নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লিখতে ভালো লাগে তাই লিখি।

সুদীপ কুমার

মন যা চায়।

সুদীপ কুমার › বিস্তারিত পোস্টঃ

খোলা জানালায় (পর্ব-৪)

০২ রা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:৪৬


প্রতি রাতে সানি আর ধ্রুব কথা চালিয়ে যায়।
ধ্রুব,যে কিনা ছাব্বিশ বসন্ত পার করেও কারও প্রেমে
পরেনি, সে কিনা আজ শয়নে স্বপনে সানির কথা ভাবে।
তার কানে সব
সময় সানির হাসির আওয়াজ ভেসে
আসে।
কথার ফাঁকে ফাঁকে ধ্রুব জানতে পারে,সানিরা মোট
এগারো ভাইবোন।পাঁচ ভাই আর ছয় বোন। বড় ভাই
মেজর,মেজো জন বিরাট ব্যবসায়ী।দুইজন ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে।আর সানির ছোট এক ভাই আছে।
সানি সবার ছোটবোন।ধনীর দুলালী,আদুরে,একরোখা।
বন্ধুদের অনুরোধে মাঝে মাঝে লাউড স্পীকার দিয়ে
সানির কথা শোনাতে হয় রমিজদের।
রমিজ একদিন বলে বসে
-দেখ ধ্রুব এমনি এমনি কেউ কাউরে দিনের পর দিন
রাতে ফোন করে গল্প করেনা।আবার
তাও রাত দুপুরে।দেখ তোরা দু'জন দু'জনকে
পছন্দ করিস এবং ভালও বাসিস।তবে এটা
আমার একান্ত ব্যাক্তিগত মতামত।
ধ্রুব চুপ করে থাকে।
রমিজ বলে যায়-
দেখ ও যখন বাড়ির সবকিছু জানিয়েছে,তখন একদিন
গিয়ে সবকিছু দেখে আসলেই হয়। দীপু আর আসাদ
একমত হয়।

সানির দেওয়া ঠিকানা অনুসারে ওরা বেড়ায় যায়।
সানিদের বাড়ি দেখে ওরা হতভম্ব হয়ে যায়।বুঝতে
পারে সানিরা প্রভাবশালী এবং কোটিপতি। খোঁজ
খবর করে ওরা জেনে যায়,এ বাড়ির ছোট মেয়ে
সিরাজগন্জে থাকে। ফিরে এসে রমিজ সটান বিছানায়
শুয়ে পড়ে।
-শালা তোদের কপাল। একজন প্রেম করছে
কোটিপতির মেয়ের সাথে।অপরজন বাড়ির মালকিনের
সাথে।
রমিজের কথা শুনে দীপু আর আসাদ হাসতে হাসতে শুয়ে
পড়ে।ধ্রুব হেসে বেলকনিতে চলে যায়।

একদিন দীপু বাড়ির সামনের দোকানে সিগারেট
কিনছিলো।এ সময় আফজাল আসে সেখানে।
-ভাল আছেন আফজাল ভাই?
-ভাল।তুমি ভাল আছো?
-জ্বী,আছি।
দীপু সিগারেট নিয়ে চলে যায়। আফজাল খেয়াল
করে,শিল্পী জানালায় দাঁড়িয়ে,চোখাচোখি হতেই
জানালা হতে সরে পরে।
-জব্বার,শিল্পী কী প্রায়ই এই জানালায় দাঁড়িয়ে থাকে।
আফজালের প্রশ্ন শুনে দোকানী ইতস্তত করে।
আফজাল ধমকে উঠে।
-না ভাই,যেই মাত্র দীপু ভাই আসবে তখন।
পাড়ায় কানাঘুঁষা চলছে এ নিয়ে।
আফজালের ফর্সামুখ রাগে লাল হয়ে যায়।

ধ্রুব ঠিক করে,আজ সানিকে বলবে-যদি দেখা না করতে
চায়,তবে কথা বলার প্রয়োজন নাই।ঠিক রাত
বারোটায় সানি ফোন দেয়।
-আমার আর তর সয়না,কখন রাত বারোটা বাজবে।আর
কখন তোমার কন্ঠ শুনবো।
-তুমি আমায় ভালবাস?
-বাসি।
-সত্যি?
-ভালবাসি,ভালবাসি,ভালবাসি।
-তবে দেখা করতে চাওনা কেন?
সানি চুপ করে থাকে।সানি বলে
-আমি জানি তুমি সিরাজন্জ্ঞেই আছো।তবু
দেখা করতে চাওনা।এ কেমন ভালবাসা তোমার?
দেখো যদি দেখা না করো তাহলে
ফোনে আর কথা বলোনা।
সানি চুপ করে থাকে।কিছুক্ষণ পর কান্নার আওয়াজ
ভেসে আসে।ধ্রুব ভেবাচেকা খেয়ে যায়।

রমিজ ভাই,আপনাদের সবাইকে আগামীকাল দুপুরে
আমাদের বাড়িতে দাওয়াত- তিথি বলে।
-কোন অনুষ্ঠান আছে তোমাদের বাসায়?
রমিজের প্রশ্ন শুনে তিথি হেসে উঠে দৌড় দেয়।তিথি
শিল্পীর ছোট বোন।

জুম্মার নামাজ শেষে আফজাল ধ্রুবদের ডাকতে আসে।
আফজালের সাথে ওরা দ্বিতীয় তলায় নেমে আসে।বসার
ঘরে ঢুকে ধ্রুব অবাক হয়।মহল্লার কয়েকজন
মুরব্বী,মেম্বার আর ষন্ডা প্রকৃতির কয়েকজন বসে
আছে।ওদের বসতে বলে সবাই।কিছুক্ষণ পর ইউনুস
সাহেবও ঘরে আসেন। প্রথমে কথা বলে আফজাল।
-দেখো রমিজ, তোমরা নিশ্চয় জানো এই মহল্লায়
আব্বার একটা সন্মান আছে?
ধ্রুব মাথা নাড়ায়।
-আপনারা এও চাইবেন না আপনাদের জন্য আমাদের
সন্মানহানি ঘটুক।
আসাদ প্রশ্ন করে- এমন কথা উঠছে কেন?
পাড়ার এক মুরব্বী বলেন,
-দেখুন বাবারা বাড়ির মেয়েদের সন্মান সবার আগে।
মহল্লায় দীপু বাবাজি আর শিল্পী মারে নিয়ে নানা
কুকথা রটেছে।আমরা এটা বরদাস্ত করতে পারিনা।
দীপু নার্ভাস কন্ঠে বলে,
-এ আপনারা কী বলছেন?আমি শিল্পীর সাথে কথা
পর্যন্ত বলিনা।
ষন্ডা প্রকৃতির একজন চেঁচিয়ে বলে- শিল্পী বোনের
যে সন্মানহানি ঘটেছে,তার হিসাব না দিয়ে আপনারা কেউ
এই বাড়ি হতে বেরুতে পারবেন না।
ধ্রুব বেশ বুঝতে পারে তারা এক জটিল ফাঁদে পড়েছে।
ফ্যাকাশে ভাবে রমিজের দিকে চায়।
০২/০৯/২০১৫

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.