নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একটি পথ, আপনি চাইলে হেঁটে দেখতে পারেন....

জীয়ন আমাঞ্জা

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দর্শন হল হিসাব বিজ্ঞানের ডেবিট এবং ক্রেডিট । সবসময় যতখানি ডেবিট, ঠিক ততখানিই ক্রেডিট হয় । পরকালের হিসেব যা-ই হোক, এই ইহকালে আমরা ঠিক যেভাবে শূন্য হাতে পৃথিবীতে এসেছি, সেভাবে শূন্য হাতেই পৃথিবী ছেড়ে যাব । এটাই পৃথিবীর আবর্তনিক নিয়ম । অনেকে আমরা এটা বুঝতে ব্যর্থ হই ।আপনি কারো ক্ষতি করবেন তো আজ অথবা কাল আপনার ক্ষতি হবেই হবে । ভালো করলেও তার ফল আপনি জীবদ্দশাতেই পাবেন ।অনেকে দেখবেন রাস্তাঘাটে অযথা হোঁচট খায়, অসুখে ভোগে- এসব এমনি এমনি নয়, হয় এর অতীত, নয়তো ভবিষ্যৎ প্রসারী কোন কারণ আছে । যদি আপনি কারো ক্ষতি না করেন, তবে আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি, আপনার কোন ক্ষতি হবে না । কেউ চেষ্টা করলেও আপনার ক্ষতি করতে পারবে না ।শুদ্ধ থাকুন, শুদ্ধতার শুভ্রতাকে উপভোগ করুন । জীবন সুন্দর হবে ।আমি সবার মতের প্রতিই শ্রদ্ধাশীল।আশা করি আপনিও তাই।সৌজন্যবোধ ও মানবতার জয় হোক !

জীয়ন আমাঞ্জা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ওয়াজ সমাচার

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৫২

১.
"বিবি আয়েশার (রা.)কোলে এমন এক নুরের আলো ঝকমক করতেছে যে সারা জাহানের মাখলুকাত মুগ্ধ হয়ে বলল, ও আয়েশা, আয়েশা গো, এই আলো তুমি কোথায় পেলে?
বিবি আয়েশা ডাক দিয়া বলেন, এই নুর সারা জাহানের সৃষ্টির উৎস, যাঁর নাম হতেছে মোহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (স.)!
ডাক দিয়া বলেন, সোবহান আল্লাহ!"

আপনারা কি খুব অবাক হয়ে গেলেন?
এই বয়ানটি আমার নয়, নতুন একটি এলাকায় আমি বাসা নিয়েছি, সেই এলাকায় আয়োজিত একটি ওয়াজের বয়ান এটি। আপনারা শুনে অবাক হবেন যে, সেখানে সমস্বরে সোবহান আল্লাহ বলা হয়েছিল, এবং একটা মানুষও কোন প্রশ্ন করেনি, প্রতিবাদ করেনি! মানুষের মেধা বিবেচনা কোথায় গিয়ে ঠেকেছে!!

২.
এই বয়ানটা আপনারা কমবেশি শুনে থাকবেন, এই বক্তার ওয়াজ সিডি আকারে বাজারে খুব বিক্রি হয়।

"একবার এক ভণ্ড পীর কেরামতি দেখাইতে গেল আমার বড়পীর খাজা আব্দুল ক্বাদের জিলানীর (র.) দরগায়। সেই ভণ্ড পীরের কেরামতি হইল, সে বাঘ বশ মানিয়েছে, বা এই জাতীয় কিছু।
বাঘটাকে দরগাহর গেইটে রেখে পীর ভিতরে ঢুকে বড় পীরকে বাইরে ডেকে আনল কেরামতি দেখানোর জন্য। কিন্তু দরগায় আইসা দেখে বাঘ নাই! হুজুরের দরগাহর সামনে একটা কুকুর ছিল, সেই কুকুরটা হাই তুলছে। বড়পীরের তো বুঝতে বাকি রইল না, ডাক দিয়ে বললেন, এই কুকুর, এইখানে যে বাঘটা ছিল, তুই দেখসত? কী করসত বাঘটারে???
কুকুর জবাব দিল, হুজুর, বাঘ খাইয়ালচি!
কস কী! বাঘ খায়ালচত মানে? অক্খন ফেরত দিবি বাঘ, ফেরত দে!!
তারপর কুকুরটা হা করল, আর সেই কুকুরের মুখ থেইকা আস্ত বাঘ বাইর হইয়া আসলো!!
কী মিয়ারা, সোবহান আল্লাহ বলবেন না???"

