নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এই ছবিটা আমার আঁকা
আজ বসন্তের প্রথম দিন । অথচ আজ তুমুল বাতাস। তুমুল বরফপাত মেঘলা আকাশ পুরাই শীতের আবহাওয়া। অথচ গত পনের দিন ছিল বসন্ত সময়ের চেয়েও বেশি উত্তাপ। বনভূমির ভিতরে ঘাসের ফুল ফুটেছিল। টিউলিপ, নার্সিসাস মাথা তুলেছে,ঝরাপাতার ফাঁকে। তুমুল বৃষ্টি ছিল বেশ কয়েকদিন বসন্তের আগমনের আগের মতন।
পুরো সপ্তাহ জুড়ে বরফপাত বাতাস আর মাইনাসের ঘরে থাকবে তাপমাত্রা তারপর বৃষ্টি মাখা দিন কাটিয়ে বসন্তের দেখা পাওয়া যাবে ।এপ্রিল শাওয়ার ব্রিং মে ফ্লাওয়ার। সত্যিকার অর্থে ফুলে ফুলে ভরে উঠা বসন্ত সময়।
হোক তুমুল বাতাস ঢেকে যাক বরফে মাঠ আবার তবু বসন্তের গান গাই । বসন্তের প্রথম দিন বলে কথা।
পুরুষ পাখিগুলো অনেকদিন হয় এসে গেছে । তাদের ঘর বানানো চলেছে খরকুটো কুড়িয়ে। গাছের ডালে, ঘরের চালের ফাঁকে নানারকম পাখির বাসায় ভরে উঠছে। তাদের সঙ্গীরা আসবে আর কদিন পরে। তখন তাদের মুগ্ধ করার জন্য ডাকবে সুরে সুরে, এসো এসো আমার ঘরে, বানিয়ে রেখেছি তোমাকে মুগ্ধ করার জন্য। এত্ত যত্নে বানান সে ঘর যে পছন্দ করবে ঢুকে যাবে সেই ঘরে । তারপর তাদের সংসার হবে । আনন্দে গান গেয়ে হুটটোপুটি করতে করতে ডিম দেয়ার সময় আসবে। সাজিয়ে নিবে ঘরটিকে আরো সুন্দর করে এ সময়ে। নীড়ের ভিতরে ডিম দিবে। বর পাখিটি খাওয়ার এনে খাওয়াবে বউ পাখিকে। নয়তো পাহারায় থাকবে ডিমগুলোর পাশে যেন কেউ এসে নষ্ট না করে দেয়। কিছুদিন পর বাচ্চা হবে। বাচ্চাদের বড় করতে করতে আবার তাদের উড়ে যাওয়ার সময় হয়ে যাবে,উষ্ণ ভূমি খুঁজে।
পাখিদের কোন নেভিগেট জিপিএস দরকার হয় না। গুগোল ম্যাপ দেখতে হয় না। তারা নিজেদের ঐ ছোট্ট মাথার এত্তটুকুন মস্তিস্ক দিয়েই জানে কখন আবহাওয়া কেমন হবে কোথায়। কখন কোন ভূমিতে ঘর বাঁধতে হবে। আমি শুধু দেখি এই সময়ে পাখিদের ফিরে আসা। তাদের কলোতান আনন্দ ডানা ঝাপটানো। কখনও তারস্বরে চিৎকারও করে তারা যখন খুব জোড়ে বাতাস বয়। বা কেউ ছিনিয়ে নিতে চায় তাদের এত যত্নের ডিম বা ছানাদের। অথবা যদি ছানারা নীড় থেকে মাটিতে পরে আর আসতে পারে না উড়ে ঘরে তারস্বরে ডাকতে থাকে এদিকে আসো এই এদিকে মা বাবা। পাখিরাও বিপদ বোঝে, বোঝে খুশি হওয়া।
বাচ্চা বানানোর হাসপাতাল বুঝি এই ভূমি। নির্ভয়ে তারা এখানে এসে কয়েক মাস বংশ বৃদ্ধি করে। আমি তাদের জন্য পানি দেই। খাবার দেই। আর আমার ফলানো ফসল, ফুল থেকে তারাও খুঁজে নেয় নিজেদের পছন্দের খাবার। আমার ফুল ফসলও বংশ বৃদ্ধি করে তাদের ছোঁয়ায়। তারা যে শুধু উপকার করে তা নয় অনেক সময় নষ্টও করে দেয় অনেক কিছু্। কি আর করা মেনে নেই অবুঝ প্রাণী ভেবে।
