নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্রোতের অজানা টানে সমুদ্র বালিয়াড়ি বেয়ে বোহেমিয়ান- গৃহকোন, জীবন যাপন ফেলে চলে যায়। তুমি দুহাত বাড়িয়ে আলিঙ্গনে বাঁধতে চাও জোছনা গলে হারিয়ে যায় সুখ । আছড়ে পরা ঘূর্ণিজল মনে বাজায় অচেনা সবুজ দিগন্ত ..

রোকসানা লেইস

প্রকৃতি আমার হৃদয়

রোকসানা লেইস › বিস্তারিত পোস্টঃ

গালফ অফ মেক্সিকোর ধনী শহর নেপলস

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৪:২১


আমরা যাবো নেপলস। ইচ্ছে ছিল ওরল্যান্ড ঘুরে যাবো। কিন্তু ওরল্যান্ড যাওয়ার জন্য যতটা সময় লাগবে এবং দেখে শুনে যেতে হলে প্রায় পুরো দিনের দরকার।
ওরল্যান্ডর মেইন আকর্ষণ ডিজনিল্যান্ডে যাওয়া। আমাদের কারোরই ডিজনিল্যান্ড কখনো যাওয়া হয়নি কিন্তু যাওয়ার ইচ্ছাও নেই। ডিজনিল্যান্ডের চেয়ে অন্য বিষয়ের জন্যই আমাদের আগ্রহ। ডিজনিল্যান্ড আরো ছোট বাচ্চাদের নিয়ে কখনো শুধু সেখানে বেড়ানোর জন্যই যাবো, এমনটা ভেবে রাখলাম। আমাদেরও দেখা হবে বাচ্চাদের দেখানোর অসিলায়। যেমন শিশুপার্ক প্রথম হওয়ার পর বাচ্চাদের নিয়ে গিয়ে বড়রাই রাইডে চড়তেন। আমাদেরও ছোটবেলায় ডিজনিল্যান্ডে যাওয়ার কোন সুযোগ ছিল না তো তাই শিশুদের জন্য গিয়ে আমরাও দেখে নেব।
ডিজনিল্যান্ড বিষয়ে অন্য একটা প্রসঙ্গে বলি। ফ্লোরিডার ওরল্যান্ডয়, ডিজনিল্যান্ড যখন প্রতিষ্ঠিত হয় সেখানে আমাদের এক বাংলাদেশি ভদ্রলোকের জমি ছিল। ডিজনিল্যাণ্ড বানানোর সময় যত জমি কেনা হয় উনার জমিটিও তার মধ্যে পরে। এই জমির জন্য তিনি এত বিশাল অংকের টাকা পান যা কল্পনারও অতিত ছিল উনার।
কিছু মানুষের কষ্টের মূল্য ভাগ্য তাকে অভাবিত ভাবে দান করে। এই ভদ্রলোক দরিদ্র ঘরের সন্তান ছিলেন। জাহাজে খালাসী হয়ে পাড়ি দেন বিদেশে কিশোর বয়সে ভাগ্য অন্বেসনে।
এক সময় লন্ডনে ঢুকে পরেন বন্দর থেকে জাহাজ ছেড়ে এবং জনগণের ভীড়ে হারিয়ে যান। কষ্টের জীবন এই বিদেশে। বাঙালির হোটেলে কাজ করার সুযোগ পান ক্যাশ পয়সায়। ধীরে ধীরে জানেন নিয়ম কানুন, অভিভাসন নেয়ার আবেদন করেন এবং ইংল্যান্ডে থাকার অনুমতি পান। অভিবাসন হয়ে যায়। ব্রিটিস রাজত্বে থাকার অধিকার পান। পড়ালেখা করে নিজেকে আপগ্রেডও করেন।
হোটেল বয় থেকে এক সময় গড়ে তুলেন নিজের একটি রেস্টুরেন্ট। তাজমহল বিখ্যাত রেস্টুরেন্ট লন্ডন শহরে। অনেকেই হয় তো জানেন মালিক ভারতীয় কিন্তু এর মালিক বাংলাদেশের । সেই সময় বাংলাদেশের নাম কেউ তেমন জানত না পরিচিতির জন্য ইণ্ডিয়ান , ঐতিহাসিক নাম ব্যাবহার করা হতো বাংলাদেশী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের।
উনার এক ইহুদি বন্ধু হয় যিনি আমেরিকা থেকে প্রায় আসতেন লণ্ডন শহরে। খেতে আসতেন উনার রেস্টুরেন্টে। সেই বন্ধুটি এক সময় উনাকে ফ্লোরিডায় কিছু জমি কিনে রাখার কথা বলে নিজের সাথে। তিনি বিশ্বাস করে তুলে দেন কিছু পাউন্ড সেই বন্ধুর কাছে। বন্ধু উনার জন্য জমি কিনে ফ্লোরিডায়, নিজের সাথে। অল্প দামে কেনা সেই জমি বিক্রি হয় ডিজনিল্যান্ড তৈরির সময়। যেন একটা লটারি লেগে যায় উনার। প্রচুর অর্থ পান। যে দামে কিনেছিলেন তার অনেক বেশি দামে। এত্ত ডলার দিয়ে কি করবেন ভাবতে থাকেন। দেশে বিশাল চা বাগান কিনেন সিলেট, চট্টগ্রামে। চা বাগানের ছায়াদেয়ার গাছ গুলোকে ফলের গাছ লাগান।