এই বক্তার আরেকটি বিখ্যাত বয়ানের বিষয়বস্তু হচ্ছে, দুঃখিনী মায়ের ফরিয়াদ। পুরো ওয়াজটাতেই একটা গল্প বর্ণনা করা হয়েছে, আছে ব্যাপক মর্মস্পর্শী কান্নাকাটি! ঘটনা ছিল এমন যে, এক ছেলে তার মাকে মারতে মারতে কোমরে পচন ধরিয়ে ফেলেছে, সাত বছর ধরে মায়ের সাথে কথা বলে না!!
এইসব গাজাখুরি গল্প আর কত???

আপনাদের কি হাসি পাচ্ছে????
আমি মোটেও এখানে ব্যাঙ্গ, বিনোদন করতে বসিনি। আমি অত্যন্ত দুঃখ নিয়ে লিখতে বসেছি আজ। আমাদের বিবেচনাবোধ কোথায় গিয়ে নেমেছে!!

ওয়াজ আসলে কী? ওয়াজ শব্দের অর্থ প্রচার। ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে ওয়াজ করার রেওয়াজটি চালু হয়েছিল। কিন্তু এখন আর সেটা কেবল প্রচারে সীমাবদ্ধ নেই। ওয়াজে মানুষ যায় নিজেকে সংশোধন করতে, ধর্মের সঠিক নির্দেশনাকে অনুধাবন করতে।
অথচ আফসোস, এই হচ্ছে আমাদের নির্দেশনার নমুনা!

উপরের প্রথম বয়ানটি যাঁরা বোঝেননি, তাঁদের জন্য স্পষ্ট করে দিই, উপমা হিসেবেও যদি প্রয়োগ করা হয়, তবে সেটা বিবি আয়েশা (রা.) হবেন না, হবেন মা আমেনা (রা.)। মা আমেনার কোলে নুরের নবী (স.) থাকতে পারেন, স্ত্রী আয়েশার কোলে যে মোল্লাটি নুরের আলো বলার স্পর্ধা বা সুক্ষ্ম ধূর্ততা করেছে সে নিঃসন্দেহে ইসলামের একজন অবমাননাকারী। আরো উল্লেখ্য যে, সে মঞ্চে আরো তো আলেম ছিলেন, তাঁরাও চুপ ছিলেন!

দ্বিতীয় বয়ানে আসি, বড়পীরের দরগাহতে কুকুর কেন থাকবে? সর্বোপরি, বাঘ খাওয়ার এই বানোয়াট গল্প কোন কেতাবে আছে??
কিংবা, ধরুন, কোন সন্তান কি তার মাকে মারতে পারে?? যদি কেউ প্রচণ্ড ক্রোধবশত মেরেও বসে, মুহূর্ত পরেই কি সে অনুশোচনায় দগ্ধ হয়ে মায়ের পায়ে লুটিয়ে পড়বে না? সাত বছর ধরে মাকে মারবে??? কোন সিনেমার গল্প এটা???

এই রকম নমুনা আরো হাজারখানেক আছে, আরো দুয়েকটার সারমর্ম বলি, শিশু নবী (স.) চাচা আবু তালিবের কাছে বায়না ধরেছেন, তিনিও বানিজ্যের কাফেলায় যাবেন!
আবু তালিব অনেক বুঝিয়েও থামাতে পারলেন না। অতঃপর রওয়ানা দিলেন এবং পথিমধ্যে সামনে পড়ল এক বাঘ! (হুজুর বাঘ উচ্চারণ করতে পারছেন না, উচ্চারণটা হয়ে যাচ্ছে ভাগ)
আবু তালেব তো খুব ভয় পেয়ে গেলেন, তিনি থরথর করে কাঁপছেন। শিশু নবী এগিয়ে গেলেন বাঘের সামনে, বললেন, এই ভাগ! তুই আমাকে কাবিহ? (হওয়া উচিত ছিল, খাবি)
বাঘ চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে নবীকে সেজদাহ করল!

