নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লিখতে ভালো লাগে তাই লিখি।

সুদীপ কুমার

মন যা চায়।

সুদীপ কুমার › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রেম তবু প্রেম নয় (১০ ম পর্ব)

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১০:৪৬



নিলয় রুমে চলে যায়।আসন্ন ক্ষমতার পালাবদলের সম্ভাব্য পরিণতি কি হতে পারে তা নিয়ে ভাবতে থাকে।কেমন যেন শুনসান নিরবতা গ্রাস করে নিয়েছে পুরো হলটিকে।রাত একটার দিকে আবার নীচে নামে নিলয়।গেষ্ট রুমে গিয়ে কাউকে পায়না।ভীষণ আশ্চর্য হয় নিলয়।মন খারাপ করে রুমের দিকে ফিরে আসে।পথে তপু ভাইয়ের সাথে দেখা হয়।
-নিলয় গেষ্ট রুমে কেউ নেই?
-না তপু ভাই।
-বিটুদারা রাত বারোটার ট্রেনে পালিয়ে গিয়েছে।তুমি সাবধানে থেকো।
নিলয় খুব হতাশ হয়।সরকার গঠনের আগেই এরা পালালো হল ছেড়ে।রুমে না গিয়ে নিলয় জনের রুমে যায়।
-জন হলেতো আমাদের কেউ নেই।
-জানি।তোরও থাকা ঠিক হবেনা।খুব ভোরে তুই হল ছেড়ে চলে যাস।আমি এগিয়ে দিয়ে আসবোনি।
জনের রুম থেকে বেরিয়ে আসে সে।কেমন যেন শিরশিরে অনুভূতি হতে থাকে নিলয়ের।নিলয় বুঝতে পারে ও ভয় পাচ্ছে।নিজেকে প্রবোধ দেয়।তবুও বুকের মধ্যের অদ্ভুত অনুভূতি দূর হয়না।ভোরে জন রিক্সা করে ফিসারিজের ভেতর দিয়ে সুতিয়াখালির দিকে এগিয়ে দিয়ে চলে যায়।পথের মাঝে বিজয় মিছিলের সামনে পড়ে যায়।নিলয় রিক্সাওয়ালাকে রিক্সা সাইড করতে বলে।
-ওই দিক মনে হয় ছাত্রলীগের পোলা।হল থেকে পালাচ্ছে।
মিছিলকারীদের একজন নিলয়কে দেখিয়ে আর একজনকে বলে।নিলয় তাড়াতাড়ি মিছিলের শ্লোগানের সাথে সুর মেলায়।
-বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।হই হই রই রই শেখ হাসিনা গেলি কই।
মিছিল নিলয়ের পাশ দিয়ে চলে যায়।বাসস্ট্যান্ডে এসে দূরপাল্লার কোন বাস পায়না।কি করবে ঠিক বুঝে উঠতে পারেনা নিলয়।চিন্তা ভাবনা করে বিদ্যাময়ী স্কুলের দিকে রওনা দেয়।ওখানে ওর এক বন্ধুর বাসা।তিনদিন পর বাস চলাচল শুরু হয়।বঙ্গবন্ধু সেতু পার হয়ে সিরাজগঞ্জের দিকে যাওয়ার সময় বাসের জানালা দিয়ে দেখে বেশ কয়েকজন মিলে বঙ্গবন্ধুর নাম ফলক উপড়াচ্ছে।

বাড়িতে এসে বেশ কয়েকদিন বাড়ির বাহিরে যায়না নিলয়।ক্রমেই চারপাশ হতে নির্যাতনের ভয়াবহ খবর আসতে থাকে।ধর্ষণ,হিন্দুদের ঘর-বাড়ি হতে বিতারণ কোন কিছুই বাদ যায়না।জন খবর পাঠায় পাশের রুমের জুনিয়র ছেলে তার বেডে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে।