যেমন কাটবেড়ালি, রেকুন বা পাখি অনেক সময় ঘরের এ্যাটিকে ঢুকে পরে। বাসা বানিয়ে বাচ্চা করার জন্য। কেটে ফেলে বৈদ্যুতিক তারও। তখন আমাকে থাকতে হয় অন্ধকারে। যতই ফাঁকফোকর বন্ধ করি ওরা কি ভাবে যে দাঁতে কেটে ফেলে টিন, স্টিল পর্যন্ত দেখে অবাক হই। আমার ক্ষতি করে কিন্তু ওরা সে সব বুঝে না। ওরা থাকে নিজেদের বাচ্চা বানানোর চিন্তায়।
অনেক সময় ফুলের সব বিচি খেয়ে ফেলে।
এক মাঠ সূর্যমুখির বিচি সব পাখিরা খেয়ে ফেলেছিল। আমি খুব খুশি মনে তাদের আসা যাওয়া উপভোগ করতাম। কিন্তু বিচি যে ফুলে একটাও নাই টের ফেলাম তুলতে গিয়ে।
মাঠে মাঠে কৃষকরা এখন কীটনাশক ব্যাবহার করে। পাখি তাড়ানোর জন্য এমন বীজ ব্যাবহার করে যা থাকে এক ধরনের কোডিং করা তাই পাখিরা সেই বীজ খায় না। আবার ফসল হওয়ার পর পাখি সেখানে যায় না কৃত্রিম বলে। কৃষক খুশি মনে ফসল তোলে কোন ক্ষতি ছাড়া।
ওরা পছন্দ করে আমার অকৃত্রিম ওর্গানিক ফসল। সবটাই যখন খেয়ে ফেলে পাখির দল তখন মন খারাপ হয় কিন্তু সাথে ভাবি পাখির খাবারও কত কমে গেছে মানুষের কারণে তাই ওর্গানিক ফসল পেলে সবটাই তারা সাবার করে ফেলে।
আজকাল প্রায় খবর দেখি পাখিরা সার বেঁধে মরে পরে আছে। এই মরে যাওয়ার করাণ পাখিরা কোন ধরণের বিষ মেশানো খাবার খেয়েছিল। আমাদের ভূমিতে আমরা বিষ মিশাই ফসল রক্ষা করার জন্য। নিজেদের দেহেও তো সেই বিষ খাবারের সাথে কিছু না কিছু যায়।
যার প্রভাবে বিকৃত হয় দেহ অর্গান। এদেশে যদিও কতটা কীটনাশক ব্যবহার করা যাবে তার একটা নিয়ম আছে। কিন্তু এখন শুনেছি আমাদের দেশে কীটনাশক ব্যবহার হচ্ছে যার নিয়ম কতটা মানা হয় কেউ জানে না। এখানে খুব বেশি পাওয়া যায় এবং সস্তায়
বিশেষ করে চায়নার ফল, সবজীগুলো বিশাল আকারের । দেখলেই আমার ভয় হয়। এদের অনেকদিন ফ্রিজে না রেখে বাইরে রেখে দিলেও পচে গলে নষ্ট হয় না।
শরীরের ভিতর এই কীটনাশক দিয়ে উৎপাদিত সব ফল, সবজী কতটা পরিবর্তন আনে তা দেখতে পাই বেশ কয়েক বছর পরে। যখন নিয়মিত ডাক্তারের কাছে যেতে হয়, নানা রকম নতুন উদ্ভুদ শারীরিক সমস্যার কারণে।
যা নতুন আসে বাজারে খুব ব্যবহার হয় তার অপকারিতা জানা যায় বেশ কবছর পর যখন এর বিরুপ প্রভাব পরে মানুষের শরীরে এবং প্রকৃতির পরিবেশে। প্রাণী, পোকা কীট পতঙ্গ এবং এবং মাঠ জমিন নদীর উপর। নতুন করে বন্ধ হওয়ার আগে অনেক ক্ষতি হয়ে যায়।
আমাদের দেশে শীতকালের সবজি গুলো গরমকালে পেতাম না। গরমকালের সবজী, ফল শীতকালে পেতাম না। বিদেশে এসে সব ধরনের সবজী ফল সব সময় পাই। কিন্তু স্বাদ, গন্ধ এবং আকৃতি প্রকৃতি কোন মিল নাই। স্বাদ বলতে কিছু নেই। যদিও আছে সব রকমের খাবার। তাই আমি বসন্ত আগমণের অপেক্ষায় থাকি যখন নিজে কিছু ফল সবজী ফলিয়ে খেতে পারি, অকৃত্তিম জিনিস অকৃত্তিম স্বাদে এবং গন্ধে, অকৃত্তিম ভালোবাসায়। সাথে যোগ হয় নিজের ফলানো ফসল পাওয়ার আনন্দ।