আরব অঞ্চলে বাঘ ছিল ওই সময়??? এই ধনন্ত্বরী কাহিনী ওই বিশিষ্ট বক্তা কোথায় পেয়েছে??

আরো শুনবেন??
আল্লাহ নাকি বলেছেন, নবী না হলে এই তামাম দুনিয়া সৃষ্টি হত না, নবী না হলে আমি আল্লাহও হতাম না!

আপনাদের বিবেক কি না'উযুবিল্লাহ বলেছে এবার?

দুঃখিনী মায়ের ফরিয়াদ নামক ওয়াজের বক্তা তার কোন একটি ওয়াজের শেষে মোনাজাতে বলছিলেন, হে নবী, আমাদের হাশরের আযাব থেকে রক্ষা করুন, আপনি না বাঁচালে আমাদেকে আর কে বাঁচাবে??

আমি আমাঞ্জা সবসময় ধর্মের পক্ষে লিখি, আপনারা জানেন, এরপরেও আজ এই লেখা পড়ে কিছু অন্ধ আমাকে যদি ইসলাম বিদ্বেষী ভেবে বসে তবে অবাক হব না। এতক্ষণ আমি যা বললাম, তা কেবল কয়েকটি নাফরমানী আর স্থুল চেতনার নিদর্শন। উপরের উদাহরণগুলোর একটিও আমার মনগড়া নয়, আপনারাও অনেকে ওয়াজগুলো শুনেছেন বলেই আমার বিশ্বাস। আমি এই স্থুলতার নিদর্শনগুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরলাম, কারণ আমি ইসলামের সম্মান এরকম মিথ্যাচার আর মতবিভেদে ভূলুণ্ঠিত হতে দিতে চাই না।

আগেই বলেছি, ওয়াজে মানুষ যায়, শিক্ষা গ্রহন করে আত্মশুদ্ধি অর্জনের আশায়। কিন্তু ওয়াজে গিয়ে ঘুরে ফিরে সেই একই গল্পচারণ, নবীজী কী করেছিলেন, সাহাবীদের সঙ্গে কার কী ঘটনা, মসজিদ বড় না মাজার বড়, আউলিয়াদের মাহাত্ম্য, আউলিয়াদের নামে দেওয়ানা হবার উপকারিতা, সুন্নী সঠিক না ওয়াহাবীরা সঠিক, এই দ্বন্দ্ব, সেই দ্বন্দ্ব, অদৃশ্য প্রতিপক্ষকে আক্রমণ করে যুক্তি তর্ক ইত্যাদি ইত্যাদি!!!

আমি ভরসা নিয়ে বলতে পারি যে, রাসুলে পাক (স.) এর জীবনের ও তাঁর সাহাবী তথা ইসলামী ঐতিহ্যের শিক্ষণীয় এবং তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনাগুলো একটু শিক্ষিত পরিবারের অষ্টম শ্রেণীতে পড়া বাচ্চাটিই প্রায় অধিকাংশ অবগত হয়ে যায়। কম শিক্ষিত বা অনাগ্রহী পরিবারের বাচ্চাগুলোও যে নেহায়েৎ কম জানে তা নয়। তো এই একই গল্প একটা মানুষ ঘুরে ফিরে কতবার শুনতে চাইবে? আর আমাদের ওয়াজগুলো কেবল গল্প ভিত্তিক কেন হবে???? আমাদের সমাজ জীবন যাত্রায় নিত্য নতুন পরিবর্তন আসছে, আগ্রাসন আসছে, বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে, মানুষ ভুল পথে চলে যাচ্ছে, যুব সমাজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে; এসব সমস্যা ইসলামের আলোকে কিভাবে সমাধান করা যায় এ নিয়ে যুক্তিপূর্ণ আলোচনা কি কোথাও কেউ করেছে এ পর্যন্ত?? মসজিদ বড় না মাজার বড়, মহানবীর (স.) পূর্ববর্তী নবীগন বড়, না নবীর পরবর্তী আউলিয়াগন বড়, অমুক দলের হুজুর সঠিক না আমার দলের হুজুর সঠিক এইসব ফাও আলাপ কেন করতে হবে???
ইফেক্টিভ কিছু কি করা যায় না?? মানুষকে ইন্সপায়ার করার মত কোন কথা কি এইসব তথাকথিত হুজুরদের কাছে নেই???

