নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লিখতে ভালো লাগে তাই লিখি।

সুদীপ কুমার

মন যা চায়।

সুদীপ কুমার › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্বকীয়া অথবা পরকীয়া ( তৃতীয় পর্ব)

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৬ সকাল ১১:৩৭


প্রেম কি আচমকা আসে ?অনাহূত?কিম্বা সুপরিকল্পিত?প্রেমে পড়ার কি কোন দিন ক্ষণ আছে?কল্লোল রেনুর প্রেমে পড়তে চেয়েছিল।কিন্তু রেনু?-সে কিনা পড়লো মোস্তফার প্রেমে।মোস্তফা হবু ডাক্তার।আচ্ছা প্রেমে কি হিসাব করে পড়তে হয়।কল্লোল বারবার রেনুর চিঠি তাকিয়ে দেখছিল-”আমার খাকি প্যান্টের ফর্সা ছেলেটি পছন্দ”।মোস্তফা গতকাল হতে খাকি রঙের প্যান্ট পড়ে আছে।
-দোস্ত তোদের প্রেম সফল হোক।কল্লোল খুব নিচু স্বরে মোস্তফাকে বলে।
-কি যাতা বলছিস। মোস্তফা তারস্বরে বলে।
-না।যাতা বলছিনা।রেনু তোকেই পছন্দ করেছে।চিঠিতেও তাই লিখেছে।

পরদিন মোস্তফা একাই রেনুর কাছে যায়।রেনুকে বোঝানোর চেষ্টা করে কল্লোলের মনের অবস্থা।রেনু শুধু একটি কথাই বলে-আমার আপনাকেই পছন্দ।

কয়েকদিন ধরে মোস্তফা খুব টেনশনে আছে।সামনে পরীক্ষা।এদিকে প্যাথলজি ক্লাসের পারসেন্টেজ কম।খলিল স্যার ক্লাসে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করেছেন।তার মধ্যে মোস্তফার নামও আছে।মোস্তফার ভয় অন্য জায়গায়।গতমাসে ক্লাস চলাকালিন ওকে বগুড়ার সাতমাথায় খলিল স্যার দেখেছেন।এক রিক্সায় রেনু আর ও ছিল ।সাতমাথায় সপ্তপদী মার্কেটের সামনে স্যার দাঁড়িয়ে ছিলেন।হঠাৎ মোস্তফার চোখ পড়ে খলিল স্যারের উপর।দেখে খলিল স্যার ফ্যালফ্যাল করে ওদের দিকে চেয়ে আছে।মোস্তফা জোড় প্রস্তুতি নিয়েছে প্যাথলজি পরীক্ষার জন্য।তবুও ভরসা পাচ্ছেনা।পরীক্ষার দিন- স্লাইড আইডেন্টিফিকেশন।মাইক্রোস্কোপ অনেকক্ষন ধরে এডজাস্ট করে তবুও স্লাইডে কিছুই পায়না। দর দর করে ঘামছে মোস্তফা।সময় প্রায় শেষ।কি করবে?শেষে খাতায় লিখে ফেলে- nothing found.বেল বাজলে খলিল স্যার আসেন।প্রশ্ন করেন কি পেয়েছে মোস্তফা।মোস্তফা খাতা এগিয়ে দেয়।
-Nothing found? ক্লাস করতে?ক্লাস ফাঁকি দিয়ে এদিক-ওদিক প্রেম করে বেড়াতে। বলেই খলিল স্যার মাইক্রোস্কোপে চোখ রাখেন। এক মিনিট,দু’ মিনিট।মোস্তফার মনে হতে থাকে অনন্তকাল ধরে দাঁড়িয়ে আছে সে।খলিল স্যার মাথা তুলেন।পিয়নকে হুকুমদেন আট নম্বর স্লাইড আনতে। স্লাইড আসলে স্যার মোস্তফাকে আইডেন্টিফাই করতে বলেন।মোস্তফা স্লাইড দেখে।
-কি দেখলে?
-Mycobacterium tuberculosis.
-সাবাস।আন্ডার গ্রাজুয়েট লেভেলে ব্লাঙ্ক স্লাইড দেওয়া হয়না।তুমি পেড়েছো।অনেকে আন্দাজে কিছু একটা লিখে দিত।অথবা পিয়ন যা বলতো তাই লিখতো।
খলিল স্যার চলে যান।মোস্তফা পিয়নকে টাকা দিয়েছিল।পিয়ন টিউবারক্লুসিসের কথাও বলেছিল।কিন্তু নিজে স্লাইডে যা দেখেছিল তাই লিখেছে।পরীক্ষায় ভালভাবেই পাস করে মোস্তফা।

