![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি তোমার কাছে পৌছতে পারিনি পথে হয়েছে দেরী। তবু আজো স্বপ্ন দেখি - বন্ধ দড়জায় কড়া নাড়ি ।। আমি এক অতি সাধারণ মানুষ, আড়ালে থাকতেই পছন্দ করি ...
১ম পর্ব
Light at the end of the tunnel
পথে যেতে যেতে আশেপাশের পাহাড়গুলো দেখছিলাম। পাহাড়গুলোর মাঝেও কেমন যেন একটা সৌন্দর্য লুকিয়ে আছে। কিছু কিছু পাহাড় লাল বর্ণ ধারন করেছে। রাস্তা করার জন্য পাহাড় কাটা হয়েছে, সেই কাটা অংশে লাল রংয়ের বিচ্ছুরণ। আমি একটা পাহাড় দেখে অবাক হলাম – সারা পাহাড় জুড়ে ছোট ছোট একই সাইজের ধুসর রং এর পাথর। মনে হচ্ছিল পাহাড়ের সাথে কোন ভাবে আটকে আছে। কিন্তু কাছে গিয়ে ভুল ভাঙ্গল, এগুলো একধরনের গাছ। দূর থেকে দেখলে মনে হয় পাথর।
লাল রং
পাথর নাকি গাছ?
শাকিলা হঠাৎ করে বলল, ‘দেখ দেখ, কাছিম’। আমরা তাকিয়ে দেখলাম সত্যি ছোট পাহাড়টা দেখতে ঠিক কাছিমের মতোই। পাহাড়ের সৌন্দর্য দেখতে দেখতে ক্ষুধা লেগে গিয়েছিল। আমরা একটা পার্কে থামলাম। সাথে সকালের খাবার নিয়ে এসেছি। শাকিলা খিচুরি রান্না করেছে, সূধা এনেছে ডিম ভাজি। সবাই তৃপ্তির সাথে নাস্তা করলাম। পার্কে দেখলাম ৩ জন ইন্ডিয়ান কাজ করছে। আমরা বাকী খাবারগুলো তাদের দিয়ে রওনা দিলাম।
সকালের নাস্তা হল খিচুরি দিয়ে
আমরা কেউই নাজরানের পথ চিনিনা। এমনকি ড্রাইভারও কখনো সেদিকে যায়নি। আমরা রাস্তার পাশের সাইনবোর্ড আর মোবাইল সেটে গুগুল ম্যাপ দেখে দেখে যাচ্ছি। আমি কিছু জায়গার ম্যাপ প্রিন্ট করে নিয়েছিলাম। আমারা প্রথম যাব নাজরান বাঁধ দেখতে।
আমাদের ড্রাইভার কিছুটা সরলসোজা টাইপের। সামনে দুটো রাস্তা দেখে একদম পুলিশ চেকপোস্টে গিয়ে পুলিশের কাছে রাস্তার হদিস জানতে চাইল। পুলিশ এমন সুযোগ ছাড়বে কেন? পুলিশ আমাদের গাড়ী একপাশে দাঁড় করাতে বলল। কোথা থেকে এসেছি, কোথায় যাচ্ছি সব ধরনের কিচ্ছা কাহিনী জানতে চাইল। পুলিশটি আমাদের আইডি কার্ডও দেখতে চাইল। আমরা ড্রাইভারের নির্বুদ্ধিতায় অবাক হলাম। পুলিশ মানেই ঝামেলা! সাঈদ আমাদের আইডি কার্ড নিয়ে পুলিশের কাছে গেল। দেখলাম পুলিশ আমাদের তথ্য লিখে রাখছে। নাজরান শিয়া প্রধান এলাকা। প্রায়ই সেখানে আন্দোলন হয়। পরে জানলাম, পুলিশ আমাদের নিরাপত্তার জন্যই তথ্য নিয়েছে। পুলিশ আমাদেরকে নাজরান বাঁধের রাস্তা দেখিয়ে দিল।
৭৩ মিটার উচু নাজরান বাঁধ সৌদি আরবের সর্ব বৃহৎ বাঁধ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারনে এটা এ এলাকার একটি অন্যতম টুরিস্ট স্পট। এই বাঁধ ৩০০০ মিলিয়ন কিউবিক ফিট পানি ধরে রাখতে পারে। এটা তৈরিতে প্রায় ৭৭২ মিলিয়ন সৌদি রিয়াল লেগেছিল।
আমরা হঠাৎ করেই এক অন্ধকার টানেলে পৌছে গেলাম। পাহাড়ের ভেতর দিয়ে তৈরি এই সুরঙ্গপথে কোন আলোর ব্যবস্থা নেই, গাড়ীর হেডলাইট একমাত্র ভরসা। তবে পথের শেষ প্রান্তে একটি উজ্জ্বল আলোর আভাস পাওয়া যাচ্ছিল। একেই বোধয় বলে light at the end of the tunnel। সুরঙ্গপথটি মনে হয় ১ কিমি’র বেশী। সুরঙ্গের দেয়াল অমসৃণ, কিন্তু রাস্তাটি পিচঢালা। মনে হচ্ছিল আদিম যুগের কোন গুহায় ঢুকেছি। কিছুক্ষণ পর আমাদের সামনের সূর্যের আলো উজ্জ্বলতর হয়ে চোখ ধাঁধিয়ে দিল। অন্ধকার থেকে হঠাৎ করেই একরাশ সাদা আলো। বলে বুঝানো যাবে না, এ এক স্বর্গীয় অনুভুতি।
