![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি তোমার কাছে পৌছতে পারিনি পথে হয়েছে দেরী। তবু আজো স্বপ্ন দেখি - বন্ধ দড়জায় কড়া নাড়ি ।। আমি এক অতি সাধারণ মানুষ, আড়ালে থাকতেই পছন্দ করি ...
আল কোরআনের ১০৫ নম্বর সূরা ফীল এ হস্তীবাহিনীর ঘটনা সংক্ষেপে বর্ণিত হয়েছে। আবরাহা কা’বাকে ধ্বংস করার জন্য ৬০ হাজার সৈন্য ও হস্তীবাহিনী নিয়ে মক্কায় অভিযান পরিচালনা করেছিল। আল্লাহ্ নগণ্য পাখির মাধ্যেমে তাদের বাহিনীকে নিশ্চিহ্ন করে দেন।
সূরা ফীল এ বলা হয়েছে-
আপনি কি দেখেননি আপনার পালনকর্তা হস্তীবাহিনীর সাথে কিরূপ ব্যবহার করেছেন?
তিনি কি তাদের চক্রান্ত নস্যাৎ করে দেননি?
তিনি তাদের উপর প্রেরণ করেছেন ঝাঁকে ঝাঁকে পাখী,
যারা তাদের উপর পাথরের কংকর নিক্ষেপ করছিল।
অতঃপর তিনি তাদেরকে ভক্ষিত তৃণসদৃশ করে দেন।
সৌদি আরবের দক্ষিণাঞ্চল এক সময় ইয়েমেনের অন্তর্ভূক্ত ছিল। আমার জানা ছিল না যে, আবরাহা মক্কা অভিযানের সময় আবহা’র পাশের একটি শহর ‘দাহরান আল জুনুব’ দিয়ে তার হাতী বাহিনী নিয়ে যায়, তার জন্য একটি রাস্তাও তৈরি করে এবং সেই রাস্তাটি এখনো টিকে আছে। ৩ বছর পূর্বে উসামা, আসপিয়া ভাই ও হাবীব স্যার সেই রাস্তায় কিছু ছবি তুলে ফেসবুকে শেয়ার করেন। পরে জানতে পারি আযম ভাইও রাস্তাটি দেখে এসেছেন।
আমি অবাক হই। এত কাছে একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা, অথচ আমি জানতেই পারিনি। জায়গাটি এত অবহেলিত যে অনেক সৌদিও এর খোঁজ জানেনা। গুগুল ম্যাপ খুঁজে আমিও এর হদিস বের করতে পারিনি। উসামা আমাকে নিয়ে যাবে বলে ৩ বছর পার করে দিল। কিন্তু মনের মাঝে ৩ বছর ধরে হাতী’র রাস্তাটি দেখার আগ্রহ লালন করে রেখেছিলাম।
এবার জানুয়ারি’র শেষ সপ্তাহে আমাদের সেমিস্টার ব্রেক শুরু হল। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরাঘুরি করলাম, পাহাড় চড়লাম, এক রাতে রেড সিতে মাছ ধরতেও গেলাম- সে গল্প আরেকদিন লিখব। এর মাঝে আবু সাঈদ ভাই নাজরান “আল উখদুদ” দেখতে যেতে চাইল। আমিও রাজী হয়ে গেলাম। আমাদের যাবার কথা শুনে শাহরিয়ার ভাইও যোগ দিলেন।
আমার মনে তখন অন্য প্ল্যানঃ নাজরান যাবার পথেই ‘দাহরান আল জুনুব’, আর ওখানের এক ওয়াদিতেই –তরিক আল ফিল/হস্তী রোড/ The Elephant Road। সবাইকে নিয়ে হস্তী রোডের সন্ধান করাটা সহজ হবে।
১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, বুধবার, ফজর নামাজ শেষে আমি, আবু সাঈদ ভাই, শাহরিয়ার ভাই, ভাবী এবং তাদের ২ বাচ্চাসহ আবু সাঈদ ভাইয়ের গাড়ীতে করে নাজরানের পথে রওনা হই। উসামার কাছ হতে কিছু তথ্য নিয়ে নিয়েছি, তবুও কাজটা এত সহজ নয়। মনে উত্তেজনা-কাবা ধ্বংস করতে যাওয়া আবরাহা’র পথটি নিজ চোখে দেখতে পাবার উত্তেজনা। পরাক্রমশালী আবরাহা’র বিশাল বাহিনী কাবাকে ধ্বংস করতে পারেনি। সেই পথ আজও ইতিহাসের স্বাক্ষী হয়ে আছে।
