নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লিখতে ভালো লাগে তাই লিখি।

সুদীপ কুমার

মন যা চায়।

সুদীপ কুমার › বিস্তারিত পোস্টঃ

পৃথিবীর জন্যে ভালোবাসা (দুই)

৩০ শে জুন, ২০১৭ সকাল ১১:৩৫



http://www.somewhereinblog.net/blog/SudipKumar/30200773

৪৪৪৪ সাল।পৃথিবী রোবট কেন্দ্রিক হয়ে পড়েছে। বিংশ শতাব্দীতে ধর্মের যে নীচ ব্যবহার ছিল তা বহুলাংশে দূর হয়েছে। সবচেয়ে চোখে পড়ার মত যে পরিবর্তন তা হলো পৃথিবীতে ক্ষমতার ভারসাম্যে বদল হয়েছে।এক কেন্দ্রিক ক্ষমতা হতে বহুকেন্দ্রিক হয়েছে। পৃথিবীর জিডিপির শতকরা ত্রিশ ভাগ এখন আসে উপমহাদেশ ও চীনের কাছ হতে। আমেরিকার কৌশলী রাজনীতি এখন পৃথিবীর কাছে স্পষ্ট। আমেরিকা এখন এক বন্ধুহীন রাষ্ট্র। আর বাংলাদেশ এখন জ্ঞান- বিজ্ঞানে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জাতি। অস্ত্র ব্যবসা এখন পৃথিবীতে অচল। এখন পৃথিবীতে চলে জনবল আর মেধার ব্যবসা। যার সিংহভাগ বাঙালির দখলে। স্টীফেন হকিংস এর কথামত পৃথিবীতে মহাবিপর্যয় হয়নি। তবে মানুষ মঙ্গলে বস্তি গড়ে তুলেছে। পৃথিবীর বাছা বাছা ধনী,রাজনীতিবিদদের সন্তান আর বিজ্ঞানীরা এখন মঙ্গলের স্থায়ী বাসিন্দা। আর যেহেতু ধনীরা পৃথিবী ত্যাগ করেছে তাই পৃথিবীতে নোংরা রাজনীতিও কমে গিয়েছে।পৃথিবীর সব সিদ্ধান্ত এখন মঙ্গল কেন্দ্রিক। মঙ্গলে মানুষের বস্তি গড়ে উঠেছে ওলিম্পাস মোনসকে কেন্দ্র করে। ওলিম্পাস মঙ্গলের সবচেয়ে বড় পর্বত। যেমন পৃথিবীর বড় পর্বত হিমালয়। তবে ওলিম্পাস হিমালয়ের তিনগুণ। মঙ্গলে মানুষের বস্তিগুলি, পৃথিবী হতে যারা যে দেশ হতে গিয়েছে তার নাম অনুসারে। যেমন বাংলাদেশ বস্তি, পশ্চিম বাংলা বস্তি,ভারতীয় বস্তি,রাশিয়ান বস্তি,আমেরিকান বস্তি,চায়না বস্তি। প্রতি বছর দু'বার করে স্পেস শাটল পৃথিবী হতে মঙ্গলে যাতায়াত করে। আলোর দ্বিগুণ বেগে চলতে পারে স্পেস শাটলগুলি।

মঙ্গলে আজ মঙ্গল কাউন্সিলের মহা সভা অনুষ্ঠিত হবে। সব বস্তি হতে উড়ন্ত যানগুলি ওলিম্পাসের গুহা অভিমুখী। মঙ্গল কাউন্সিলের এবারের সভাপতি বৃটেনের মার্গারেট থেচার। অত্যন্ত যুদ্ধংদেহী ভাব তার। সভা অনুষ্ঠিত হবে সন্ধ্যা সাতটায়। বাংলাদেশের প্রতিনিধি পদ্মা আর রাশিয়ার প্রতিনিধি স্তেপস পাশাপাশি বসেছে। হোয়াংহো আর ভাগিরথী পাশাপাশি। সভাপতি থেচার সভাস্থলে আসেন। সবাই সন্মান জানাতে উঠে দাঁড়ায়। সভা শুরু হয়। থেচার বলা শুরু করেন।