মাস খানেক পর রেজাল্ট বেরোয়।নিলয় ফার্স্ট ক্লাস পেয়েছে।নিলয় খুশি হতে পারেনা।ক্ষমতার পালাবদলের সাথে সাথে ওর স্বপ্নও শেষ হয়ে গিয়েছে।এখন ওর একটাই লক্ষ্য সংসারের হাল ধরা।

বেশ কিছুক্ষণ নিলয়ের বায়োডাটা পড়েন ভদ্রলোকটি।তারপর নিলয়ের দিকে তাকান।
-আপনি কি অন্যের চাকরি খেতে এসেছেন?
-কেন?
-আপনি চাকরি করবেননা।শুধু সময় কাটাতে এসেছেন।
-কেন সময় কাটাতে আসবো?আমার চাকরির খুব প্রয়োজন।
-আপনি যে চাকরি করবেন তার নিশ্চয়তা কোথায়?
-কি নিশ্চয়তা চান?
-আপনার সব সার্টিফিকেট কোম্পানীতে জমা দিতে হবে।
নিলয় ওর সার্টিফিকেটের ফাইল উনার দিকে এগিয়ে দেয়।এবার ভদ্রলোকটি হেসে ফেলেন।নিলয়কে পরের দিন আসতে বলেন।

নিলয়ের বাবা মারা যাওয়ার এক বছর পর ওর মা ওর জন্যে বিয়ের তোড়জোড় শুরু করে।
-নিলয় তোর কি কোন পছন্দের মেয়ে আছে?
-না মা।
-তবে আমি মেয়ে দেখা শুরু করলাম।
নিলয় কোন উত্তর করেনা।

প্রিয়তির বুকের মধ্যে ক্রমাগত ঢিপ ঢিপ করছে।আজ পাত্রপক্ষ আসছে।যদি পছন্দ না হয়।আবার পরিচিত জন।শেষে না লজ্জায় পরতে হয়।পাত্রপক্ষ ঠিক সময় চলে আসে।
-দিদি পাত্র কোনটা?দুইজন আসছে।একই বয়সী।
রিমি দৌড়ে ঘরে এসে বলে।
প্রিয়তিও জানালা দিয়ে দেখে।সে নিজেও বুঝতে পারেনা কোনটি নিলয়।কারও গোঁপ নেই।নিলয়ের তো গোঁপ ছিল।কিছুটা দ্বন্দে পরে যায় প্রিয়তি।
-তোমাকে তো কত আগেই দেখেছি।
নিলয় বলে।
প্রিয়তি কোন উত্তর করেনা।মাথা নীচু করে থাকে।নিলয় আরও কিছুক্ষণ কথা বলে প্রিয়তির সাথে।কথাবার্তা শেষ করে পাত্রপক্ষ চলে যায়।বাড়িতে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়।

মা আর কাকি পই পই করে শিখিয়ে দেয়,নতুন জীবনের প্রতিটি বিষয়ের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে হয়।তবুও কিছু কিছু বিষয়ে ভীষণ ধাক্কা খায়।বিশেষ করে প্রতিবার মিলনের পর তার মনে হতে থাকে এর জন্যে সবাই এতো পাগল কেন।আর প্রতিটি রাতেই নিলয় ওর শরীর নিয়ে পাগল হয়ে উঠে।প্রিয়তির মনের মধ্যে যে রোমান্টিকতা ছিল তা পথ হারায়।

১ম পর্ব (Click This Link)
২য় পর্ব (Click This Link)
৩য় পর্ব (Click This Link)
৪র্থ পর্ব (Click This Link)
৫ ম পর্ব (Click This Link)
৬ ষ্ঠ পর্ব (Click This Link)
৭ ম পর্ব (Click This Link)
৮ ম পর্ব (Click This Link)
৯ ম পর্ব (Click This Link)

চলবে……….

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৮:১৭

রাজীব নুর বলেছেন: কেউ কেউ চাকরি নিয়েও বিলাসিতা করেন।

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১১:৪৮

সুদীপ কুমার বলেছেন: হয়তো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.