দুপুরে পিয়ন এসে চিঠি দিয়ে যায়।চিঠি পড়ে মোস্তফার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে।রেনু লিখেছে ও প্রেগন্যান্ট।এখন যদি মোস্তফা বিয়ে না করে তবে ওর গলায় দড়ি দেওয়া ছাড়া উপায় নেই।আর ও বাবা-মাকে ওর এই অবস্থার কথা জানাতেও পারবেনা।মোস্তফা ওর ছোট দুলা ভাইকে সবকিছু জানায় টেলিফোনে।দুলাভাই বলে সে বগুড়ায় আসবে।আর মোস্তফাও যেন চলে আসে রাজশাহী হতে।

রেনু কেঁদে-কেটে চোখ ফুলিয়ে ফেলেছে।ও শুধু একটা কথাই বারবার বলছে-আত্নহত্যা করবে।পরিশেষে সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেয়,ওদের কোর্ট ম্যারেজ হবে।দু’পক্ষের অভিভাবককে এখন কিছু জানানো হবেনা।রেনু আর মোস্তফা কোর্ট ম্যারেজ করে বিয়ে করে।বিয়ের সাতদিন পর রেনুর এবরশন করানো হয়।মোস্তফা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে রেনুর আরও একবার এবরশন করানো হয়।পরবর্তি জীবনে এই ঘটনাগুলির জন্য রেনু চিরকাল মোস্তফাকে দোষারোপ করেছে।আর মোস্তফা মাথা নীচু করে থেকেছে।



অসীম আর ডাক্তার বারী কচির দোকানে বসে আছে।ডাক্তার বারী মেডিসিনের একজন নামকরা ডাক্তার। দু’জনে ট্যাবে পর্ণ দেখছে।ব্যাংকার সালাম কিছুক্ষণ পর আসেন।
-ডাক্তার আসেনি? সালাম সাহেব জানতে চায় অসীমের কাছে।
-না আজ দেরী হবে।অপারেশনের চাপ বেশী।অসীম উত্তর করে।এই আড্ডার প্রাণ হলো ডাক্তার মোস্তফা।উনি না এলে আড্ডা জমেনা।একে একে রহিম সাহেব,সালেহীন সবাই আসে।
-জারের প্রিন্সিপ্যাল এখনও আসেনি?রহিম সাহেব সালামকে প্রশ্ন করে।
-আচ্ছা আপনারা ওই প্রিন্সিপ্যালকে জারে মামু বলেন কেন?অসীম রহিম সাহেবকে প্রশ্ন করে।
সবাই হো হো করে হেসে উঠে।সালাম সাহেব হাসতে হাসতে বলেন-আপনি নতুন এখানে তাই জানেননা।
ডাক্তার বারী হাত দিয়ে বিশ্রী ঈঙ্গিত করে বলেন
-জারে মামু ছাত্রী চুদার যম।
অসীম চুপ হয়ে যায়।ভাবে চারপাশের মানুষগুলোর দ্বৈত জীবনের কথা।এই মানুষগুলি স্ব স্ব পেশায় সুপ্রতিষ্ঠিত আর আড়ালে? অসীম আর রহিম ছাড়া সকলে তাস খেলতে চলে যায়।
-অসীম,ডাক্তার চেম্বার থেকে কখন বেরিয়েছে? রহিম অসীমকে প্রশ্ন করে।
-সাতটায়।
-তাহলে আজ শট খেলতে গিয়েছে।
কিছুক্ষণ পর ডাক্তার মোস্তফা ঘরে ঢুকেন।তার ফর্সা গাল লালচে হয়ে আছে। উনি কোন কথা না বলে ভেতরের ঘরে চলে যান।
-পুরাই নাপাক।রহিম সাহেব খুব মৃদ স্বরে বলেন।অসীম চুপচাপ বসে থাকে।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৬ সকাল ১১:৪৭

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ভালো লেখতে থাকুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.