- আজকে আমরা তিনটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো। এক হলো- বাঙালিদের গোপন গবেষণাগার। সেখানে কি হচ্ছে কাউকে জানানো হচ্ছেনা।দুই- পৃথিবীর মত ভেটো প্রথা থাকা উচিত। সেই জন্যে ভোট গ্রহণ করা হবে আজ।আর শেষে জিনগত রোবটিক্স নিয়ে গবেষণার অগ্রগতি আলোচনা করা হবে। আমি প্রথমে জার্মানির প্রতিনিধি রুডলফকে সুযোগ দিচ্ছি মতামত দেবার জন্যে।
- আমি পদ্মাকে বলবো সে যেন আজ সবাইকে খুলে বলে তাদের গোপন গবেষণাগারে কি নিয়ে গবেষণা হচ্ছে। যাতে মঙ্গলে আমরা সবাই সবাইকে বিশ্বাস করতে পারি রুডলফ বলে।
- দেখুন এই মঙ্গলে সবার স্বাধীনতা আছে নিজ নিজ গবেষণার কাজ চালিয়ে যাবার। আর এই সিদ্ধান্ত আমার একার ছিলনা। এই কাউন্সিলেরই ছিল এখন এটা নিয়ে আলোচনা ইস্যু বহির্ভূত। পদ্মা শান্ত গলায় বলে।
- পদ্মা, আমাদের কাছে পৃথিবী হতে মেসেজ এসেছে আপনারা রোবটিক্সজেনেটিক্স নিয়ে অনেকদূর এগিয়ে গিয়েছেন আর বস্তুর ভর ও তার সাথে মহাকর্ষিয় শক্তির যে নিয়ম তা নিয়ে গবেষণা সাফল্যের দ্বার প্রান্তে। মিসিপিসি বলে।
মিসিপিসি আমেরিকার প্রতিনিধি। আর তাকে মোটামুটি সবাই এড়িয়ে চলে।স্তেপস উঠে দাঁড়ায়।বলা শুরু করে
- বাঙালি যদি না বলতে চায় তবে জোর করা কেন? সে তো কোন নিয়ম ভাঙ্গছে না। তার চেয়ে আমরা দ্বিতীয় আলোচনায় চলে যাই।
সভায় গুঞ্জন শুরু হয়ে যায়। পদ্মা কিছুক্ষণ চুপ করে দেখে তারপর উঠে দাঁড়ায়।
- দেখুন গবেষণাগারে গবেষণা করার অধিকার সবার আছে।সবাই করছে। আমরাও করছি। আজকের বিষয়টি হয়ে গেলো বিংশ শতাব্দীর পৃথিবীর মত। কেউ অস্ত্র তৈরিতে এগিয়ে গেলে আমেরিকা বলতো তাদের নিরাপত্তায় ব্যাঘাত ঘটছে। কি আশ্চর্য যুক্তি। আর এই যুক্তি দিয়ে ওই দেশকে আক্রমণ করে বসতো। আমরা বাঙালিরা কারও উপর অন্যায় করিনা। কাউকে আক্রমণ করিনা নিজেরা আক্রান্ত না হলে। আপনাদের জানার আগ্রহের কারণে আমি বলছি- আমাদের গবেষণা যা ছিল বাঙালির জিনগত সমস্যা; পরশ্রীকাতরতা তা সফল হয়েছে। আমরা ভ্যাকসিন তৈরি করেছি এবং প্রতি গর্ভবতী মাকে এই ভ্যাকসিনের আওতায় আনবো। আর দ্বিতীয় গবেষণা নিয়ে কিছু বলতে চাইনা।
দেখুন মানুষ যদি নিজের উন্নতি না করে তবে এই বিশ্বব্রক্ষ্মান্ডে কিভাবে টিকবে?

সবাই পদ্মার কথায় সায় দেয়। সভার দ্বিতীয় পর্বে ভোট গ্রহণ হয়।ভোটে ভেটো প্রথা অগ্রহণযোগ্য বলে রায় দেয়। সবশেষে পদ্মা আবার উঠে দাঁড়ায় এবং রোবটিক্সকেনেটিক্স নিয়ে বলা শুরু করে।
- আমাদের গবেষণার বিষয়বস্তু স্পেসিস হিসাবে মানুষজাতিকে টিকিয়ে রাখা। আপনারা জানেন ডি এন এ সিঙ্গেল স্ট্রেন্ড থাকা অবস্থায় UV রে শোষণ করে জিনগত পরিবর্তন ঘটায়। প্রাচীনকালে আমরা আরও দেখেছি জাপানে আমেরিকার ফেলা পারমাণবিক বোমার প্রভাবে বিকলাঙ্গ শিশু হতে। তাই আমরা রোবটিক্স এর মাধ্যমে আর একটি স্ট্রেন্ড তৈরি করবো যা জিন যখন সিঙ্গেল স্ট্রেন্ড হয়ে যাবে ঠিক তখন কৃত্রিম স্ট্রেন্ড তাকে সুরক্ষা দিতে পারবে। ফলে ডি এন এ রেপ্লিকেশন এর সময় জিনগত ক্রুটি তৈরি হবে না। আর মানুষের গড় আয়ু একশ বিশ বছর করাও এই গবেষণার লক্ষ্য।

সভায় তুমুল হাততালি পড়ে। ভাগিরথী এগিয়ে এসে পদ্মাকে বুকে জড়িয়ে ধরে বলে,প্রতিবেশী হতে পেরে আমরা গর্বিত। সভা শেষ হয়।যাবার সময় স্তেপস পদ্মাকে বলে,পশ্চিমারা মঙ্গলের রাজনৈতিক পরিবেশ নষ্ট করছে। পদ্মা কোন উত্তর দেয়না,শুধু হাসে।

(চলবে)

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে জুন, ২০১৭ দুপুর ১:২৬

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: স্বপ্ন এগিয়ে যাক :)

জয়তু বাঙালী :)

++++

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.