আমি প্রথমে যে বয়ানের কথা বললাম, সেখানে আমিও প্রতিবাদ করিনি, কারণ আমি সেখানে নতুন। তাছাড়া ধর্ম এমন একটা সেন্সিটিভ জিনিস, যে কিছু বলতে গেলেই মানুষ পুরোটা শোনার আগেই নাস্তিক বলে পিটিয়ে লাশ করে দেবে! আর কোন প্রশ্নের শরীয়তসম্মত সহীহ উত্তর যখন এই সব হুজুরের জানা থাবে না বা দেওয়ার উপায় থাকে না তখন খামোশ, শয়তানের দোসর, লানত, নরকে যাবি, ধ্বংস হয়ে যাবি ইত্যাদি বলে থামিয়ে দেওয়া হয়। ব্যস, আর কিছু বলার নেই।

ভাইসব, হিন্দু ধর্মের একটা বড় গোঁড়ামি ছিল যে, গীতা, বেদশাস্ত্র কেবল ব্রাহ্মণগণ স্পর্শ ও পাঠ করতে পারবে, অন্যরা পারবে না। ফলে, ধর্ম হয়ে গিয়েছিল ব্রাহ্মণদের ব্যক্তিগত হাতিয়ার, তাঁরা যা বলবেন তাই ধর্ম, তাই বিধান!! অতঃপর তাঁরা খেয়াল খুশিমত যাকে তাকে নরকের টিকিট ধরিয়ে দেবার ভয় দেখিয়ে অত্যাচার করতে লাগলেন, টাকার বিনিময়ে বিধান বিক্রি করতে লাগলেন এবং এক পর্যায়ে নীচু জাতের নিপীড়িত মানুষগুলোে মধ্যে বিদ্রোহ দেখা দিল! ভগবান কেন ওঁদের একার হবে?? অনেকেই অতঃপর নিয়ম ভেঙে গীতায় আসলে কী লেখা নিজেরা জানতে আরম্ভ করল, ব্রাহ্মণ সমাজের ধর্ম ব্যবসা বন্ধ হল।

অথচ দেখুন, ইসলামে কিন্তু কখনই বলা নেই যেই ধর্ম কেবল তথাকথিত হুজুরদের হাতে, কোথাও বলা নেই যে দেড় হাজার টাকার বিনিময়ে হুজুর এসে আপনার বাড়িতে মিলাদ পড়িয়ে মোনাজাত বরে দিলেই আপনার বালা মুসিবত সব চলে যাবে, কোথাও বলা নেই যে হুজুর যা বলছেন আপনাকে চোখ বুজে তাই মেনে নিতে হবে, সেটাই বিধান! আপনি চাইলেই শরীয়তের জিজ্ঞাসা সমূহ নিজে জেনে নিয়ে আমল করতে পারেন, অথচ আপনি তা করেন কি???

আপনারা হুজুরদের অন্ধ পুতুল হয়ে, হুজুর যা বলেছেন সেটাই একমাত্র সত্য বলে মারহাবা পড়ে জিলাপি খেয়ে বাসায় চলে যান, এটাই কি ইসলাম?
হুজুরকে টাকা বকশিশ দিয়েছেন, ব্যস আপনি নাজাত পেয়ে গেলেন?? এটাই আপনার তাক্বওয়া??