প্রাকৃতিক নিয়মগুলো আমরা নিজেরা নষ্ট করে ফেলছি নানারকম উদ্বভাবনির মাধ্যমে। আমরা মেরে ফেলি প্রকৃতির প্রয়োজনীয় পোকা মাকড়, পাখি, প্রাণী বিরক্তিকর ভেবে।
কিন্তু তারাও যে নিরবে, নিভৃতে আমাদের অনেক উপকার করে যাচ্ছে তার খবর আমরা রাখি না।
এ বছর ঘর ভর্তি হয়ে আছে কিছু লেডিবাগ নামাক পোকা দিয়ে। যেহেতু আমি বনে জঙ্গলে থাকি। শীতকাল শুরু হলে ঘরে কিছু তাপ রাখতে হয় নিজেদের প্রয়োজনে। পোকামাকড় সেই তাপে বিভ্রান্ত হয়ে নিজেদের থাকার আবাস গড়ে নেয় আমার ঘরে। তারা যে কিভাবে ঘরের ভিতরে ঢুকার পথ পায়! আমি খুঁজে পাই না কিন্তু তারা ঠিক খুঁজে পায় পথ, আপ্যায়ন ছা্ড়াই আমার ঘরে ঢুকে পরার। যেদিন উষ্ণতা বাড়ে বাইরে সেদিন দেখি তারা চিপায় লুকিয়ে থাকা অবস্থা থেকে বাইরে বেরিয়ে আসে।
লাইন দিয়ে হাঁটে জানালায়। জানালায় আসে আসলে ওরা বেরিয়ে যেতে চায় ঘর থেকে বাইরে। কাঁচ জিনিসটা ওরা বুঝতে পারে না। পাখিদেরও দেখি জানালায় এসে বাড়ি খায়, প্রায় সময় উড়তে উড়তে। কাঁচের আবরণ ওরা দেখতে পায় না।
অনেকে বলেন জানালায় এক দুটো ছবি স্টিকার লাগিয়ে রাখতে।
পাখিরা যাতে কাঁচের সাথে ধাক্কা খেয়ে মারা না যায় সেজন্য সতর্কতা। লেডিবাগের এই দল বেঁধে ঘরে ভিতর হাঁটা চলা দেখে খুব বাজে লাগছে কিন্তু এদের নিয়ে কি করব এখনকার টিচার ইউটিউবে দেখলাম কেউ মেরে ফেলে না এদের। ভ্যাকুম দিয়ে ক্লিন করে বাইরে ছেড়ে দিচ্ছে তাদের।
এরা প্রায় পাঁচশ প্রজাতির ছোট পোকা খায় যা আমাদের ফসলের জন্য ক্ষতিকর।
ঘরে থাকা এরা হয়তো শীতের প্রয়োজনে ঘরে ঢুকেছিল নিজেদের বাঁচাতে উত্তাপ পেতে কিন্তু ঘরে খাবার না পেয়ে অনেকেই মরে যাচ্ছে হাঁটতে হাঁটতে।
আমি যাদের ধরতে পারছি ছেড়ে দিচ্ছি বাইরে ।
লালটুকটুকে হয়ে যায় এই গাছের ডালকাণ্ড সব শীতের শেষে। মাঠ ভরা এমন লাল টুকটুকে বউ দেখতে বেশ ভালোলাগে।
প্রকৃতির সাথে মিলে মিশে এই সময়টা বেশ কাটে পাখির গানে তাদের খেলা দেখে, প্রাণীদের শীত ঘুম থেকে জেগে উঠে তাদের ব্যস্ত সময় দেখে।
এমন ফুলে ফুলে গাছ ভরে উঠা প্রজাপতির আগমনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরো এক মাস।
সবগুলো ছবি আমার নিজস্ব
২১ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৮
রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার ভালোলাগা আমার মন ভালো করে দিল।
যতই ভালো দেখাক আবহাওয়া মে মাসের তিন সপ্তাহ না যাওয়া পর্যন্ত বাইরে গাছ লাগাবেন না।
ঘরে করা চারাগুলো এগিয়ে রাখবে কিছু সময়। কিন্তু আগেই বাইরে দিলে সব শেষ হয়ে যাবে।