উনার ভাবনায় সব সময় দেশের উন্নতি করার কথা খেলে। মানুষের সাহায্য করেন প্রচুর। নিজের বাড়ি ঘর বানানোর সাথে নিজের গ্রামে রাস্তা পুল স্কুল তৈরি করেন নিজের খরচে। উনার কথা হলো আমার মনে আছে ছোটবেলা কতদিন স্কুলে যেতে দেরি হয়ে যেত , নৌকা সময় মতন না পাওয়ার জন্য। নদী পেরিয়ে স্কুলে যেতে হতো।
হয়তো খেয়া কেবল ছেড়েছে, ডাকতাম ও মাঝি আমারে নিয়ে যাও। কিন্তু বাচ্চার ডাক শুনে মাঝি ফিরে আসত না। অপেক্ষা করতে হতো ওপাড়ে গিয়ে খেয়া নৌকা আবার আসার জন্য। ততক্ষণে স্কুল শুরু হয়ে গেছে। দেরী করে স্কুলে যাওয়ার জন্য স্কুলে গেলে পেতে হতো শিক্ষকের শাস্তি। বর্ষার সময় রাস্তা থাকত না। কি কষ্ট পানির উপর দিয়ে হেঁটে সাঁতরায়ে স্কুলে যেতে হতো। এই সব কষ্ট মনে করে বাচ্চারা যেন ভালোভাবে স্কুলে যেতে পারে সেজন্য বানিয়ে দিয়েছেন রাস্তা, ব্রীজ কোন সরকারী সাহায্যের অপেক্ষা না করে।
উনার মায়ের হাতে এক গুচ্ছো টাকা দিয়ে বলতেন তোমার ইচ্ছা মতন তুমি মানুষকে সাহায্য করো। উনার পকেটে থাকত হাজার টাকার নোট। পথ চলতে মানুষের হাতে তুলে দিতেন টাকা যাদের প্রয়োজন আছে।
খুব সাধারন ভাবে চলতেন জীবনে। উনার কোন কিছু দেখানোর ছিল না। সাজ পোষাক, ঘরবাড়ি অতি সাধারন চলা ফেরা।
কিন্তু মানুষ যেন ভালো থাকে তার জন্য চিন্তা। বানিয়েছেন হাসপাতাল মানুষের চিকিৎসার জন্য। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যাংক সব কিছুতেই উনি কিছুটা অংশ গ্রহণ করে আছেন দেশে। মুক্তিযুদ্ধের সময় এবং পরবর্তিতে স্বাধীন হওয়ার পর দেশের উন্নয়নের জন্য অর্থ প্রদান করেছিলেন।
স্বৈর শাসক এরশাদ বিরোধী কবিতা উৎসবের অনুষ্ঠান যখন কবিরা শুরু করেন। সেই অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে অর্থের প্রয়োজন। কবিরা তখন রাস্তায় নামেন অর্থ যোগাড় করতে। প্রতিষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানে ঘুরেন। যান বিত্তশালীদের কাছে কিছু অর্থের জন্য।
প্রথম বৎসরের পর অনেকগুলো বৎসর ঐ ভদ্রলোক একা অর্থ দিয়েছেন কবিতা উৎসব করার জন্য। কবিরা অনুষ্ঠানের জন্য পথে ঘুরে চাঁদা তুলবেন এটা কেমন কথা। বিদেশে দেখেছেন তিনি লেখকদের কি সম্মান দেয়া হয়।
অথচ তিনি কবি নন বলে তাকে সম্মান দিয়ে মঞ্চে বসানোর জন্য অনেক কবি উনার বিরুদ্ধ আচরণ শুরু করেন। যার অর্থে মঞ্চ তৈরি হয়েছে, কিছুটা সময় তাকে মঞ্চে উঠানোয় অনেকের সহ্য হয়নি। তেমনি সমাজের অনেক লোক উনাকে নানা ভাবে অপদস্থ, করতেও ছাড়েনি। ভদ্রলোকের আচার, ব্যবহার না জেনে তার অর্থ বিত্ত দিয়েই মানুষ তাকে খারাপ ভাবে বিচার করেছে। সুযোগ নিয়ে অনেকে সরে গেছে। তবু উনি মানুষের উপকার করা ছাড়েননি অদ্ভুত এক মানসিকতা উনার।
হয়তো কখনো অরল্যান্ড গেলে যখন হাঁটব তখন মনে হবে এটাই হয়তো উনার জমি ছিল।

