নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাজিদ উল হক আবির

সাধু সাবধান ! ব্লগের মালিক বঙ্গালা সাহিত্যকে ধরিয়া বিশাল মাপের ঝাঁকি দিতে নিজেকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে প্রস্তুত করিতেছেন। সেই মর্মে তিনি এখন কিটো ডায়েটিং, ডন-বৈঠক ও ভারোত্তলন প্রশিক্ষণে ব্যস্ত। প্রকাশিত গ্রন্থঃ১। শেষ বসন্তের গল্প । (২০১৪)২। মিসিং পারসন - প্যাত্রিক মোদিয়ানো, ২০১৪ সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী (অনুবাদ, ২০১৫) ৩। আয়াজ আলীর ডানা (গল্পগ্রন্থ - ২০১৬ ৪। কোমা ও অন্যান্য গল্প(গল্প গ্রন্থ, ২০১৮) ৫। হেমন্তের মর্সিয়া (কবিতা, ২০১৮) ৬। কাঁচের দেয়াল (গল্পগ্রন্থ, ২০১৯) ৭।শহরনামা (উপন্যাস, মাওলা ব্রাদার্স, ২০২২), ৮। মুরাকামির শেহেরজাদ ও অন্যান্য গল্প (অনুবাদ, ২০২৩), ৯। নির্বাচিত দেবদূত(গল্পগ্রন্থ, ২০২৪), ১০। দেওয়ানেগির চল্লিশ কানুন/ফরটি রুলস অফ লাভ (অনুবাদ, ঐতিহ্য, ২০২৪)

সাজিদ উল হক আবির › বিস্তারিত পোস্টঃ

করোনার দিনে জার্নাল

১৮ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ১:৫০

সরকারী ঘোষণা আসার পর , গতকাল ১৪ দিনের জন্যে আমার বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ দিলো। কারণ, করোনা ভাইরাস। সরকারী ঘোষণা আসার আগ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় নোটিস দিয়েছিল - সকল ধরনের জমায়েত নিষিদ্ধ করা হল, শুধু মাত্র ক্লাস এবং পরীক্ষা ছাড়া।

করোনার উৎপত্তির সময় থেকেই আমি নানা কারণে হাসছি। এই ভাইরাস সংক্রান্ত নানা রকম অদ্ভুত অফিশিয়াল ঘোষণা সেই হাসি উদ্রেক করার একটা কারণ তো বটেই। এছাড়া , ধরেন - এই ভাইরাসের নামের আগে আবার ডক্টরেরা 'নবেল' শব্দটা সংযুক্ত করে দিয়েছেন। ভাবটা যেন এই - প্রতিষেধক যেহেতু এখনো আবিষ্কার করতে পারি নি, তার আগে আক্রান্তদের এই বলে সান্ত্বনা দেয়া যাক যে - যে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, তা বড়ই 'নবেল'!

না হেসে করারই বা কি আছে, যখন মনে পড়ে যে আমি পৃথিবীর সবচে ঘনবসতিপূর্ণ একটি দেশের বাসিন্দা, যেখানে প্রায় অর্ধেক মানুষের সেনিটাইজেশনের ব্যাপারে স্পষ্ট ধারণা নেই, এবং বাকি অর্ধেক নিয়মকানুন জানলেও ঠিক মত মানতে চায় না? মহামারি বলতে যা কিছু আমাদের মস্তিষ্কে প্রকট হয়, তার দশ শতাংশও যদি আমাদের দেশে জেঁকে বসে, আমাদের অর্ধেকের বেশি মানুষ বিছানায় পড়ে যাবে। বাস্তবতার নিরিখে প্রবল ভীতিতে আচ্ছন্ন হওয়া ছাড়া তো উপায় নেই। তাই আপাতত হালকা চালের রসিকতাই সই।

