নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লিখতে ভালো লাগে তাই লিখি।

সুদীপ কুমার

মন যা চায়।

সুদীপ কুমার › বিস্তারিত পোস্টঃ

বৃতান্ত হলো এই

৩০ শে মার্চ, ২০১৯ দুপুর ১:১৪


জয়কে যখন উদ্ধার করা হয় তখন জয়ের জ্ঞান ছিলোনা।নৌবাহিনীর একটি পেট্রোল জাহাজ বঙ্গোপসাগরে জয়কে খুঁজে পায়।দুইদিন পর জ্ঞান ফিরে আসে জয়ের।ডাক্তার যারা ছিল জয়ের চিকিৎসায়,তারা কোন কারণ খুঁজে পাচ্ছিলনা।কেন জয় অজ্ঞান হয়ে আছে।কেন জ্ঞান ফিরছেনা তার কোন কিছুর উত্তর তাদের কাছে নেই।ডাক্তার মারুফ রাউন্ডে এসে জয়কে পরীক্ষা করেন।সবকিছু নরমাল।বাওয়েল মুভমেন্ট নরমাল।হার্ট রেট,বিপি সবকিছুই নরমাল।
-কেমন বোধ করছেন আপনি?
জয় কিছুক্ষণ চুপ করে তাকিয়ে থাকে ডাক্তারের দিকে তারপর বলে,ভাল।
মারুফ নার্সকে ফাইল নিয়ে তার রুমে আসতে বলে।

প্রধানমন্ত্রী ফাইলটি খুব মনযোগ সহকারে পড়েন।তারপর তিনবাহিনীর প্রধানের দিকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন-কি করা যেতে পারে।সেনাবাহিনী প্রধান সবার পক্ষ হয়ে বলেন যে,তিন জনের একটি চৌকস কমান্ডো দল উনারা পাঠাতে চান।উদ্ধার তৎপরতা খুব সাবধানতার সাথে ও গোপনে সারতে চান।বাংলাদেশের মিডিয়া ও জনগণ বিষয়টি জানুক তা তারা চাননা।প্রধানমন্ত্রী ফাইলে সই করে দেন।তিনবাহিনী প্রধানগণ স্যালুট দিয়ে বেরিয়ে যান।