এখন চারপাশে বিকেলের দারুণ একটা রঙ। রাস্তায় প্রচুর জ্যাম। সময়টা অফিস ছুটির। নেপলসে আমাদের হোটেল বুক করা ছিল আগে থেকে। তাই আরো উত্তরে ওরল্যান্ড না গিয়ে আমরা মাঝামাঝি পথে ,শর্টকাট করে পূর্ব থেকে পশ্চিমে চলে যাওয়ার জন্য রওনা দিলাম। অনেকটা পথ আমরা মেইন হাইওয়ে দিয়ে চলছিলাম। আর দেখলাম পথে অনেকবার অনেক ভীড়ে আমাদের দাঁড়াতে হচ্ছে প্রত্যেকটা শহর পেরুতে টোল দিতে হচ্ছে সাথে। এইজন্য অনেক গাড়ির ভীড়ে দাঁড়িয়ে সময়ও লাগছে বেশি।
তখন পাশের ছোট রাস্তা বেছে নিয়ে বেরিয়ে পরলাম হাইওয়ে ৯৫ থেকে। এ্কই সময় লাগবে কিন্তু ভীড় এবং টোল দুটোই এড়ানো যাবে। আর শহর, গ্রামের ভিতর দিয়ে যাওয়ার জন্য শুধু হাইওয়ে ধরে চলার চেয়ে অনেক বেশি দেখা যাবে। কখনো একদম শহরের মাঝ বরাবর পেরিয়ে যাচ্ছি। প্রতিটা শহরের নিজস্বতা আছে। কোথাও বড় বড় গাছের সারি কোথাও বিস্তীর্ণ ফসলের ক্ষেত।
নদীর তীর ঘেষে যাচ্ছি। আবার শহরের আবাসিক বাড়ি গুলো একটা ধারনা দিচ্ছে মানুষের জীবন যাপন কেমন হতে পারে।
ছোট ছোট শহর, গ্রাম, ব্যাস্ত পর্যটন শহর নানা ঢঙের সারি বাঁধা গাছ। কোথাও অশ্মথ গাছের মতন গাছের সারি কোথাও নারিকেল গাছ লাইন ধরে আছে। মোনগ্রোভ গাছ বাঁকানো ডাল আর গোল পাতা নিয়ে ঘন হয়ে আছে। কৃষ্ণচূড়া লাল রঙের ফুলসহ হাসছে। বিশাল প্রাসাদের মতন বাড়ি সামনে অনেকটা ছড়ানো উঠান, কাটা ঝোপের গাছের বেড়া দেয়া বাড়ির চারপাশে। আবার সোনালী লোহার কারুকাজে ঘেরা দেয়াল দেয়া বাড়ি। কখনো আমরা সাগরপাড় দিয়ে চলছি ।
আলোয় আলোয় সাজানো সব । সময়টা বড়দিনের আগে। তাই উৎসব মুখর। আমার মনে হয় বরফের মাঝে নানা রঙের আলো সাজানোটাই মানায় বেশি। ক্রিসমাস আর বরফের কোথায় যেন একটা সংযোগ আছে। কিন্তু আমার ভাবনায় তো কিছু যায় আসে না। ক্রিসমাস নানান প্রকৃতিতে এক সময়ই আসে। মানুষ উৎসব মুখর হয় আনন্দ করে সব প্রকৃতিতেই।
টেম্পা বেশ বড় শহর পশ্চিম তীরে সেইখানেও থামব ভেবেছিলাম ওরল্যান্ড থেকে যেতে কিন্তু শর্টকাটে মাঝ বরারবর পথে আমরা উত্তরের দিকে আর বেশি উঠলাম না।