অ্যামেরিকান এক মহিলা অনলাইন সেলিব্রেটির ভিডিও দেখলাম গতকাল , রসিকতা করেই বানানো। তার ভিডিওর বার্তা হল এই যে - সরকারের তরফ থেকে বলেছে বাড়ি ঘরে থাকতে আর নিজেদের ইমিউন সিস্টেমকে আরও উন্নত করে এমন খাবার খেতে, বা কাজ করতে। কাজেই সব অ্যামেরিকানের উচিৎ এখন বাসায় থাকা, এবং প্রচুর পরিমানে যৌনকর্ম করা, যেহেতু তা মানুষের ইমিউন সিস্টেমের উপকার করে (একান্তই উক্ত ভ্লগারের থিওরি, আমি এর সত্য মিথ্যা জানি না)। পার্শ্ববর্তি দেশ ক্যানাডার প্রেসিডেন্ট নিজে কোয়ারেন্তিনে যাওয়া এবং তার স্ত্রীর করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর, সর্বোপরি খোদ যুক্তরাষ্ট্রেও এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া এবং মানুষের মৃত্যু ঘটবার পর, এখন হয়তো তাদের এই কমিক্যাল দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আসবে।

কোয়ারেন্তিনে মানুষজনকে রাখা নিয়েও বিস্তর রসিকতা চালু হয়েছে সাম্প্রতিক সময়ে। বিদেশ ফেরত যাদেরই বাংলাদেশে আসার পর কোয়ারেন্তাইনে রাখার চেষ্টা করা হয়েছিল, তারা খুব সম্ভব দুর্বোধ্য ইতালিয়ান, চীনা অথবা ইংরেজি ভাষায় গালিগালাজ বা শ্লোগান দিতে দিতে সেখান থেকে বের হয়ে এসে বাড়ি চলে যান। কেননা যে বাঙ্গালী ইংরেজিতে গালি দিতে জানে, তারে দাবায়া রাখা কোনক্রমেই সম্ভব না। আমাদের কোন এক মন্ত্রী নাকি তাদের ফাইভ স্টার হোটেলে রাখবার সুবিধা দিতে না পারায় সরকারের ব্যারথতা নিয়ে দুঃখপ্রকাশ করেন , এবং আদর করে এই বিদেশ ফেরতা জনতাকে নবাবজাদা বলে আখ্যা দেন। আমাদের এই সুলতানেরা এখন দেশে ফিরে ঘরের আঙ্গিনায় বসে এলাকাবাসিকে বিদেশের গল্প শোনাচ্ছেন, নিজেরা পিকনিকে যাচ্ছেন, বন্ধুবান্ধবের সাথে চিজিপিজ্জা খেয়ে বেড়াচ্ছেন। আমি একাডেমিয়ার লাইনের লোক। আগে পরীক্ষার হলে যে ছেলে/মেয়ে দেখাদেখির চেষ্টা করতো, তাদের উঠিয়ে রুমের একটা একাকী কর্নারে বসিয়ে দিয়ে বলতাম - সাইবেরিয়া পাঠিয়ে দিলাম তোমায়। এখন এরকম হলে বলি - বেশি দেখাদেখি করলে একদম কোয়ারেন্তাইন করে দেবো!

বলিউডের নায়িকা ইশা গুপ্তার ইন্সটাগ্রাম স্টোরিতে খুব অর্থবহ একটা পোস্ট দেখলাম গতকাল, যাতে লেখা - "আওয়ার এলডারস হ্যাড টু কাম আউট অ্যান্ড ফাইট ওয়ারস টু সেভ দেয়ার ফিউচার জেনারেশন। নাও ইটস আওয়ার ডিউটি টু সিট ইনসাঈড আওয়ার হোম, অন আওয়ার কাউচেস টু সেভ আওয়ার এলডারস"। - খুবই সুন্দর কথা। করোনার মৃত্যুঝুঁকি বয়স্কদেরই বেশী। আমরা কমবয়েসিরা বাইরে ঘুরেফিরে ভাইরাস নিয়ে বাসায় ঢুকলে জ্বরে ভুগে একসময় হয়তো আবার নিজের পায়ে উঠে দাঁড়াতে পারব, কিন্তু বৃদ্ধ যারা, যাদের শরীরে আগে থেকেই নানা কমপ্লেক্সিটি আছে, তাদের পক্ষে সারভাইভ করা মুশকিল হবে। গতকাল এক কষ্টের সংবাদ শুনলাম যে - ইতালির হসপিটালগুলোতে আইসিইউর সংকট চলায় তারা আশিঊর্ধ্ব বয়েসিদের আর আইসিইউতে নিচ্ছেন না। এ সুবিধা অপেক্ষাকৃত কমবয়স্কদের জন্যেই মুলতবী থাকবে, কেননা তাদের বেঁচে থাকার সম্ভাব্যতা বেশী।

