নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মধুবালা ছানার ন্যাকড়া ধুতে ব্যাস্ত ঘাটে।তার দুই মেয়ে চানু আর ভানু নদীতে খুব দাপাদাপি করছে।মধুবালা ওদের বেশীক্ষণ নদীতে স্নান করতে নিষেধ করে।বলে, বর্ষার নতুন জল,জ্বর আসবে।কে শোনে কার কথা।দু’বোন’ঝাঁপাঝঁপি করতেই থাকে।মধুবালা কাজ শেষে চলে যেতে যেতে বলে-স্নান শেষ করে তোড়া তাড়াতাড়ি বাড়ি আয়।আজ হাটবার ,তোদের বাবা হাট করতে যাবে।মা চলে যাবার পর ভানু লক্ষ্য করে ঘাটে মাছ কিলবিল করছে।
-দিদি মাছ ধরবি?ভানু চানুকে বলে।
-মা মারবে।চানু বলে।
-আরে চলনা দিদি,মাছ ধরি চল।কত মাছ।
দুইবোন কাপড় দিয়ে মাছ ধরতে শুরু করে।সন্তোষ ঘাটে এসে দেখে তার দুইবোন মাছ ধরছে।
-চানু স্নান শেষ হয়নি?আর কতক্ষণ?মা যেতে বললো।সন্তোষ তার ছোট দুইবোনকে ডাকতে এসেছে।
সন্তোষ খেয়াল করে ডুব পেরে পেরে ভানুর দুইচোখ লাল হয়ে গিয়েছে।ওর এই বোনটি খুব ডানপিটে।ভয়ডর একদম কম।দেশে গণ্ডগোল শুরু হয়েছে।স্কুল বন্ধ।সারাদিন পাড়ার ভেতর টো টো করে ঘুরে বেড়ায়।
-দাদা,কতগুলো পুঁটি মাছ ধরেছি।ভানু সন্তোষকে বলে।
সন্তোষ তাকিয়ে দেখে মাছ ধরে দুইবোন হাড়ি ভরে ফেলেছে।
মধুবালা মাছ দেখে তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠে।কঞ্চি নিয়ে ত্যাড়ে আসে ।ভানু দৌড়ে বাবার পিছনে গিয়ে লুকায়।
-তোদের বাবা এখন হাটে যাবে আর তোড়া আমার কাজ বাড়িয়ে দিচ্ছিস।ভানু রাগে গজ গজ করতে করতে মাছগুলো নিয়ে বাঁশ ঝাড়ের মধ্যে ফেলে দিয়ে আসে।
-ওতোগুলো মাছ ফেলে দিয়ে আসলো?দিদাকে প্রশ্ন করে সুস্মিতা।
-হ্যাঁ। ভানু উত্তর করে।
-তোমাদের সময় নদীতে অনেক মাছ পাওয়া যেতো বুঝি।
অল্প আলোয় নাতনীর মুখটা দেখে নেয় ভানু।চুলে বিলি কেটে দেয়।
-আমাদের সময় নদীতে অনেক মাছ পাওয়া যেতো।তোড়া আর কোথ্থেকে এগুলি জানবি।ওই নদীই কত শুকিয়ে গিয়েছে।এখন নাকি জাল ফেললেও বেশী মাছ উঠেনা।
-দিদা,এখন নদীতে বেশী মাছ পাওয়া যায়না কেন?
-জানিনা।
-তারপর বলো বুড়ো দিদা কি করলো?
প্রতি রাতে নাতনীকে গল্প শুনিয়ে ঘুম পাড়াতে হয় ভানুর।
-তারপর আরকি।বাবা দোকান সাজিয়ে নিল মোষের গাড়িতে, হাট করতে যাবে বলে।আমরা ভাত খেয়ে উপরে গেলাম শুতে।
-তোমরা দুপুরে ঘুমাতে?
-না,উপরে গিয়ে লুডু খেলতাম।
গল্প করতে করতে ভানু খেয়াল করে নাতনী ঘুমিয়ে পড়েছে।চাদরটা টেনে দেয়।
©somewhere in net ltd.