অরল্যান্ড আর টেম্পার পথ উত্তরের দিকে রেখে পশ্চিমে চলে এলাম । অরল্যান্ডর পথ শুরু হওয়ার মুখে মিকির আদলে বানানো এই লাইট পোষ্টটা পেলাম।

হাইওয়ে দিয়ে না যাওয়ার জন্য একটা অসুবিধার সম্মুখিন হলাম। ঘন্টা দেঢ় চলার পর আমাদের টয়লেটে যাওয়ার প্রয়োজন হলো। হাইওয়ে থেকে যেমন রেস্ট এরিয়া বা গ্যাসস্টেশন গুলো সহজে পাওয়া যায়, যেখানে থেমে ফ্রেস হওয়া যায়। শহরের রাস্তায় তেমন কোন সাইন নাই। আমাদের গাড়িরও খাদ্য লাগবে আরো অর্ধেক পথ যাওয়ার জন্য। তাই একটা ভীড়ের শহরে গ্যাস স্টেশনে আমরা থামলাম। কিন্তু সেখানে কোন টয়লেট নেই। তাই গাড়িতে গ্যাস নিয়ে আবার পথে নামলাম। খানিকটা যেতেই দেখলাম একটা সাইন লিডল। ইউরোপে এই গ্রোসারী স্টোর টা খুব জনপ্রিয়। অনেক বার আমি গিয়েছি তাই চিনতে পারলাম। ওখানে ঢুকে গেলাম গাড়ি পার্কের জায়গা পাওয়া গেল আবার টয়লেট পাওয়া গেল।
গাড়িতে রাখার জন্য পানি জুস, খাবার কিনে আবার পথে নামলাম। এই বড় শহরটার পর, বাকি চলার পুরোটা সময়ই মোটামুটি ফাঁকা গ্রামীন রাস্তায় চললাম আমরা।
সাগড়পাড় ধরে চলার সময় প্রথম যে শহরটি পরল তার নাম মায়ার্স। ওখানে যেতে চেয়েছিলাম প্রথমে। বিচটা খুব সুন্দর। কিন্তু গত বছর হ্যারিকেনের কবলে পরে অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঐ এলাকাটাই বন্ধ রাখা হয়েছে পূর্ণগঠনের জন্য।
কেপ কোরাল এলাকাটাও বাদ রাখতে হলো একই কারণে। এদিকের সাদা সোনার মতন বালুর সৈকত ছবিতে দেখে খুব আকর্ষিত হয়েছিলাম। কিন্তু প্রকৃতির বাঁধার জন্য সেদিকে যাওয়া হলো না।
পশ্চিম তীরে অনেক কয়টা শহর দেখলাম ইটালির শহরের নামে। ভ্যানিস আছে। নেপলস আছে। ইটালিয়ান খাবারও প্রচুর পাওয়া যায়। সবচেয়ে বড় জাম্বো পিজ্জা নাকি ফ্লোরিডায় পাওয়া যায় ইটালীতে নয়।
তিন ঘন্টা সময় লাগবে আমাদের। আটটা নাগাদ আমরা নেপলসের হিলটন হোটেলে পৌঁছালাম। এবছর ইটালিতে যখন গেলাম নেপলসেই প্রথম ল্যান্ড করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ইটালি অনেকটা জুড়ে ঘুরলেও নেপলসে যাওয়া হয়নি। তাই মনে হয় আমেরিকার নেপলসটা বেছে নিলাম থাকার জন্য। আসলে এখানের সাগর সৈকতটা অসম্ভব সুন্দর। আর একটা বিষয় ছিল নেপলসে একটা বোটানিক্যাল গার্ডেন আছে। আমার গাছপালা ফুল ফল দেখতে ভালোলাগে। পৃথিবীর কত প্রজাতির গাছ ফুল ফল আছে দেশের বাইরে না বেড়ালে জানতেও পারতাম না। আমাদের দেশের অনেক গাছও অন্যদেশ থেকে আনা। কৃষ্ণচূড়া বা সোনালু যাকে গোল্ডেন শাওয়ার বলে এ যে অন্য দেশে হয় তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস হতো না। শুধু হলুদ রঙ নয় আরো অনেক রঙের হয় এই ফুল।
আমরা চেক ইন করে রুমে ব্যাগ সুটকেস রেখে রাতের ডিনারের জন্য বেরিয়ে গেলাম।
ঝিরিঝিরি বৃষ্টি শুরু হয়েছে তখন। বৃষ্টির ভিতর শহর ঘুরে একটা রেস্টুরেন্টে গেলাম খাবার জন্য। এখানে বেশির ভাগ খাবার গুলো শুকনো ধরনের। ফ্রেন্স ফ্রাই বার্গার, স্টেক এধরনের। গ্রেভী খাবার খুব একটা পেলাম না। শুধু অনেক চিজে ডুবে থাকা পাস্তা ছাড়া।
আমি মোটামুটি মাছ খেয়েই কাটিয়ে দিলাম। চিকেন একদম বাদ রাখলাম এই যাত্রায়। তবে অনেক কিছুর সাথে অল্প পরিমাণ ভাতও দেয় দেখলাম প্রায় সব রেস্টুরেন্টে।
বাঙালির ভাতের তুলনা করলে এটা কিছু না। ছোট এক বাটি ভাত হয়তো এমন দশ বাটি লাগবে করো পেট ভরতে। আমরা বাঙালিরা তো ভাতই বেশি খাই। ভাতের পরিমাণে সবজি ফল মাছ, মাংস বেশি খাওয়া হলে স্বাস্থ্যর জন্য ভালো কিন্তু আমরা খাই উল্টা।
সার্ডিন, টোনা, ম্যাকেরেল, হুয়াইট ফিস, হালিবুট ওয়েস্ট কোস্ট হেরিং, কিং বাররা, মাহি মাহি,পমফ্রেট বা রূপ চাঁদা আর স্যামন এই চেনা মাছ ছাড়াও নানা রকম অচেনা মাছের সমাহার। এছাড়া স্রিম্প, লবস্টার, ক্রাব আছে। আছে মাছের ডিম, বিখ্যাত ক্যাভিয়ার সামুদ্রিক মাছের ডিম। যার মূল্য অনেক। এবং খেতে হয় অলমোস্ট কাঁচা। দেখতে কাঁচা দেখালেও এমন ভাবে খাওয়ার উপযোগী করে রান্না করা হয়, কাঁচা থাকেনা।
খাওয়া ভালোই হলো। আমরা শহরটা একটু চক্কর দিয়ে হোটেলে চলে এলাম। এখানে আমাদের ঘোরাফেরার চেয়ে সাদা সোনার সৈকতে বেশি সময় কাটানোর ইচ্ছা। কোকা বিচের শহরের চেয়ে নেপলস বেশ বড় মনে হলো।
সকালে উঠে আমরা ঠিক করলাম সাগর পাড়ে রেস্টুরেন্টে ব্রেকফাস্ট করব, গুগল খুঁজে কয়েকটা রেস্টুরেন্ট পাওয়া গেল তার মধ্যে একটা পছন্দ করে আমরা সেখানে রওনা দিলাম কিন্তু গিয়ে দেখি ওখানে কোন রেস্টুরেন্ট নাই ওটা একটা গল্ফ ক্লাব। হয়তো রিনোভেশন চলছে তাই বন্ধ।
তিনবার চক্কর দেয়া হলো রেস্টুরেন্ট খুঁজে একই রাস্তার উপরে একটাই লাভ হলো রাস্তার উপরে বাড়িঘর গুলো এত সুন্দর সেগুলো দেখা হলো এত পরিচ্ছন্ন দেখতে খুব ভালো লাগছিল । মানুষ কী বিলাশ বহুল বাড়িতে বসবাস করে তার ধারনা পাওয়া গেলো। এখানে কি সবাই ধনী। নাকি ইটালিয়ান মাফিয়া ধনীরা এমন সুন্দর বাড়ি ঘরের মালিক এখানে, জানি না। তবে একটা বাড়ির চেয়ে আরেকটা বাড়ির রূপ দেখে কোনটা রেখে কোনটা দেখি কাকে একশতে একশ দেই বুঝতে পারছিলাম না। মুগ্ধ হয়ে শুধুই দেখছিলাম। মানুষের বিলাসী জীবন যাপন। কেউ কেউ সোনার চামুচ মুখে নিয়ে জন্মায়। রূপকথার সাজানো শহরের মতন ঘর আছে দুয়ার আছে, বাগান ফুল আছে লনে পানির ফাউন্টেন চলছে, কিন্তু কোথাও কোন মানুষ নেই। অথৈ নিরবতা সবুজ চত্তরের মাঝে।