রাত তিনটা।জয় বিমান থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে।ওর পিছনে আরও দুইজন ঝাঁপ দেয়।কিছুক্ষণ আকাশে ভেসে থাকার পর জয় প্যারাসুট খোলার চেষ্টা করে।প্যারাসুট খোলেনা।বারবার চেষ্টা করার পরও খোলে না।সে কন্ট্রোল রুমে তার সমস্যার কথা জানায়।এরপর নিজেকে ছেড়ে দেয় ঘটনা প্রবাহের উপর।চোখ বুঁজে ভাবতে থাকে তার মিশনের কথা।অনেকক্ষণ পর জয় চোখ খোলে।সেএকটি সবুজ উদ্যানে বসে আছে।প্রচন্ড অবাক হয় জয়।মিলানোর চেষ্টা করে একটি ঘটনার সাথে আর একটি ঘটনার।কোন মিল খুঁজে পায়না সে, ঘটনা প্রবাহের সাথে।চিন্তা ছেড়ে সে বাস্তবে ফিরে আসে।উদ্যানে প্রচুর মানুষ।সবাই উৎসুকভাবে তার দিকে তাকিয়ে আছে।তবে মানুষগুলি দলবদ্ধভাবে একটি বিশেষ প্যাটার্নে দাঁড়িয়ে আছে।প্রতিটি দলে পাঁচজন।ওই পাঁচজনের পোষাক এক,পোষাকের রঙ এক এবং ওই পাঁচজন দেখতেও এক।তবে প্রতিটি দলের মানুষ আবার ভিন্ন ভিন্ন রকমের।এমন একটি দল যাদের পোষাক হলুদ জয়ের দিকে এগিয়ে আসে আর সমস্বরে বলে উঠে-সবুজ দেশে আপনাকে স্বাগতম।চলুন আপনাকে রাজার কাছে নিয়ে যাই।এই কথা বলেই হলুদ দলের সবাই তাকে পাকড়াও করে নিয়ে যেতে থাকে।যেতে যেতে সে শুনতে পায় আর একটি দল বলছে যে, কেন কোন কিছু না জেনে তাকে রাজার কাছে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।এ ভারী অন্যায়।আর একদল বলছে,দেশটার কি যে হলো।ইস্যুগুলি এখন ধামা চাপা দেওয়া হবে।এমন নানা রকমের মন্তব্য শুনতে শুনতে জয় হলুদ দলের সাথে রাস্তায় চলে আসে।হলুদ দলের একজন পকেট থেকে মোবাইল বের করে।এ্যাপস ওপেন করে।জয় তাকিয়ে দেখে এ্যাপসের নাম,-ও ভাই।কিছুক্ষণ পর হলুদ রঙের একটি মাইক্রো ওদের পাশে এসে দাঁড়ায়।পাঁচজনের একজন সবাইকে তার মোবাইলের দিকে তাকাতে বলে।সেলফি তুলবে।জয় খেয়াল করে সেলফি তোলার সময় সবার মুখ ইঁদুরের মত সুঁচালো হয়ে যায়।রাস্তায় অসংখ্য যানবাহন।ফুটপাথে মানুষ আর মানুষ।তবে পাঁচজন করে দলে ও রঙে বিভক্ত।একটু সুযোগ পেলেই ড্রাইভার লেন পাল্টাচ্ছে।একটু সুযোগ পেলেই পাঁচজনের একটি দল রাস্তার মধ্যে দিয়ে দৌড়ে রাস্তা পার হচ্ছে।জয় হলুদ দলের কাছে জানতে চায়,কেন ফুট ওভার ব্রীজ,জেব্রা ক্রসিং থাকা সত্বেও এভাবে রাস্তা পার হচ্ছে।কেউ কোন উত্তর দেয়না।একজন ফেসবুক ওপেন করে জ্বালাময়ী একটা স্ট্যাটাস দিয়ে দেয়।জয়কে পড়তে দেয় তার স্ট্যাটাস।জয় মোবাইল হাতে নেয়।তবে পড়া বাদ দিয়ে কমেন্ট পড়া শুরু করে।পাঁচ মিনিটে পাঁচশ লাইক আর একশ কমেন্ট।মোবাইল ফেরত দেয় জয়।জানালা দিয়ে বাহিরে তাকায়।মেট্রোরেল যাচ্ছে ঝমঝম করে।তবে আশ্চর্যের বিষয়,মেট্রোরেলের ছাদেও মানুষ।জয় জানতে চাইলে ওরা উত্তর করে-ধর্মীয় উৎসব শেষ হলো তাই মানুষ ঘরে ফিরছে।গাড়ি ফ্লাইওভারে উঠে জ্যামে আটকে যায়।কিছুক্ষণ বসে থেকে ড্রাইভার গাড়ি থেকে নেমে যায়।ফিরে এসে জানায়-সামনে একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে তাই জ্যাম।এই কথা শোনার সাথে সাথে হলুদ দল গাড়ি থেকে নেমে যায়।জয়ও ওদের সাথে যায়।শত শত মানুষ দুর্ঘটনা স্থলে।একটি মোটর সাইকেলকে একটি গাড়ি ধাক্কা মেরেছে।মোটর সাইকেল আরোহী রক্তে ভেসে যাচ্ছে।বিভিন্ন দল ভিডিও করছে।হলুদ দলটিও ভিডিও করছে।ওদের একজন ফেসবুকে ভিডিওটি পোস্ট করে লিখে দেয়,-এ দেশ আমার না।একটি বয়স্ক মহিলার দল এসে আহত লোকটিকে গাড়িতে তুলে নেয়।