গারসিয়া মারকেজের লাভ ইন দা টাইম অফ কলেরা উপন্যাসটাও মানুষের কথায়, লেখায় আজকাল বেশ প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে এবং লাভ ইন দা টাইম অফ করোনা নামে ফিরে আসছে। এ প্রাসঙ্গিকতা নিঃসন্দেহেই আমরা চাই নি।

গতকাল শেষ ক্লাসে যখন ইউনিভার্সিটির ছুটির ঘোষণা ছেলেপেলেদের মধ্যে পড়ে শুনালাম, সবাই উৎফুল্ল হয়ে উঠলো। পরে যখন শিক্ষামন্ত্রীর এ কথাও সংযুক্ত করে দিলাম যে - এই ছুটিকে যেন তারা বেড়ানোর উপলক্ষ্য হিসেবে মনে না করে এবং বাসায় থেকে সময়কে কাজে লাগায়, তাদের মধ্যে চাঞ্চল্য খানিকটা কমে এলো। তারপরেও দু'একজন অত্যুৎসাহী ছাত্র-ছাত্রী জিজ্ঞেস করে বসলো যে আমি এই ছুটিতে কি করবো। কোনরকমের কালক্ষেপণ ছাড়াই বলে দিলাম - বই পড়বো। অনেক অনেক অসাধারণ বই বাসায় জমে পড়ে আছে। এগুলো না পড়ে পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়াটা জীবনের এক অর্থে অপচয়ই হবে। বই তো পড়বোই, ঘরের কাজেও হাত লাগাতে হবে। সেই সঙ্গে খুব উদ্বিগ্নভাবে লক্ষ্য করবো বাংলাদেশের মানুষ কিভাবে এই করোনা পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছে। জীবন যখন একদন কণ্ঠনালীতে এসে ঠেকেছে, এমন সময়ও কি আমরা পারব আমাদের জঘন্য রকমের বাজে সব অভ্যাসগুলো ত্যাগ করতে? রাস্তাঘাটে, যত্রতত্র কফ থুতু ফেলা থেকে নিজেদের বিরত রাখতে? খোলা ময়দানে নাক ঝেড়ে হাতটা প্যান্টের ওপর ঘষে মুছে সামনের মানুষের সাথে করমর্দনের উদ্দেশ্যে বাড়িয়ে দেয়া বন্ধ করতে? হাত ধোয়া, পোশাক পাল্টানো ছাড়া বাড়িতে এসেই নিজের পরিবারের লোকজন, নিজেদের শিশুদের জড়িয়ে না ধরতে বা কোলে তুলে না নিতে? এই প্রশ্নের ইতিবাচক উত্তর নিশ্চিত করা খুবই জরুরী এই কারণে যে - করোনার বিরুদ্ধে আমাদের এই যে লড়াই, এ লড়াই একা জেতা সম্ভব না। সামগ্রিক প্রচেষ্টা, সবাই মিলে সচেতনভাবে কাজ না করে, শুধুমাত্র ব্যক্তিপর্যায়ের সচেতনতা আমাদের বাঁচাতে পারবে না। ফুটবল, ক্রিকেট, এমনকি কে পপকেও সরিয়ে দিয়ে করোনা এখন পৃথিবীর প্রধানতম গ্লোবাল পপ কালচার। গেম অফ থ্রোনসের সাথে মিলিয়ে বলা চলে - নাইট কিং তার আর্মি অফ ডেডদের সঙ্গে নিয়ে আমাদের সামনে। দা লং ডার্ক নাইট একদমই আসন্ন। আমরা, সমাজের বিবিধ স্তরের , বা হাউজের মানুষেরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করে এই করোনার মোকাবিলা করতে পারি কিনা, এটাই এখন দেখার বিষয়। একা লড়াই করে জেতার আসা করলে, সেই যে ডথ্রাকি ট্রাইব প্রথমে আগ বাড়িয়ে আক্রমণ শানাতে গিয়ে একদম নিশ্চিহ্ন হয়ে গেলো, আমাদেরও অবস্থা হবে সেরকমই। একা নয়, সম্মিলিত প্রয়াসে সফলতা। শুধুমাত্র আপনার পরিবার নয়, আপনার প্রতিবেশী, আপনার কাজের বুয়ার ফ্যামিলির সেইফটিও যেন আপনার চিন্তার বিষয় হয়।

