নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লিখতে ভালো লাগে তাই লিখি।

সুদীপ কুমার

মন যা চায়।

সুদীপ কুমার › বিস্তারিত পোস্টঃ

ক্রসফায়ার (১ম পর্ব)

২৫ শে মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫৫



অভি তার ক্যামেরা ঠিক ঠাক করে নেয়।হল রুমটা ভালো ভাবে দেখে নেয়।টিভি এবং দৈনিক পত্রিকা মিলে জনা পনেরো সাংবাদিক একত্রিত হয়েছে।প্রশাসন থেকে ওদের ইফতারীর দাওয়াত দেওয়া হয়েছিলো।মূল উদ্দেশ্য সংবাদ সম্মেলন।ইফতারী সেরে নামাজ পড়ে সবাই আবার একত্রিত হয়েছে।কিছুক্ষণ পর বিশেষ বাহিনীর মিডিয়া উইং সহ আঞ্চলিক কমান্ডার আসলেন।
-সবাই ভালো আছেন তো?
আঞ্চলিক কমান্ডার মেজর শাহীন প্রশ্ন করেন।
-জ্বি সবাই ভালো আছি।
সাংবাদিকদের কয়েকজন বলেন।
-আমরা গতরাতে যাত্রাবাড়ির ওই অঞ্চলে মাদকের জন্যে অভিযানে বেরই।আমাদের সাথে ছিল ঈমন।তখন রাত দুটো বাজে।অভিযানের এক পর্যায়ে মাদক বিক্রেতা চক্র আমাদের উপর হামলা চালায়।ওরা গুলি ছুঁড়লে আমরাও পাল্টাগুলি ছুঁড়ি।গোলাগুলির এক পর্যায়ে ঈমন দৌড় দেয়।আর দৌড় দেওয়ার ফলে সে গোলাগুলির মাঝখানে পড়ে যায় এবং মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়।এই অভিযানে আমাদের দুই সহকর্মী আহত হয়।কই শাহেদ আর আফজাল,আপনারা সামনে আসেন।ভাইয়েরা আপনাদের ছবি তুলক।
মেজর শাহীন একটানা বলে যান।
শাহেদ আর আফজাল সামনে চলে আসে।সাংবাদিকগণ ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
অভি হাত উঁচু করে।
-বলুন।
-ঈমন বিশ্বিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছেলে।সে সোজা দৌড় মারবে কেন?যেখানে প্রচন্ড গোলাগুলি হচ্ছে।অবশ্য আপনাদের ভাষ্য মতে।
-আমরা কিভাবে বলবো?
মেজর শাহীন বলেন।
-আপনারা কি মনে করেন এভাবে মাদকের প্রকোপ বন্ধ করা সম্ভব?
আর একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন।
-ফলাফল আপনারা হাতে নাতে পাচ্ছেন।
মেজর শাহীন বলেন।
-এটা কি সরাকারের রাজনৈতিক এজেন্ডা নয়?সামনে নির্বাচন।জনপ্রিয়তা বাড়ানোর কৌশল নয় কি?
এক টিভি সাংবাদিক প্রশ্ন করেন।
-দেখুন আমরা রাজনীতিবিদ নই।আপনার এ ধরণের প্রশ্ন এখানে অপ্রাঙ্গিক।আপনাদের আর কোন প্রশ্ন না থাকলে আজকের মত সংবাদ সম্মেলনের সমাপ্তি ঘোষণা করছি।

অভি ক্যামেরা গুছিয়ে নিচ্ছিল।দৈনিক ভোরের কাগজের জালাল ভাই এগিয়ে আসেন ওর কাছে।
-অভি যাবি?
-কোথায়?
-সিদ্ধেশ্বরীতে।ঈমনদের বাসায়।
-আজকেই যাওয়াটা ঠিক হবে?
-গেলে রিপোর্টটি সমৃদ্ধ করা যাবে।
জালালের মটর সাইকেলে চেপে বসে অভি।সিদ্ধেশ্বরী মন্দিরের কাছে অদ্ভুদ জ্যামে আটকে পড়ে।পাশাপাশি দুটো গাড়ি ক্রস করতে গিয়ে কোনটাই পার হতে পারছেনা।ওদিকে মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এসেছেন মন্দিরের প্রোগ্রামে।অনেকখন পড় অভিরা ঈমনদের বিল্ডিং এ এসে পৌঁছায়।দারোয়ান পরিচয় এবং কোথায় যাবে জানতে চায়।ওদের পরিচয় আর উদ্দেশ্য শোনে দারোয়ান জানিয়ে দেয় ভেতরে যাবার অনুমতি নেই।জালাল জানতে চায় ঈমনরা কয় ভাইবোন।বাবা কি করেন।দারোয়ান জানিয়ে দেয় সে কিছু বলতে পারবেনা।অভিরা ফেরার পথে সিদ্ধেশ্বরী মন্দিরে ঢোকে।অনুষ্ঠানের অব্যবস্থাপনা দেখে তারা বিরক্ত হয়।জালাল খেয়াল করে অভি অনেকখন যাবত কিছু লিখছে।
-কি লিখছিস?
-এই আর কি,ক্রসফায়ার নিয়ে একটা কবিতা দাঁড় করানোর চেষ্টা করলাম।
-কি নাম দিলি?
-গোঁজামিল।আমার কাছে ক্রসফায়ার হলো একটা গোঁজামিল দেওয়া সমাধান।রাষ্ট্রের প্রশাসনিক ও নেতৃত্ব ব্যর্থতায় ক্রসফায়ারের মত আজব সমাধানের উৎপত্তি হয়।
-কই দেখি?পড়ে দেখি।
পড়ার পর জালাল জানায় গোঁজামিলই বটে।