জয়রা যখন রাজার কাছে পৌঁছায় তখন রাত্রি দশটা।জয় ভেবেছিল রাজবাড়ি হবে হয়তো।কোন রাজবাড়ি নয়।এটি একটি বহুতল ভবন।লিফটে ওরা ত্রিশ তলায় উঠে।আলীশান এক এপার্টমেন্ট।বসার ঘরে সবাই গিয়ে বসে।কিছুক্ষণ পর কেতাদুরস্ত এক ভদ্রলোক ঘরে প্রবেশ করেন।পেছনে এক চাকর।মোবাইলে ভিডিও করছে।উনি এসেই জয়কে বুকে জড়িয়ে ধরেন।হলুদ দলের একজন চাকরের মোবাইলের দিকে তাকিয়ে বলেন-দেখুন আমাদের রাজা কত ভালো।অপরিচিত একজন যার কিনা কোন দলই নেই তাকেও বুকে জড়িয়ে ধরেন। এবার রাজা বক্তব্য শুরু করেন,-উনি কে আমি জানিনা।উনি কোথা থেকে এসেছেন আমি জানিনা।তবে উনি একজন মানুষ। আর একজন মানুষ হয়ে মানুষের সেবা করাই আমার ধর্ম।এই কথা শেষ করে রাজা সোফায় গা এলিয়ে দেন।চাকরটি ভিডিও করা বন্ধ করে চলে যায়।রাজা জানায় যে তার এক কোটি ফলোয়ার আছে ফেসবুকে।লাইভ চললো এতক্ষণ।সবাই জেনে যাবে এখনই।জয় জানতে চায় যে উনি শহরের মেয়র নির্বাচন করবেন কিনা।রাজা জানায় যে,এমনই ইচ্ছা আছে।ওদের গল্পের মধ্যেই অপরুপ সুন্দরী তরুণী ঘরে প্রবেশ করে জয়ের সাথে সেলফি তুলতে চায়।রাজা পরিচয় করিয়ে দেয়-উনি হলেন আমার সাত নম্বর স্ত্রী।সেলফি তোলার সময় তরুণীটির মুখ ইঁদুরের মুখে বদলে যায়।তরুণীটি ভেতরে চলে যায়।পিছনে রাজাও যায়।ঘরের ভেতর থেকে মারধোরের আওয়াজ ভেসে আসে।আর ভেসে আসে রাজার কর্কশ চিৎকার-শালী বেটাছেলে দেখলেই ছোঁক ছোঁক করতে হয়।

হাসপাতাল থেকে জয়কে মানসিক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি ফাইল যায়।অভিযানের বিস্তারিত লেখা আছে তাতে।তবে শেষ কলামে জয় সম্পর্কে ভিন্ন একটি বার্তা দেওয়া হয়।প্রধানমন্ত্রী পুরো ফাইলটি পড়েন।তারপর মুচকি একটি হাসি দিয়ে ফাইল বন্ধ করে রাখেন।

২৯/০৩/২০১৯

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে মার্চ, ২০১৯ দুপুর ১:৫৬

রাজীব নুর বলেছেন: এটা কি গল্প? না বাস্তব?

৩১ শে মার্চ, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:০৫

সুদীপ কুমার বলেছেন: কখনও গল্প।কখনও বাস্তব।

২| ৩০ শে মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৩:১১

মা.হাসান বলেছেন: অসাধারণ ।

৩১ শে মার্চ, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:০৫

সুদীপ কুমার বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।

৩| ৩০ শে মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৩:২৯

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: ভালোই।

৩১ শে মার্চ, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:০৬

সুদীপ কুমার বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।

৪| ৩০ শে মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৪:৩৫

এ্যান্টনি ফিরিঙ্গী বলেছেন: প্রধানমন্ত্রী সামনের নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত। তাই ফাইলটি আপাতত বন্ধ করে রাখলেন, এ্যাকশন পরে নিবেন।

৩১ শে মার্চ, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:০৬

সুদীপ কুমার বলেছেন: ভালো কল্পনা।

৫| ৩০ শে মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৫:১৭

পবিত্র হোসাইন বলেছেন: আমি, তুমি, তুই, আমরা, তোমরা, তোরা ।

৩১ শে মার্চ, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:০৭

সুদীপ কুমার বলেছেন: যথাযথ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.