আজ সকালে ঘুম ভেঙ্গে যখন উঠে গিয়ে বারান্দায় দাঁড়ালাম, মনটা ভালো হয়ে গেলো সঙ্গে সঙ্গে। গ্রিন মডেল টাউনে থাকি। জায়গাটা অসম্ভব রকমের গাছগাছালিতে পূর্ণ, এমনটা ঢাকা শহরের ভেতরে আর দেখা যায় না। মিষ্টি একটা রোদ, বসন্তের মিঠে বাতাস, বিচিত্র সব পাখির কিচির মিচির ডাক আর সামনে দিগন্তে বিস্তৃত সবুজের সমারোহ। সব মিলিয়ে কি যে অসাধারণ এক অনুভূতি! হঠাৎ মনে হল , আল্লাহ না করেন, যদি করোনা, বা এর চেয়েও শক্তিশালী কোন ভাইরাসের সংক্রমণে পৃথিবীর সব মানুষ একদিন শেষ হয়ে যায়, তবুও সূর্য উঠবে, পাখি গান গাইবে, বাতাস এসে দোলা দেবে ধানের শীষে, নদীতে ঢেউ উঠবে, দু'একটা নোঙ্গর করে রাখা নৌকার পাল ফুলে উঠবে বাতাসের তোড়ে, শুধু যাত্রা শুরু করবার মত কেউ থাকবে না। পৃথিবীর রং - রূপ - গন্ধ উপভোগ করবার কেউ থাকবে না। তবুও পৃথিবী চলবে। একাকী একটা গ্রহ মহাজাগতিক পথ ঘূর্ণায়মান অবস্থায় পরিভ্রমণ করতে থাকবে এমন একরাশ প্রাণীর মৃতদেহ বুকে নিয়ে, যারা তাদের মাতৃস্থানীয় এই গ্রহের প্রতি কখনো সহানুভূতিশীল আচরণ করে নি। কি নির্মম সুন্দর হবে সেই দিনটা!

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ২:১২

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: আজ থেকে ৫ বছর আগে লকডাউন শুরুর প্রথম দিন সকালবেলা এই লেখাটা লিখে অনেক সময় নিয়ে বারান্দায় দাঁড়িয়েছিলাম। করোনার দিনগুলিতে, বিশেষ করে ২০২০ - ২১ সালে আমি আমার লাইফের সবচে ইনটেন্স ব্লগিং করি।

২| ১৮ ই মার্চ, ২০২৫ ভোর ৫:০৫

সন্ধ্যা রাতের ঝিঁঝিঁ বলেছেন: শেষের প্যারাটা সত্যি ভাবনার উদ্রেক করে, সেদিন কেমন হবে ভাবলে আমার মন খারাপ হয়ে যায়। আপনার লেখা পড়ে সেদিনে ফিরে গেলাম। রৌদ্রজ্জ্বল ঝকঝকে একটা দিন ছিল। ট্রলিটা নিয়ে প্ল্যাটফর্ম পার হচ্ছি, পেছন ফিরে চিরসবুজ ক্যাম্পাস এর দিকে তাকিয়ে একটুও আসতে ইচ্ছে হচ্ছিল না, সেই যে এলাম তারপর আর প্রাণভরে নিঃশ্বাস নেওয়া হয়নি।