যা হোক অবশেষে আমরা সাগর পাড়ে একটা রেস্টুরেন্ট খুঁজে পেলাম কিন্তু এটি সাগর পাড় হলেও মনে হচ্ছে যেন একটা লেকের ভিতর। অনেকগুলো বে আছে হ্রদ বা নদীর মত মনে হয়, বাড়িঘর দেখা যায় চারপাশে। সাগরের কুলহীন দিগন্ত নেই।
খোঁজা খুঁজি করতে বেশ একটু সময় লেগে গেল আমরা প্রায় সাড়ে এগারোটায় খেতে বসলাম। স্বামী-স্ত্রী তাদের এই রেস্টুরেন্ট চালায় অনেক বছর ধরেই তারা এখানে স্থায়ী হয়ে আছে ম্যাক্সিকো থেকে এখন আমেরিকার অধিবাসী।
রেস্টুরেন্টের হিটারের পাশে বসে খোলা ব্যালকুনীতে বসে থাকতেই ভালোলাগছে।
আসে পাশে আর যারা খাওয়া দাওয়া করছে তারাও আমাদের দেশ থেকে এসেছে বেশির ভাগ মানুষ। মায়ামিতেও প্রচুর ক্যানেডিয়ান পেয়েছিলাম। শীতের সময় অনেকেই দক্ষিণে উড়াল দেয়।
সাগরপাড়ে কাটাবো আজ সারা দিন। কিন্তু ঠান্ডা ঠান্ডা ভাব, ঠান্ডার জন্য মনে হচ্ছে সেটা সম্ভব হবে না । আসলেই তাই সৈকতে গিয়ে জ্যাকেট পরে থাকতে হলো। অসম্ভব সুন্দর মশৃণ বালুর সৈকতে শুয়ে থেকে রোদ পোহানো বা জলে নেমে ঝাঁপাঝাঁপি করার সুযোগ দিল না প্রকৃতি।
দুদিনের নেপালস থাকা সৈকতে ঝাঁপাঝাপি করার ইচ্ছা থাকলেও সেটা আর হয়ে উঠল না একদিন বোটানিক্যাল গার্ডেন ঘুরে বেড়ালাম আর একদিন শুধু শহরের বাড়িঘর গুলো ঘুরে বেড়ালাম। তার মাঝে সৈকতে শীত কাপড় পড়ে সময় কাটালাম। কিছুটা উত্তরে বলে কিনা জানিনা মায়ামির গরমটা নেপলসে পেলাম না । আসার আগে দেখেছিলাম পাবলিক বিচের কথা অনেকে বলছে। হিলটন হোটেল আমাদের ছবি টবি দিয়ে তাদের নিজস্ব সৈকত আছে এমন বিজ্ঞাপন দেখালেও বাস্তবে দেখলাম, ডাহা মিথ্যা কথা। তাদের নিজস্ব সৈকত নাই। বেশ দূরে সাত মিনিটের ড্রাইভ করে যেতে হয়। হোটেলের লাগুয়া সৈকত থাকা সেখানে যাওয়া আর ড্রাইভ করে দূরে গিয়ে বিচে বসে থাকার মধ্যে অনেক পার্থক্য।
চকচক করলেই সোনা হয় না আবার বুঝলাম। হিলটনের ক্রিসমাস ট্রি ।
এখানে আবার প্রতিটি বাড়ির মালিক নিজের বাড়ির পিছনের আঙ্গিনার সাথে নিজস্ব সাগর সৈকত দখল করে রেখেছেন। যেখানে তারা ঘর থেকে বেড়িয়েই সমুদ্রে পা ভেজাতে পারে কিন্তু তার জন্য জনসাধারনকে কোন সুযোগ দেয়া হয় না। তাদের ঠেলাঠেলি করতে হয় জনগণের সৈকতে বা পাবলিক বিচে।
সব চেয়ে সুন্দর জায়গা গুলো বিত্তবানরা নিজের করে নিয়েছে।

তাই সিদ্ধান্ত নিলাম নিজেও একটা ওমন বাড়ি করে ফেলব। ঘর থেকে বেড়িয়ে সমুদ্রে পা ভিজায়ে বসে থাকব আপনমনে।
নেপলস হলো ফ্লোরিডা এবং পুরো স্টেইটে সব চেয়ে এক্সপেনসিভ।
মেক্সিকো উপসাগরের দক্ষিণ পশ্চিম ফ্লোরিডায় উচ্চমানের কেনাকাটা এবং গল্ফ কোর্সের জন্য পরিচিত নেপলস । নেপলস পিয়ার, প্রথম ১৮৮৮ সালে নির্মিত হয়েছিল।

নেপলসের জনপ্রিয়তা মাছ ধরা এবং ডলফিন স্পটিং । সমুদ্রের দূরন্ত ঢেউ নেই শান্ত জল এবং সূক্ষ্ম সাদা চিনি বালির সৈকতের জন্য প্রসিদ্ধ। নীল আকাশের ছায়া পরা, সবুজ জলের পাশে সারাদিন কাটিয়ে দেয়া যায়। এমনটাই ভেবেছিলাম। কিন্তু ঠান্ডাটা সে আনন্দটা করতে দিল না। তবুও যতটুকু সময় পারা যায় সাগরপাড়ে কাটালাম। বাকি সময়টা ঘুরলাম অনেক দূর পর্যন্ত। মায়ার্স শহরটাও দেখে এলাম। দালান বাড়ি সব ফাঁকা। ঠিকঠাক হচ্ছে কোন মানুষ নেই। আমাদের দেশে দূর্যোগের পর মানুষ ভাঙ্গা বাড়িতেই থাকে আর এখানে অন্য কোথাও তাদের থাকার ব্যবস্থা করে ইন্সরেন্স কোম্পানী।

