নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লিখতে ভালো লাগে তাই লিখি।

সুদীপ কুমার

মন যা চায়।

সুদীপ কুমার › বিস্তারিত পোস্টঃ

পৃথিবীর জন্যে ভালোবাসা(এক)

২৯ শে জুন, ২০১৭ বিকাল ৪:০৯



পৃথিবী যখন জ্ঞান- বিজ্ঞানের শীর্ষে ঠিক তখনই যুদ্ধ বেধে যায় পৃথিবীর বুকে। আমাদের গল্পের শুরু সেখানে নয়। তারও মিলিয়ন বছর পরে। আর ঠিক তখন মানুষ তার বাসস্থান হিসাবে বেছে নিয়েছে প্ল্যানেট-এক্সকে। মানুষ এখন এক সৌরজগৎ হতে অন্য সৌরজগৎ এ নিমিষেই চলে যায়।তবে যাতায়াত কালে তারা সময়কে স্থির রাখে আর কোন স্পেসশিপ ব্যবহার করে না। মানুষ এখন যেখানে থাকে সেখানে শুধুই থাকবার ও শিক্ষার ব্যবস্থা আছে। আর খাদ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় রসদ তৈরি হয় অন্য গ্রহে।

তিতাস প্ল্যানেট-এক্স এর এনার্জি সেকটরের প্রধান। ওর বয়স প্রায় একশ বছর। এনার্জি ফিউশনের ক্ষেত্রে তার সমকক্ষ কেউ এখন পর্যন্ত আসেনি। তিতাস ঠিক করে এবার ও বাবা হবে। ওর শরীর হাইড্রোলাইসিস হওয়ার আগেই যেন ওর সন্তান এনার্জি সম্পর্কিত সব জ্ঞান ওর কাছ হতে শিখতে পারে। তিতাস তার জেনেটিক লাইসেন্স এর মাধ্যমে বার্থ কন্ট্রোল কাউন্সিলের কাছে আবেদন জানায়। আবেদন মন্জুর হয়। নির্দিষ্ট তারিখে তিতাস বার্থ কন্ট্রোল অফিসে যায়। ওকে পরীক্ষা করা হবে ওর মধ্যে জেনেটিক সমস্যা আছে কিনা।

- তিতাস,তোমার পূর্ব-পুরুষ বাঙালী ছিল তুমি জানো।
বিজ্ঞানী এন্ড্রোমিডা তাকে বলেন।তিতাস সম্মতি জানায়।
- প্রাচীনকালে এই জাতির ভালো দিক ছিল এরা সহজ-সরল ও একরোখা। আর সমস্যা ছিল ওরা বেশীর ভাগই পরশ্রীকাতর।
- এই সমস্যা সংশোধন করা হয়েছিল আমাদের পূর্বপুরুষ যখন মঙ্গলে বসতি করেছিল। তিতাস বলে।
এন্ড্রোমিডা মাথা ঝাঁকিয়ে কাজে মনোনিবেশ করে।

ব্রক্ষ্মপুত্রের গ্রাজুয়েশন শেষ হবে আজ। তিতাস পুত্রের অনুরোধে ক্রিপ্টন গ্রহে তার সফর স্থগিত করেছে। তার বদলে ক্রিপ্টনে যাচ্ছে ভ্যালেনতিনা। ভ্যালেতিনার মেয়ে মাকারোভারও আজ গ্রাজুয়েশন শেষ হবে।

- তো,মাকারোভা তুমি যে বিষয়টি বেছে নিয়েছো তা খুব চমকপ্রদ। বস্তুর ভরের ঘনত্বকে ব্যবহার করে মৃত নক্ষত্রের ফিউশন এবিলিটি ফিরিয়ে আনা। নিঃসন্দেহে খুব ভাল কাজ। মহাবিশ্বে আমাদের টিকে থাকার ক্ষমতা বাড়িয়ে দিলো।
- ধন্যবাদ তিতাস।
- তুমি কি জানো আমাদের উৎস স্থলে সূর্য নামক এক নক্ষত্র ছিল।এখন মৃত।সূর্যের জ্বালানীর উৎস শেষ।
- জানি।
ওদের গল্পের মাঝপথে এসে ব্রক্ষ্মপুত্র যোগ দেয়।
- কি নিয়ে গল্প করছো তোমরা?
- মাকারোভার কাজ নিয়ে। তিতাস বলে।
- তিতাস,পুত্রের বিষয়টি আরও চমকপ্রদ। ও এক সাথে দুটি বিষয় নিয়ে কাজ করেছে। কার্বন- ডাই- অক্সাইড হতে অক্সিজেন নিয়ে সেই অক্সিজেন হতে পৃথিবীর বায়ুমন্ডল তৈরি। আর থার্মো ডাইনামিক্সকে ব্যবহার করে আলো ও তাপ উৎপাদন। আমরা আশা করছি আগামী সময়গুলিতে অন্যগ্রহ হতে খাদ্য আনার জন্যে আমাদের যে পরিমাণ এনার্জি খরচ হয় তা সঞ্চয় করা।