২| ২০ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৭:৩৮
কামাল১৮ বলেছেন: নিজের হাতে আঁকা ছবি বেশ সুন্দর।নিজের মুখের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে।গত বছর প্রজাপতি কম এসেছিলো।তাই আমরা ঘরে ডিম থেকে দশটা বাচ্চা পুটিয়ে ছেড়ে দিয়েছি।পিঁপড়ার ডিম খেয়ে ফেলে।
২১ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৪২
রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ ছবিটাকে আলাদা ভাবে দেখার জন্য।
নিজের মুখের প্রতিচ্ছবি নয়। এটা একটা কোলাজ আর্ট অনেক কিছু সেটে দিয়েছি ফ্রেমে সাথে রাঙিয়েছি।
ভালোলাগল আপনি প্রজাপতি ঘরে ফোটান জেনে।
গত বছর উত্তাপ খুব ভালো ছিল না তাই ম্যাক্সিকো থেকে মোনার্ক উড়ে আসেনি তেমন। আর তাছাড়া ঐ যে লিখলাম কীটনাশক যা নাশ করে দিচ্ছে প্রজাপতি, মৌমাছিসহ অনেক কীট পতঙ্গ।
শুভেচ্ছা রইল
৩| ২০ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:২১
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
পাখিদের জীবনই ভালো।
মানুষ হইয়া বিরাট ধরা খাইছি!
আফসোস!
আপনি ছবি খুব ভালো আঁকেন।
২১ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৪৮
রোকসানা লেইস বলেছেন: অনেক মানুষ পাখি হতে চায়।
আমার কাছে মানুষ জীবনই ভালো লাগে।
মানুষ হয়ে উপভোগ করছি।
ধন্যবাদ চেষ্টা করি
শুভেচ্ছা রইল
৪| ২০ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯
এম ডি মুসা বলেছেন: আপনি কি চারুকলার স্টুডেন্ট?
২১ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৫০
রোকসানা লেইস বলেছেন: আমি এই বিশ্বের ছাত্র।
প্রকৃতির কাছে শিখি চারুকলা, বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে অনেক বেশি
৫| ২০ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:০৮
সাইফুলসাইফসাই বলেছেন: সুন্দর লাগলো!
২১ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৫১
রোকসানা লেইস বলেছেন: অনেক ভালোলাগল আমার জেনে।
শুভেচ্ছা জানবেন
৬| ২০ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৯
রাজীব নুর বলেছেন: আপনি পোষ্ট পড়ে একটা কথাই মনে পড়লো। লাইফ ইজ বিউটিফুল।
২১ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২
রোকসানা লেইস বলেছেন: লেখাটা মনে হচ্ছে হবে, আপনার পোষ্ট পড়ে
জীবন সুন্দর করে নিতে হয় প্রতি মূহুর্তে।
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৭:২৭
কামাল১৮ বলেছেন: পড়ে মন ভরে গেলো।জানা হলো অনেক কিছু।এবার বাগান করারা প্রস্তুতি আগেই নিয়েছি।ঘরে অনের চারা বেশ বড় হয়ে গেছে।আজকের তুষার ঝড় থেকে মন খারাপ হয়ে গেলো।মনে হয় আরো বেশকিছু দিন পরে বাগানে হাত দিতে হবে।