ডলফিন দেখার জায়গা এখন যদিও অনেক জায়গায় হয়েছে। এবং নানা রকম আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপনে চোখ ধাঁধানো অবস্থা করে ফেলে। কিন্তু ডলফিন দেখা হয়েছে আমার অনেক আগে তাই আর আগ্রহ নাই। তবে বোটানিকাল গার্ডেনে ঘুরতে গেলাম। যতটা আশা করে ছিলাম তেমনটা মনে হলো না। নীল পদ্ম আর আমাজন লিলি কিছু জায়গা নারিকেল গাছের ছায়ায় মনে হয় পুরো বাংলাদেশের উন্নত সংস্করন।

ফুলের পরিমান হয় তো অন্য ঋতুতে বেশী থাকে। বসন্তু ফ্যাসিটিভেলে যেমন অনেক জমজমাট আয়োজন থাকে তেমন কিছু ছিল না। নিরবতায় গাছ গাছালীর সাথে কিছু ভাস্কর্য দেখলাম।
দেখার শেষ নেই।ফ্রি এবং টিকেট কেটে নানা কিছু করা যায় কিন্তু সময় এবং নিজের অর্থের উপরও চাপ থাকে। তাই কিছু দেখে কিছু বাদ রেখে ইতালীয় উপদ্বীপ নয় কিন্তু তার নামে নাম রাখা ফ্লোরিডার উত্তর পশ্চিমের নেপলস শহরে ঐশ্বর্যময় সুন্দর দুদিন কাটিয়ে দিলাম।

মন্তব্য ২১ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (২১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৪

বিজন রয় বলেছেন: দারুন।

০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৩:০৮

রোকসানা লেইস বলেছেন: আমারও দারুন লাগল
ধন্যবাদ বিজন রয়

২| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৫:০২

নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: একেকটার বর্ণনা শুনে যাওয়ার লোভ সামলাতে পারছি না। আমার খুব ইচ্ছা পুরো পৃথিবী ভ্রমণ করার। যদিও পানি ভয় পাই, তবুও সমুদ্র পথে সাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপ, আমেরিকা দেখার...

০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৩:৪১

রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ নয়ন বড়ুয়া
লেখায় পৃথিবীর কিছুটা দেখাতে পেরেছি জেনে ভালোলাগছে।
কিশোর বয়সে আমিও স্বপ্ন দেখতাম সারা পৃথিবী ঘুরে বেড়াব কিন্তু কি ভাবে জানতাম না। এখন পৃথিবীর অনেক ভূমিতে আমি দাঁড়িয়েছি। যদিও সারা পৃথিবীর অনেকটা বাকি আছে এখনও দেখার। তবু পারছি। আপনার যখন ইচ্ছা করে এই ইচ্ছাটাকে শক্ত করে ধরে রাখুন। একদিন ঠিক ইউরোপের আমেরিকা দেখা হবে। সাঁতার শিখে ফেলুন। জলের ভয় থাকবে না।
শুভ কামনা

৩| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: সুন্দর ছবি আর বর্ণনায় অনবদ্য পোস্ট।

০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৩:৪৫

রোকসানা লেইস বলেছেন: ছবিতে তো মূহুর্তে দেখা যায় প্রকৃত অবস্থা কিন্তু বর্ণনায় দেখানো কঠিন। তবে আমি সেই চেষ্টা করি। কল্পনায় ভাসাতে চাই পাঠককে বেশি। নিজের মতন ছবির দেশ আঁকার আনন্দ অন্যরকম।
একজন কবি যখন বলেন অনবদ্য তখন ভালোলাগাটা বেশি হয়।

হ্যাপী নিউ ইয়ার।

৪| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৪৪

এক চালা টিনের ঘর বলেছেন: Wow! What a post! Amazingly described. It's long post but i am sure all of your readers will enjoy the post. I love the way you write.

Thanx for the nice post.

০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৩:৫২

রোকসানা লেইস বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ এক চালা টিনের ঘর
নামটা খুব সুন্দর আপনার। আর মন্তব্যটি দারুণ উপভোগ করলাম। হ্যাঁ লম্বা লেখাটি যারা এনজয় করবে তারাই পড়বে ভালোবেসে। সে সংখ্যা কম হলেও গুণি পাঠক তারা।

হ্যাপী নিউ ইয়ার

৫| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৪৮

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:




সচিত্র এই পোষ্টে লেখার শুরুতেই ডিজনিল্যান্ডসকে পাশ কাটিয়ে নেপলস যাওয়ার সুন্দর কারণমালা
সে সাথে নেপলসের পথে প্রসঙ্গক্রমে ফ্লোরিডা হতে লন্ডনের তাজমহল রেস্টোরেন্ট , তার সাথে যুক্ত
বাংগালী ব্যক্তিত্বের সফল দারুন এক জীবন গাথা। এখানে এসে এই গুনবান ব্যক্তিত্বের কথাই ভাবতেছিলাম ।
মনে পড়লো ইউটিউবে শুনছিলাম একটি গান আল্লাহ তায়ালা মেহের হইলা রাগীব আলী ধন পাইলা, নদীতে
ভাসিয়া নদীতে মিয়া কোটি টাকার পুল দিলা
গানটির কথা । এতে মনে হয় দানবীর রাগীব আলীর সাথে
একমাত্র স্টুডেন্টশীপ ভিসা নিয়ে ইংল্যাণ্ড গমন করা ছাড়া তার সাথে পোষ্টে বলা বাকি কথাগুলি প্রায়ই
মিলে যায় যথা-
তিনি বাংলাদেশের একজন শীর্ষস্থানীয় শিল্পপতি ও উদ্যোক্তা। তিনি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মেডিকেল কলেজ
ও হাসপাতাল, চা-শিল্প, ব্যাংক-বীমা ও বহু ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত। মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে
রাগীব আলীর ভূমিকা্।শিল্প সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষকতা, অসচ্ছল প্রতিভাবান কবি সাহিত্যিকদের অপ্রকাশিত
পাণ্ডুলিপি বই আকারে প্রকাশে এবং তাদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ দাতা ছিলেন । এই পোষ্টের বাংগালী
ব্যক্ত্বিত্বটি আমাদের জানা সেই রাগীব আলীই কিনা জানতে পারলে ভাল হতো ।