হুজুররাও সুবিধা পেয়ে গেছেন, "আমার নবীর প্রেমে পাগল না যারা তারা কি জান্নাতে যেতে পারবে? জোর দিয়ে বলুন, পারবে??"
উত্তর কী হওয়া উচিত সেটা হাজিরানে মজলিশ ঠিকই বুঝতে পারছে, এবং ঈমানী দায়িত্ব স্বরূপ জোর গলায় চেঁচিয়ে বলছে, "না!!"
হুজুর বললেন, জোর দিয়া বলেন, সোবহান আল্লাহ!!
শ্রোতারাও গলা ফাটিয়ে বলে উঠতে বাধ্য, সোবহাআআন আল্লাহ!!!

এর বাইরে কিছু বলার উপায় নেই, সবাই যেন কলের পুতুল!

আমার এই সমস্ত কথার উদ্দেশ্য এটাই বোঝানো যে, প্রিয় আলেমগণ, আপনার বক্তব্য আপনার শ্রোতাগণ কতটা গ্রহন করছে বলার সময় একটু সচেতন হন, আপনার কথায় আপনার শ্রোতাগণ আদৌ আত্মসংশোধনের প্রেরণা পাচ্ছে কি না সে বিষয়ে একটু সচেতন হন, ধর্মের প্রকৃত শিক্ষা আসলেই মানুষগুলোর কাছে পৌঁছছে কি না সে বিষয়ে একটু সচেতন হন, দিন দিন ওয়াজের শ্রোতা কমে যাচ্ছে, নসীহত শুনতে থাকা মানুষগুলো অনেকেই কোলের ওপর মোবাইল নিয়ে ফেইসবুক ঘেটে সময় পার করে, আপনার বোঝা উচিত ওয়াজ মাহফিলে মানুষের উপস্থিতি কেন কমে যাচ্ছে, একটু লজিক্যাল হন, আপনার কথা যদি আপনার শ্রোতাদের প্রতি ইফেক্টিভ হয় তাতে আপনারই সুনাম বাড়বে! একটু সচেতন হন, একটু....!

আর ধার্মিকদের বলি, যদি ধর্মে ইন্টারেস্ট না থাকে, যদি ধর্মের বাণী বোঝার বা জানার আগ্রহই না থাকে তবে লোক দেখানো আচার পালন করতে গিয়ে বেনামি মুর্খ মোল্লা এনে ভুল ভাল ওয়াজ করিয়ে বিভ্রান্তিটাকে বাড়াবেন না।

আর হ্যাঁ, ওয়াজের নামে গানের সুরে গজল, ভিত্তিহীন গল্প আর উস্কানিমূলক কৌতুক না করিয়ে বরং বক্তার সঙ্গে চুক্তি করার সময় তাঁকে ওয়াজের বিষয় বস্তু নির্ধারণ করে দিন এবং সে অনুযায়ী প্রিপারেশান নিয়ে আসতে বলুন। আপনারাও ওয়াজে বসুন জানার জন্য, নিজেদের অজ্ঞাত ভুলগুলো সম্পর্কে সচেতন হয়ে আত্মসংশোধনের জন্য।

পুনশ্চ:-
আজ আমার লেখায় যথেষ্ট ইংরেজি শব্দ স্থান পেয়েছে, এবং বক্তব্য অনেক ক্ষেত্রেই সুসংবদ্ধ নয়। কারণ হচ্ছে আমি তাড়াহুড়োর মাঝে নিজের ওপর অনেক জোর খাটিয়ে কোনমতে একটা লেখা পোস্ট করেছি। জানি না, আমার বক্তব্য কতটা বোঝাতে পেরেছি।

যাইহোক, (আমার লেখায় যাইহোক শব্দটা থাকেই, যদি নাথাকে সেটা আসলেই আমার লেখা কি না সে বিষয়ে আমি নিজেই সন্দিহান হব :-P) অনেক অগোছালো কথা বললাম, অন্তত একটা কৌতুক দিয়ে আনাদের খুশি করি-

এক হুজুর এসেছেন ওয়াজ করতে। প্রথমেই তিনি ঘোষণা দিলেন, আপনাদের মধ্যে যদি নোয়াখালির কেউ থেকে থাকেন তবে দয়া করে উঠে যান। আমি নোয়াখালির মানুষের সামনে ওয়াজ করি না।
হুজুর অপেক্ষা করলেন, কিন্তু কেউ উঠল না। অতঃপর ভরসা পেয়ে হুজুর বয়ান আরম্ভ করলেন, আল্লাহর আরশে এমন এক কুদরতের গাছ আছে, যে গাছের পাতা যদি জমিনে পড়ে, তবে বাঘ হয়ে যায়, আর যদি পানিতে পড়ে, তবে কুমির হয়ে যায়!!