সমাবর্তন শেষে ব্রক্ষ্মপুত্রসহ কয়েকজনকে ছত্রপতি গ্রহে পাঠানো হয় বেসিক ট্রেনিং এর জন্যে। পুরো বিশ বছর চলে বেসিক ট্রেনিং।

- বড্ড এক ঘেঁয়ে লাগছে আমার এই ট্রেনিং। কোন উপায় নেই ট্রেনিং শর্ট করার। এডওয়ার্ড কিছু একটা করো।
তিতাসের কথায় এডওয়ার্ড চমকে উঠে। ব্রক্ষ্মপুত্র এসব কি বলছে? ওদের প্রধান কাজ হলো নিয়ম পালন করা।
বন্ধুদের দিকে তাকিয়ে পুত্র হতাশ হয়। ও জানে ওই একমাত্র ব্যতিক্রম এদের সবার মধ্যে। ওর বাবা বিষয়টি টের পায় পুত্রের বয়স যখন দশ। পুত্রকে নিয়ে তিতাস এন্ড্রোমিডার কাছে গিয়েছিল।জেনেটিক স্ট্রাকচার এনালাইসিস করে এন্ড্রোমিডা জানায় পুত্রের ডিএনএ স্ট্রাকচারে হাইড্রোজেন বন্ডিং এবনরমাল। আর বিটা-N-গ্লাইকোসাইডিক লিংকেজ ব্যতিক্রমি।

ওদের আড্ডায় যোগ দেয় মাকারোভা আর সুহার্তো।
- সুহার্তো, তোমার গবেষণা কোন বিষয়ের উপর ছিল?
- কোয়ান্টাম ফিজিক্সের সাথে জেনেটিক্সের এলাইনমেন্ট। পুত্রের কথার উত্তরে সুহার্তো বলে।
- মাকারোভা আগামীকাল সবার ছুটি,সবাই আমার ওখানে চলে এসো।পুরানো ইতিহাস নিয়ে সময় কাটানো যাবে।
- পুরানো ইতিহাস?
- হ্যাঁ,পুরানো ইতিহাস মাকারোভা। আমি প্রায়ই ইনফরমেশন হাইওয়েতে যাই। সেখানে কিছু আজব জিনিস পেয়েছি।তোমরা কাল এসো, দেখবে।
পরদিন সুহার্তো,মাকারোভা আর এডওয়ার্ড পুত্রের আবাস্থলে চলে আসে। ওরা সবাই মিলে ইনফরমেশন হাইওয়েতে ঢুকে পরে।
- দেখো,পৃথিবী নামক ওই গ্রহে আমাদের পূর্বপুরুষগণ ছিলেন।ওখানে মানুষের জন্ম কি অদ্ভুত উপায়ে হতো।পুরুষটি মেয়ের সাথে কি যেন করতো আর কিছুদিন পর নারীটির শরীরের ভেতর ভ্রুণ বেড়ে উঠতো।কি আশ্চর্য তাই না? পুত্র বলে সবাইকে।
- এটা কিভাবে সম্ভব? মাকারোভা প্রশ্ন করে।
- জানিনা।পুত্র মাকারোভাকে বলে।
- তবে আমি কিছু শব্দ পেয়েছি যার কোন অর্থ উদ্ধার করতে পারছি না।যেমন- প্রেম,দেশপ্রেম,হাসি,ঈশ্বর।তোমরা কেউ জানো? পুত্র প্রশ্ন করে সবাইকে। সবাই মাথা নারে।

এরপর ব্রক্ষ্মপুত্র প্রেম কি জানার জন্যে লগ ইন করে।কিন্তু বার বার লগ ইন ফেইল হতে থাকে। শেষে ইনফরমেশন হাইওয়ের পৃথিবী সাইট হ্যাক করে লগ ইন করে।ওদের ঘরের মধ্যে সবুজ বনানীর ছবি ফুটে উঠতে থাকে।ঠিক এই সময় ডেনজার সাইন জ্বলে উঠে ইনফরমেশন হাইওয়েতে আর কম্পিউটার বলতে থাকে- ব্রক্ষ্মপুত্র, আপনাকে সাময়িকভাবে সাসপেন্ড করা হয়েছে ইনফরমেশন হাইওয়ে হতে। আগামীকাল আপনাকে ছত্রপতি গ্রহে সুপ্রিম কাউন্সিলরদের সামনে উপস্থিত হতে হবে।


( চলবে)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.