ইতিহাসটুকো জেনে নেই-
আনুমানিক ৫২৫ খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন ইয়েমেনের শাসক ছিলেন ইহুদী সম্রাট যু –নাওয়াস। ইহুদী শাসক যু -নাওয়াস খৃস্ট ধর্মের অনুসারীদের উপর চরম নির্যাতন শুরু করে,এক পর্যায়ে খ্রিস্টধর্মের অনেক অনুসারীদের আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে। জায়গাটি বর্তমানে সৌদি আরবের নাজরানে অবস্থিত যা “আল উখদুদ” নামে পরিচিত।
অপরদিকে আবিসিনিয়া ও রোম সাম্রাজ্যের শাসক ছিলেন খ্রিস্টধর্মের অনুসারী। হত্যাকান্ডের প্রতিক্রিয়ায় রোম সাম্রাজ্যের সহায়তায় আবিসিনিয়ার শাসক ইয়েমেনে আক্রমণ চালায়। তখন আবিসিনিয়ার কোন প্রতিষ্ঠিত নৌ বাহিনী ছিলনা। রোমান নৌ বাহিনীর সহায়তায় আবিসিনিয়া নিজেদের ৭০ হাজার সৈন্য ইয়েমেনের উপকূলে নামিয়ে দিতে সক্ষম হয়।
আবরাহা ছিল হাবশার (বর্তমান ইথিওপিয়া) আদুলিস বন্দরের একজন গ্রীক ব্যবসায়ীর ক্রীতদাস। সে ঐ সেনাবাহিনীতে ছিল। নিজের বুদ্ধিমত্তার জোরে সে ইয়েমেন দখলকারী হাবশী সেনাদলে ব্যাপক প্রভাব সৃষ্টিতে সক্ষম হয়। অতঃপর সে নিজেকে ইয়েমেনে নিযুক্ত আবিসিনিয়া সরকারের গভর্নর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে এবং ধীরে ধীরে ইয়েমেনের স্বাধীন বাদশাহ হয়ে বসে।
সে ইয়েমেনের রাজধানী সানা'য় একটি বিশাল গির্জা নির্মাণ করে। আরব ঐতিহসিকগণ একে 'আল কালীস' বা 'আল কুলীস' অথবা 'আল কুল্লাইস' নামে উল্লেখ করেছেন। এটি সম্পন্ন করার পর সে আবিসিনিয়ার বাদশাহ্কে লিখে জানায়, আমি আরবদের হজ্জকে মক্কার কা'বার পরিবর্তে সানা’র গীর্জার দিকে ফিরিয়ে আনব। কাবা’র কারনে সেখানকার লোকজন বিশেষ মর্যাদা ভোগ করত এবং ব্যবসায় বাণিজ্য হত। তারপর ৫৭০ খৃষ্টাব্দে সে ৬০ হাজার পদাতিক, ১৩টি হাতি সহকারে মক্কার পথে রওয়ানা হয়। এজন্য এবছরটিকে আরবরা “হস্তী বছর” বলত।
আবরাহা মক্কায় প্রবেশ করার জন্য এগিয়ে যায়। তার হাতি মাহমুদ ছিল সবার আগে, সে হঠাৎ বসে পড়ে। আঘাত ও নির্যাতনের পরেও সে একটুও নড়লনা। এ সময় ঝাকে ঝাকে পাখিরা ঠোঁটে ও পায়ে পাথর কণা নিয়ে উড়ে আসে। তারা সেনাদলের ওপর পাথর বর্ষণ করতে থাকে। যার ওপর পাথর কণা পড়ল তার দেহ সংগে সংগে গলে যেতে থাকল। আবরাহা নিজেও এই অবস্থার সম্মুখীন হয়। বিশৃংখলা ও হুড়োহুড়ি করে তারা ইয়েমেনের দিকে পালাতে শুরু করে। আবরাহা সানা'য় পৌঁছে মারা যায়। তার প্রতাপ ও শক্তিশালী বাহিনী কোন কাজে আসেনি। আল্লাহ প্রেরিত পাখি তাদের ধ্বংস করে দেয়। আবরাহা’র হস্তী রোড কালের স্বাক্ষী হয়ে আজও টিকে আছে।
(পরবর্তী পর্বে সমাপ্য)
০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:৪৪
মধুমিতা বলেছেন: ধন্যবাদ।
২| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:২৩
শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: ইতিহাসটুকো জেনে নেই-
এখানে তথ্য সোর্স (উৎস) দিতে পারতেন।
০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:৪৪
মধুমিতা বলেছেন: সূত্র- সূরা ফিল ও তার তাফসির।
৩| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:২১
নতুন নকিব বলেছেন:
অনেক অনেক ভালবাসা। পবিত্র আলকুরআনে আলোচিত ঐতিহাসিক এ ঘটনাটি নিয়ে আপনার অনুসন্ধিৎসু মনের প্রচেষ্টা-প্রেরনা হৃদয় ছুঁয়ে গেল।
ভাল থাকবেন অহর্নিশ।
০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:৩১
মধুমিতা বলেছেন: আরব ইতিহাসে আমার আলাদা একটা আগ্রহ আছে। তাই ঘুরতে পছন্দ করি, ইতিহাস খুঁজে ফিরি। আপনাকে ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
৪| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:১৭
কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: আমার ব্যক্তিগত পছন্দের তালিকায় সবচেয়ে বেশি পোস্ট মনে হয় আপনারই সংরক্ষিত। আপনার মত আমারও আরবদের ইতিহাসের প্রতি আলাদা আগ্রহ আছে। সেই কারনে আপনার কোন পোস্ট আমি পারতপক্ষে মিস করি না।
০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৪:১০
মধুমিতা বলেছেন: অনেক অনেক ভালোবাসা।
৫| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:২০
শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: বুঝলাম সূরা ফিল এবং তাফসির।
সূরা ফিলের কাহিনী বর্ণনা করেছেন সেটা আমি জানি। কিন্তু এই কাহিনী বিভিন্ন তাফসিরে বিভিন্নভাবে আছে। বিশেষ করে ‘আবাবিল পাখি’ হওয়ার ব্যাপারে। সময়ের ব্যাপারে। তার (আব্রাহার) মক্কা আসার সম্ভ্যাবতাও অনেকে সন্দেহ করে। আমরা মুসলমান হিসেবে সেটি না হয় বাদ দিলাম।
আমি এখানে,
তাফসির কোথা থেকে নিয়েছেন আমি সেটা বলতে চেয়েছি। বর্তমানে তাফসিরের রকমফের আছে। বর্তমানে ফেতনা চলে এসেছে। তাই বলা।
তবে, আপনারটা প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী ঠিক আছে।
এবং ইউকিপিডিয়া ঘেটে দেখলাম। আপনার বর্ণনা সেখানকার বর্ণনার সাথে মিলে যায়।
ধন্যবাদ।
০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৪:০৮
মধুমিতা বলেছেন: সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য তাফসির হচ্ছে- তাফসির ইবনে কাছীর। আর আবাবীল পাখি বলে কোন পাখি নেই। আবাবীল হচ্ছে- ঝাঁক, মানে পাখীর ঝাঁক। আব্রহা'র মক্কা আসা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই- মক্কা পর্যন্ত বর্তমান রোডটিই তার প্রমাণ। মীনা/মুজদালিফায় সেই বাহিনীর চিহ্ন আছে। সানা হতে মক্কা পর্যন্ত রোডটি সত্যের নিদর্শণ। যদিও আমি কাউকে আব্রহা মক্কা পৌছে ছিল কিনা- সেটা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করতে দেখিনি। মক্কা পর্যন্ত সে পৌছেছিল বলেই আরবে 'হস্তী বছর' বা 'আমুল ফিল' চিহ্নিত আছে।