তখনই একজন হাত তুলে দাঁড়িয়ে গেল। বলল, হুজুর, আমার একটা প্রশ্ন আছে, যদি ওই গাছের পাতা অর্ধেক মাটিতে পড়ে আর অর্ধেক পানিতে পড়ে তাহলে সেটা কী হবে??

হুজুর চেঁচিয়ে বললেন, এই জন্যই বলছিলাম, নোয়াখালির লোক থাকলে আমি ওয়াজই করতাম না!!!

মন্তব্য ২৩ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (২৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৩৮

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: এই একই গল্প একটা মানুষ ঘুরে ফিরে কতবার শুনতে চাইবে? আর আমাদের ওয়াজগুলো কেবল গল্প ভিত্তিক কেন হবে???? আমাদের সমাজ জীবন যাত্রায় নিত্য নতুন পরিবর্তন আসছে, আগ্রাসন আসছে, বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে, মানুষ ভুল পথে চলে যাচ্ছে, যুব সমাজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে; এসব সমস্যা ইসলামের আলোকে কিভাবে সমাধান করা যায় এ নিয়ে যুক্তিপূর্ণ আলোচনা কি কোথাও কেউ করেছে এ পর্যন্ত?? মসজিদ বড় না মাজার বড়, মহানবীর (স.) পূর্ববর্তী নবীগন বড়, না নবীর পরবর্তী আউলিয়াগন বড়, অমুক দলের হুজুর সঠিক না আমার দলের হুজুর সঠিক এইসব ফাও আলাপ কেন করতে হবে???
ইফেক্টিভ কিছু কি করা যায় না?? মানুষকে ইন্সপায়ার করার মত বোন কথা কি এইসব তথাকথিত হুজুরদের কাছে নেই???

++++++++

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:১৯

জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: খুব তাড়াহুড়ো করে লিখেছিলাম। বানান অনেক ক্ষেত্রেই ফস্কে গিয়েছিল, বেশ কয়েকবার এডিট করতে হল। বছর দেড়েক আগে লেখার কথা বলেও এতদিন পর যে কোনমতে তুলে দিয়েছি তাতেও একটু দায়মুক্ত মনে হচ্ছে নিজেকে। তবে নিজের লেখাতে আমি নিজেই সন্তুষ্ট নই। আরো অনেক পয়েন্ট বাকি ছিল। হয়ত আবার লিখব। পাশে থাকবেন।

২| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩৮

ইমরান আশফাক বলেছেন: ঠিক বলেছেন, এরা মূখে যা আসে তাই বলে ফেলে। সাধারন জনগন তো এদের তথাকথিত ওয়াজ শুনে শুনেই বড় হয়েছে।

৩| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩৮

প্রণব দেবনাথ বলেছেন: ধর্মীয় নেতা দের বাস্তব বর্জিত জ্ঞান, ধর্ম ব্যবসা শেষে সাধারনের ধর্ম সম্বন্ধে নিজে জানার কম কৌতুহল এসব কিছুর মিলিত রুপ হচ্ছে ধর্মান্ধতা আর ধর্ম বিদ্বেষ এর সবছে বড় কারন। ++++