আলোচ্ছটা-– ছবি ইন্টারনেট হতে।
টানেলে থেকে বের হয়ে মনে হয়েছিল এই সৌন্দর্য্য আমার ভেতরে এক আশ্চার্য্যরকম সুখানুভুতির সৃষ্টি করেছে। এই সুখানুভুতি দ্বিগুন হয়ে গেল যখন আমারা মিনিট খানেকের মাঝেই আরেকটি টানেলে ঢুকলাম। এই সুরঙ্গপথটি আগেরটির চেয়ে ছোট। কিন্তু শেষপ্রান্তে আগের মতোই সাদা আলোর বিচ্ছুরণ ঘটল। সবারই আমার মতো অবস্থা- আনন্দে বিহবল।
দূর থেকে বাঁধটি দেখতে পেলাম। বিশাল বাঁধ। আর্মিরা এর দেখাশোনা করে। ইয়েমেন বর্ডার খুব কাছে বিধায় এখানে অনুমতি নিয়ে ঢুকতে হয়। পুরো এলাকায় কোন মোবাইলফোন নেটওয়ার্কের সিগন্যাল পেলামনা।ওয়্যারলেস সিগন্যাল বন্ধ রাখা আছে, যাতে কেউ কোন স্যাবটাজ করতে না পারে।
কিন্তু বাঁধটি দেখে আশাহত হলাম। বাঁধ নাহয় আছে, কিন্তু পানি কোথায়? অল্প একচিলতে পানি নীচে দেখা যাচ্ছিল। আমাদের দেশের বাড়ির পাশের ডোবায়ও এর চেয়ে বেশী পানি থাকে। আসলে বৃষ্টি হলে এখানে প্রচুর পানি জমে, পাহাড়গুলো একেকটি ঝর্ণা হয়ে যায়। পানির দেখা না পেলেও বাঁধের আশেপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে মুগ্ধ হতেই হল।
নাজরান বাঁধ
বাঁধের উপরে
বাঁধের মুখেই একটি ছোট রুম। আমরা গাড়ী থামালাম। রুমে এক সৈনিক টিভি দেখছিল, চিকন আর হাড়জিরজিরে শরীর। মনে হয় এখনি বুঝি তার ট্রাউজার খুলে যাবে। সে আমাদেরকে তেমন কিছু বলল না। আমরা পায়ে হেটে বাঁধের উপর উঠে গেলাম। অনেক ছবি তুললাম। বাঁধের অপরপাশটা একেবারে বন্য। ছোট একটা বন, পাশেই বিশাল মাঠ। একপাল বেবুনকে দেখলাম দৌড়ে বেড়াচ্ছে। ২/৩ টা উট একাকী দাঁড়িয়ে ছিল। হঠাৎ আর্তচিৎকার। অনেক নীচ থেকে কোন পশুর ডাক ভেসে আসছে। অবাক হলাম এত দূরে থেকেও আমরা কিভাবে শব্দ শুনতে পারছি। তাকিয়ে দেখি গাধা ডাকছে, তারা অনেক জোরে শব্দ করতে পারে। আমার ক্যামারার ১৮x জুম, এত উপর থেকেও ভালো কিছু ছবি পেলাম। গাধা পরিবারটি ডাকতে ডাকতে বনের ভেতর চলে গেল।
বাঁধের অপরপাশ ও বেবুন
গাধা পরিবার
উপর হতে প্রাকৃতিক বন
আমরা বেশ কিছুক্ষণ ওখানে থাকি। তারপর রওনা হই ‘আল ওখদুদ’ এর পথে, যেখানে ইহুদী রাজা গণহত্যা চালিয়েছিল।
সাথে রয়ে যায় স্বর্গীয় আলোর ইন্দ্রজাল।
১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:০১
মধুমিতা বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
২| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৭
রাইসুল সাগর বলেছেন: দারুন। + এবং শুভকামনা জানিয়ে গেলাম।
১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:০২
মধুমিতা বলেছেন: ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন। আগামী পর্বগুলো পড়বেন আশা করি।
৩| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৩
কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: চমৎকার ভাই। আপনার সাথে পড়ি আর আমিও ঘুরি।
আমি ভাবছি, পানি যখন আসে তখন এই বাঁধের অবস্থা কি হয়!!!