আমিও উইকিপিডিয়া দেখেছি, তবে মূল ঘটনা এখানে পাবেন- Click This Link
৬| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৪:৪১
সামিউল ইসলাম বাবু বলেছেন: পরে পড়ার জন্য প্রিয়তে রেখে দিলাম
০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:১৯
মধুমিতা বলেছেন: ধন্যবাদ।
৭| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৪:৫৯
জাহিদ হাসান বলেছেন: আবালীল মানে হচ্ছে ঝাকে-ঝাকে।
ঝাকে-ঝাকে পাখি উড়ে এসেছিল অজানা কোন জায়গা থেকে । এরা ছিল আকৃতিতে বৃহৎ।
এরা ঠোট ও পায়ে বড় বড় পাথর বহন করছিলো। পাখিগুলো আকাশ থেকে পাথারগুলো হস্তিবাহিনীর
মাথার উপরে ছেড়ে দেয়। পাথরের আঘাতে এরা হাতিসহ ভর্তা হয়ে যায়। একেই আল্লাহ বলেছেন- ভক্ষিত ঘাসের মত ।
অনেকেই এটা বুঝে না। না বুঝে তর্ক করে আর বলে আবালীল নাকি চড়ুই পাখির মত একটা পাখি। আসলে তা নয়।
আমি কওমী মাদ্রাসায় আড়াই বছর, আলিয়া মাদ্রাসায় ৫ বছর এ নিয়ে যত তাফসীর ও ব্যাখা বিশ্লেষন পড়েছি, সবখানেই ঝাকে ঝাকে পাখির কথা পেয়েছি। তবে ব্যতিক্রমও আছে। অনেক অনুবাদে শুধু আবালীল কথাটি লিখে রাখা হয়েছে। এর ফলেই বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে।
০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:১৫
মধুমিতা বলেছেন: ধন্যবাদ।
৮| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১১
হাসান রাজু বলেছেন: আরেক পর্ব হবে নিশ্চয়ই । আবরাহা’র পথটি পাবেন, কিছু ছবি নিবেন । সেই ছবি সহ গল্পের অপেক্ষায় রইলাম ।আর অবশ্যই ভালো থাকবেন ।
০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:১৫
মধুমিতা বলেছেন: আপনিতো আমার মনের কথাগুলো তুলে ধরেছেন।
৯| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:২৬
সিদ্ধার্থ. বলেছেন: রূপকথা আর ভ্রমণ কাহিনী দুটোই বেশ ভালো
০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:১৮
মধুমিতা বলেছেন: ফ্লপি ডিস্ক এখন অনেকের কাছেই রূপকথা। কিন্তু আমারা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের এ্যাসাইনমেন্টগুলো ফ্লপি ডিস্ক দিয়েই জমা দিয়েছি।
১০| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ভোর ৬:০৮
অতঃপর হৃদয় বলেছেন: কোন এক ইসলামী বইয়ে পড়েছিলাম কিছুটা। ধন্যবাদ।
০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:১৬
মধুমিতা বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ।
১১| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:২৫
হাসান রাজু বলেছেন: ধন্যবাদ । অপেক্ষায় রইলাম ।
১২| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫৭
ওমেরা বলেছেন: জাজাকাল্লাহ খায়ের ।
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:১৩
জোবায়ের হোসাইন জামীল বলেছেন: অসাধারণ