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:২৪

জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: যথার্থ বলেছেন।

৪| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪৮

ওয়েস্ট উইন্ড বলেছেন: মাজারপূজারী তুফাজ্জেল হুজুর এর ওয়াজ। হালায় ভন্ড।

৫| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১২

বিজ্ঞান মনস্ক বলেছেন: ওয়েস্ট উইন্ড বলেছেন: মাজারপূজারী তুফাজ্জেল হুজুর এর ওয়াজ। হালায় ভন্ড।
" আমি আমাঞ্জা সবসময় ধর্মের পক্ষে লিখি, আপনারা জানেন, এরপরেও আজ এই লেখা পড়ে কিছু অন্ধ আমাকে যদি ইসলাম বিদ্বেষী ভেবে বসে তবে অবাক হব না"
যারা ব্লগের ভিজিটর তাদেরকে এরকম মনে করার কোন কারণ নাই।তবে লেখাটা ভালো হয়েছে।

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৪০

জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: শুধু ব্লগে নয়, লেখাটা ফেইসবুকেও গিয়েছে, আর সেখানে তো বোঝেনই :D

৬| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩০

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: আগে ক অক্ষর গোমাংস হুজুরেরা চিল্লিয়ে চিল্লিয়ে ওয়াজ করে কান ঝালাপালা করে দিত| এখন রাস্তার মোড়ে মোড়ে জাকির নায়েকের ওয়াজ বাজে| মানুষে কানের পর্দা ফাটাতে দুটোই সমান পারদর্শী

৭| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:২৬

তট রেখা বলেছেন: আপনি কার কথা বলছেন বুঝতে পারছি, মানুষকে সাবধান করার জন্য তার নাম টা প্রকাশ করলেই ভালো করতেন, কারন যারা মানুষের ঈমান নিয়ে ছিনিমিনি খেলে, তাদের সবার মাঝে চিহ্নিত করা প্রয়োজন। আর, যে এমন ওয়াজ করে সে কখনোই আলেম নয়, বরং আলেম নামের জালেম। আর তার সাথে যারা, প্রতিবাদ না করে মঞ্চে উপবিষ্ট ছিল, তাদের ,মানও সহজেই অনুমেয়। আর আয়োজকরাও যে জাহেল, তা বলাই বাহুল্য। অথচ দেশে এখন সহীহ আক্বীদা পন্থি যথেষ্ট আলেম রয়েছেন, চেষ্টা করলে তাদেরকে ডেকে ওয়াজ করানো যায়।

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:১৪

জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: সরাসরি আক্রমণ করায় যন্ত্রণাও আছে। আমি চাই অন্তত আমাদের যুক্তিবোধ জাগ্রত হোক।

৮| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৪১

আজমান আন্দালিব বলেছেন: এখন শীতকাল। ওয়াজ চলছে হরদম। হুজুরেরা ধর্মীয় যুক্তি তর্ক বাদ দিয়া, ইসলাম ধর্ম কেন শ্রেষ্ঠ তা বাদ দিয়া খালি গল্প ফেঁদে যাচ্ছে। যার গল্প যত আজগুবি আর রসালো তার ডিমান্ড তত বেশী। ওয়াজকারীরাও বুঝে গ্রামের অশিক্ষিত মূর্খ সহজ সরল মানুষগুলা কি চায়। সেইমতই ওয়াজ এবং আওয়াজ চলে ...

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:২৬

জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: একারণেই মানুষ আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।

৯| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:৩৮

আনোয়ার ভাই বলেছেন: এখন ওয়াজ নতুন মাত্রায় রুপ নিয়েছে । ওয়াজের স্থান থেকে বৃত্তাকারে ১ কিলো পর্যন্ত মাইক লাগিয়ে জোর করে ওয়াজ শোনানোর ব্যবস্থা করা হয়। হাসপাতাল, রোগী, পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়া শিক্ষার্থী - কিছুই গোণায় ধরে না তারা । মূল বক্তা এশার পর এলেও দুপুর ২ টা থেকেই মাইক যন্ত্রনা শুরু হয়। মাইকে ইসলামী সঙ্গীত চলে শিশু থেকে যুবক হুজুরদের কন্ঠে। যার অধিকাংশ হিন্দি ও বাংলা জনপ্রিয় গানের সুর নকল করা।
মাওলানারা ওয়াজে আসার আগে খাবারের তালিকা বলে দেন। খাবার কম হলে রাগারাগি করেন। হায় রে ওয়াজ !