সেসময় আমি আপনার অনেক লেখা পড়েছি। ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।

১৮ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ১০:১৯

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ। সে সময়টা আসলেই আমাদের যার যার জীবনে এমন দাগ কেটে গেছে, যা ভোলার নয়। আন্তরিক শুভকামনা রইলো আপনার প্রতিও।

৩| ১৮ ই মার্চ, ২০২৫ ভোর ৬:২২

কাঁউটাল বলেছেন: অসাধারণ লেখা

১৮ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ১০:১৩

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। আমার মনে পড়ে, ঐ সময়গুলিতে স্পেসিফিক কিছু ইস্যুতে আপনি আর আমি একই পারস্পেক্টিভ থেকে ব্লগিং করতাম। শুভেচ্ছা রইলো আপনার প্রতি।

৪| ১৮ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ১১:৩৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: অতি চমৎকার একটি পোস্ট। + +
করোনাকালীন সময়টা মনে মনে রি-ভিজিট করা হলো। যেদিন সারা বাংলাদেশে টোটাল লক-ডাউন ঘোষণা করা হলো, সম্ভবতঃ ২৬ মার্চ ২০২০, ঠিক সেদিন মধ্যরাতে অর্থাৎ ২৫ তারিখ দিবাগত রাতে আমি চীনের গুয়াংজু বিমান বন্দরের ট্রানজিট লাউঞ্জে সস্ত্রীক দুই দিন দুই রাত অনেকটা কেয়ারেন্তাইনের মত সময় কাটিয়ে দেশে ফিরেছিলাম। বিমান বন্দরে অনেক জেরার সম্মুখীন হয়েছিলাম, তবে সেখানে উপস্থিত সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের ডাক্তার এবং অন্যান্য স্টাফদের আচরণ অনেক আন্তরিক ছিল। তারা সত্যিকার ভাবেই চাচ্ছিল আগন্তুক যাত্রীরা যেন নতুন নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেন, যেন মহামারি রোগটাকে কনটেইন করা যায়। ১৪ দিন বাসা থেকে কোথাও না যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয় এবং এ মর্মে লিখিত আন্ডারটেকিং এও স্বাক্ষর রাখা হয়। আমি সে নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করি। এমন কি ১৩ দিনের মাথায় আমার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বন্ধুর স্ত্রী মারা যাবার খবর পেয়েও তার জানাযা বা দাফন অনুষ্ঠানে যাই নি বা যাবার কোন উপায় ছিল না। সেই বন্ধু দম্পতির সাথে আমরা এক সাথে বহু দেশ ভ্রমণ করেছিলাম, এত ঘনিষ্ঠতা থাকা সত্ত্বেও বন্ধুপত্নীর শেষ যাত্রায় উপস্থিত থাকতে পারিনি বলে মর্মপীড়ায় ভুগেছিলাম।
উল্লেখ্য যে সত্যি সত্যি আমি সে নির্দেশ পালন করি কিনা, সেটা যাচাই করার জন্য ঐ ১৪ দিনের মধ্যে আমার বাসায় একদিন পুলিশের এবং আরেকদিন সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগের লোকজন এসে আমার সাথে কথা বলে গিয়েছিল। বাংলাদেশেও কোন সরকারি নির্দেশের প্রতিপালন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এতটা ক্লোজ মনিটরিং হচ্ছে, সেটা দেখে সে সময়ে আমি সত্যি খুব অবাক এবং সেই সাথে আশান্বিত বোধ করেছিলাম।
পোস্টের শেষ অনুচ্ছেদটির কাব্যিক আবেদন অত্যন্ত মনোগ্রাহী হয়েছে।

৫| ১৯ শে মার্চ, ২০২৫ সকাল ১০:৩৩

রাজীব নুর বলেছেন: সহজ সরল ভাষায় সুন্দর লিখেছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.