“আমি মা কচ্ছপের পিঠে উঠে বসি,আর চলে যাই আকাশে
আকাশ নয় ও যে একটা বন।শিয়াল মামা এসে বলে এ বনে
কোন হায়েনা নেই।সব মেরে ফেলা হয়েছে।

পত্রিকার পাতায় চিৎ হয়ে পড়ে আছ লাশ। স্বাভাবিকভাবে
আমি উল্লসিত হই।যাক এবার মাদক ব্যবসা হবে সাফ।
পত্রিকার পাতা আমাকে নিয়ে যায় রুপকথার রাজ্যে
যে রাজ্যে কোন প্রাণী নেই।আছে উদ্ভিদ তবে শুধুই আগাছা।

বন্দুকের কালো নল মুখ ফিরিয়ে নেয়।ভয়ের মেঘ ঢেকে ফেলে
রুপকথার আকাশ।

আমি আমার মাথা কেটে আমার হাতে নিই
ঈশ্বর অবাক হন আর জানতে চান-আমার মাথা ধরেছিলো কিনা”?


সুরাইয়া খুব জোরে শাওয়ার ছেড়ে দেয়।যাতে করে ওর কান্নার আওয়াজ বাহিরে না যায়।কাঁদতে কাঁদতে ও বাথরুমের মেঝেতে শুয়ে পড়ে।কতক্ষণ কেঁদেছে সে মনে করতে পারেনা।সম্বিত ফিরে পেলে গোসল ছেড়ে বাথরুম থেকে বেরিয়ে আসে।আয়নার সামনে মাথা আঁচড়ানোর সময় বুয়া ঘরে প্রবেশ করে।জানায় আম্মা খেতে ডাকছে।সুরাইয়া জানায় সে খাবেনা।বুয়া জানালা লাগিয়ে দিয়ে ঘর হতে বেরিয়ে যায়।বাহিরে প্রবল বৃষ্টি।সুরাইয়া দরজা বন্ধ করে এসে জানালার পাশে চেয়ার নিয়ে বসে।কিছুক্ষণ বৃষ্টি দেখে।তারপর বিছানায় গিয়ে ল্যাপটপ ওপেন করে।ফেসবুক খুলে অচেনা বালক আইডিতে যায়।ঈমনের হাস্যোজ্জল ছবি স্ক্রিণে ভেসে উঠে।
(চলবে)

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২৮

ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: এসব আমাদের কাম্য নয়!

২| ২৫ শে মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩৯

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন:

দারুন উপস্থাপনা!

ষ্টান্টবাজি আর গলাবাজি থামাতে পারে মিডিয়াই! কিনতু দু:খজনকভাবে উনারা মাথায় ঠোঙ্ড়া ঠুসা বেড়ালের মতো পিচূ পায় হাটছে!!!

++++++

৩| ২৫ শে মে, ২০১৮ রাত ৮:৪২

ইব্‌রাহীম আই কে বলেছেন: চমৎকার উপস্থাপনা। লেখার সারমর্ম বুঝার জন্য লেখাটাকে আগে শেষ হতে দিতে হবে। পরের সিকোয়েন্স গুলোর লিংক আসা করি মন্তব্যের জবাবে দিবেন। অপেক্ষায় থাকলাম পরের সিকোয়েন্স গুলোর জন্য।

ব্লগে নতুন। আমার ব্লগে আপনার দাওয়াত। লেখাগুলোয় কিছু সমালোচনা করে আসলে অত্যন্ত খুশি হব।

৪| ২৫ শে মে, ২০১৮ রাত ৮:৫২

রাজীব নুর বলেছেন: চলুক, সাথে আছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.