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:১৪

জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: বৃত্তাকারের ব্যাপারটা জানতাম না তো!! :D

১০| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:৪৩

মুনতা বলেছেন: ভালো লাগলো।
প্রথম ঘটনাটা বিশ্বাসই হতে চাচ্ছে না। এত বড় গো-মূর্খ?!! ক্যামনে কি??
+++

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৩

জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: :D

১১| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৬

গোধুলী রঙ বলেছেন: শীতকাল এলে এই হুজুরগুলোর যে বাড়বাড়ন্ত, যে মানের ওয়াজ করে, মানুষ তাতে প্রকৃত ইদলাম থেকে বহু বহু দূরে সরে যাচ্ছে।

১২| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:১০

ঈশান আহম্মেদ বলেছেন: পোষ্টে প্রথমেই প্লাচ এবং এক ঘন্টা ধইরা হাততালি দিলাম।আসলে কি যে কমু,এই আজগুবি গল্প বলার জন্য এখন আর ওয়াজ শুনতে যায় না।যদিও যাই,তাহলে ওয়াজ শোনা বাদ দিয়ে অন্য কোথাও গিয়ে সবাই মিলে আড্ডা মারি।

আর প্রতিশুক্র বারে হুজুর প্রথমে যে বয়ান দেন,সেটাও গল্পে ভরপুর,আর সব আজগুবি গল্প।তাই এখন মসজিদে গিয়ে কান বন্ধ করে বসে থাকি।

কিছু বলতেও পারি না।বললেই তো নাস্তিক বইলা গনপিটুনি শুরু করবে।তাই নিরব ও নির্বাক শ্রোতা হওয়া ছাড়া কোন উপায় নেই।

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:১৪

জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: পরিবর্তন দরকার। কিছু একটা করা দরকার, ইসলামকে এরা ডুবিয়ে দিচ্ছে!!!

১৩| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:২৩

আলাপচারী বলেছেন: শীত কাল। কয়েকদিন ধরে গুলিস্থান থেকে চিটাগাং রোডে অফিসের কাজে আসা যাওয়া করছি। আগেই লক্ষ্য করেছি পথের দুপাশে দুই দালান পর পর মাদ্রাসা। অসংখ্য।
দিন কতক ধরে সকৌতুকে লক্ষ্য করছি ওয়াজের প্রতিযোগিতা। মাইকে এক ওয়াজে অন্য ওয়াজের ধাক্কা ধাক্কি। বাসে যেতে শুনি একটা ওয়াজের বাণীর রেশ ক্ষীণ হতে হতে আরেকটি ওয়াজের আগ্রাসন। বড়ই অভিনব উদযাপন।
মাইকে বলছে তবুও বক্তার গগণবিদারী চিৎকার করে ধমক দিয়ে বয়ানের অর্থ খুজে পেলাম না।
আরো লক্ষ্যনীয় জনপদটি নিম্ন আয়ের লোক বসতি।

১৪| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:১০

রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: তাছাড়া ধর্ম এমন একটা সেন্সিটিভ জিনিস, যে কিছু বলতে গেলেই মানুষ পুরোটা শোনার আগেই নাস্তিক বলে পিটিয়ে লাশ করে দেবে! আর কোন প্রশ্নের শরীয়তসম্মত সহীহ উত্তর যখন এই সব হুজুরের জানা থাবে না বা দেওয়ার উপায় থাকে না তখন খামোশ, শয়তানের দোসর, লানত, নরকে যাবি, ধ্বংস হয়ে যাবি ইত্যাদি বলে থামিয়ে দেওয়া হয়। ব্যস, আর কিছু বলার নেই।


এই কারণেই কেউ প্রতিবাদ করে না। আপনার পোস্টে যে প্রশ্ন তুলেছেন তার জবাবও নিজেই দিয়েছেন ।

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:২০

জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: পেছনের কারণটা বলেছি, সমাধান তো আর এটা নয়। আমাদের সমাধানের দিকেই এগিয়ে আসতে হবে, সময়টাও এখনই।
:)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.