নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লিখতে ভালো লাগে তাই লিখি।

সুদীপ কুমার

মন যা চায়।

সুদীপ কুমার › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভালোবাসি যাকে (চতুর্থ পর্ব)

১৪ ই মার্চ, ২০২১ রাত ১০:০৭



শেখর চুপচাপ বসে মানুষের যাতায়াত দেখছে।প্রতিটি মানুষ মোটামুটি একই কাজ করছে।আসছে,স্যান্ডেল খুলে বারান্দায় উঠছে আর কালীমাতাকে প্রণাম করছে।একই ঘটনা প্রতিদিনই শেখর বসে বসে দেখে।অফিস থেকে ফিরে বাসায় না গিয়ে সে সিদ্ধেশ্বরী মন্দিরে এসে ঘন্টাখানেক বসে থাকে।ওকে সঙ্গ দেয় জগদীশ।দু’জনেই মন্দিরের পেছনের বাড়িতে বসবাস করে।জগদীশকে আসতে দেখে শেখর উৎফুল্ল হয়ে উঠে।আজ জগদীশের অনেক দেরী হয়েছে আসতে।
-ভায়ার আজ দেরী কেন?
-আর বলোনা,বাসায় তলব করেছিল গিন্নী।বাসায় হুলুস্থুলুস কান্ড চলছে।
-কেন কি হলো আবার?
শেখর বলে।
-ইলা জুডো শিখবে।জয়ন্তকে বাসায় প্র্যাকটিস করতে দেখে ওর মাথায় ভুত চেপেছে।বাসায় গিয়ে দেখি বসার ঘরের সবকিছু উল্টানো।আর মেয়ে দরজা আটকিয়ে ঘরে বসে আছে।আর রিক্তা আগুন হয়ে সোফায় বসে আছে।তো কি হয়েছে?মেয়ে জুডো শিখবে।মা শিখতে দেবেনা।
জগদীশ বলে।
-তারপর?
শেখর প্রশ্ন করে।
-তারপর আর কি? তুমি আর বৌদি জয়ন্তকে নিয়ে রাত্রে আসবে।একসাথে রাতের খাবার সারবো আর বিষয়টি ফয়সালা করবো।

জয়ন্ত ইলোরাকে ডাইনিং টেবিলে ডেকে নিয়ে আসে।ইলোরা কেঁদে কেঁদে চোখ ফুলিয়েছে।প্রথমে শেখরই কথা বলে উঠে।
-আজকাল ছেলে-মেয়েতে কোন তফাৎ নেই।শিখতে চাইছে যখন ভর্তি করে দাও।সমস্যা কোথায়?
-দাদা,ও মেয়েকে নিয়ে এমনিই আমি পারিনা।পড়াশুনার ক্ষতি হবেনা?
রিক্তা শেখরকে বলে।
-কেন?ইলা মা আমার পড়াশুনাতে খুবই ভালো।সমস্যা কোথায়?
শেখর বলে।
-ক্লাবে কে নিয়ে যাবে ওকে ? আমরা দু’জনেই সারাদিন বাহিরে।অজন্তা কাজের মেয়ের কাছে সারাদিন একা একা থাকে।দিদি আসলে ও বাঁচে।সম্ভবনা।
জগদীশ বলে।
-না আমি শিখবো।
ইলোরা কান্না মেশানো কন্ঠে বলে।
খাবারের টেবিলে সহসাই নিরবতা নেমে আসে।কিছু সময় পর তুলি (জয়ন্তর মা) নিরবতা ভাঙ্গে।
-সপ্তাহে দুইদিন যেতে হয়।বিকাল চারটা থেকে শুরু হয়।জয়ন্তর সাথে ইলা চলে যাবে।
-কি বারে যেতে হবে?
রিক্তা জানতে চায়।
-সোম আর বৃহস্পতি।
তুলি জানায়।
-ওই দুইদিন ওর বিজ্ঞান স্যার আসে ওকে পড়াতে।
রিক্তা বলে।
-তাহলে তো সমস্যা।
শেখর বলে।
-আমি বলি কি,ইলা জয়ন্তর সাথে যাক।আর দাদা-বৌদি যদি অনুমতি দেয় তবে জয়ন্ত সপ্তাহে দুইদিন ওকে বিজ্ঞান পড়িয়ে যাক।
জগদীশ প্রস্তাব দেয়।
শেখর তুলির দিকে তাকায়।তুলি শেখরের দিকে একবার চেয়ে আবার মাথা নামিয়ে খাবারে মনোযোগ দেয়।শেখর বুঝে উঠতে পারেনা কি বলবে।জয়ন্ত এইচ এসসি দ্বিতীয় বর্ষে এখন।যদি ওর পড়াশুনার ক্ষতি হয়।তাই চুপ করে থাকে।
-বৌদি,আপনি কিছু বলেন?
জগদীশ তুলিকে বলে।
- তুই কি নবম শ্রেণীর বিজ্ঞান পড়াতে পারবি?
তুলি জয়ন্তকে প্রশ্ন করে।ইলা উজ্জল চোখে জয়ন্তর দিকে চায়।জয়ন্ত কোন উত্তর দেয়না।সে খাবার নিয়েই ব্যস্ত থাকে।
-পারবেনা কেন?পারবে।
শেখর জোড় গলায় বলে।