যাহোক ,নেপলস এর কথা মালাতেই বেশী মনযোগী হলাম । জানলাম এর জন্ম কথা , পেনরোমিক প্রাকৃতিক
নৈসর্গের অপরূপ সৌন্দর্যের কথা । যুক্তরাষ্ট্রের মেক্সিকো উপসাগরের সাগর সৈকত, এর স্ফটিক স্বচ্ছ জল
এবং সারা বছর উষ্ণ ও রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়ার কথা । জানলাম শহরটি তার প্রাণবন্ত সাংস্কৃতিক দৃশ্যের
জন্যও পরিচিত, যেখানে রয়েসে যেমন সুন্দর সুন্দর বাড়ী তেমনি রয়েছে লাইভ পারফরম্যান্স স্পেস । জানা
গেল নেপলস তার বিলাসিতা এবং কমনীয়তার জন্যও বেশ আকর্ষনীয়। বুঝা গেল যারা সামগ্রিকভাবে, উষ্ণ ও
রৌদ্রোজ্জ্বল সমুদ্র হাওয়া , সংস্কৃতি এবং একটু বিলাসিতা খুঁজছেন তাদের জন্য এটা বেশ প্রিয় একটি গন্তব্য ।
নিসন্দেহে শীতকালে সূর্যের সন্ধানে ধনী উত্তরবাসীদের জন্য ‌এটি বেশ ভাল গন্তব্য স্থান । জানা গেল বিবিধ
ধরনের আকর্ষণীয় স্থানগুলি ছাড়াও, নেপলসে জল খেলা, মাছ ধরা, গল্ফ এবং সমুদ্র সৈকতে হাঁটা সহ আরও
অনেক আকর্ষণ এবং কার্যকলাপ রয়েছে। ধনীকে ধনির ভাব কেন ধরতে হবে কেন, ধনে তেমন ধনি না হলেও
মনেতো ধনি :) , এটিই হলো সবচেয়ে বেশী বড় ধনবানের মাপকাঠি । ধনে নয় মনে বড় হওয়াই অনেক
বড় প্রাপ্তি , তাঁরাই ইতিহাসে স্মরণীয় বড়নীয় হয়ে থাকেন ।

নেপলসর এর যাত্রাপথের টুকিটাকি ঘটনা সাথে সেখানকার বর্ণনাসমৃদ্ধ এই অনবদ্য লেখা পাঠে মুগ্ধ ।

অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল

০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

রোকসানা লেইস বলেছেন: মনোযোগের সাথে পোষ্ট পড়ে প্রতিটি বিষয় ধরে , ব্যাখ্যা করে সাথে নিজের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংযোগ আপনার বৈশিষ্ট্য ।
দারুণ মনোগ্রাহী মন্তব্য এবং পোষ্টে গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন হয়ে থাকল।
আপনার ধারনা একদম সঠিক তিনি রাগীব আলী। উনার এলাকায় দানবীর নামেই পরিচিত তিনি। এবং যতটুকু বলেছি উনার নিজের থেকে শোনা তথ্যই শেয়ার করেছি।
লণ্ডনে আরামের জীবন রেখে তিনি দেশে থাকতে পছন্দ করেন। এবং দেশের মানুষের গঞ্জনাও সহ্য করেন।

প্রতিটি জায়গার নিজস্ব মাধুরী আছে সেটা উপলব্ধি করা যায় সেখানে থাকলে। তাই আস্বাদন করার চেষ্টা করি আমি।
ছুটে ছুটে যাই।

ভালো থাকবেন শুভকামনা নিরন্তর


০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯

রোকসানা লেইস বলেছেন: ডঃ এম এ আলী আরেকটা বিষয়ে উত্তর দেয়া হয়নি। ধনী ধনী ভাব বলেছি মজা করে।
মনে ধনী না হলে দেখিয়ে ধনী কি আর হওয়া যায়।
আপনি যা বলেছেন তার সাথে এক মত এক্কেবারে। সেই ধনে ধন্য হয়ে আছি।
তবে লেখায় এই লাইনটাই এডিট করে দিচ্ছি। :)

৬| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৩:০২

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: পুরো লেখাটা ভীষণ উপভোগ করলাম, সব যেন চোখের সামনে ভাসছিলো। মাঝে বাংলাদেশী দাতা ও ভালো মানুষটার কাহিনীটাও অনুপ্রেরণা দিয়েছে ও ভালো লেগেছে।

