চেয়েও অসভ্য হয়ে উঠছি শুধু মাত্র অন্যের সুখ দেখতে না পারার মাধ্যমে।

আসুন না যে কোন মানুষকেই ভালোবাসি। মানুষের বিপদে একটু সহযোগিতার হাত বাড়াই। একজন ডিপ্রেশনে ভুগা মানুষকে নিঃস্বার্থ ভাবে একটু কোম্পানি দেই। তার কষ্ট গুলো মন দিয়ে শুনি । একটু স্বান্তনা দেই।

অন্তত একবার চেষ্টা করি তার সমস্যা টা সমাধান করার।

মানুষকে ভালবাসবে মানুষ।
আসুন নিজের হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য অন্য একজন মানুষ কে না ঠকাই।

কিসের অহংকার আমরা করি ?

সৃষ্টি কর্তার ১ মিনিট ও লাগে না অহংকার চূর্ণবিচুর্ণ করতে।

তাই অহংকার লোভ হিংসা পরিত্যাগ করুন । কথা দিচ্ছি সুখী হবেন।

সেই ছোট বেলার ভাবসম্প্রসারণই সঠিক । আর গুলো সব ফেক।

প্রচুর ধন সম্পত্তির মধ্যে সুখ নেই মনের সুখই প্রকৃত সুখ।

ক্যান ইউ প্রুভ ইট রঙ প্লিজ ?

আজকাল রিক্সা ওয়ালা সি এন জি ওয়ালা এমন অনেক ভিক্ষুকের ও টাকা থাকে। ওখানে সুখ নেই। সম্মান নেই। শান্তি নেই ।

ভালোবাসা অমর হোক।

একমাত্র ভালোবাসা ও অন্যের মতামত কে সম্মান করেই শান্তি আসে। অন্যভাবে সম্ভব নয়।

২৮ শে আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৫:২১

জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: ধন্যবাদ।

২| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৫:১১

লিওনাডাইস বলেছেন: ধন্যবাদ এত সুন্দর একটা লেখার জন্য।

২৩ শে আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪৪

জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: স্বাগতম আপনাকে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.