১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:১৬
মধুমিতা বলেছেন: আপনাকে কল্পনার রাজ্যে ঘুরিয়ে আনতে পেরেছি তাহলে?
বর্ষায় নাকি পাহাড়গুলোর চেহারা পাল্টে যায়। পাহাড়্গুলো সলিড পাথরের। তাই একটু পানিও নীচে যায় না। পুরোটাই উপরে থাকে। নিশ্চয়ই দেখার মতো হয় দৃশ্যটা।
৪| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:২২
কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: একটা অনুরোধ করি, এই লেখাগুলো আপনি সংরক্ষন করে রাখুন। যখন বয়স হয়ে যাবে, তখন আপনি পড়লে তো মজা পাবেনই , আপনার সন্তান এবং তাদের সন্তানরাও পড়ে অনেক মজা পাবে। নিজের পূর্বপূরুষের ভ্রমন কাহিনী পড়ার মধ্যে আলাদা আনন্দ আছে।
১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৩
মধুমিতা বলেছেন: হ্যাঁ, লেখাগুলো আমি সংরক্ষন করে রাখছি। প্রিন্ট করে বই বানিয়ে নিয়েছি। ৫০তম পর্বে সে কথাই বলেছিলাম।
ধন্যবাদ আবারো।
৫| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৭
আমিনুর রহমান বলেছেন:
চমৎকার পোষ্ট
বর্ণনা ও ছবি দুটোই দুর্দান্ত !!!
শুভ নববর্ষ !
১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৩
মধুমিতা বলেছেন: শুভ নববর্ষ। ধন্যবাদ আপনাকে।
৬| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১১
নাহুয়াল মিথ বলেছেন: ভাল লাগলো পড়ে... শুভ ব্লগিং
১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৪
মধুমিতা বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। সামনের পর্বগুলোতে সাথে থাকুন।
৭| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৪
শোভন শামস বলেছেন: আরবের আরেক রূপ অনুভব করছি আপনার লিখা পড়ে ।
লিখা গুল শেষ হলে বই ছাপাবেন
লিখে যান , খুব ভালো লাগছে
ধন্যবাদ
১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫২
মধুমিতা বলেছেন: আরবের অনেক রূপ। নিজের চোখে না দেখলে আমিও বিশ্বাস করতাম না।
যতদিন আছি লিখে যাব ইনশাল্লাহ। ধন্যবাদ আপনাকে।
৮| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৮
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: বাহ!
ধন্যবাদ।
নিখরচায় ভ্রমন করিয়ে আনানোর জন্য।
ভাল লাগল পড়ে।
১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৩
মধুমিতা বলেছেন: পড়তে থাকুন। ভ্রমণ এখনো বাকী আছে ।
৯| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১০:৪১
বাবুই পািখ বলেছেন: ভালো লাগল। +..
১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১০:৪৯
মধুমিতা বলেছেন: ধন্যবাদ ।
১০| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১২:৪৭
পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: আদি ঐতিহাসিক নিদর্শন ভাল লাগল
শুভেচ্ছা
১৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১:২২
মধুমিতা বলেছেন: ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
১১| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১:৫৭
মুক্তাদির মাহ্ফুজ জামী বলেছেন: বস পরেরটার অপেক্ষায় থাকলাম।
১৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১০:৫৬
মধুমিতা বলেছেন: অবশ্যই। পরের পর্ব শীঘ্রই দেব।
১২| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ ভোর ৪:০৬
স্বাধীকার বলেছেন:
পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।++++
১৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১০:৫৭
মধুমিতা বলেছেন: বেশী দেরী করতে হবে না।
১৩| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৫:০৬
আধিভৌতিক বলেছেন: যান আপনারে পুরা "বাংলালিংক" দামে ভালো লাগা দিলাম
১৭ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১১:২৩
মধুমিতা বলেছেন: "বাংলালিংক" দামে দিলে তো হবেনা। ভালো লাগা দিতে হবে ডায়মন্ডের দামে।
১৪| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১১:৫১
আদিম পুরুষ বলেছেন: ছবি গুলো ভালো লাগল।
১৮ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১২:৩১
মধুমিতা বলেছেন: ধন্যবাদ।
১৫| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:২৫
আহমাদ জাদীদ বলেছেন: এই জায়গাগুলোতে মনে হয় কোনদিনও যাইতে পারুম না ।
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:১২
মধুমিতা বলেছেন: সুযোগ হতেও পারে। কিছুই বলা যায় না। আমি কি ভেবেছিলাম যে আমি এগুলো দেখতে পারব?
১৬| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ৯:৫৭
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
দুর্দান্ত +++
০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:২৯
মধুমিতা বলেছেন: অশেষ ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৭
বক বলেছেন: +