০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১১:৩৫

রোকসানা লেইস বলেছেন: লেখা উপভোগ্য হলে পাঠকের কাছে লেখকের মন ভরে।
আনন্দটুকু আমিও উপভোগ করলাম রিয়াদ।
আমাদের দেশের অনেক মানুষ আছেন নিরবে নিভৃতে তারা কাজ করেন। বর্তমান সময়ে যদিও সব কিছু প্রকাশ আর প্রচারের যুগ। তিনি যখন থেকে দেশের জন্য কাজ করে আসছেন নিরবে নিজের ভালোলাগায় করে আসছেন।
অনেক শুভকামনা রিয়াদ

৭| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৪

রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর ভ্রমন কাহিনী লিখেছেন।

০৬ ই জানুয়ারি, ২০২৪ ভোর ৫:১৯

রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব নুর
হ্যাপী নিউ ইয়ার

৮| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৪:৪২

মিরোরডডল বলেছেন:




লেইস আপু,
ফ্লোরিডার বাংলাদেশী ভদ্রলোকের যে গল্পটা শেয়ার করলে খুব ভালো লাগলো জেনে।
তারপর কি হয়েছিলো? উনি কি বেঁচে আছেন?

০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৮

রোকসানা লেইস বলেছেন: ভদ্রলোক কখনো ফ্লোরিডায় থাকেন নাই জমি কিনেছিলেন বন্ধুর কথায় ফ্লোরিডায়।
উনি লন্ডনের সিটিজেন আর বাংলাদেশে বাড়ি সিলেট। এখনো বেঁচে আছেন। দেশে চাবাগান ছাড়াও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ব্যাংক অনেক কিছুই উনার স্থাপিত।
এখনও দান করে যাচ্ছেন দুহাতে।

৯| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৬

মিরোরডডল বলেছেন:




ছোট ছোট শহর, গ্রাম, ব্যাস্ত পর্যটন শহর নানা ঢঙের সারি বাঁধা গাছ। কোথাও অশ্মথ গাছের মতন গাছের সারি কোথাও নারিকেল গাছ লাইন ধরে আছে। মোনগ্রোভ গাছ বাঁকানো ডাল আর গোল পাতা নিয়ে ঘন হয়ে আছে। কৃষ্ণচূড়া লাল রঙের ফুলসহ হাসছে। বিশাল প্রাসাদের মতন বাড়ি সামনে অনেকটা ছড়ানো উঠান, কাটা ঝোপের গাছের বেড়া দেয়া বাড়ির চারপাশে।

বর্ণনায় মুগ্ধতা!
এগুলোর ছবি দাওনি কেনো আপু!
এরকম দেখতে ভালো লাগবে।

গোল্ডেন শাওয়ার অস্ট্রেলিয়াতেও আছে। আমার ভীষণ প্রিয়!
মজার বিষয় হচ্ছে এই ফুলের সাথে আমার প্রথম পরিচয় বহু বছর আগে যখন আমি বাংলাদেশে ছিলাম সেই সময়।
সিলেটের চা বাগানের একটা বাংলোতে ছিলাম, ওখানে প্রথম এই ফুল দেখেছি, নাম শুনেছিলাম গোল্ডেন শাওয়ার।
যেমন দেখতে সুন্দর, সেরকম নামটা সুন্দর।
পরবর্তীতে সোনালু নামে অনেক দেখেছি।


০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:২৭

রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ মিরোরডডল ভালোবাসা।
সব কিছুর ছবি তুলি নাই চলার পথে যত দেখেছি। চারপাশে তাকিয়ে দেখায় ব্যাস্ত ছিলাম বেশি। আর যা তুলেছি ঠিক ভাবে ফোকাস হয়নি চলতি ভাবে তুলার জন্য। বারে বারে ছবি তুলার জন্য থামলে অনেক সময় লাগে। রাস্তা অনেক দীর্ঘ ছিল।
আমাদের দেশে সুনালু এই গাছটাকে কেউ তেমন পাত্তা দেয় না কেন যেন। অবশ্য আগে কেইবা কদর করত আমাদের দেশে গাছগাছালীর।
আমার কাছে খুব ভালোলাগে ঝুলে থাকা এই ফুলগুলো দেখতে। বিদেশী উইস্টেরিয়ার মতন অনেকটা এই ফুল।
আহা সিলেটের চা বাগানে রাত কাটানো আর জোছনা দেখা এটা আমার স্বপ্ন। মালীনীছড়া চাবাগানে থাকার কথা মনে পরে গেলো।
তোমাদের অস্ট্রেলিয়াতে একটা ফুল দেখতে যাব জাকারান্ডা এখন ফুটছে নাকি শেষ হয়ে গেছে সিজন? যদিও জাকারান্ডার আদিবাস সাউথ আফ্রিকা তবে কেলির্ফোনিয়ায়ও আছে। একটা ফুল গাছের নিচে পেয়েছিলাম ফ্লোরিডায়ও। তবে আমি দেখতে চাই একটা রাস্তা ভরা জাকারান্ডা ফুটে থাকা।

১০| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৫:০৪

মিরোরডডল বলেছেন:




তাই সিদ্ধান্ত নিলাম নিজেও একটা ওমন বাড়ি করে ফেলব। ঘর থেকে বেড়িয়ে সমুদ্রে পা ভিজায়ে বসে থাকব আপনমনে।


Good luck!
ইন এডভান্স উইশ থাকলো।
ছবি দিতে ভুলোনা যেনো :)

০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:৩০

রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ ধন্যবাদ
অবশ্যই আশাপূরণ হওয়ার সাথে সাথে তোমাকে জানাব।
এসে তুমিও পা ভিজিয়ে বসে থেকো আমার সাথে আর যত খুশি ছবি তুলে নিও।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.