শেখর আর জগদীশ দীর্ঘদিনের বন্ধু।পাশাপাশি ফ্ল্যাটে বসবাস করে।জগদীশ আর রিক্তা দু’জনেই চাকরিজীবি।তুলি গৃহিণী।ফলে ইলা আর অজন্তাকে তুলিই বড় করেছে বলতে হয়।জয়ন্ত শেখর আর তুলির একমাত্র ছেলে।জয়ন্তর পর তুলির আর কোন সন্তান হয়নি।মেয়ে সন্তানের অভাব তুলি ইলোরা আর অজন্তাকে দিয়ে পূরণ করে।

খাবার শেষ হলে দুই পরিবার গল্পে মশগুল হয়ে পড়ে।জয়ন্ত ইলোরার কাছে ওর বিজ্ঞান বই দেখতে চায়।ইলোরা বইগুলি এনে দেয়।গল্পে গল্পে অনেক রাত হয়ে যায়।অজন্তার ঘুম পেয়ে যায়।সে কান্না জুড়ে দেয়।শেখররা বিদায় নেয়।

-তোমার কি মনে হয়?ব্যাপারটা ভাল হলো?
বিছানায় শুতে শুতে তুলি শেখরকে প্রশ্ন করে।
-কোন ব্যাপারটা?
শেখর জানতে চায়।
-ইলোরাকে জয়ন্ত পড়াবে।
-সমস্যা কোথায়?
-না,দু’জনেই উঠতি বয়সের।তাই বলছি।
শেখর কিছুক্ষণ তুলির দিকে চেয়ে থাকে।তারপর বলে
-ইলোরাকে ছেলের বউ হিসাবে পছন্দ না?
-কেন পছন্দ হবেনা?লক্ষ্মীমন্ত মেয়ে আমার। ওকে দেখলেই প্রাণটা আমার জুড়িয়ে যায়।যদি ভুল করে বসে দু’জন?
-জয়ন্তর উপর আস্থা আছে আমার।আর বাঁকিটা ভগবানের ইচ্ছা।
তুলির প্রশ্নের উত্তরে জয়ন্ত বলে।

যারা গল্পটি পড়ছেন,তাদের বলছি,জয়ন্ত আর ইলোরার এই আগুনসময় কিভাবে পার হবে বলতে পারেন?আচ্ছা দেখা যাক সামনে কি অপেক্ষা করছে?

প্রথম পর্ব- (Click This Link)
দ্বিতীয় পর্ব- (Click This Link )
তৃতীয় পর্ব- (Click This Link)
চলবে

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই মার্চ, ২০২১ রাত ১২:১৫

রাজীব নুর বলেছেন: জয়ন্ত, ইলোরা, শেখর আর তুলি।
লেখা ভালো হচ্ছে। চালিয়ে যান।

১৫ ই মার্চ, ২০২১ রাত ১০:২৬

সুদীপ কুমার বলেছেন: আমার লেখার পাঠক খুবই কম।বুষ্ট আপ হলো কিভাবে?

২| ১৫ ই মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:২৩

রাজীব নুর বলেছেন: পঞ্চম পর্ব কবে দিবেন?

৩| ১৬ ই মার্চ, ২০২১ রাত ১২:১৩

রাজীব নুর বলেছেন: শিশুবক্তা নাকি মোদিরে ঢুকতে দিবোনা!
এয়ারপোর্ট ঘেরাও করবো!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.